তারিখ লোড হচ্ছে...

সেনাবাহিনীকে দেশ ও জাতি চিরকাল স্মরণ রাখবে: সেনাপ্রধান

স্টাফ রিপোর্টার:

সেনাবাহিনী দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে যে নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করছে, তা দেশ ও জাতি চিরকাল স্মরণ রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।

সোমবার (২৪ মার্চ) ঢাকা সেনানিবাসের সেনাপ্রাঙ্গণে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে (অফিসার্স অ্যাড্রেস) তিনি এই মন্তব্য করেন। বৈঠকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, অপপ্রচার, গুজব ও উসকানিমূলক বক্তব্যসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। ঢাকার বাইরের সেনা কর্মকর্তারা অনলাইন মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন।

সেনাবাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করে সেনাপ্রধান বলেন, “সেনাবাহিনী একটি পেশাদার বাহিনী। তাদের আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠা দেশ সব সময় স্মরণ করবে।”

এদিকে, বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানায়, এটি একটি নিয়মিত বৈঠক, যেখানে সেনাপ্রধান সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা জানান।

রমজানে অনেক সদস্য ক্যাম্পের বাইরে ইফতার করলেও তাদের দায়িত্ব পালনে কোনো শিথিলতা আসেনি মন্তব্য করে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করে শান্তিপূর্ণভাবে সেনানিবাসে ফিরে আসা হবে আমাদের বিজয়।

সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি যেকোনো উসকানিমূলক বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া না দেখানোর বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, এমন কিছু করা যাবে না, যাতে উসকানিদাতাদের লক্ষ্য অর্জিত হয়।

সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে সরকার জানে, জনগণও জানে উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, নানা গুজব ছড়ানো হচ্ছে; কিন্তু দেশে কোনো জরুরি অবস্থা জারি করা হয়নি। অনেকে নানা ভুল তথ্য, অপতথ্য নানাভাবে ছড়াচ্ছে, এতে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। পরিস্থিতি সামলাতে হবে ধৈর্যের সঙ্গে। সেনাবাহিনীর কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেশ ও দেশের জনগণ।

আসন্ন ঈদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ঈদে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে হবে। যদি কোনো কারণে কোথাও আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়, কঠোরভাবে সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

অপরাধের হার পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় প্রায় একই থাকলেও দৃশ্যমান অপরাধ জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে মন্তব্য করে জানান সেনাপ্রধান বলেন, এসব অপরাধ প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হভে। যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই দৃঢ়তা বজায় রাখার কথা বলেন তিনি।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের বাংলাদেশ সফরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব শান্তি মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। ৫ আগস্ট-পরবর্তী পরিস্থিতি যেভাবে সেনাবাহিনী সামলেছে, সে বিষয়েও সেনাবাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

জাতিসংঘ মহাসচিবের সফরকালে কক্সবাজারে এক লাখ রোহিঙ্গার ইফতার আয়োজনে সহযোগিতার জন্য রামু সেনানিবাসকে ধন্যবাদ জানান সেনাপ্রধান।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর গ্যারি পিটারস সেনাবাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ বিষয়ে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর সেনাবাহিনীর কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

জুলাই অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার কথা উল্লেখ করে সেনাপ্রধান বলেন, গত রোববার ঢাকা সেনানিবাসের সেনা মালঞ্চে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত শিক্ষার্থীদের সম্মানে ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

উগ্রপন্থার অনুসারীরা যাতে কোনো অস্বাভাবিক কিছু করার চেষ্টা করতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকার বিষয়ে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশকে কোনো ক্ষতিকর শক্তি স্পর্শ করতে পারবে না।

পাক-ভারত সংঘাতের মধ্যে সার্বভৌমত্ব রক্ষার আহ্বান আসিফ-হাসনাতের

স্টাফ রিপোর্টার:

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান সামরিক সংঘাত ক্রমেই ঘনীভূত হচ্ছে। এরই মধ্যে এই উত্তেজনার রেশ ছড়িয়ে পড়ছে পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশেও। এমন এক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বার্তা দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহ। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

বুধবার (৭ মে) ভোর রাতে নিজেদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া স্ট্যাটাসে দুই নেতা জাতীয় ঐক্যের ওপর জোর দেন।

আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া লেখেন, ‘সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রয়োজন শক্তিশালী জাতীয় ঐক্য ও সংহতি।’

অন্যদিকে হাসনাত আব্দুল্লাহ তার বার্তায় বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন।’

ভারত বুধবার ভোরে পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে অন্তত ৯টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এই হামলায় দুটি মসজিদসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আঘাত হানা হয়।

পাকিস্তানের আইএসপিআর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী জানান, হামলায় অন্তত আটজন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়েছেন।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জবাব হিসেবে পাকিস্তানের বিমান বাহিনী ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড সদরদপ্তর ধ্বংস করা হয়েছে।

এদিকে ভারত দাবি করেছে, তাদের ‘অপারেশন সিন্দুর’ মূলত সন্ত্রাসী ঘাঁটিকে লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে। ভারতীয় বাহিনী জানায়, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি অনুযায়ী এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে।

এই উত্তেজনার ফলে আকাশপথেও প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। মঙ্গলবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের আকাশপথ অস্থিতিশীল হয়ে পড়ায় বাংলাদেশগামী দুটি ফ্লাইট মাঝপথ থেকে ফিরে যায়। এর মধ্যে ছিল তুর্কিয়ে থেকে আসা তার্কিশ এয়ারলাইন্সের TK-712 ফ্লাইট ও কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইট। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র জানিয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় মধ্যপ্রাচ্যের ফ্লাইটগুলো বিকল্প রুট ব্যবহার করছে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে দুই প্রতিবেশী দেশকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘আমরা ভারত ও পাকিস্তানকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাই এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিত করার জন্য একযোগে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছি।’

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম