তারিখ লোড হচ্ছে...

একাত্তরের স্বাধীনতার মতো জুলাই বিপ্লবও একদিনে আসেনি: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার: জুলাই বিপ্লবের কৃতিত্ব নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পোস্টে তিনি একাত্তরের স্বাধীনতার মতো জুলাই বিপ্লবও একদিনে আসেনি বলে উল্লেখ করেছেন।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টটি দেন তিনি।

পোস্টে মির্জা ফখরুল লেখেন, ‘১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়া একদিনে ঘটেনি। মিলিয়ন মিলিয়ন মানুষ মারা গিয়েছিল অথবা আহত হয়েছিল এবং অসংখ্য মানুষ আমাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছে। তাই, আমরা এটি অর্জন করেছি। কৃতিত্ব সবার।’

‘হাসিনার পতন একদিনে ঘটেনি। এর পেছনে অনেক বছরের ত্যাগ ও সংগ্রাম আছে। হাজার হাজার মানুষ মারা গেছেন, আহত হয়েছেন, অপহৃত হয়েছেন মুক্তির জন্য। এর ফলস্বরূপ, ২০২৪ সালে ৫ আগস্টে হাসিনা পালিয়ে গিয়েছিলেন। কৃতিত্ব সবার: ছাত্র, সাধারণ মানুষ, ডাক্তার, রিকশা চালক, বিক্রেতা, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, পেশাদার, প্রবাসীরা, আমাদের বিদেশি বন্ধু, শিশু, প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাগণ এবং অবশ্যই রাজনীতিবিদরা।’

নিজের দলের অবস্থান নিয়ে ফখরুল লেখেন, ‘আমরা, বিএনপির নেতাকর্মীরা, সবসময় বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে ছিলাম এবং থাকব।
চলুন, আমাদের এই ইতিহাসটি দৃঢ়তা, সততা এবং সত্যের সঙ্গে লিখি। এখন, আমাদের দেশের পুনর্গঠনের দিকে মনোনিবেশ করি। সবার আগে বাংলাদেশ ! বাংলাদেশ জিন্দাবাদ!’

আ. লীগ দেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে গেছে: ড. ইউনূস

স্টাফ রিপোর্টার:

অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর মানুষের আস্থা আছে-এ কথা জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে একটি পলাতক দল।

সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেন তিনি। সোমবার (৩ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম।

আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে গেছে এমন মন্তব্য করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার যখন গঠন হলো, আমার কোনো চিন্তা ছিল না যে, আমি হঠাৎ করে একটা সরকারের প্রধান হব। সেই দেশ, এমন দেশ, যেখানে সব তছনছ হয়ে গেছে। কোনো জিনিস আর ঠিকমতো কাজ করছে না। যা কিছু আছে ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে কাজ করতে হবে।

অধ্যাপক ইউনূসে বলেন, একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। তারা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে এটাকে (দেশটাকে) আনসেটেল (অস্থিতিশীল) করার জন্য। এটা তো সবসময় থ্রেট আছেই। প্রতিক্ষনেই আছে, প্রতি জায়গাতেই আছে। কাজেই এটাতো সবসময় থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রথমেই একটা সংশোধনী বলি সেটা হচ্ছে প্রেফতার আতঙ্ক – আমার কাছে কোনো আতঙ্ক ছিল না। একটা সম্ভাবনা ছিল যে, আমাকে নিয়ে যাবে। আই ওয়াজ টেকিং ইট ইজি যে নিলে নেবে, আমার তো করার কিছু নাই। যেহেতু আইন-কানুন নাই দেশে, কাজেই তারা যা ইচ্ছা তা করতে পারে (আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে)। এরমধ্যে দিয়ে জীবন চলছিল আমার। এরপর সরকার যখন গঠন হলো, আমার কোনো চিন্তা ছিল না, ভাবনা ছিল না যে, আমি হঠাৎ করে একটা সরকারের প্রধান হব, দায়িত্ব পাব এবং সেই দেশ এমন দেশ, যেখানে সব তছনছ হয়ে গেছে। কোনো জিনিস আর ঠিকমতো কাজ করছে না। যা কিছু আছে ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে কাজ করতে হবে।

কাজেই আমার প্রথম চেষ্টা ছিল সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা। সেই চেষ্টাটার মধ্যে ছিলাম। তারপর আস্তে আস্তে ভবিষ্যতটা কী হবে, সেটার জন্য চিন্তা করা কোনদিকে আমরা অগ্রসর হব বলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, প্রথম চিন্তা আসলো যে একটা সংস্কার দরকার আমাদের। কারণ যে কারণে এসব ঘটনা ঘটেছে, ফ্যাসিবাদী সরকার চলতে পেরেছে। ১৬ বছর ধরে চলতে পেরেছে, আমরা কিছুই করতে পারি নাই। তিন-তিনটা নির্বাচন হয়ে গেল, ভোটারের কোনো দেখা নাই। এই যে অসংখ্য রকমের দুর্নীতি এবং ব্যর্থতা, মিসরুল ইত্যাদি সেখান থেকে আমরা কীভাবে টেনে বের করে আনবো। টেনে বের করে আনতে গেলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলো করতে হবে। সেজন্য প্রথমে আমরা ঠিক করলাম।

ড. ইউনূস বলেন, যে ধ্বংসাবশেষ থেকে এসেছিলাম, তার নতুন চেহারা আসছে। ভেসে উঠছে, আমরা অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটাতো পরিষ্কার- সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। এটা কেউ প্রশ্ন করতে পারবে না যে, আমি অমুক দেশের আস্থা অর্জন করতে পারিনি। যে দেশেই বলুন, তারা আমাদের উপর আস্থা স্থাপন করেছে। শুধু আস্থা স্থাপন করেছে না, বিপুলভাবে করেছে। তারা বলছে, আমরা অতীতে যা করি নাই তার চেয়ে বেশি করবো এখন, যেহেতু আমরা দেখছি যে সুন্দরভাবে সরকার চলছে এখন। সেজন্য তারা বলছে। কাজেই এটা একটা তো বড় প্রমাণ। যখনই আপনি দেশের সারিগুলা দেখবেন- প্রত্যেকটা দেশ নিজে এসে বলেছে, আমরা তোমাদের সমর্থন করছি। তোমাদের যা দরকার আমরা দেব। অবিশ্বাস্য রকমের সহায়তা দিয়েছে তারা।

ছাত্ররা একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে, এ নিয়ে তিনি বলেন, যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছেন। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিলেন সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেয়ার কী আছে বলেন প্রধান উপদেষ্টা?

আওয়ামী লীগ কী নিষিদ্ধ হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আমরা সবাই এ দেশের নাগরিক। আমাদের এ দেশের ওপরে সমান অধিকার। আমাদেরকে এ দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। কাজেই যে মত-দল করবে, তার মতো করে, সবকিছু করবে। এই দেশ থেকে কারও অধিকার কেড়ে নেয়ার কোনো উপায় নাই। কিন্তু যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিৎ, তার বিচার হতে হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম