তারিখ লোড হচ্ছে...

গাড়িতে উঠলেই বমিভাব? জেনে নিন করণীয়

স্টাফ রিপোর্টার: অনেকেই আছেন যারা গাড়িতে চড়লেই বমি বমি ভাব অনুভব করেন বা মোশন সিকনেসে ভোগেন। ফলে ভ্রমণের আনন্দ মাটি হয়ে যায়। ধোঁয়া, পেট্রোল বা ডিজেলের গন্ধে বমিভাব আরও বাড়তে পারে, সাথে মাথা ঘোরা বা অস্বস্তিও দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, চোখ ও মস্তিষ্কের সমন্বয়হীনতার কারণে এ সমস্যা হয়, যা সেনসরি মিস ম্যাচ হিসেবে পরিচিত।

যখন আমরা গাড়িতে উঠি, তখন আমাদের মস্তিষ্ক ধরে নেয় যে শরীর স্থির আছে, কিন্তু চোখ চলমান দৃশ্য দেখে। এই সমন্বয়হীনতাই মোশন সিকনেসের মূল কারণ, যা বমি বমি ভাব বা বমির মতো সমস্যা তৈরি করে।

এ সমস্যা পুরোপুরি প্রতিরোধ করা কঠিন, তবে কিছু উপায় মেনে চললে উপকার পাওয়া যেতে পারে।

বমিভাব এড়াতে যা করবেন:

আদা: গাড়িতে ওঠার আগে এক টুকরো আদা মুখে দিন বা সঙ্গে রাখুন।
পুদিনা ও লেবু পাতা: অস্বস্তি লাগলে মুখে পুদিনা পাতা রাখুন, লেবু পাতার গন্ধ শুঁকলেও স্বস্তি মিলবে।
চোখ বন্ধ রাখুন: দীর্ঘ যাত্রায় চোখ বন্ধ রাখলে বা ঘুমিয়ে পড়লে উপকার পাওয়া যায়।
সামনের সিট বেছে নিন: সামনের বা জানালার পাশে বসুন এবং জানালা খুলে রাখুন, যেন ঠান্ডা বাতাস লাগে।
লবঙ্গ ও দারচিনি: মুখে লবঙ্গ বা দারচিনি রাখলে বমিভাব কমে যেতে পারে। বমির পর জোয়ান চিবালেও আরাম মিলবে।
পেট একদম ভর্তি করবেন না: যাত্রার আগে খুব বেশি খাওয়া বা অতিরিক্ত পানি পান এড়িয়ে চলুন।
চুইংগাম চিবান: গাড়িতে বসে চুইংগাম বা আদা চিবালে বমিভাব কমতে পারে।
প্রয়োজনে ওষুধ: চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে মোশন সিকনেসের ওষুধ খেতে পারেন।

যা করা উচিত নয়:

পেছনের সিটে বসবেন না: এটি বমিভাব বাড়াতে পারে।
গাদাগাদি করে বসবেন না: পর্যাপ্ত জায়গা রাখুন, যাতে স্বস্তি অনুভব করেন।
মোবাইল বা বই পড়বেন না: মাথা নিচু করে পড়ার কারণে সমস্যা বাড়তে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুমান: ঘুমের অভাব মোশন সিকনেস বাড়িয়ে দিতে পারে, তাই আগের রাতে ভালোভাবে বিশ্রাম নিন।
এই সহজ নিয়মগুলো মেনে চললে গাড়িতে ভ্রমণের সময় বমিভাব অনেকটাই কমানো সম্ভব।

 

ঐতিহাসিক ধানুয়া কামালপুর হানাদারমুক্ত দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টার: 

আজ ৪ ডিসেম্বর, ঐতিহাসিক ধানুয়া কামালপুর হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে আজকের দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে হানাদার বাহিনীর শক্তিশালী ঘাঁটি কামালপুর দুর্গের পতন হয়। তাই দিনটিকে স্মরণ করে প্রতি বছরই স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা হানাদারমুক্ত দিবস পালন করে আসছে।

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের আয়োজনে দিবসটি উদযাপনে নানা কর্মসূচি পালিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন জামালপুর জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগম।

 

স্থানীয় সূত্র ও ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুরা জেলার মহেন্দ্রগঞ্জ ও জামালপুর জেলার পাহাড় ঘেঁষা বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুরে হানাদার বাহিনী যুদ্ধের শুরু থেকেই শক্তিশালী ঘাঁটি গড়ে তুলেছিল। এখান থেকেই হানাদার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা চালায়। উত্তর রণাঙ্গনের ১১ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল যেকোনো মূল্যে এই ঘাঁটি দখল করা। এই যুদ্ধে কামালপুর রণাঙ্গনে হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের ৮ দফা সম্মুখ যুদ্ধ হয়।

 

৩১ জুলাইয়ের আগে ধানুয়া কামালপুর রণাঙ্গনে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেন জেড ফোর্স। জেড ফোর্সের অধিনায়ক মেজর জিয়াউর রহমান পাক বাহিনীর সঙ্গে মোকাবিলা করেন। তৎকালীন ৩১ জুলাই সম্মুখ যুদ্ধে পাক বাহিনীর গুলিতে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ বীর উত্তম শাহাদাত বরণ করেন। ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ শহীদ হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধারা সেক্টর কমান্ডার মেজর আবু তাহেরের (পরে কর্নেল) পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৪ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা হানাদার বাহিনীর ধানুয়া কামালপুর ঘাঁটি অবরোধ করেন।

অবরোধের প্রথম দিনই কামালপুর মৃধাপাড়া মোড়ে সম্মুখযুদ্ধে মর্টার শেলের আঘাতে সেক্টর কমান্ডার মেজর আবু তাহের (পরে কর্নেল) একটি পা হারান। যুদ্ধে পা হারানোর পরও কর্নেল তাহেরের নির্দেশে প্রাণপণ যুদ্ধ চালিয়ে যান মুক্তিযোদ্ধারা। পরে ভারপ্রাপ্ত সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব নেন উইং কমান্ডার হামিদুল্লাহ খান বীরপ্রতীক।

 

১০ দিন প্রচন্ড যুদ্ধের পর ৪ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় সেক্টর কমান্ডারের নিদের্শক্রমে সাহসী বীরমুক্তিযোদ্ধা বশির আহমেদ (বীরপ্রতীক) নিজের জীবন বাজি রেখে পাক বাহিনীর ক্যাম্পে সারেন্ডার পত্র নিয়ে যাওয়ার পর সন্ধ্যা ৭টায় ৩১ ব্যালুচ রেজিমেন্টের গ্যারিসন কমান্ডার আহসান মালিকসহ ১৬২ জন হানাদার বাহিনীর সদস্য মিত্র বাহিনীর নিকট আত্মসমর্পণ করে। এর মাধ্যমে শত্রু মুক্ত হয় ধানুয়া কামালপুর। মহান মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ যুদ্ধ সংগঠিত হয় এই ধানুয়া কামালপুরে।

 

ধানুয়া কামালপুর যুদ্ধে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ (বীর উত্তম), মুক্তিযোদ্ধা গাজী আহাদুজ্জামান, তসলিম উদ্দিন সহ শহীদ হন ১৯৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। গুলিবিদ্ধ হয়ে ক্যাপ্টেন হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বীর বিক্রম (সাবেকমন্ত্রী মেজর হাফিজ) সহ অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেন।

 

অন্যদিকে একজন ক্যাপ্টেনসহ হানাদার বাহিনীর ২২০ জন সৈন্য মারা যায় এ যুদ্ধে। ধানুয়া কামালপুর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ২৯ জনকে তাদের বীরত্বের জন্য বীর বিক্রম, বীরউত্তম ও বীরপ্রতীক খেতাব দেওয়া হয়। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে তৎকালীন বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) নিজস্ব অর্থায়নে ধানুয়া কামালপুর স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। এখানে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে নির্মাণ করা হয়েছে ধানুয়া কামালপুর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। প্রতিদিন শত শত মানুষ এই জাদুঘরে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি ও প্রামাণ্যচিত্র দেখতে আসেন। ডিসেম্বর মাস এলেই মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলায় পরিণত হয় মুক্তিযুদ্ধের ১১ নম্বর সেক্টর ধানুয়া কামালপুর ।

 

সবা:স:জু-১৬৮/২৪

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম