তারিখ লোড হচ্ছে...

টিকটক করতে গিয়ে ছয় মাসে দেশে ১০ তরুণের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার॥

চলতি বছরের ছয় মাসে টিকটক করতে গিয়ে ১০ তরুণ-তরুণী প্রাণ হারিয়েছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। পাশাপাশি টিকটকের কুখ্যাত ‘ব্ল্যাক আউট চ্যালেঞ্জ’-এ অংশ নিতে গিয়ে দেশের কেউ মারা গেছে কিনা, তা তদন্তের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। সংগঠনটি বলছে, গত কয়েক বছর ধরে ছোট পরিসরে ভিডিও তৈরির চীনা প্ল্যাটফর্ম টিকটকের অপব্যবহার এতটা বেড়েছে যে, তা তরুণ-তরুণীদের জন্য মৃত্যুফাঁদ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

সংবাদমাধ্যম দ্য ভার্জ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ব্ল্যাক আউট চ্যালেঞ্জে টিকটক ব্যবহারকারীদের নিজের বেল্ট, টাই, জুতার ফিতা বা অনুরূপ কিছু দিয়ে শ্বাসরোধ করতে উৎসাহিত করা হয়। এই চ্যালেঞ্জ জিততে বেশিক্ষণ শ্বাসরোধ করে থাকতে গিয়ে অনেকেই মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে। অভিভাবকরা দাবি করেছেন, টিকটকের ভয়ংকর ‘ব্ল্যাক আউট চ্যালেঞ্জ’ গ্রহণ করে তাঁদের সন্তানরা শ্বাসরোধে মারা গেছে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, অস্ট্রিয়ায় ব্ল্যাক আউট চ্যালেঞ্জে অংশ নিয়ে কিশোর-কিশোরীদের মৃত্যুর অভিযোগ এনে টিকটকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশে সাধারণত টিকটকে ভাইরাল হতে ঝুঁকিপূর্ণ ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে তরুণ-তরুণীরা প্রাণ হারাচ্ছে। নারী ধর্ষণ, পাচারসহ টিকটককেন্দ্রিক অপরাধ প্রবণতাও বেড়েছে। তবে ‘ব্ল্যাক আউট চ্যালেঞ্জ’-এ কেউ মারা গেছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখতে হবে। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে টিকটককে জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আসছি। এ বিষয়ে এরই মধ্যে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করা হয়েছে। তবে প্ল্যাটফর্মটিকে জবাবদিহি নিশ্চিতে সরকারের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না।

এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগোযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, টিকটকের সঙ্গে আমার এটা নিয়ে কথা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, ব্ল্যাক আউট চ্যালেঞ্জ তাদের কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। এটা ব্যবহারকারীদের কেউ কেউ নিজেরাই তৈরি করে থাকতে পারে। তাদের প্ল্যাটফর্মে এমন কিছু থাকলে আমি সেটি বন্ধ করতে বলেছি। টিকটক কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে, টিকটকে কেউ এটা আর করতে পারবে না। টিকটককে এখন আমরা নিয়মিত মনিটরিংয়ের মধ্যে রেখেছি। তারা এখন প্রতিদিনই আমাদের কাছে প্রতিবেদন দিচ্ছে। আমরা আশা করছি, টিকটক তরুণদের সুরক্ষার পাশাপাশি বিধিবিধান মেনেই কাজ করবে।

 

 

ফের চাঙ্গা ক্যাসিনো জুয়া নিয়ন্ত্রণে কাউন্সিলর শামীম ?

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে রাজধানীর ক্লাবপাড়ার সব জুয়ার আস্তানা তছনছ হলেও বছর ঘুরতেই ফের চাঙ্গা হয়ে উঠেছে এ চক্র। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর এ চক্রের মাফিয়ারা অনেকেই থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতে গা ঢাকা দিলেও চক্রটির একাধিক সদস্য রাজধানীতে চালিয়ে আসছে জুয়ার আসর ।

জুয়ার বোর্ড পরিচালনকারী একাধিক ব্যক্তি ও বিপুলসংখ্যক জুয়ারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্লাবপাড়ায় জুয়া বন্ধ থাকলেও রাজধানীতে এ খেলা মোটেই থেমে নেই। ক্লাবগুলো বন্ধ থাকলেও ক্যাসিনো খালেদ মাহমুদের সহযোগী সোহেল স্পোটিং ক্লাবের জুয়ার আসর গুলো বন্ধ হলে

কৌশল অবলম্বন করে খেলাঘর সমাজ কল্যান সমিতি ভবনের ২য় তলায় চালিয়ে আসছে জমজমাট জুয়ার আসর। জুয়া নিয়ন্ত্রণ করা জন্য ডিএনসিসি কাউন্সিলর সহ একাধিক ব্যাক্তি নিয়ে গড়ে তুলেছেন নতুন সিন্ডিকেট ।

সিটিজি লাইভের অপরাধ অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্যাসিনো সোহেল জেল থেকে বের হয়ে এসে কিছুদিন গাঢাকা দেন বর্তমানে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কিছু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে হাত করে আবারো ফিরে আসে ক্যাসিনো জুয়া ব্যবসায়।

প্রথমে ক্যাসিনো সোহেল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জুয়ার বোর্ড বসিয়ে সুবিধা করতে না পারলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় ডিএনসিসি ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম হাসান, ক্যাসিনো সোহেল, টিটু, বিল্লাল ও রাজ্জাক সহ একাধিক ব্যাক্তি নিয়ে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট বর্তমানে তেজগাঁও থানাধীন তেজকুনি পাড়ার এই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য কাউন্সিলর শামীম নিয়ন্ত্রণাধীন খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি কার্যালয়ের ২য় তলায় বেশ কয়েকটি রুমে রাতভর চালিয়ে আসছে ক্যাসিনো, জুয়া এবং মাদক সেবন। এই সমিতির সভাপতি কাউন্সিলর শামীম তাই নির্বিঘ্নে চালিয়ে আসছে জুয়ার আসরটি ।
এই জুয়ার আসরে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হয়। কাটাকাটি, তিনকার্ড, ফ্লাস, গেমবোর্ড, গেম, হাইডু ও হাজারি খেলা চলছে এখানে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও থানা পুলিশ নিয়মিত মোটা অংকের অর্থ নিয়ে থাকে। বর্তমানে খেলাঘর সমিতি কার্যালয় জুয়ারীদের কাছে নিরাপদ আস্তানা হিসেবে মনে করেন জুয়ারীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তেজকুনি পাড়া এলাকার একাধিক স্থানীয়দের অভিযোগ খেলাঘর সমাজ কল্যান সমিতি খেলাধুলা ও সামাজিক মূলক কর্মকাণ্ড করে থাকতো কাউন্সিলর শামীম হাসান  সভাপতি হ‌ওয়ার পর থেকেই মাদক আর জুয়ার আখড়ায় পরিণত হয়েছে আর এই জুয়া ও মাদকের টাকার ভাগিদার রয়েছেন অনেকেই। প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা টাকার ভাগ পেয়ে থাকেন আর সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন ডিএনসিসি ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম হাসান ।

একাধিক সূত্র জানায়,

মতিঝিল ক্লাব পাড়ায় ক্যাসিনো জুয়া পরিচালনা করে একাধিক ফ্ল্যাট ও গাড়ির মালিক হয়েছেন ক্যাসিনো সোহেল। রয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিজ নামে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন। প্রতিটি ফ্ল্যাটের মূল্য তিন থেকে চার কোটি টাকা করে। এ ছাড়া ক্যাসিনো জুয়ার টাকায় তিনি একটি হাউজিং কোম্পানি খুলে সেখানে বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ১০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এখন শত কোটি টাকার মালিক ক্যাসিনো সোহেল।

এবিষয়ে আইন সহায়তা কেন্দ্রের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিষ্টার শাহীন আলম জানতে চাইলে তিনি সিটিজি লাইভ”কে বলেন,আইনের দৃষ্টিতে জুয়া খেলা শুধু একটিমাত্র শাস্তি মূলক অপরাধ হলেও এটিকে ঘিরে আরও অনেক অপরাধের জন্ম হচ্ছে। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি থেকে শুরু করে পারিবারিক সহিংসতা এবং সামাজিক অস্থিরতা তৈরির নেপথ্যে জুয়া অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।

এছাড়াও তিনি আরো বলেন

সম্প্রতি সময়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ বলেন ,অপরাধ ধনী ও দরিদ্রের ক্ষেত্রে সমান। সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে- কারও সঙ্গে বৈষম্য করা যাবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টি মনে রাখতে হবে। আদালত আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের মাধ্যমে শাস্তির মেয়াদ বাড়ানো উচিত। আদালত প্রত্যাশা করেন, সরকার এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে।মহানগর এলাকায় জুয়া খেলার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ দেন স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, সহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলা বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এখন যদি কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এই আদেশ পালন না করে তার নিজ স্বার্থ হাসিল করার জন্য জুয়ার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে থাকে তাহলে তার স্বার্থের জন্য দেশের সর্বোচ্চ বিচার বিভাগকে অপমান করেছেন ।

এ ব্যাপারে তেজগাঁও থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে অবশ্যই জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে এবিষয়ে জানতে খেলাঘর মাঠের সভাপতি স্থানীয় কাউন্সিলর শামীম হাসান এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম