তারিখ লোড হচ্ছে...

মিরপুরে আলোচিত রিক্সাচোরের গডফাদার আলমগীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার: 

রাজধানী মিরপুর এলাকার এক সময়ের আলোচিত রিকশাচোরের গডফাদার আলমগীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে তার আপন ছোট বোন ও প্রতিবেশী দুইজনের জমি দখল করে রাজউক অনুমোদনবিহীন অবৈধ ভাবে তিন তলা ভবন নির্মান ও রাস্তা দখল করে রিকশা গ্যারেজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, মিরপুর-২নং সেকশনের ডুইপ প্লট এলাকার এক সময় আলমগীর চৌধুরী ও তার বড় ছেলে কামরুলের নেতৃত্বে মিরপুরে রিকশাচোরের বড় ধরনের একটি সিন্ডিকেট ছিল, যারা অসহায় নিরীহ রিকশা চালকদের কাছ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার মাধ্যমে তাদের রিক্সা চুরি করে নিয়ে যেত, পরবর্তীতে আবার তাদেরই তৈরি করা দালালদের মাধ্যমে অর্থের বিনিময়ে সেই রিক্সা ফিরিয়ে দিতো এটাই ছিল আলমগীর চৌধুরীর মূল ব্যবসা।

তার ওই অবৈধ ব্যবসার সুবাদে এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের সাথে তার খুবই সখ্যতা গড়ে তোলে। আর সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে সে মিরপুর ২নং মসজিদ মার্কেট ডুইপ আবাসিক এলাকায় তার আপন ছোট বোন নুর জাহান ও প্রতিবেশী কাসেম আরো একজন মোট তিনজনের তিনটি প্লট ভুয়া দলিলের করে দখল করে নেয় ও সেখানে তিনতলা একটি ভবন নির্মাণ করেন এবং প্লটের মালিকদের বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখিয়ে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মো. আবুল কাশেম, পিতা-রইছ উদ্দিন, বাড়ি নং-১২, লেন-১১, ডুইপ আবাসিক এলাকায়, মিরপুর-২ জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক কার্ডধারী বরাদ্ধ গ্রহীতা যাহা বরাদ্ধ প্রাপ্ত হয় ১৯৯৬ সালে। কয়েক বছর পূর্বে আবুল কাশেমের অনুপস্থিতে বাড়ির কেয়ার টেকারকে জোরপূর্বক ভয়ভীতি প্রদর্শন করে বাড়ি থেকে আলমগীর চৌধুরী ও তার ছেলে কামরুল বের করে দিয়ে ১২, ১৩, ১৪নং প্লট দখল করে নেয়। এ বিষয়ে জাতীয় গৃহায়নকে অবগত করা হইলে অবৈধ্য দখল দার হিসেবে উক্ত দখলদারকে উচ্ছেদের জন্য সরকারী নোটিশ ও ডি.ডি.-১ ক্ষমতাপ্রাপ্ত করে দায়িত্ব দেওয়া হলেও তার কোন সমাধান হয়নি,আলমগীর চৌধুরী তার ক্ষমতার দাপটে ওই প্লটে বহাল তবিয়তে থেকে যায়। পরবর্তীতে ওই প্লটে অবৈধভাবে ০৩ (তিন) তলা ভবণ নির্মান করে এবং অবৈধ তিতাস গ্যাসের একাধিক সংযোগ স্থাপন করে। এ বিষয়ে তিতাস কর্তৃপক্ষ তৎপরতায় অবৈধ গ্যাসের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেয়, কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি তার একদিন পরে আবারও গোপনে বিকল্প পথে সংযোগটি স্থাপন করেন আলমগীর চৌধুরি। এ বিষয়ে প্লটের প্রকৃত মালিক তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে আবারও অবগত করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন এবং এ বিষয়টি স্থানীয় থানায় অবগত করার জন্য পরামর্শ দেন।

ডুইপ আবাসিক এলাকার একটি সরকারি রাস্তায় রিকশার গ্যারেজ করে রাস্তাটি দখল করে রেখেছে।

 

সবা:স:জু-২২০/২৪

 

কেরানীগঞ্জ মডেল ভুমি অফিসে চলছে ডিজিটাল প্রতারণা : রমরমা ঘুষ বাণিজ্য 

মেরি আক্তার, ঢাকাঃ

অনিয়ম আর ঘুষ বাণিজ্যের আখড়ায় পরিণত হয়েছে ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল ভূমি অফিস। ওই অফিসের পিওন থেকে শুরু করে এসিল্যান্ড পর্যন্ত সকলেই সেই টাকা নেন ভাগাভাগি করে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা ঘুষ এখন ডিজিটাল প্রতারণায় পরিনত হয়েছে। এসব অভিযোগে সরেজমিনে এমন তথ্য মিলেছে।

প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত অফিস সহায়ক মোঃ আজাহারুল হক। তিনি অফিসের সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে পদে পদে ঘুষ নেন ডিজিটাল কায়দায়।

তথ্য বলছে, দীর্ঘদিন যাবত কেরানীগঞ্জ মডেল এসিল্যান্ড অফিসে কর্মরত এ অফিস সহায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগে মাঠে নামে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার অনুসন্ধানী দল। সেবা প্রত্যাশিদের চোখে আঙুল দিয়ে ডিজিটাল প্রতারণা করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত ধরে। এরমধ্যে নামজারি, নাম সংশোধনসহ (ক) তালিকা (খ) তালিকা খাস সম্পত্তি, অর্পিত সম্পত্তি এগুলো গেজেট দেখে (খ) তালিকা সম্পত্তি অবমুক্ত হলেও পাট ভি,পি দেখিয়ে ভুক্তভোগী জনসাধারণের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেওয়া হয় বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা৷ অপরদিকে (ক) তালিকার খাস অর্পিত তালিকার দাগ নাম্বার থাকলেও সেটা আংশিক আপত্তি বলে গ্রাহকের নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে থাকেন তিনি।

মধু মাখা এ অফিসটিতে দীর্ঘদিন ধরে আকড়ে রাখার পাশাপাশি অন্য কোথাও বদলি হলে আবার টাকা পয়সা খরচ করে বদলী হয়ে আসেন এ অফিসেই। মোঃ আজাহারুল হক কিছুদিন আগে অন্যত্র বদলি হলেও আবার মোটা অংকের ঘুষ বিনিময়ে কেরানীগঞ্জ মডেল অফিসে যোগ দিয়ে বর্তমানে গড়ে তুলেছেন একটি সিন্ডিকেট। এখানে থেকে অবৈধ সম্পদের মালিক বনে গেছেন এ অসাধু ব্যক্তি৷ এরই মধ্যে ঘুষ বাণিজ্যে জড়িয়ে বিপুল সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি। ভূমি-সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা সমাধানে পকেট কাটা হচ্ছে তাদের। এমন অভিযোগ সেবাপ্রার্থীসহ একাধিক ভুক্তভোগীর৷

কেরানীগঞ্জ মডেল ভুমি অফিসে সেবা নিতে আসা এমন একজন আব্দুল আলিম। তার সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এখানেই ইট পর্যন্ত ঘুষের সাথে জড়িত।
টাকা ছাড়া কোন ফাইলে স্বাক্ষর দেন না এখানে দায়িত্বরতরা।

ব্যাপক তথ্য অনুসন্ধানে আরও বেশ কয়েকজনের নাম উঠে আসে তার মধ্যে অফিসের অফিস সহায়ক মোঃ আজাহারুল হক অন্যতম। এছাড়া, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়া, কানুনগো মোঃ শহিদুল ইসলাম, সার্ভেয়ার ও নাজির। এদের নাম ভাঙিয়ে প্রতিনিয়ত সেবা প্রার্থীদের পকেট কাটছে ওই চক্রটি। ওই চক্রটি ঘুষের টাকা হাতানোর জন্য দালাল সিন্ডিকেট গঠন করেছে। ওই দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তাঁরা ঘুষের টাকা গ্রহণ করেন। এ অফিসে দালালদের শরণাপন্ন না হলে মাসের পর মাস ফাইল পড়ে থাকে। আর দালালদের দায়িত্ব দিলে কাজ হয় নিমেষেই।

ব্যাপক তথ্য অনুসন্ধানে আরো জানা যায়,
সম্প্রতি কয়েকজন গ্রাহকের কাছ থেকে লিগ্যাল জমি, খাস জমি দেখিয়ে ৬৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছে মোঃ আজাহারুল হকসহ ওই দুর্নীতিবাজ চক্রটি।

প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে জড়িত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার অনুসন্ধানী দল মাঠে নামলে। উঠে আসে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।

অনুসন্ধান চলাকালীন সময়ে গোপন ক্যামেরায় অনেক তথ্য উঠে আসে। যেখানে দেখা যায় ঘুষের লেনদেন। প্রশ্ন করা হলে যিনি ঘুষ গ্রহণ করছেন তিনি বলেন, কমিশনার, কানুনগো, সার্ভেয়ার ও নাজির প্রত্যেক টেবিলেই তো এ টাকা চলে যায়।

অফিস সহায়ক আজহারুল হক প্রতিদিন ক তালিকা, খ তালিকা, খাস সম্পত্তি, অর্পিত সম্পত্তি এগুলো গেজেট দেখেন প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ টির মত। তাতে দেখা যায় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তিনি। কোনো জমির নামজারি করতে হলে প্রথমে অনলাইনে আবেদন করতে হয়। এরপর শুরু হয় ঘুষ-বাণিজ্য। আবেদনের পর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি অফিস থেকে প্রতিবেদন নিতে হলে ঘুষ দিতে হয় ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা। এরপর সার্ভেয়ারের প্রতিবেদনও লাগে ঘুষ।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কেরানীগঞ্জের স্থানীয় এক ব্যক্তির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তার কাছ থেকে নামজারি করতে কেরানীগঞ্জ ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক আজহারুল হক ৮ হাজার টাকা দিয়েছেন। এত টাকা ঘুষ দেওয়ার পরেও এখনো তিনি কাগজ হাতে পাননি।

দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার অনুসন্ধানী দলকে তিনি বলেন, এ অফিসে ঘুষ ছাড়া কোনো কাজই যেন হয় না। আগের এসি ল্যান্ডের সময় ৩-৪ হাজার টাকায় নাম জারি করা যেত। এখন সেখানে ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা না দিলে কাজ হয় না। অফিসে নতুন কর্মকর্তা এলেই ঘুষের পরিমাণ বেড়ে যায় দুই-তিন গুন। তিনি আরো বলেন, এখন দেখছি জমিজমা না থাকাই ভালো ছিল।

দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার অনুসন্ধানী টিমের সাথে কয়েকজন দালালের কথা হয়। এছাড়াও ওই অফিসে ওৎ পেতে থাকা এ সব দালাল সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্যে’র সঙ্গে কথা হয় অনুসন্ধানী টিমের।

এ সময় ওই দালাল সিন্ডিকেটের সদস্যরা বলেন, ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আগে দিতে হতো এক হাজার টাকা এখন লাগে দুই হাজার টাকা। এসিল্যান্ড অফিসে প্রস্তাব পত্রের জন্য প্রত্যেকটা ফাইল প্রতি দিতে হয় ৩ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে নতুন কর্মকর্তা যোগদানের কারনে বর্তমানে ঘুষের পরিমাণ এখন বেড়েছে। এ সময় তারা আরো বলেন, আপনারা সাংবাদিক। আপনাদের কোন কাজ থাকলে আমাদের দিলে কম খরচে করে দেব। তবে ৫ হাজারের নিচেয় দিলে হবে না।

সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সহকারী কমিশনার অফিসের অফিস সহকারী আজারুল হক বলেন, যে কোনো জমির নামজারি করতে গেলে সমস্যা না থাকলেও ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাগবে। সমস্যা থাকলে টাকা আরও বেশি লাগবে। তিনি আরও বলেন, প্রকৃত কত টাকা লাগবে কাগজ না দেখে বলা যাবে না। আপনাদের কাজের কোনো সমস্যা হবে না। আমাকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারেন। আমরা অফিসের লোক অন্যদের কাছে কাজ দিলে হয়তো দেরি হবে। আমাদের কাছে কাজ দিলে কোনো সময় লাগবে না। আর আমাদের কাছে টাকা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা নেই।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অফিস সহকারী আজহারুল হক বলেন, আপনার সাথে পরে কথা বলব নিউজ করার দরকার নাই। এ সকল বিষয়ে নিউজ না করার জন্য তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে অনুসন্ধানী টিমের সদস্যদেরকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল মাওয়ার সাথে যোগাযোগ করা তিনি বলেন, জমির নামজারি করতে সরকারি খরচ ১ হাজার ১৭০ টাকা। এর বেশি কোনো টাকা নেওয়া হয় না। কেউ আমাদের নাম বলে টাকা নেয় কি না আমার জানা নেই।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম