তারিখ লোড হচ্ছে...

নারায়ণগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে গুলি করে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানাধিন কোতোয়ালেরবাগ এলাকায় পাকিস্তানি খাদের সামনে স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন হোসাইনকে গুলি করে হত্যা করেছে দুবৃর্ত্তরা।

আজ শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে।

জানা গেছে, নিহত মামুন হোসাইন পাকিস্তানি খাদের বাসিন্দা সমন আলী বেপারীর ছেলে। তিনি নিজ এলাকায় ইট বালু সিমেন্ট ব্যবসা করতেন।

নিহত মামুনের ইট বালু সিমেন্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আজাদ মিয়া বলেন, রাত ২টায় মামুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে হিসেব শেষ করে বাসায় চলে যান। ভোর সাড়ে চারটায় আমাদের প্রতিষ্ঠানের কাছেই একাধিক গুলির শব্দ শুনে এগিয়ে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি দুই যুবক দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। তখন মামুনের রক্তাক্ত নিথর দেহ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখি। এরপর তাকে শহরের খানপুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

আওয়ামীলীগের লোকেরা পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামীলীগের দোসররা কিছুদিন পূর্বে বিএনপিতে যোগ দেয়ার চেষ্টা করে। আমরা থানা স্বচ্ছাসেবক দল, যুবদল, শ্রমিকদল মিলে এর প্রতিবাদ জানিয়ে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করি। সেই থেকে আমাদের সাথে তাদের বিরোধ ও শত্রুতা সৃষ্টি হয়।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে গত সেপ্টেম্বরে তারা আমাকেও কুপিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিল। এর জের ধরে ভোর চারটায় কে বা কারা মামুনকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে তার বাড়ির পাশেই নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে গুলি করে হত্যা করে। আমরা হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে ন্যায়বিচার দাবি করছি।’

এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা তদন্ত করছি। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।’

 

পাঁচ বিসিএস ক্যাডারের মা সুফিয়া আক্তার হক রত্নগর্ভা পদকে ভূষিত

স্টাফ  রিপোর্টার:

কুমিল্লা যুব সমিতি কর্তৃক পাঁচ বিসিএস ক্যাডারের মা মিসেস সুফিয়া আক্তার হক কে আজ এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে রত্নগর্ভা পদকে ভূষিত করা হয়েছে।উক্ত গুণীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান রত্নগর্ভা মায়ের ছেলে মেয়েদের হাতে উক্ত সম্মাননা তুলে দেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি।

মিসেস সুফিয়া আক্তার হক কুমিল্লা জেলা মুরাদনগর থানার বাইরা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে ১৯৫৫ সালের ২৫শে ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করে। তার বাবা মৃত: তারিফুল ইসলাম সরকার ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। তখনকার দিনে মেয়েদের বিভিন্ন কারণে লেখাপড়ায় অনগ্রসরতা ছিল। বাবা এবং মা মৃত: জোবেদা খাতুনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় এবং শাসনে তিনি এইচএসসি পাশ করেন। পরবর্তীতে সাংসারিক কাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় আর লেখাপড়ায় এগুতে পারেননি। তার স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো:শহীদুল হক পেশায় একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং সাংবাদিক। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে ছিল। তার স্বামী বঙ্গবন্ধুর ডাকে যখন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে ভারতের মেলাঘরে প্রশিক্ষণ নেয়ার জন্য চলে গিয়েছিল তখন তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করেছিলেন। কারণ তখন রাজাকাররা মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের উপর চরম নির্যাতন করতো। দেশ স্বাধীন হবার পর তার স্বামী ফিরে আসলে নতুন করে তাদের জীবন শুরু হয়। একে একে তার চার ছেলে এবং তিন মেয়ে জন্মগ্রহণ করে। তার স্বামী শিক্ষকতা এবং সাংবাদিকতা নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও তিনি কিন্তু একাই তার সাত সন্তানকে লেখাপড়ায় ব্যস্ত রেখেছিলেন। নেপোলিয়ন যেরকম বলেছিলেন “তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি দেব।” মিসেস সুফিয়া আক্তার হকের জীবনে নেপোলিয়নের সেই বাণীটি অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়েছে।

আজ মিসেস সুফিয়া আক্তার হকের ছেলেমেয়েরা সমাজে সম্মানজনক পেশায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি ছেলে-মেয়ে শিক্ষায় সর্বোচ্চ ডিগ্রী অর্জন করেছে। তার বড় ছেলে মোঃ নোমানুল হক সুপ্রিম কোর্টের একজন এডভোকেট। দ্বিতীয় ছেলে মোঃ নাজমুল হক বিসিএস পররাষ্ট্র ক্যাডারের একজন সদস্য। বর্তমানে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। তৃতীয় ছেলে মোঃ নাইমুল হক বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের একজন সদস্য। বর্তমানে তিনি টুরিস্ট পুলিশের ঢাকা রিজিয়নে পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন। চতুর্থ ছেলে মোঃ নাদিমুল হক বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের একজন সদস্য। তিনি বর্তমানে তিতুমীর সরকারি কলেজে কর্মরত আছেন। বড় মেয়ে রায়হানা কলি বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের একজন সদস্য। তিনি বর্তমানে সবুজবাগ সরকারি কলেজে কর্মরত আছেন। দ্বিতীয় মেয়ে রুমানা কান্তা পেশায় একজন ডাক্তার। তিনি বর্তমানে নিউইয়র্কে একটি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন। তৃতীয় মেয়ে রোখসানা কনা বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের একজন সদস্য। তিনি বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক অধিদপ্তরে (মাউশি) গবেষণা অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।

মিসেস সুফিয়া আক্তার হকের ছেলেমেয়েরা জানান, তাদের আজকের সফলতার পিছনে বাবা-মা দুজনেরই ভূমিকা রয়েছে। তবে মায়ের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। তিনি তাদের আদর যেমন করেছিলেন তার চেয়েও বেশি ছিল তার শাসন। কখনোই কোন খারাপ কাজে তিনি তাদের প্রশ্রয় দেননি। সব সময় তাদের মানুষের মত মানুষ হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা বলতেন।

language Change
সংবাদ শিরোনাম