তারিখ লোড হচ্ছে...

প্রতারণা ও ব্ল্যাকমেইলে জড়িত তানিয়া খানম ছনিয়া

স্টাফ রিপোর্টার:

টিকটকার তানিয়া খানম ছনিয়া ওরফে মৌ খান জুঁইয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল ও দেহ ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, তানিয়া নিজেকে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে পুরুষদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বিয়ে করেন এবং পরে অর্থ-সম্পদ হাতিয়ে পালিয়ে যান।

ভুক্তভোগী মো. আসাদুজ্জামান নাহিদ অভিযোগ করে বলেন, তানিয়া তাকে ব্ল্যাকমেইল করে ২৩টি দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং ১৫ মাসে তার ব্যবসা ও সম্পদ দখল করে নেন। পরে বিনা কারণে তালাক দিয়ে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তানিয়া নাহিদের বাসা থেকে স্বর্ণালঙ্কারসহ মূল্যবান জিনিসপত্রও চুরি করে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনকি, গুলশানের একটি সিসা বারে ধরা পড়ার পর গ্রামবাসীর মধ্যস্থতায় সমাধানের চেষ্টা করা হলেও কোনো সমাধান হয়নি।

তানিয়া খানম ছনিয়া ফরিদপুর জেলার সালথা থানার চরবলবদী গ্রামের খোকন শেখের মেয়ে। তানিয়া ঢাকায় ‘মৌ খান জুঁই’ নামে পরিচিত। সে বিভিন্ন ক্লাব ও বারে নৃত্য পরিবেশন করতেন এবং আওয়ামী লীগের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সহযোগিতায় প্রতারণা, ব্ল্যাকমেইল ও দেহ ব্যবসার মতো কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন। এমনকি বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নেন এবং সেখানে নতুন কোনো পুরুষকে ‘স্বামী’ পরিচয়ে রাখেন। মাস শেষে বাড়িওয়ালার সঙ্গে অযথা ঝগড়া করে ভাড়া না দিয়েই চলে যান। এক জায়গায় বেশি দিন অবস্থান না করে নতুন এলাকায় গিয়ে একই পদ্ধতিতে প্রতারণা চালান। তার বিরুদ্ধে গ্রামবাসীরও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হলে তাকে নিজ গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

তানিয়ার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ হলো, তিনি বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে পরে তাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দেওয়ার হুমকি দেন। এভাবে তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিক ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ করেছেন।

ভুক্তভোগীরা তানিয়ার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী আসাদুজ্জামান নাহিদ বলেন, “তানিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর পর ব্যবসা হারিয়েছি, সে আমার বাড়ি থেকে সোনা-গহনা চুরি করে নিয়ে গেছে। তানিয়া কেবল একজন প্রতারক নন, তিনি সুসংগঠিত প্রতারণা চক্রের সদস্য হতে পারে। তার গতিবিধি নজরদারি করে দ্রুত তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

এদিকে ভুক্তভোগীরা জনসাধারণকে সতর্ক করেছেন, তানিয়া খানম ছনিয়ার মতো প্রতারকের ফাঁদে যেন কেউ না পড়েন। তার সঙ্গে আর্থিক লেনদেন কিংবা সম্পর্ক গড়ার আগে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান। কেউ তার সম্পর্কে তথ্য পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাতে বলেছেন তারা।

এ বিষয়ে তানিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগের বিষয়ে প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিদের ধাপেধাপে গুনতে হয় টাকা

 

এম এইচ মুন্না :

সীমাহীন অনিয়ম এবং বিশৃঙ্খলার অপর নাম কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার ‘রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ’ কারা কর্তৃপক্ষের স্লোগান হলেও প্রকৃতপক্ষে সেখানকার দায়িত্বশীল কিছু কর্মকর্তারা নানাভাবে দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে অনিয়মের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারটিকে। কারা অভ্যন্তরে মাদক সেবন, বন্দি বেচা কেনা, জুলুম করে অন্যায় ভাবে অর্থ আদায়, ফোন কল বেচাকেনা, ক্যান্টিনে আয়ের বড় অংশ আত্মসাৎ করা , ওষুধ বেচাকেনা হাসপাতালে ভর্তির নামে মোটা অংকের অনৈতিক লেনদেন এমনকি বন্দিদের খাবারের অংশ বাইরে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতের ঘটনা অহরহ ঘটছে এ কারাগারে। সম্প্রতি কারাগার থেকে বের হওয়া একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া যায়। জানা যায় প্রথমে বন্দিরা কারাগারে প্রবেশ করলে একটু অবস্থা সম্পন্ন বন্দিদের কারাগারে মেট রাইটাররা উচ্চমূল্যে ক্রয় করে নিয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ করে। এই অর্থ সংগ্রহের জন্য তারা বন্দিকে অনেক সময় নির্যাতন করে থাকেন।

নতুন আসা বন্দিদের যেমন টাকা দিয়ে ওয়ার্ডে থাকতে হচ্ছে। তেমনি কারাগারের ক্যান্টিন থেকে খাবার কিনতে হচ্ছে চড়া দামে।
জানা যায়, কারাগারের ভিতরে এক কাপ চা বাহিরের চেয়ে ভিতরে দুই গুণ বেশি টাকা বিক্রি করা হয়। প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার কাপ চা বিক্রি হলেও কতৃপক্ষ প্রতিমাসে ২হাজার থেকে ২২শ কাপের হিসাব নিয়ে মোটা অংকের টাকা আত্মসাৎ করে থাকেন। এছাড়া ভিতর ক্যান্টিনে মাছ মাংস, সিঙ্গারা, সবজি তরকারি, ফলমূল সহ আরো অনেক কিছু বিক্রি হয়। এছাড়া অভ্যন্তরে বানানো অনেক খাবার বাইরের ক্যান্টিনে বিক্রি করা হয়। এগুলো বিক্রি করে প্রকৃতি আয় গোপন করে সরকারি হিসাবে দেখানো হয়। এগুলো কারা কর্মকর্তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেয়।

সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে নিম্নমানের খাবার খাওয়ার কারণে অনেক বন্দি সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ভাত খায় না। তারা কারাগারের নিজেদের পছন্দের খাবার বাধ্য হয়েই বেশি দামে কিনে খায়। তাদের কাছে খাবার বিক্রি করে ভালো টাকা আয় হয়। এছাড়া তাদের জন্য বরাদ্দকৃত বেঁচে যাওয়া সরকারি খাবার যেমন চাল, ডাল, তেলসহ অনন্য খাদ্য সামগ্রী কখনোই কারা কর্তৃপক্ষ সব কারাগারের সরকারি হিসাবে প্রদর্শন করে না।
সাধারণত আসামিরা মামলায় হাজিরা দিতে গেলে লোকজনের সাথে যোগাযোগ করে ইয়াবা সংগ্রহ করে। নিজেরা সেবন করে এবং অন্যদেরকে অর্থের বিনিময় প্রদান করে কারাগারে ভিতরে মাদকের ব্যবসা করে।

অনেক কর্মচারী কারাগারের বাইরে থেকে গাঁজা ও ইয়াবা সরবরাহ করে মাদকের ব্যবসা করে থাকে।
এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার জেলার মোহাম্মদ মাহবুবুল ইসলাম কে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম