তারিখ লোড হচ্ছে...

বাউফলে শিক্ষক-সাংবাদিকসহ ৫ জনকে কুপিয়ে জখম।

মুন্নি বেগম, পটুয়াখালী জেলার প্রতিনিধি।

 

পটুয়াখালীর বাউফলে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক সাংবাদিক ও দুই নারী শিক্ষকসহ পাঁচ ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার ( ৯ জানুয়ারি ) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার দাশপাড়া ইউনিয়নের খাজুরবাড়িয়া এলাকায় এ  ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিরা হলেন- দৈনিক খবরপত্রের বাউফল উপজেলা প্রতিনিধি এইচএম বাবলু (৪২), পূর্ব দাশপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শাকিলা জাহান ওরফে তানজিলা (৩৫), মধ্য কর্পূরকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে তুলি (৩৮),মোছা.ঝুমুর  আক্তার (৩০), ও সাইদুর রহমান ওরফে সোহেল (৩৫)। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত শাকিলা জাহানকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যদের বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতদের স্বজন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দাশপাড়া ইউনিয়নের খাজুরবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সামসুল হক ওরফে সোনা গাজীর ছেলে মো.শাহ আলম গাজীর নেতৃত্বে ৩০-৪০জনের একটি দল ওই হামলা চালিয়েছে।

আহত সাংবাদিক এইচএম বাবলু অভিযোগ করেছেন,খাজুরবাড়িয়া এলাকার ৬৩৪ নম্বর খতিয়ানের পৈত্রিক সূত্রে তারা ২ একর ৪৯ শতাংশ জমির মালিক। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শাহ আলম গাজী, তার ভাই মো.মনির গাজী ও চাচাতো ভাই মো.মশিউর রহমান ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে তাদের জমি জোড়পূর্বক দখল করে চাষাবাদ করেন।আওয়ামী সরকার পতনের পর তাদের (বাবলু) জমি দখলমুক্ত করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা চান। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির প্রভাবে শাহ আলম গাজী ও তাদের লোকজন ওই জমি জোড়পূর্বক দখলে রাখেন। ঘটনার দিন তারা (বাবলু) জমির কাছে গেলে শাহ আলম গাজীর নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেন এবং তাদেরকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করেন।

এ ঘটনার পর শাহ আলম গাজী গাঢাকা দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানার জন্য শাহ আলম গাজীর মুঠোফোনে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার সঙ্গে শাহ আলম গাজীর সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেন।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.কামাল হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে।এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

সবা:স:জু- ৭৬২/২৫

বরগুনায় প্রতারণার রাজা হারুন অবশেষে পুলিশের জালে

বরগুনা প্রতিনিধি:

“অপরের জন্য গর্ত খুঁড়লে সেই গর্তে নিজেকেই পড়তে হয়” বহুল প্রচারিত এই প্রবাদটিই যেন সত্য হয়েছে বরগুনার প্রতারক মোশাররফ হোসেন হারুনের বেলায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে অপরকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই এখন জেল হাজতে।

আজ ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল দশটায় এলাকাবাসী প্রতারক হারুনকে আটক করে বরগুনা সদর থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। বিকেল তিনটার দিকে পুলিশ তাকে কোর্টে প্রেরণ করেন।

বরগুনা সদরের আয়লা কলেজের গ্রন্থাগারিক মোশাররফ হোসেন হারুন তার নিজ বাড়িতে ড. এম. এ. ওয়াজেদ মিয়া প্রতিবন্ধী (অটিজম) বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। পলাতক ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামীর নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় বিগত সরকারের আমলে কেউই ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। ৫ ই আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পরে প্রতারণার শিকার সকল ভুক্তভোগী টাকা চাইলে তিনি উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন।

ওয়াজেদ মিয়া অটিজম বিদ্যালয় এর পরিচালনা কমিটির সদস্য শাহ আলম হাওলাদার গরিব শিক্ষকদের থেকে নেয়া ঘুষের টাকা ফেরত দিতে বললে প্রতারক হারুন তার বিরুদ্ধে বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে মামলার তদন্তের নির্দেশ দেন। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিয়া বরগুনা থেকে বদলি হলে তিনি সেই সুযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ভুয়া তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করে আদালতে জমা দেন। আসামি শাহ আলম হাওলাদার তদন্ত প্রতিবেদনের সত্যতা যাচাই এর আবেদন করলে আদালত তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে স্বাক্ষর যাচাইয়ের জন্য পাঠালে এটি ভুয়া প্রমাণিত হয় এবং এই জালিয়াতির জন্য ফৌজদারী কার্যবিধিতে মামলা করতে আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে আমলি আদালত বরগুনা সদর এর বেঞ্চ সরকারী নাদিরা বাদী হয়ে বরগুনা সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।

মামলার এজাহার হতে জানা যায়, আসামী মোঃ মোশারেফ হোসেন বাদী হইয়া মোঃ শাহ আলমকে আসামী করে তার বিরুদ্ধে বরগুনা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ইং-০৯/১২/২০২৪ তারিখ একটি মামলা দায়ের করেন। যাহার নম্বর সি.আর ১৭২০/২৪ (বর), ধারাঃ ৪০৬/৪২০ পেনাল কোড। বিজ্ঞ আদালত উক্ত মামলাটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, বরগুনাকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। পরবর্তীতে মামলার ধার্য্য তারিখ অর্থাৎ মামলার ঘটনার দিন ইং-০৬/০২/২৫ ইং তারিখ সকাল আনুমানিক ১০.৩০ ঘটিকার সময় ঘটনাস্থল জনাব শেখ আনিসুজ্জামান, বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমলী আদালত, বরগুনা সদর, বরগুনা এঁর এজলাসে অত্র মামলার নথি উপস্থাপিত হয় এবং তৎপরবর্তী ধার্য্য তারিখ ২৩/৬/২৫ ইং তারিখ জনাব মো: মনিরুজ্জামান বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বরগুনা নথি পর্যালোচনান্তে আদেশ প্রদান করেন যে, অত্র মামলায় গত ইং-০৬/০২/২৫ তারিখে মোঃ শামিম মিঞা উপজেলা নির্বাহী । অফিসার বরগুনা সদর, বরগুনা এর স্বাক্ষরিত এক তদন্ত প্রতিবেদন যাতে হাতে লেখা সূত্র উপ/নি/বর-১১০-১৯-১-২৫ ইং এবং তিন ফর্দ সাক্ষীর জবানবন্দী ও কতক ফটোকপি দাখিল করা হয়। উক্ত প্রতিবেদন কোন মাধ্যমে – প্রাপ্ত হয়ে নথি ফাইলে এসেছে তা উল্লেখ নাই। বিগত ১২/০৩/২৫ ইং তারিখ ৩নং আদেশে উক্ত তদন্ত ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১৩/০৩/২০২৫ ইং তারিখ আসামী মোঃ শাহ আলম হাওলাদার এর আবেদনের প্রেক্ষিতে অত্র আদালতে নথি সামিলে থাকা তদন্ত প্রতিবেদনটি তদন্তকারী কর্মকর্তা কর্তৃক স্বাক্ষরিত কিনা সেই সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা লিখিতভাবে জানান যে, সূত্র উপ/নি/বর-১১০-১৯-১-২৫ ইং “অত্র মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে আদালতে দাখিলকৃত গত ১৯/০১/২৫ ইং তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে মোঃ শামিম মিঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাতিবান্দা, লালমনিরহাট ও পূর্বতন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরগুনা সদর, বরগুনা অবগত নয়। প্রতিবেদনে স্বাক্ষরটি তার নয় বরং জালিয়াতির মাধ্যমে স্বাক্ষর করা হইয়াছে।”

এমতাবস্থায় অত্র আদালতের নিকট প্রতিয়মান হয় যে, অত্র মামলার বাদী কিংবা তৃতীয় কোন পক্ষ অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ শামিম মিঞা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাতিবান্দা, লালমনিরহাট ও পূর্বতন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরগুনা সদর বরগুনা এর স্বাক্ষর জাল করে অত্র আদলতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। যা ফৌজদারী অপরাধ। উক্ত বিষয়ে পূর্নাঙ্গ তদন্তের আবশ্যকতা রয়েছে বিধায় অত্র আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে অত্র আদেশ মোতাবেক অত্র মামলার বাদী ও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে এজাহার দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হইল। আসামী মোঃ মোশারেফ হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আসামীরা পরস্পর যোগসাজসে বরগুনা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব, মোঃ শামিম মিঞা এর স্বাক্ষর জাল জালিয়াতি ভাবে সৃষ্টি করিয়া প্রতিবেদন তৈরী করিয়া আদালতে উপস্থাপন করিয়াছে। যাহা পেনাল কোড আইনের ৪৭১ ধারার অপরাধ।

প্রতারক মোশাররফ হোসেন হারুন এর বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা সহ অনেকগুলো মামলা বিচারাধীন আছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম