জবিয়ান জামালপুর ফোরাম কর্তৃক বার্ষিক বনভোজন গজনী অবকাশে অনুষ্ঠিত

উম্মে রাহনুমা ,জবি প্রতিনিধি:

জবিয়ান জামালপুর ফোরামের বার্ষিক বনভোজন ২০২৪ শেরপুর জেলার গজনী অবকাশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এটি এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সাবেক শিক্ষার্থীরা(জবিয়ান) সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা হিসেবে বা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। জামালপুর জেলার সাবেক জবিয়ান ভাইদের একান্ত প্রচেষ্টায় জামালপুরে অবস্থানরত সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রিতি বৃদ্ধি করতে সেই ২০২০ সাল থেকে জবিয়ান জামালপুর ফোরাম কাজ করে আসছে।

বনভোজনের জন্য সকাল সাড়ে সাতটায় জামালপুরের পাঁচ রাস্তা থেকে বাস গজনী অবকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। দিনব্যাপী এ আয়োজনে ছিল বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, লটারি এবং স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা। দুপুরে ঐতিহ্যবাহী মিল্লিভাত পরিবেশন করা হয়, যা অতিথিদের বিশেষভাবে মুগ্ধ করে।

বনভোজনে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। হাসি-আনন্দে মুখরিত পরিবেশে একে অপরের সঙ্গে স্মৃতিচারণ, খুনসুটি আর গল্পে সময় কেটেছে। ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিল চূড়ান্ত উচ্ছ্বাস, আর বিজয়ীদের মুখে ঝরে পড়ছিল খুশির ঝলক। দিনশেষে ফোরামের সদস্যরা আগামীতে আরও বড় পরিসরে এ ধরনের আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফোরামের আহ্বায়ক ও হযরত শাহজামাল (র.) জেনারেল হাসপাতালের এমডি জনাব আশরাফুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের এই মিলনমেলার মাধ্যমে একটি আন্তরিকতা ও সুসম্পর্ক তৈরি হবে। আমরা সবাই একত্রে একটি পরিবারের মতো পথ চলতে চাই।”
জবিস্থ জামালপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের বর্তমান সভাপতি হারুন বলেন, “জামালপুর আমার অস্তিত্ব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমার পরিচয়। সুতরাং জবিয়ান জামালপুর আমার অনুভূতির সাথে মিশে আছে।সাবেক জবিয়ান ভাইরা আমাদের প্রেরণার উৎস।তাদের প্রেরণা ও সহানুভূতি নিয়ে জামালপুর জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদ কে আরো এগিয়ে নিব, ইনশাআল্লাহ।

পচন ধরেছে ভালুকের শরীরে, সিলগালা সেই চিড়িয়াখানা

পচন ধরেছে ভালুকের শরীরে, সিলগালা সেই চিড়িয়াখানা

স্টাফ রিপোর্টার:

ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলালের মালিকানাধীন অবৈধ চিড়িয়াখানা সিলগালা করেছে বনবিভাগ। এ সময় বিভিন্ন প্রজাতির ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

সম্প্রতি চিড়িয়াখানার ভেতরে থাকা একটি ভালুকের শরীরে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঘটনাটি জানতে পেরে অভিযান পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর জয়নুল আবেদীন উদ্যানের অবৈধ মিনি চিড়িয়াখানায় অভিযান চালিয়ে অসুস্থ ভালুকসহ সব বণ্যপ্রাণী জব্দ করা হয়।

জব্দ করা প্রাণীর মধ্যে রয়েছে- একটি অজগর সাপ, ২টি ময়ুর, ৫টি হরিণ, ২টি মদনটাক পাখি, ১টি কুমির, ২টি ভাল্লুক, ১টি সজারু, ৫টি বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।

এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা। তিনি জানান, বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, দখলে রাখা, প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু এখানে অবৈধভাবে চিড়িয়াখানা পরিচালানা করে বন্যপ্রাণী বন্দি রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় ২৩টি বন্যপ্রাণী জব্দ করা হয়। জব্দকৃত এই প্রাণীগুলোকে গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হবে। তবে এর মধ্যে কিছু প্রাণীকে ১৫ দিন কোয়ারেন্টিনে রেখে স্বাভাবিক বণ্য পরিবেশে অবমুক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।

বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, আইন অমান্য করে ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে এই চিড়িয়াখানাটি গড়ে তোলা হয়েছিল। খবর পেয়ে প্রাণীগুলোকে উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে একটি ভালুক খুব অসুস্থ, তার শরীরে পচন ধরেছে। আহত এই ভালুকটির চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ এই চিড়িয়াখানাটি তৎকালীন মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটুর অনুসারী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি কর্পোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলাল পরিচালনা করে আসছিল।

তবে একটি সূত্রের দাবি, এই চিড়িয়াখানাটি ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন থেকে নামমাত্র মূল্যে ইজারা নিয়েছিলেন ফুলবাড়িয়ার সংসদ সদস্যের পুত্র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুল হক সেলিম। পরে তার কাছ থেকে ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলালের মালিকানা নিয়ে পরিচালনা করে আসছিলেন। তখন থেকে এই চিড়িয়াখানাতে বিভিন্ন প্রাণীকে খাচায় বন্দি করে টিকিট বিক্রির মাধ্যমে প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি রেস্টুরেন্ট এবং বিভিন্ন রাইড স্থাপনের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবসার প্রসার ঘটানো হয়।

তবে বিগত ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তারা গা ঢাকা দিলে চিড়িয়াখানাটির দায়িত্ব নেন নগরীর ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুন। তবে শুরু থেকেই চিড়িয়াখানটির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং কর্মীদের দুর্ব্যবহার নিয়ে অভিযোগ ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলে কিছু বলতে পারতো না। তবে সম্প্রতি চিড়িয়াখানার ভেতরে থাকা একটি ভালুকের শরীরে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়ালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ঘটনাটি জানতে পেরে অভিযান পরিচালনা করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মিনি চিড়িয়াখানার বর্তমান পরিচালক মিজানুর রহমান মামুন বলেন, মানুষের চিত্ত বিনোদনের কথা চিন্তা করে নামমাত্র দর্শনার্থী বিনিময় মূল্যে চিড়িয়াখানা পরিচালনা করা হচ্ছে। আমরা নিয়মিত প্রাণীদের প্রতি যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করি। তবে সম্প্রতি একটি ভালুক আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে অসুস্থ হলে তার পায়ে পচন ধরে এবং ঘা হয়ে যায়। বিষয়টি টের পেয়ে একজন ভেটেরিনারি চিকিৎসকের মাধ্যমে মাধ্যমে ভালুকটিকে সুস্থ করার চেষ্টা চলছিল।

বর্তমানে এই চিড়িয়াখানার মালিক ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের ৪নং ওয়ার্ড কমিশনার মাহবুবুর রহমান দুলাল একটি মামলায় কারাবন্দি থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম