তারিখ লোড হচ্ছে...

উপদেষ্টা পরিষদ থেকে নাহিদ ইসলামের পদত্যাগ

স্টাফ রিপোর্টার: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে তার এ পদত্যাগ বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা অনির্ধারিত বৈঠকে বসেছে। দুপুর আড়াইটার দিকে যমুনার সামনে এ বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানানো হবে বলে প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে।

গত কয়েকদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল আসছে। উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামও বেশ কয়েকবার জানিয়েছিলেন পদত্যাগ করেই তিনি নতুন দলে যোগ দেবেন। আজকে তার পদত্যাগের মধ্যদিয়ে সে পথ অনেকটা সুগম হলো। আগামী শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ছাত্রদের পক্ষ থেকে নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেওয়া হবে।

রাজধানীর মানিকমিয়া অ্যাভিনিউয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। নতুন এ দলের নাম না জানা গেলেও এর নেতৃত্বে নাহিদ ইসলাম ও সদস্য সচিব হবেন আকতার হোসেন থাকবেন বলে জানা গেছে।

নতুন রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র এবং মুখ্য সংগঠক পদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম থাকার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়া শীর্ষ পদগুলোতে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ, মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, তাসনিম জারা ও আরিফুল ইসলাম আদীব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল, মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ থাকবেন বলে জানা গেছে।

এদিকে নাহিদ ইসলামকে ট্যাগ করে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক সারজিস আলম দুপুরে ফেসবুক দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘এ তুফান ভারী, দিতে হবে পাড়ি, নিতে হবে তরী পার। রাজপথে স্বাগতম সহযোদ্ধা।’

রাজমিস্ত্রী সাঈদ এখন সাংবাদিক?

মাহাবুব আলম:
ক্যামেরা হাতে রাজধানীর মিরপুরের পীরেরবাগের একটি বাসায় প্রবেশ করেন হারুন নামে এক লোক তার সঙ্গে আরও একজন তরুণ। নিজেদের পরিচয় দেন ‘ একটি পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে। এর পরই তারা ওই বাসায় থাকা গৃহকর্ত্রী ও তার বাড়ীর লোকজনের ছবি তুলতে থাকেন। বাধা দিলে তারা বলতে থাকেন_ ‘এখানে এই বাড়ীটি অবৈধ বিদুৎ লাইন নাই তাই ছবি তুলে পত্রিকায় ছাপাতে হবে।’ এর পর আরও কয়েকজন সাংবাদিক পরিচয়ে বাসায় ঢোকেন। নিউজ ছাপানো বন্ধ করতে তারা চাঁদা দাবি করেন এক লাখ টাকা। ওই ঘটনাটি গত ২০ জুনের। এর মালিককে মোবাইলে হুমকি ধমকি দেয় সেকারনে বিপুল ২২জুন মিরপুর থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন।

এর পর সাংবাদিক পরিচয়ে ওই প্রতারক চক্রের সদস্যরা ওই তরুণের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। আশপাশের লোকজন টের পেয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানান। পুলিশ হারিন গঙদের মিরপুর থানায় ডেকে এনে সতর্ক করে। মিরপুর নয় রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গণমাধ্যমের কর্মী পরিচয় দিয়ে ভয়াবহ প্রতারণা চলছে। তারা পত্রিকায় খবর ছাপানোর ভয় দেখিয়ে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকা-পয়সা। অনেকে থানায় দালাল হিসেবে আসামিদের ছাড়িয়ে নিতে মধ্যস্থতা করে থাকে।

এদিকে ভুয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। অভিযানে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনসের ডিসি জানান, অনেকে সাংবাদিক না হয়েও যানবাহনে প্রেস স্টিকার ব্যবহার করছেন। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে নানা অপরাধে জড়াচ্ছেন। মিরপুর থেকে ‘প্রেস’ লেখা চারটি গাড়ি আটক করা হয়।

রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক হোটেল থেকে শুরু করে ফুটপাত পর্যন্ত চাঁদাবাজি করছে সাংবাদিক নামধারী এই চক্র। নানা অপকর্ম করতে এসব ভুয়া সাংবাদিক নানা নামে সংগঠনও গড়ে তুলেছে। এমনই একটি সংগঠন ‘যাত্রাবাড়ী-কদমতলী-ডেমরা অ্যান্ড শ্যামপুর ‘। মিরপুর, উত্তরা ও তুরাগ এলাকায় রয়েছে বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব ও ঢাকা ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটির মতো নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া রাজনীতে শত শত ভূইফোঁড় অনলাইন গণমাধ্যমের নামেও গড়ে উঠেছে সাইনবোর্ডসর্বস্ব সাংবাদিকদের নানা সংগঠন।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি বলেন, সাংবাদিক পরিচয়ে প্রতারণা পুরো সাংবাদিক সমাজের জন্য মর্যাদাহানিকর। কোনো প্রতারক চক্র সাংবাদিক পরিচয়ে অপকর্ম করলে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

পুলিশের মিরপুর বিভাগের ডিসি বলেন, ভুয়া ও অখ্যাত পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়ে অনেকে নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন। বিভিন্ন সময় মাদকসহ ভুয়া সাংবাদিকদের আটক করা হয়েছে। এতে মূল ধারার সাংবাদিকদের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, সাংবাদিক পরিচয়ধারী এসব প্রতারকের নানা অপতৎপরতায় থানা পুলিশ অতিষ্ঠ। থানায় অপরাধীদের হয়ে নানা তদবির করাই তাদের কাজ। এ ছাড়া এরা গলায় সাংবাদিক পরিচয়পত্র আর গাড়িতে ‘প্রেস’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে মাদক পাচার এমনকি রাজনৈতিক সহিংসতার সময় ককটেল ও বোমাও বহন করছে।

সাংবাদিক পরিচয়ধারী এসব প্রতারক চক্র শুধু নামসর্বস্ব পত্রিকার আইডি কার্ড বহনই নয়, বিভিন্ন ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা মূল ধারার বড় পত্রিকার সাংবাদিকও পরিচয় দেয়। তা ছাড়া ভূইফোঁড় পত্রিকা অফিসগুলো ‘সাংবাদিক পরিচয়পত্র’ও বিক্রি করে থাকে। এসব পরিচয়পত্র পকেটে রেখে বিভিন্ন প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইলের সামনে ‘সাংবাদিক’ বা ‘প্রেস’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে ঘোরে একশ্রেণীর লোকজন।

একদিন কথা হয় যাত্রাবাড়ী-কদমতলী-ডেমরা শ্যামপুর এলাকার কথিত এক সাংবাদিক ২ নারী সদস্য যারা নাকি দেহপ্রসারিনি কিন্তু পরিচয় দিতো সাংবাদিক এরা ধরা পরে ডিবির হাতে সে নাকি জুরাইন প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক । অন্যদিকে রাজধানীর উত্তরা এলাকার একসময়ের রাজমিস্ত্রী্রী সাইদ সে নাকি এখন সাংবাদিক, মাধ্যমিকের গন্ডি না পেরেলেও কয়েক বছর আগেও উত্তরা ও টঙ্গী এলাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো এখন সে নাকি ২/ ৩টি পত্রিকার আইডি কার্ড নিযে চাদাবাজিতে লিপ্ত, এক নারী সদস্য নিজের সমস্যার কথা বলে নিউজ করতে হবে জানিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে দেখা করে ফুসলিযে তার সাথে শারিরিক সম্পর্ক করে এধরনের অভিযোগ রযেছে তার বিরুদ্ধে। সে দেশের সব পত্রিকায় নিউজ করাতে পারে এ বিষযে তার সাথে দেখ্ করতে চাইলে দু’দিন পর দেখা করতে বলেন। কয়টি পত্রিকায় খবর প্রকাশ করতে চান জিজ্ঞেস করে দু’দিন পর দেখা করতে বলেন ‘সাংবাদিক’ পরিচয় দেওয়া সাইদ। তবে তার প্রতারণা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাইদ বলেন, ‘আপনি ভুল নম্বরে ফোন করেছেন। আমি সাংবাদিক নই। আমি সাধারন পাবলিক।’ তার মোবাইল নম্বরে একটু আগে কথা হলো জানালে তিনি ফোনটি কেটে দেন। জানা যায়, সাইদ নিজেকে ‘স্বাধীন সংবাদ’ নামে একটি পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেন।  কিন্তুু সেই পত্রিকার সম্পাদক বলেন এই প্রতারক আমার পত্রীকার কোন সাংবাদিক নয।

জানাযায বছরখানেক আগে প্রতারণার দায়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। ওই সময় তার কাছে ” ছাড়াও একাধিক সংবাদপত্রের পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। স্থানীয় থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়,উত্তরা ও টঙ্গী এলাকায় অন্তত দেড়শ’ ভুয়া সাংবাদিক দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের মধ্যে সাইদ, তৌহিদ, জামাল, জীবন, বাবুল, রবিউল, সিরাজ অন্যতম। এরা ওই এলাকার বিভিন্ন থানা, পাইকারি কাঁচা বাজার , মৎস্য বাজার, হোটেল, ফুটপাত, বাস কাউন্টার থেকে নানা কায়দায় সাংবাদিক পরিচয়ে টাকা তোলে। স্থানীয় থানা পুলিশের একশ্রেণীর কর্মকর্তার সঙ্গেও তাদের বেশ সখ্য রয়েছে। অনেকে পুলিশের সোর্স হিসেবেও কাজ করে। তাদের অনেকে এমপি, মন্ত্রী এবং পুলিশের আইজির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা বলে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করে।

ঢাকা বিমানবন্দর ও উত্তরা এলাকায় এক ডজনের বেশি একটি চক্র সাংবাদিক পরিচয়ে এলাকা চসে বেড়াচ্ছে। তারা কখনও গোয়েন্দা সদস্য ও থানা পুলিশের সোর্স হয়ে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজি করছে। আবাসিক হোটেল, ফ্ল্যাট বাড়ি, বেকারি, কারখানা, ইজিবাইক পরিবহন, কমার্শিয়াল ব্যবসায়ী, আদম পাচারকারীদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোয়ারা নিচ্ছে চক্রটি। সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সঙ্গে চক্রটির সখ্যতা রয়েছে।

স্থানীয় থানা পুলিশ ও ভুক্তভোগীরা জানান, রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় ‘ চিন্তা’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সুজন নামের এক ব্যক্তি। অন্যদিকে সম্প্রতি উত্তরায় চাঁদাবাজির ঘটনায় বেশ কয়েকজন ভুয়া সাংবাদিককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় এলাকাবাসী। উত্তরা পশ্চিম থানা ১৩ নম্বর সেক্টরে একটি বাড়িতে ভয় দেখিয়ে চাঁদাবাজি করার সময় হাতেনাতে আটক করা হয় ১১ ভুয়া সাংবাদিককে। পশ্চিম থানা পুলিশ জানায়, সাপ্তাহিক ‘এশিয়া বার্তা’ পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ওই বাড়িতে চাঁদাবাজি করছিল তারা। এর আগে মুজিব নামে এক ভুয়া সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। চাঁদাবাজির মামলায় জেল খেটে সম্প্রতি সে ছাড়া পেয়েছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম