তারিখ লোড হচ্ছে...

ডেঙ্গুতে তিনজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৭০৫

স্টাফ রিপোর্টার: 

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। ফলে চলতি বছর এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪৯৭ জনের। একইসঙ্গে এই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৭০৫ জন।

সোমবার (২ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, নতুন ভর্তিদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৬০ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৩ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ১৫৯ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১৫৪ জন এবং দক্ষিণ সিটিতে ৯০ জন, খুলনা বিভাগে ৯৬ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৮ জন, রংপুর বিভাগে ১০ জন এবং সিলেট বিভাগে ২ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

এদিকে একদিনে সারাদেশে ৭৯১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর ছাড়পত্র পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৭৮০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, এ বছরের জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৯৩ হাজার ৫৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বছরের এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৯৭ জনের। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। মারা যান ১ হাজার ৭০৫ জন।

দেশের ইতিহাসে ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ও মৃত্যুবরণ করেছেন। বছরের বিভিন্ন সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হন তিন লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন। এর মধ্যে এক হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যু হয়।

২০২২ সালে ডেঙ্গুতে দেশে ২৮১ জন মারা যান। ওই বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৬২ হাজার ৩৮২ জন।

২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে ডেঙ্গু সংক্রমণ তেমন একটা দেখা না গেলেও ২০২১ সালে সারাদেশে এডিস মশাবাহী এই রোগে আক্রান্ত হন ২৮ হাজার ৪২৯ জন। সে বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিলো।

 

সবা:স:জু-১৬০/২৪

যেসব খাবার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়

লাইফস্টাইল ডেস্ক:

বিজ্ঞানীদের মতে, প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বাহ্যিক কারণে হয়, যার মধ্যে অন্যতম হলো আমাদের খাদ্যাভ্যাস। এমন অনেক খাবার আছে, যেগুলো শরীরের কোষে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান (কার্সিনোজেন) তৈরি করতে পারে, কিংবা ডায়াবেটিস ও স্থূলতার মতো রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে ক্যানসারের সম্ভাবনা তৈরি করে।

হেলথলাইনের প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা এমন ৬টি খাবারের উল্লেখকরেছেন, যেগুলো নিয়মিত গ্রহণ করলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

যে খাবারগুলো ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে-

১. প্রসেসড মাংস: যেসব মাংস ধূমায়িত, লবণাক্ত, সংরক্ষিত বা ক্যানজাত করা হয়, সেগুলোকে প্রসেসড মাংস বলা হয়। যেমন: সসেজ, সালামি, হটডগ, কর্নড বিফ, বিফ জার্কি ইত্যাদি। এসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাংসে এন-নাইট্রোসো যৌগ ও পিএএইচ নামক কার্সিনোজেন তৈরি হয়, যা কোলন, পাকস্থলী ও স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায়।

২. ভাজাপোড়া: অনেকেই বিভিন্ন ভাজাপোড়া পছন্দ করেন। এই তালিকায় আছে আলু ভাজা, চিপস, পাকোড়া, চপ—এসব স্টার্চ জাতীয় খাবার বেশি তাপে ভাজার সময় অ্যাক্রিলামাইড নামক ক্ষতিকর উপাদান তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাক্রিলামাইড ডিএনএ ক্ষতি করে এবং কোষ ধ্বংসের মাধ্যমে ক্যান্সার সৃষ্টির ঝুঁকি বাড়ায়।

৩. অতিরিক্ত সেদ্ধ বা পোড়া খাবার: চিকিৎসকদের মতে খাদ্য তারিকায় অতিরিক্ত সেদ্ধ এবং পোড় আখাবার না রাখাই ভালো। বিশেষ করে মাংস অতিরিক্ত আগুনে গ্রিল, বারবিকিউ বা প্যান ফ্রাই করলে পিএএইসএ ও এইচসিএ নামের ক্যানসার জনিত যৌগ তৈরি হয়, যা কোষের ডিএনএ পরিবর্তন করে ক্যানসারের সম্ভাবনা বাড়ায়। তাই এই জাতীয় খাবার না খাওয়াই ভালো বলছেন চিকিৎসকরা।

৪. দুগ্ধজাত খাবার: দুধ, দই, চিজ এই পরিচিত দুগ্ধজাত খাবারগুলো অনেকের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় স্থান পায় পুষ্টির উৎস হিসেবে। তবে সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, এসব খাবার নিয়মিত গ্রহণ করলে পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়তে পারে। ২০২০ সালের একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণের ফলে দেহে ইনসুলিন-জাতীয় গ্রোথ ফ্যাক্টর ১ (আইগিএফ-ওয়ান) নামক হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। এই আইগিএফ-ওয়ান হরমোন প্রোস্টেট ক্যান্সারের কোষ বিভাজন বা বিস্তারকে ত্বরান্বিত করতে পারে।

৫. চিনি ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট: চিনি ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেটসমৃদ্ধ খাবার যেমন কোমল পানীয়, সাদা পাউরুটি, পেস্ট্রি, সাদা ভাত বা মিষ্টি সিরিয়াল—এসব নিয়মিত খেলে শরীরে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও স্থূলতা দেখা দিতে পারে। ২০২০ সালের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, এই দুটি শারীরিক অবস্থা দেহে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বাড়ায়, যা ক্যানসার সৃষ্টির অন্যতম কারণ হতে পারে। এমনকি, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সঙ্গে ডিম্বাশয়, স্তন ও জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকি যুক্ত বলেও দেখা গেছে। পাশাপাশি, রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ কোলন ক্যানসারের সম্ভাবনাও বাড়াতে পারে।

৬. অ্যালকোহল: অ্যালকোহল পান করলে তা শরীরে ভেঙে গিয়ে অ্যাসিট্যালডিহাইড নামক একটি রাসায়নিক যৌগে পরিণত হয়, যা কার্সিনোজেনিক বা ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে পরিচিত। ২০১৭ সালের একটি পর্যালোচনা গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যাসিট্যালডিহাইড ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং দেহে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস সৃষ্টি করে। এ ছাড়া এটি দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেও দুর্বল করে দেয়, ফলে প্রিক্যান্সারাস বা ক্যানসার কোষ শনাক্ত করে ধ্বংস করার প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। একই সঙ্গে অ্যালকোহল পানের ফলে নারীদেহে ইস্ট্রোজেন হরমোন বেড়ে যায় যা স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করে।

যেসব খাবার ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে: বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে, কিছু নির্দিষ্ট খাবারে এমন উপকারী উপাদান থাকে যা শরীরকে ক্যানসারের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। বিশেষ করে যেসব খাবারে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, আঁশ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে, সেগুলো ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এই খাবারগুলো হলো:

ফল ও সবজি: ফলমূল ও শাকসবজি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর, যা কোষকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস এবং ডিএনএ ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।

বাদাম: বাদাম প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।

ডাল ও শিমজাতীয় খাবার: শিমজাতীয় খাবার আঁশে সমৃদ্ধ, যা কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে।

হোল গ্রেইন বা পূর্ণ শস্য: হোল গ্রেইন খাবার যেমন ব্রাউন রাইস ও কুইনোয়া শরীরে আঁশ ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সরবরাহ করে। যা ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

মাছ: মাছের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ হ্রাস করে স্তন ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে পারে।

প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসই হতে পারে সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। প্রসেসড মাংস, অতিরিক্ত ভাজা বা পোড়া খাবার, অতিরিক্ত চিনি ও অ্যালকোহল পরিহার করলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। পাশাপাশি বেশি করে ফল, সবজি, হোল গ্রেইন ও স্বাস্থ্যকর প্রোটিন গ্রহণ করুন, শরীরচর্চা করুন এবং মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম