ঘুষ না দিলে সিলগালা হুমকি  কর্পোরেশন কর্মকর্তা হারুন, সহযোগিতায় কথিত আওয়ামী লীগ নেতা জাফর

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চাঁদা নেওয়ায় ডিএমপি কমিশনার বরাবর অভিযোগ হারুন ও জাফরের নামে ।

মাসিক মিটিংয়ে নির্ধারণ হয় মাসিক চাঁদার হার সিটি কর্পোরেশনের হারুন ও হলুদ সাংবাদিক জাফর । রাজধানীর গুলশান-বনানী এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক স্পা সেন্টার রয়েছে। অভিযোগ আছে, এসব সেন্টার পুলিশ-সাংবাদিকসহ রাজনৈতিক নেতাদের টাকা দিয়ে স্পার আড়ালে চালায় অনৈতিক কাজ। স্পা সেন্টারের ধরনভেদে প্রতি মাসে ৪০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার বা তারও অধিক টাকা চাঁদা দিতে হয়। ফলে ওইসব স্পা সেন্টারের ভেতরে কী হয়, তা নিয়ে আর প্রশ্ন ওঠে না।

তবে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপকমিশনারের (ডিসি) ‘নাম ভাঙিয়ে’ চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হলুদ সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া জাফর নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার বরাবর একটি অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।

গুলশান-বনানীসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য অবৈধ স্পা সেন্টার। বাইরে নাম হেয়ার কাটিং সেলুন, বিউটি পার্লার থাকলেও এসবের ভেতরে চলছে জমজমাট ‘দেহব্যবসা’ ও মাদক কারবার। আবার এ অনৈতিক কাজগুলো সাপোর্ট দিচ্ছে হলুদ সাংবাদিক জাফর, সিটি কর্পোরেশনের হারুন

অবশ্য এর বিনিময়ে তারা বড় অঙ্কের চাঁদা আাদায় করছেন স্পা সেন্টারের মালিকদের কাছ থেকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গুলশান-বনানী এলাকায় প্রতি মাসে প্রায় ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা চাঁদার বাণিজ্য হয় স্পা সেন্টার ঘিরে। প্রতিটি স্পা সেন্টারে মাসিক মিটিংয়ের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয় মাসিক চাঁদার হার। পরে ভাগ করে দেওয়া হয় কে কত পাবে সিটি কর্পোরেশন হারুন কত আর হলুদ সাংবাদিক জাফর কত ।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক স্পা মালিক বলেন, মাসে পুলিশকে দিতে হয় প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা। এরপর হলুদ সাংবাদিক জাফরকে দিতে হয় ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা, রাজনৈতিক দল, এলাকার লোকজনসহ নানা সময়ে দিতে হয় বিভিন্ন অঙ্কের চাঁদা। চাঁদা না দিলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেয় হলুদ সাংবাদিক জাফর ও সিটি কর্পোরেশনে হারুন, আবার রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে কেউ কেউ এ অবৈধ ব্যবসা লুটপাটে উঠেপড়ে লেগেছে। নতুন করে এ ব্যবসায়ও জড়াচ্ছে অনেকে।

সম্প্রতি ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপকমিশনারের (ডিসি) নাম ভাঙিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে হলুদ সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া জাফর নামে এক বিরুদ্ধে। একটা ভিডিওতে দেখা গেছে, সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া জাফর একটি স্পা সেন্টারে বসে টাকা গুনছেন।

এক ভুক্তভোগী (স্পা সেন্টারের মালিক) অভিযোগ করে বলেন, সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া জাফর ও তার সহযোগী সিটি কর্পোরেশনের হারুন হলুদ সাংবাদিক জাফর । তিনি নিজে স্পা সেন্টারের মালিক হয়েও নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন এবং সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন মানুষকে ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকলেও গত ৫ আগস্টের পর হঠাৎ সাংবাদিক বনে যান জাফর। তার নামে গুলশানসহ ঢাকার বিভিন্ন থানায় বেশ কিছু প্রতারণার জিডিও রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট আরেক ব্যবসায়ী বলেন, মোবাইল ফোনে জাফর বলেন, তোমাদের স্পা সেন্টারে দেহব্যবসা হয়। আর এ ব্যবসা অবৈধ। তুমি যদি গুলশানে স্পা ব্যবসা করতে চাও, তাহলে ডিসি-ওসি, থানা-ফাঁড়িসহ ও সিটি কর্পোরেশনের টাকা হারুনকে আমার মাধ্যমে দিতে হবে।

এই বিষয়ে জাফরকে ফোন দিলে তিনি বলেন স্পা থেকে চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে জাফর বলেন, ‘ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অভিযানে কয়েকটি স্পা সেন্টার বন্ধ হয়ে যায়। স্পা সেন্টার বন্ধর পেছনে আমার হাত রয়েছে এমনটা মনে করে ব্যবসায়ীরা তাই আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন।’

টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, দৈনিক আমাদের মাতৃভূমি কে একটি স্পা সেন্টার নিয়ে নিউজ করায় আমি মীমাংসা করতে যাই। কিন্তু মীমাংসা করতে না পাড়ায় পরবর্তীকালে আবার টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

এদিকে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা নেওয়া ও ডিএমপি কমিশনার বরাবর অভিযোগের বিষয়ে জানতে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় গুলশান বিভাগের ডিসি তারিক মাহমুদকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন ও এসএমএস দিলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

অভিযোগে বলা হয়েছে, জাফরের সঙ্গে ডিসির বডিগার্ড মেহেদীর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। গত নভেম্বরের ১৯ তারিখে বিকেলে বনানীর ‘টাইম আউট’ রেস্টুরেন্টে মেহেদী ও জাফর ও সিটি কর্পোরেশনের হারুন বনানীর স্পা সেন্টারের মালিকদের সঙ্গে মিটিং করেন। ওই মিটিংয়ে মাসিক চাঁদার হার নির্ধারণ করা হয়।

দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকার কেয়ারটেকার হত্যাকারী মাসুদ’কে কাকরাইল এলাকা হতে গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টারঃ

গত ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ইং তারিখে আনুমানিক সকাল ০৯:৩০ ঘটিকায় ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন আগানগর ইস্পাহানী ২নং রোডস্থ জনাব আমিনুল ইসলামের বাড়ির কেয়ারটেকার মোঃ কাউসার খান (৪৭)’কে একই মালিকের পার্শ্ববর্তী বাড়ির কেয়ারটেকার নজরুল গার্ড রুমের ফ্লোরে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। মোঃ কাউসার এর কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে তিনি মোঃ কাউসার এর ছেলেকে খবর দেন। মোঃ কাউসার এর ছেলে উক্ত স্থানে এসে দেখতে পায় যে, তার বাবা মৃত অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে আছে। সংবাদ পেয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ উক্ত স্থানে এসে সুরতহাল প্রস্তুতপূর্বক লাশ ময়না তদন্তের জন্য মিডফোর্ড হাসপাতাল, ঢাকায় প্রেরন করেন। উক্ত ঘটনায় নিহত কাউসার এর ছেলে বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৪ তারিখ-১০ জানুয়ারী ২০২৩ ইং – ধারা-৩০২/৩৪/৩৮০ পেনাল কোড। প্রাথমিকভাবে মৃত কাউসার’কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে ধারনা করা হয়।
হত্যাকান্ডের সংবাদ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচারে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। র‌্যাব বর্ণিত ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে ও জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখার সহযোগীতায় আজ ১২ই জানুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখে রাত আনুমানিক ০৩:০০ ঘটিকায় রাজধানী ঢাকার রমনা থানাধীন কাকরাইল এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানাধীন আগানগর এলাকায় নৃশংসভাবে কেয়ারটেকার হত্যাকান্ডের সাথে সরাসারি জড়িত মোঃ মাসুদ (২৪), পিতা-মোঃ ওহাব শেখ, সাং-চুকাইড়, থান-নগরকান্দা, জেলা-ফরিদপুর’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী কেয়ারটেকার হত্যাকান্ডের সাথে তার সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করে। এসময় তার নিকট হতে মৃত মাসুদ এর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানায়, গ্রেফতারকৃত আসামী মাসুদ একজন সুযোগ সন্ধানী চোর। সে গত ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখ রাতে ভিকটিম কাউসারের রুম হতে টাকা চুরি করার উদ্দেশ্যে ভিকটিম কাউসারের রুমে প্রবেশ করে। কিন্তু ভিকটিম কাউসার সজাগ হয়ে আসামী মাসুদ’কে চিনে ফেলায় তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয় এবং একপর্যায়ে আসামী মাসুদ কেয়ারটেকার কাউসার’কে গলাটিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পলিয়ে যায়। এসময় আসামী মাসুদ ভিকটিম কাউসারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সাথে নিয়ে যায়। উল্লেখ্য আসামী মাসুদ ও মৃত কাউসার একই থানার পাশ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা এবং তারা পরস্পর পূর্ব পরিচিত বলে জানা যায় ।
গ্রেফতারকৃত আসামী গত ০১ বছর যাবৎ হলিমাইন্ড মাদক নিরাময় রিহ্যাব সেন্টার, মালিবাগ, ঢাকায় কাজ করে আসছিল। সে এরপূর্বে নবাবপুর এলাকায় একটি পার্টসের দোকানে কাজ করেছিল এবং সেখান থেকে টাকা চুরির দায়ে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম