তারিখ লোড হচ্ছে...

১ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

স্টাফ রিপোর্টার: 

বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মাত্র ১ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে রোগীদের চিকিৎসা সেবা।

জেলার দুর্গম মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ১৯৭৭ সালে শুরু হয় বান্দরবান পার্বত্য জেলার থানচি উপজেলার থানচি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। ১৯৯৮ সালে ৩১ শয্যা উন্নীতকরণ হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কার্যক্রম। ২০১৯ সালে হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও বাড়ানো হয়নি জনবল। প্রতিদিন চিকিৎসা সেবা নিতে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে প্রচুর সংখ্যক রোগী ভিড় করছেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে । তাদের স্বাস্থ্য সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওটি ও প্যাথলজি, এক্সরে মেশিন, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যানালাইজার, আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে জটিল রোগের চিকিৎসা সেবা। হাসপাতালে রয়েছে শুধু ইসিজি, নেবুলাইজার ও অক্সিজেন সিলিন্ডার।

আরো জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে বর্তমানে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের যোগদান করার কথা থাকলেও এখনো আসেননি তিনি। মেডিকেল অফিসারের চারজনের মধ্যে দুজন বান্দরবান সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে, আরেকজন ছুটিতে রয়েছেন। ফলে বর্তমানে হাসপাতালে কর্মরত আছেন মাত্র একজন ডাক্তার। এতে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।

রোগীদের অভিযোগ, বর্তমানে শিশুরা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। কিন্তু শিশু বিশেষজ্ঞ নেই। অবস্থা গুরুতর দেখলে বান্দরবান সদরে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে ঠিক সময়ে চিকিৎসা পাচ্ছে না অনেকে। এছাড়াও এ উপজেলার বেশির ভাগ মানুষেই জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। আর্থিক সার্মথ্য নেই বললেই চলে। তাদের কাছে বান্দরবান সদরের সরকারি বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নেওয়া খুবই কঠিন।

সড়ক দুর্ঘটনায় আহত য়ংরাও ম্রো (৩৩) বলেন, ‘আমি মোটরসাইকেল অ্যাক্সিডেন্ট করে পায়ে আঘাত পেয়েছি। থানচি হাসপাতালে এক্সরে মেশিন না থাকায় আমাকে বান্দরবানে রেফার্ড করা হয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা রেংহাই ম্রো বলেন, ডাক্তার আছে একজন। হাসপাতালে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নেই। বাধ্য হয়ে বান্দরবান সদরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়। সবার তো আর্থিক সার্মথ্য নেই বান্দরবান সদরে গিয়ে ভালো চিকিৎসা নেওয়ার’।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স লালসাংপার বম  বলেন, ‘হাসপাতালে রোগীর চাপ আছে। ১০-১৫ জন রোগীকে রেফার্ড করা হয়েছে। জ্বর,পেট ব্যাথা, ভাইরাস ও শিশুদের নিউমোনিয়া রোগ নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে অসংখ্য রোগী আসছেন’।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আরেক রোগী  উম্যাসাই মারমা বলেন, ‘সকাল থেকে পেট ব্যাথা। হাসপাতালে জটিল রোগের চিকিৎসা নেই । পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতিও নেই। জেলা সদরে গিয়ে আমাদেরকে রোগের পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হয়’।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ওয়াহিদ্দুজামান মুরাদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে চিঠিও দিয়েছি। বার বার চিঠির দেওয়া হলো এসব বিষয়ে এখনো কোনো সুরাহা হয়নি’।

তিনি আরো বলেন, ‘রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি কেনার জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে একটি বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার এখনো কোনো খবর নেই’।

বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. মাহাবুব রহমান বলেন, ‘জনবল সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। থানচি থেকে দুজন চিকিৎসক জেলা সদরে ডেপুটেশনে আনা হয়েছে। আপাতত স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ঢাকা থেকে একজন চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে। তিনি থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দ্রুত যোগদান করবেন। আশা করি রোগীদের দুর্ভোগ লাঘব হবে’।

সবা:স:২৬৮/২৪

যাত্রীদের বিমানের টিকিট নিয়ে মাহাদীর প্রতারণা!

স্টাফ রিপোর্টার॥

বিদেশগামী যাত্রীদের বিমানের আগাম টিকিট কেটে দু’দিন পর রিফান্ড করে উধাও হয়ে যাওয়া বেশকিছু প্রতারক ট্র্যাভেল এজেন্সির সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ। এসব এজেন্সি বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে জানায় যেকোনো এয়ারলাইন্সের নিশ্চিত টিকিট পাইয়ে দিবে। যাত্রীরা তাদের নির্ধারিত তারিখে গন্তব্য নিশ্চিত করার জন্য দ্বারস্থ হন এসব এজেন্সির। কখনো যাত্রীরা সরাসরি আবার কখনো সাব এজেন্টের মাধ্যমে টিকিট ক্রয় করেন।

কিন্তু বিপত্তি ঘটে যাত্রার তারিখে। যাত্রীরা বিমানবন্দরে গিয়ে জানতে পারেন তাদের টিকিটটি ভুয়া। টিকিটের টাকা আগেই রিফান্ড করে নেয়া হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে এসব এজেন্সি ওই যাত্রীদের আবার নতুন করে টিকিট দেয়। কিন্তু সেই টিকিটে যাত্রীরা গন্তব্য যেতে পারেন না। বেশকিছু যাত্রী ও এজেন্টের অভিযোগের ভিত্তিতে ডিবি তদন্ত শুরু করেছে। ইতিমধ্যে টিকিট প্রতারণার সঙ্গে জড়িত বেশকিছু এজেন্সিকে শনাক্ত করেছে।
সূত্রগুলো বলছে, বিমানের টিকিট নিয়ে কিছু প্রতিষ্ঠান যেভাবে প্রতারণা শুরু করছে হজ মৌসুমে এই প্রতারণা আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিবে।

এসব প্রতিষ্ঠান দুবাই এয়ারওয়েজ, এয়ার আরবিয়া, এমিরেটস এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, এয়ার ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট বৈধভাবে বুকিং করে যাত্রীদের প্রিন্টকপি দিয়ে প্রতারণা করে। তাদের প্রতারণার শিকার হয়েছেন খোদ বিমান বাংলাদেশ-এর এক কর্মকর্তা।
এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্সি বাংলাদেশের তথ্যমতে সারা দেশে বৈধ ট্র্যাভেল এজেন্সি আছে কমবেশি সাড়ে ৩ হাজার। এর বাইরে ১৮ হাজার অবৈধ এজেন্সি আছে। এসব এজেন্সির শুধু সাইনবোর্ড ও ভিজিটিং কার্ড আছে কিন্তু কোনো লাইসেন্স নেই। তাদের নির্দিষ্ট কোনো বসার স্থান বা অফিস নেই। দু’দিন পর পর তারা অফিস পরিবর্তন করে। এক স্থানে অফিস নিয়ে কিছু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আবার নতুন স্থানে গিয়ে নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। তারা টিকিটের টাকা নিয়ে নিজেরাই ফটোশপে বসে ভুয়া টিকিট তৈরি করছে। এর মধ্যে একজন হলেন মাহাদী পুরাপণ্টনে বসে তার প্রতারনা করে যাচ্ছে জামিল নামের এক যাত্রী থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তাকে টিকেট দেয়নী সেকরনে সেই যাত্রী ঠিকমতো উমরা করতে পারেনী। মেসার্স গোলডেন্ট হর্স এয়ার র্ট্রাভেলস ৪৮/এ বি বায়তুল খায়ের ১২ তলায় তার অফিস এ বিষয়ে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি সময দিয়ে অফিসে আসেননী।

ডিবি তদন্ত সূত্র বলছে, প্রতারক এজেন্সিগুলো নামে-বেনামে কাজ করছে। ঢাকার বিভিন্ন স্থানে তারা অস্থায়ী অফিস খুলে বসে। যেকোনো দেশের ভ্রমণ ও ওয়ার্কিং ভিসা প্রসেস এবং টিকিট কেটে দেয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে প্রচারণা চালায়। ইনডিভিজ্যুয়াল অথবা সাব এজেন্টের কাছে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, আফ্রিকার দেশগুলোর যাত্রীদের কাছে টিকিট আগাম বিক্রি করে। টিকিটের মূল্যের সমপরিমাণ টাকা দেয়ার পরে তারা যাত্রীদের ই-টিকিটের একটি কপি দেয়। যেখানে যাত্রীর নাম, জন্ম তারিখ, পাসপোর্ট নম্বর, ট্রানজিটসহ সবকিছু উল্লেখ থাকে। যাত্রী তখন ই-টিকিট নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকে। ভ্রমণের নির্ধারিত তারিখে যাত্রী পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ব্যাগ, লাগেজসহ বিমানবন্দরে হাজির হন। কিন্তু বোডিং পাসে গিয়ে ধরা খান। সংশ্লিষ্ট বিমানের কর্মকর্তারা টিকিট চেক করে জানিয়ে দেন, টিকিটের বুকিং ঠিক ছিল কিন্তু বুকিং দেয়ার পরে টিকিটের টাকা রিফান্ড করে নেয়া হয়েছে। ওই টিকিটের আর কোনো বৈধতা নেই।
ডিবি জানায়, এই কথা শোনার পর যাত্রীদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। কারণ, ওই যাত্রীদের কেউ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবে। কেউ তার ব্যবসা বা চাকরি সামলাতে যাবে। কেউবা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিশন বা ক্লাসে যোগ দিবে। এভাবে প্রতিনিয়ত আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি সময় নষ্ট ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। প্রতারণার শিকার অনেক যাত্রী মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙে পড়েন। উপায়ন্তর না পেয়ে যাত্রীরা ওই এজেন্সি বা মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তখন এজেন্সি বিভিন্নভাবে ওই যাত্রীকে বুঝ দিয়ে ফের টিকিট কেটে দেয়ার আশ্বাস দেয়। এজন্য আবার ৫০ থেকে ১৫০ ডলার পর্যন্ত ফ্রি নেয়া হয়। টাকা নেয়ার পরও দ্বিতীয়বার যে টিকিট দেয়া হয় যাত্রীরা বিমানবন্দরে যাওয়ার পর সেটিও ভুয়া টিকিট বলে প্রমাণিত হয়। যাত্রীরা তখন আরও হতাশার মধ্যে পড়ে যান। তখন যাত্রীদের চাপে পড়ে একটা পর্যায়ে এজেন্সির লোকেরা মোবাইল ও অফিস বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যায়।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, বিদেশ যাত্রীদের টিকিট নিয়ে নতুন এক প্রতারণা শুরু হয়েছে। আগাম টিকিট কেটে দিয়ে আবার টাকা রিফান্ড করছে কিছু এজেন্সি। যেসব এজেন্সি এরকম করছে তাদেরকে শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, এই এজেন্সিগুলোর সঙ্গে যারা কাজ করে সেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের দুর্দশা লাঘব করার জন্য কিছু প্রো-এক্টিভ কাজ করতে পারে। প্রতারকদের সমূলে নির্মূল করতে না পারলেও তাদের লাঘামহীন লোভকে কিছুটা কমানো যায়।
এসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্সি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও এয়ার স্পিড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, কিছু অবৈধ প্রতিষ্ঠান ও কিছু প্রতারক বিভিন্ন এজেন্সির কাছ থেকে টিকিট বুকিং করে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেয়। অনেক সময় কম্পিউটার দিয়ে টিকিট বানিয়ে যাত্রীদেরকে দেয়। এক্ষেত্রে যাত্রীরা প্রতারিত হচ্ছেন। এ ধরনের প্রতারণার অভিযোগ আমাদের কাছেও আসে। আমরা মন্ত্রণালয়কে বিভিন্ন সময় বলেছি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। মন্ত্রণালয় যদি ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে সারা বাংলাদেশে অভিযান চালায় তবে অনেক প্রতিষ্ঠান ধরা খাবে। ম্যাজিস্ট্রেটরা যেসব প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স পাবে না তাদের শাস্তি দিবে। কারণ ট্রাভেল এজেন্সি আইন আছে। এই আইনের আওতায় শাস্তির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে করে প্রতারিত ও হয়রানি হওয়া থেকে মানুষ বেঁচে যাবে। আর যাত্রীদের সতর্ক হতে হবে।

 

language Change
সংবাদ শিরোনাম