তারিখ লোড হচ্ছে...

বুড়িচংয়ে বাকশীমূল উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন

কুমিল্লা প্রতিনিধি।।

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের এডহক কমিটি বাতিল ও অধ্যক্ষ আবু তাহেরকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছে স্থানীয় সাধারণ জনতা ও এলাকাবাসী।

(২২ মার্চ ২০২৫) শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাকশীমূল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত মানববন্ধনে এলাকাবাসীর পক্ষে পরিচালনা করেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও ব্যবসায়ী মোঃ তাজুল ইসলাম।বক্তব্য রাখেন তাজুল ইসলাম,মহিবুর রহমান বাবুল তসিলদার, মারুফুর রশিদ।এসময় উপস্থিত ছিলেন মো: মানিক মিয়া,মো: সুমন,মো: নাছির,মো:রাসেল,মো:শাহআলম,মো: মোস্তাক
মো:আমিন,মো:মামুন,মো:কাদির মিয়া,মো:আবিদ আলী,মো:জজু মিয়া,মো: আবু কালাম,মো:পাবেল,ফজলে রাব্বি সহ আরো অনেকে।

এসময় তাজুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন,ফজলুর রহমান মেমোরিয়্যাল কলেজ অব টেকনোলজি’র অধ্যক্ষ আবু তাহের সে একটি দলের সাথে যুক্ত রয়েছে।তাই সে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বাকশীমূল উচ্চ বিদ্যালয়ের এডহক কমিটিতে প্রবেশ করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কমিটিতে পদ-পদবীতে বহাল রেখে তাকে কিভাবে সভাপতি বানানো হলো তা আমার বোধগম্য নয়।৫১ বছর ধরে স্কুলের কোনো কাজে আসে নাই।অতীতে স্কুলের কোনো কার্যক্রমে তাকে দেখা যায়নি বরং বর্তমানে সে রাজনীতি করার জন্য এই স্কুলে সভাপতি হয়ে এসেছে। তাই গ্রামের সাচেতন মানুষেরা মেনে নিতে পারছে না। এই গ্রামে আরও যোগ্য ব্যক্তি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবদান রাখা ব্যক্তিদের কেন কমিটিতে আনা হলো না ? খুব দ্রুত তাকে অপসারণ করে নতুন কমিটি ঘোষণা করা হোক। ৭ দিনের মধ্যে অপসারণ না করলে আরও বড় কর্মসূচির আয়োজন করা হবে।

মহিবুর রহমান বাবুল তসিলদার বলেন, এই স্কুলে যে কমিটি ও সভাপতি দেওয়া হয়েছে তা আমাদের এলাকার কারো সাথে আলোচনা করা হয়নি। আমাদের গ্রামের আরও ৪ জনের যোগ্য ব্যক্তির নাম পাঠানোর পরেও আবু তাহের তার রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে এডহক কমিটিতে সভাপতি পদ নিয়েছে। আমরা তিব্র-নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অনতিবিলম্বে কমিটি ও সভাপতিকে অপসারণ করে আবারও কমিটি গঠন করা হোক। তখন তারা প্রশাসন ও শিক্ষা উপদেষ্টার নিকট দৃষ্টি কামনা করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাকশীমূল উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন এডহক কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আবু তাহের বলেন, উদ্ধর্তন ব্যক্তিবর্গরা স্কুলে দায়িত্ব পালনে আমাকে যোগ্য মনে করেছে তাই তারা আমাকে সভাপতি বানিয়েছে।

এ বিষয়ে বাকশীমূল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচ এম সফিকুল ইসলাম বলেন,মানববন্ধন বিষয়ে আমি কিছুই জানি না, স্কুল বন্ধ আমি ছুটিতে আছি।

এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাহিদা আক্তার বলেন,স্কুলের পক্ষ থেকে এডহক কমিটির জন্য ৪ জনের নামের তালিকা আমার কাছে আসে।পরবর্তীতে নামের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের নিকট পাঠানোর হয় এবং শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক এডহক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

স্লিপ ফান্ডের টাকা লোপাটের অভিযোগ, নাকি অপপ্রচার?

স্টাফ রিপোর্টার:

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিকে স্থানীয় সংবাদকর্মী হক সরকার হোমনা উপজেলা শিক্ষা বিভাগের তিন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্লিপ ফান্ডসহ বিভিন্ন খাতের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেন। আর এই অভিযোগের প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলে শিক্ষাব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে স্থানীয় শিক্ষক সমাজ এবং শিক্ষা প্রশাসনের বক্তব্য বলছে ভিন্ন কথা। বরং এই প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্য প্রণোদিত, বিভ্রান্তিকর এবং ব্যক্তি প্রতিহিংসার অংশ-এমন অভিযোগ উঠেছে প্রতিবাদকারী শিক্ষক মহল থেকে।

