সীমান্ত হত্যা কোনোভাবে কাম্য নয়: বিজিবি মহাপরিচালক

অনলাইন ডেস্ক: বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেছেন, সীমান্ত হত্যা কোনোভাবে কাম্য নয়। ভারতীয় নাগরিকরা সীমান্ত আইন না মানলে কঠোর হবে বিজিবি।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় অনুপ্রবেশ যারা করে তাদের প্রতি সুন্দরভাবে নিয়মের মধ্যে গ্রেপ্তার করে হস্তান্তর করি আমরা। ভবিষ্যতে সেটা কতটুকু আর করা যাবে?

শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে বিজিবির কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের প্রশিক্ষণ মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে নবসৃজিত উখিয়া ব্যাটালিয়নসহ (৬৪ বিজিবি) চারটি ইউনিট উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিজিবি মহাপরিচালক এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

সম্প্রতি ভারতের নয়াদিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সীমান্ত হত্যাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, সীমান্ত হত্যা নিয়ে আলোচনার বিষয়টি প্রাধান্য এক নম্বরে ছিল সীমান্ত সম্মেলনে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক নিহতের ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা থেকে এখন পর্যন্ত বিএসএফ সদর দপ্তর থেকে শুরু করে যে জায়গায় হত্যা হলো সব জায়গায় বিজিবির পক্ষ থেকে অত্যন্ত জোরালো প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলনের পরে এই ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। দুঃখজনক হলেও সীমান্ত লাইন থেকে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি যেন অবৈধভাবে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশের চেষ্টা না করে। তবে আমরা জোরালো শক্ত ও কড়া ভাষায় প্রতিবাদ জানানোর পরে কিছু ছবি পেয়েছি। সেখানে সংঘবদ্ধ ১৫-২০ জন অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করছিল। তখন বিএসএফ বাধা দেওয়ার পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত হয়।

বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন, সেই সংঘাতে বিএসএফ রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে ওই যুবকের পেটে লাগে। দুর্বল জায়গায় রাবার বুলেটও হত্যা ঘটাতে পারে। বাংলাদেশি যুবককে আহত অবস্থায় তারা (বিএসএফ) হাসপাতালে নিয়ে অপারেশন করিয়েছিল। তারপরেও তাকে বাঁচানো যায়নি, দুর্ভাগ্য।

বিএসএফের উদ্দেশে পরিষ্কার বার্তা উল্লেখ করে আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, আমরা বলেছি এটা (সীমান্ত হত্যা) কোনোভাবেই কাম্য নয়, এটা মেনে নেওয়া যায় না। যদি মেনে নিই ভবিষ্যতে ভারতীয় অনুপ্রবেশ যারা করে তাদের প্রতি সুন্দরভাবে নিয়মের মধ্যে গ্রেপ্তার করে হস্তান্তর করি, সেটা কতটুকু আর করা যাবে।

তিনি বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশ হোক আর যাইহোক হত্যা কোনো চূড়ান্ত সমাধান হতে পারে না। আর একটিও হত্যা যদি হয় আমরা পরে আরও কঠোর অবস্থানে যাবো। এটা আমি আশ্বস্ত করতে চাই।

‘একইসঙ্গে সবারই চেষ্টা থাকবে অবৈধভাবে কেউ যাতে ওইদিকে (ভারতে) না যায়। আমরা বিজিবি চেষ্টা করছি, প্রশাসন চেষ্টা করছে, স্থানীয়রা চেষ্টা করছে তারপরেও কিছু কিছু ব্যক্তিকে জিরো লাইন অতিক্রম করা থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হচ্ছি। আমরা দুই দিকেই চেষ্টা করে যাব। এক বিএসএফের সঙ্গে আরেক মানবাধিকার সংগঠনের মাধ্যমে। কেউ যেন সীমান্ত অতিক্রম না করে।

মেজর জেনারেল আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, এ ঘটনায় একজন বিএসএফ সদস্য আহত হয়েছে। তিনি হাসপাতালে আছেন। আহত রক্তাক্ত অবস্থায় তার ছবিও আমরা পেয়েছি। তবে বিজিবির পক্ষ থেকে প্রমাণ চাওয়া হচ্ছে যে, এ ঘটনা ওই জায়গারই কি না, তার প্রমাণ কী।

মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে কোনো শঙ্কা আছে কি না, জানতে চাইলে বিজিবি ডিজি বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে কেউ অবৈধ অনুপ্রবেশ না করলে নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি নেই। নিরাপত্তার ঝুঁকি থাকলে আমরা বিজিবি তৈরি আছি।

উত্তাল সমুদ্রের চারপাশে মানুষের ঢল

অনলাইন ডেস্কঃ

এ যেন আরেক জাহেলিয়াত! ইসলামের ইতিহাসে প্রাচীন যুগে মানুষ সূর্য, পাহাড়, নদী কিংবা সমুদ্রের পূজা করত, আজও পৃথিবীর কিছু প্রান্তে সেই প্রথার অনুরূপ চিত্র দেখা যাচ্ছে। এখন ভিডিওতে যে চিত্র দেখছেন এখানেও চলছে এমন কর্মকাণ্ড।

উত্তাল সমুদ্রের চারপাশে মানুষের ঢল। বর্ণিল পোশাক পরা মানুষ, হাতে ফুল আর খাবারের থালা। কেউ নৌকা ভাসাচ্ছেন তো কেউ ফুল আর নানা উপহার নিয়ে ব্যস্ত। দেখে যেন মনে হয় বিয়ের বড় আচার-অনুষ্ঠান চলছে। কিন্তু ঘটনা আরেকটু ভিন্ন! এরা সবাই সমুদ্রদেবীর পূজায় মগ্ন। তাদের বিশ্বাস, এই দেবী সৌভাগ্য আর জীবনের নিরাপত্তা এনে দেন। তাই প্রতিবছর এই সময় তারা একত্র হন, সমুদ্রের কোলে নিবেদন করেন তাদের বিশ্বাস আর ভালোবাসা।

ব্রাজিলের কোপাকাবানা সমুদ্রতটে আফ্রো-ব্রাজিলীয় সম্প্রদায় প্রতিবছর সমুদ্রদেবী ইয়েমাঞ্জার আরাধনায় এই সমুদ্রের তীরে সমবেত হন। তাদের বিশ্বাস এই দেবী জীবনে কল্যাণ, সৌভাগ্য এবং শান্তি নিয়ে আসেন।

 

মাদুরেইরা বাজার থেকে শুরু হয় এই জমকালো শোভাযাত্রা। স্থানীয়রা বলেন, ইয়েমাঞ্জা শুধু সমুদ্রের রক্ষকই নন, তিনি নাবিক, জেলে, স্ত্রী এবং মায়েদেরও রক্ষাকর্ত্রী। সমুদ্রতটে পৌঁছে তারা ফুল সমুদ্রের জলে ভাসিয়ে দেন। এর সঙ্গে মিশে থাকে প্রার্থনার আওয়াজ শক্তি, স্বাস্থ্য আর ভালোবাসার আকাঙ্ক্ষা।

ভিডিওতে দেখা যায়, উপাসকেরা সমুদ্রের পাড়ে দাঁড়িয়ে সমবেত গান গাইছেন, নাচছেন, আর একে অপরের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছেন। তারা আশাবাদী যে এর মাধ্যমে তারা শক্তি, স্বাস্থ্য আর অনেক ভালোবাসা পাবেন এই দেবীর কাছ থেকে। আরেকজন জানান, তিনি প্রতিবছরই এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন, কারণ ইয়েমাঞ্জা তাদের মা।

ইয়েমাঞ্জা আফ্রো-ব্রাজিলীয় ধর্ম উম্বান্ডার এক প্রধান দেবী। উম্বান্ডা হলো এক বিশেষ ধর্ম যা আফ্রিকান প্রথা, রোমান ক্যাথলিক ধর্ম, স্পিরিটিজম এবং স্থানীয় আমেরিকান সংস্কৃতির মিশ্রণে গড়ে উঠেছে। ইয়েমাঞ্জাকে ওড়িশাদের মা হিসেবে সম্মান জানানো হয়।

যেখানে বিজ্ঞান ও আধুনিক জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ছে, সেখানে এখনও মানুষ প্রাকৃতিক শক্তিকে দেবতার রূপ দিয়ে পূজা করছে এটা এক ধরনের হতাশাজনক চিত্র। এমন আচার-অনুষ্ঠান কি সত্যিই সৌভাগ্য বা জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে?

 

সবা:স:জু- ৭৯৩/২৫

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম