তারিখ লোড হচ্ছে...

৪ থানা পরিদর্শনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, এসআই-কনস্টেবল বরখাস্ত

স্টাফ রিপোর্টার: ভোরে রাজধানীর চারটি থানা পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ভোরের দিকে দায়িত্বে শিথিলতা দেখায়। এ সুযোগে সন্ত্রাসী ও অপরাধীরা নানারকম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করার চেষ্টা করে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছি, তারা যেন এসময়েও সজাগ ও সতর্ক থাকে।

‘গুলশান থানায় দায়িত্বে অবহেলা করায় একজন এসআই ও একজন কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে,’ বলেও জানান উপদেষ্টা।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে রাজধানীর চারটি থানা (মিরপুর, দারুসসালাম, আদাবর, মোহাম্মদপুর) পরিদর্শন করেন তিনি।

এসময় তিনি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাহিনীর সদস্যের সবসময় সজাগ ও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জনগণ যাতে নির্বিঘ্নে ঘুমাতে পারে ও নির্ভয়ে চলাফেরা করতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি মনিটরিং করার জন্য বাহিনীর পাশাপাশি মন্ত্রণালয়ের অফিসারদেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ফোর্স ও টহলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, যারা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে, তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক ও সজাগ রয়েছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে স্থাপিত চেকপোস্টগুলোও ফাংশন করছে। যৌথবাহিনীর অপারেশনও ভালোভাবে চলছে। থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক গতিতে চলছে। থানাগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা তা দেখতেই এ পরিদর্শন।

চলমান যৌথ অভিযান আর কতদিন চলবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে যৌথ অভিযান বন্ধ করা হবে। তবে অন্যান্য অভিযান চলমান থাকবে। বুধবার গুলশান থানায় দায়িত্বে অবহেলা করায় একজন এসআই ও একজন কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।

উপদেষ্টা তার বারিধারার ডিওএইচএসের বাসা থেকে বের হয়ে ইসিবি চত্বর, কালশী, পল্লবী, মিরপুর-১০ হয়ে মিরপুর থানায় পৌঁছান। পরিদর্শন শেষে সেখান থেকে মিরপুর-১ হয়ে দারুসসালাম থানায় যান। দারুসসালাম থানা থেকে টেকনিক্যাল মোড়, শ্যামলী হয়ে আদাবর থানা পরিদর্শন করেন। পরে সেখান থেকে মোহাম্মদপুর থানায় যান। মোহাম্মদপুর থানা পরিদর্শন শেষে ধানমন্ডি ২৭, সংসদ ভবন, বিজয় সরণি, মহাখালী ও বনানী হয়ে বারিধারার বাসায় ফিরে আসেন।

থানাগুলো পরিদর্শনকালে উপদেষ্টা থানার অভ্যর্থনা কক্ষ, হাজতখানাসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনা ঘুরে দেখেন।

তিনি ডিউটি অফিসারসহ কর্তব্যরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেন। এসময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আরও তৎপর হওয়ার নির্দেশ দেন।

পথে তিনি জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার চেকপোস্ট ও কালশী মোড় চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন এবং দায়িত্বরতদের সঙ্গে কথা বলেন।

তাছাড়া উপদেষ্টা মিরপুর থানা মোড় ও টেকনিক্যাল মোড়ে উপস্থিত সাধারণ জনগণের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের খোঁজ-খবর নেন ও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চান। উপস্থিত জনতা বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সন্তোষজনক বলে মন্তব্য করেন।

নির্বাচন নিয়ে সরকারের বক্তব্য অস্পষ্ট

স্টাফ রিপোর্টার: 

নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যে সময়ের কথা বলেছেন, তা বিএনপির কাছে যৌক্তিক মনে হয়নি। এ কথা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা রোডম্যাপ দেবেন। কিন্তু তিনি তা দেননি। এটা আমাদের হতাশ করেছে।’

রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। গতকাল বুধবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে গেছে। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো প্রস্তুতি দেখছি না।’

নির্বাচনের সময়ের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ ও তাঁর প্রেস সচিবের বক্তব্যকে সাংঘর্ষিক বলেও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘তাঁদের দেওয়া বক্তব্য কোনটা সঠিক, আমরা বুঝতে পারছি না।’

এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবেও জানানো হয়। তাতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপদেষ্টার ভাষণের যে ব্যাখ্যা দেন, তা নিয়েও সভায় আলোচনা হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ভাষণে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য অস্পষ্ট। তাঁর বক্তব্যে নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়ের কথা বলা হলেও নির্বাচনের রোড ম্যাপ সম্পর্কে কোন সুনির্দিষ্ট বক্তব্য রাখা হয় নি।

স্থায়ী কমিটির সভা থেকে এ-ও বলা হয়েছে, ড. মুহাম্মদ ইউনুস নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সীমা ২০২৫ সালের শেষ অথবা ২০২৬ সালের প্রথম অংশে অনুষ্ঠানের কথা বলেন, যা একেবারেই অস্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট কোন সময় উল্লেখ নেই। অথচ তাঁর প্রেস সচিব বলেন যে, ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা পরস্পর বিরোধী। সভা মনে করে, এই ধরনের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য আরো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।

বিএনপির মহাসচিব জানিয়েছেন, তাঁদের দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি মনে করে, নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। জনগণ এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রত্যাশা করে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময় রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্ধারণ করা উচিত।

গত রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমদ, বেগম সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, বীর বিক্রম, এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

সবা:স:জু- ৪১৭/২৪

language Change
সংবাদ শিরোনাম