গত ২৫ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, উপজেলার ৯২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বরাদ্দকৃত স্লিপ ফান্ড থেকে প্রশ্নপত্র তৈরির নামে অতিরিক্ত ১২ লাখ টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, খাদিজা আক্তার ও আনিসুর রহমান। এমনকি সরকারি বই বিক্রি, ক্ষুদ্র মেরামতের অর্থ নয়-ছয়ের অভিযোগও সেখানে ছিল। অথচ প্রতিবেদনের একাংশেই অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বক্তব্য গ্রহণ করা হলেও প্রতিবেদক ইচ্ছাকৃতভাবে তা গুরুত্বহীন করে উপস্থাপন করেন। প্রশ্ন থেকে যায়, এই প্রতিবেদন তৈরির পেছনে কি প্রকৃত উদ্দেশ্য অনুসন্ধান ছিল, নাকি পূর্বপরিকল্পিত একটি প্রতিশোধ পরায়ণ প্রচেষ্টা?

ঘটনার পর ২৭ জুলাই বিকেলে হোমনা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের আয়োজন করেন উপজেলার শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা। সেখানেই উত্থাপিত হয় ভিন্ন এক প্রেক্ষাপট। বক্তারা বলেন, এই প্রতিবেদনের নেপথ্যে রয়েছেন হোমনা-২ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ূন কবির, যিনি নিজেই বর্তমানে একাধিক গুরুতর অভিযোগের তদন্তাধীন। তার বিরুদ্ধে নারী সহকর্মীকে অশোভন আচরণ ও যৌন হয়রানি, বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ, কর্মস্থলে অনুপস্থিতি এবং ভুয়া সনদে চাকরিতে প্রবেশের মতো অপরাধে সরকারি তদন্ত চলছে।

অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা শিক্ষা অফিস যখন তার অনিয়মে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানায়, তখন তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে হুমকি ও অপপ্রচারে নামেন। এই অপপ্রচারের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয় স্থানীয়ভাবে বিতর্কিত এক সাংবাদিককে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন অফিস থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে পরিচিত। পেশাদার সাংবাদিকতা নয়, বরং ব্যক্তি স্বার্থে পরিচালিত হয় তার তথাকথিত অনুসন্ধান।

প্রতিবাদ সভায় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ প্রশ্ন তোলে বলেন, যে প্রতিবেদকের নামে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত, তিনি কি কখনো সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় বা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন? প্রশ্নপত্রের অতিরিক্ত খরচের অভিযোগ থাকলেও, সেখানে কোন সূত্র, দলিল কিংবা তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়নি। এমনকি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যে কর্মকর্তারা জবাব দিয়েছেন, তাঁদের ব্যাখ্যা ছিল অসম্পূর্ণভাবে তুলে ধরা। সংবাদপত্রে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ও পক্ষপাতদুষ্ট প্রতিবেদন কেবল একটি পেশাকে কলঙ্কিত করে না, বরং প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও প্রতিষ্ঠানিক আস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রশ্ন উঠেছে, সংবাদ প্রকাশের আগে কেন শিক্ষা অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন বা জেলা শিক্ষা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত ব্যাখ্যা বা নথিপত্র যাচাই করা হলো না? একজন প্রতিনিধি যিনি স্থানীয়ভাবে একাধিক পেশাদারিত্বহীন কর্মকাণ্ডে জড়িত বলে শিক্ষক সমাজ দাবি করেছে, তাঁর তথ্য যাচাই না করে প্রতিবেদন প্রকাশ করা কি সাংবাদিকতার ন্যূনতম নীতিমালাও লঙ্ঘন করে না?

হোমনা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাহার সুলতানা বলেছেন, “আমি সদ্য যোগদান করেছি। আগের খরচপত্র নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে বলে শুনেছি। তবে কোনো অনিয়ম হলে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার পাল বলেন, “মৌখিক অভিযোগ শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এখন প্রশ্ন হলো প্রকৃত দুর্নীতি কোথায়? শিক্ষা অফিসে, না সাংবাদিকতার আড়ালে? যে প্রতিবেদনের মাধ্যমে তিনজন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে একতরফাভাবে জনমত গঠন করা হয়েছে, তার পেছনে জবাবদিহির কোনো কাঠামো ছিল কি?

স্থানীয় শিক্ষার্থীদের কয়েকজন অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দরকার। কেবল শিক্ষা কর্মকর্তাদের ভূমিকা যাচাইয়ের জন্য নয়, সাংবাদিকতার নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ কতটা বজায় রাখা হচ্ছে তা বিশ্লেষণের জন্যও। সাংবাদিকতা যদি হয় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলার মাধ্যম, তবে প্রতিটি শব্দের পেছনে থাকতে হবে প্রমাণ, নিরপেক্ষতা ও দায়িত্ব। অন্যথায় তা হয়ে দাঁড়ায় উদ্দেশ্য প্রণোদিত অপপ্রচারের অস্ত্র, যা কারও ব্যক্তিগত রোষের বাস্তবায়ন ছাড়া কিছুই নয় বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে জানতে হক সাহেবের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম