তারিখ লোড হচ্ছে...

গফরগাঁওয়ে শালিস বিচারকদের রায় না মেনেই বাদীর উপর হামলা ও মেরে ফেলার হুমকি 

লিমা আক্তার :ময়মনসিংহ থেকে :

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে মারপিটের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়ায় মামলার বাদীর উপর হামলা ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।  উপজেলার ভারইল পশ্চিম পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভারইল এলাকার মুঞ্জুরুল হকের সাথে জমিসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একই এলাকার মো. সাদ্দাম হোসেন, তাসলিমা খাতুন, মালা বেগম ও মো. লাল মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। গত ১২ই জানুয়ারি

সাদ্দাম গংরা মঞ্জুরুল হকের জমি দখলের উদ্দেশ্যে জমির সীমানা  তুলে ফেলে দেওয়ায় প্রতিবাদ করতে গেলে  মঞ্জুরুল হককে বেধরক মারপিট করে। পরে এ ঘটনায় তার স্ত্রী মোছাঃ শাফিয়া খাতুন বাদী হয়ে গফরগাঁও থানায় একটি লিখিত  অভিযোগ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার পরামর্শ প্রদান করেন।

এরপর থেকে সাদ্দাম গংরা মুঞ্জুরুল হকের পরিবারকে নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। পরবর্তীতে স্থানীয় নেতাকর্মী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উল্লেখিত বিষয়টি মীমাংসার উদ্দেশ্য একটি শালিস বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত বিবাদী পক্ষের লোকজন, বাদীপক্ষের পরিবারসহ এলাকার অনেকেই ছিলেন। উল্লেখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিচারকগণ মীমাংসার চেষ্টা করলেও বিবাদী পক্ষ বিচারের রায়কে অস্বীকৃতি জানায় এমনকি বাদীর উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।

তারই ধারাবাহিকতায় ১২ ফেব্রুয়ারী সন্ধায় বিবাদীরা লাঠি সুটা নিয়ে মুঞ্জুরুল হকের বাড়িতে প্রবেশ করে পরে লাল মিয়ার হুকুমে তাসলিমা ও মালা মুঞ্জুরুল হকের উপর আক্রমন করে এলোপাথাড়ি বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় মুঞ্জুরুল হকের ডাক চিৎকারে তার স্ত্রী শাফিয়া খাতুন এগিয়ে আসলে বিবাদীরা তাকে চুলের মুঠি ধরিয়া টানা হেচড়া করিয়া বেধড়ক মারপিট করে। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে আসতে থাকলে বিবাদীরা থানায় পুনরায় অভিযোগ দিলে খুন করার হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করান। এ ঘটনায় শাফিয়া খাতুন বাদী হয়ে মমতাজ উদ্দিনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন, স্ত্রী তাসলিমা খাতুন, মেয়ে মালা বেগম ও মোবারক হোসেনের ছেলে লাল মিয়াকে আসামী করে গফরগাও থানায় আরেকটি দায়ের করেন।

এ বিষয়ে শালিস বিচারক সালাম মিয়া জানান, বৈঠকে উপস্থিত নেতা নূর ইসলাম, সেলিম মিয়া,ও সাবেক মেম্বার কামরুল সহ গন্যমান্যরা বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করলেও বিবাদী পক্ষের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের জন্য সেটা সম্ভব হয়নি।শালিস বিচারকদের দেওয়া সমাধান তারা না মেনে উল্টো বাদীপক্ষকে হয়রানি করতে থানায় মিথ্যা ও কাল্পনিক অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এদিকে আবার ও আশংকা করা হচ্ছে যে  এ ঘটনায় যেকোনো সময় পুনরায় সংঘর্ষের আশংকা রয়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন  এই অসহায় পরিবার। সাদ্দাম গংদের অন্যায় অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে পারছে না। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের

কাছে ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানাচ্ছেন স্থানীয়রা।

এ বিষয়ে গফরগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ শিবিরুল ইসলাম বলেন অভিযোগ পেয়েছি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অসহায় বৃদ্ধার পাশে মানবিক পুলিশ

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি;

নেত্রকোনা সদর উপজেলাধীন আমতলা ইউনিয়নের ঝগড়াকান্দা গ্রামের ফাতেমা আক্তার বয়স আনুমানিক ৭৫। ঝড়, বৃষ্টি,শীত উপেক্ষা করেই বিগত ১৩ বছর ধরে (আমতলা-নেত্রকোনা) সড়কের পাশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন অসহায় ৭৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা। পথচারীদের দেওয়া খাবার ও অর্থে উপর নির্ভর করে কোনরকম ভাবে বেঁচে আছেন তিনি।

সম্প্রতি পথের ধারে জীবন সংগ্রামের টিকে থাকা ফাতেমা আক্তারকে নিয়ে (গত ১৪ নভেম্বর/২০২৩) তারিখে (৭১ টিভি) নিউজ চ্যানেলের মাধ্যমে এ অসহায় বৃদ্ধার জীবন নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফয়েজ আহমেদ এর দৃষ্টিগোচর হয়।

জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফয়েজ আহমেদ বিষয়টি তাৎক্ষণিক নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হককে তদন্ত করে সমাধানের নির্দেশ প্রদান করেন। ওসি মোহাম্মদ লুৎফুল হক পুলিশ সুপরের নির্দেশ মাতাবেক তাৎক্ষণিক (৫নং আমতলা ইউনিয়ন) বিট অফিসার মোঃ সোহেল রানা’কে তদন্তের নির্দেশ দেন।

তদন্তে বিট অফিসারের দেওয়া তথ্য সূত্রে জানাযায়, ৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা ফাতেমা আক্তারের বাড়ি উপজেলার বায়রাউড়া গ্রামে। ছোট বেলায় মা’কে হারানোর পর তার তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তখন সৎ মায়ের কাছে জায়গা হয়নি ফাতেমা ও তার বোনের। বাড়ি থেকে বেড়িয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবন চলতো তাদের। কিছুদিন পর ফাতেমা তার ছোটবোনকে ঝগড়াকান্দা গ্রামে বিয়ে দিয়ে তিনিও সেখানে থেকে যান।

এক সময় তার বোনজামাই সহ অন্য আত্মীয়রা ফাতেমার কাছে টাকা ধার নেয়। টাকা নেওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি ভিন্ন হয়ে যায়, ফাতেমা তার নিজের পাওনা টাকা চাইতে গেলে মারধর করতো তার আত্মীয়স্বজনেরা যে তথ্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তায় বিভিন্ন জনের কাছ থেকে ৬৩০০০ (তেষট্টি) হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

গত (৬ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ লুৎফুল হক নিজে অসহায় বৃদ্ধা ফাতেমা আক্তারে কাছে গিয়ে উদ্ধারকৃত ৬৩০০০(তেষট্টি) হাজার টাকা বুঝিয়ে দেন। টাকা হস্তান্তরের সময় পুলিশ প্রশাসনের সাথে উপস্থিত ছিলেন, স্বাবলম্বী সংস্থার কোহিনুর আক্তার এবং একাত্তর টিভির প্রতিনিধি সুব্রত সাহা সুমনসহ এলাকার স্থানীয় লোকজন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম