তারিখ লোড হচ্ছে...

অর্থ শাখায় চাকরি করেই শত কোটি টাকার মালিক মাহবুবুর রহমান

স্টাফ রিপোর্টার:

বিআরটিএ সদর দপ্তরের অর্থ শাখার উপ-পরিচালক সরদার মাহবুবুর রহমান ঘুষ, দুর্নীতি ও টেন্ডারবাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করার কারনে দুর্নীতি দমন কমিশনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ হয়েছে।

 

বিআরটিএ সদর দপ্তরের অর্থ শাখার উপ-পরিচালক সরদার মাহাবুবুর রহমান ঘুষ গ্রহণ যেন নেশায় পরিণত হয়েছে । গোপালগঞ্জের পাশাপাশি জেলায় বাড়ি হওয়ার কারণে শুধু নামের উপরেই কেনাকাটায় অনিয়ম, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন কৌশলে অতিরিক্ত কমিশন নিয়ে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।গোপালগঞ্জের আমলা,নেতা ও সাংবাদিকদের নাম ভাঙ্গিয়ে এ যাবৎ কাল বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন বিআরটিএ সদর দপ্তরের এ কর্মকর্তা।
সরদার মাহাবুব ১৯৯২সালের ১৯ আগষ্ট মাসিক ১২০০/-টাকা বেসিকে ক্যাশিয়ার পদে বিআরটিএ সদর দপ্তরে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ২৮ আগস্ট ২০০৩ সালে হিসাবরক্ষক এবং ২৪ মার্চ ২০১৪ তারিখে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা হিসাবে পদোন্নতি পান।
২০২৩ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা থেকে অর্থ শাখার উপ-পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পাওয়ার পরে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা বেতন- স্কেল সব মিলিয়ে ৬০ টাকার ও কম একজন কর্মকর্তা শ্বশুরবাড়ি গোপালগঞ্জের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। যার মধ্যে মোহাম্মদপুর ঢাকা উদ্যানের ২নং রোডের ব্লক-এ, হাউজ নম্বর-১৯, এখানে ৬.৫ শতাংশ জমির উপর ৮ তলা ভবন এবং ছাদের উপরে একটি ফ্লাট নির্মাণ করেছেন ২০২১ সালে। এছাড়া ১৯/সি/২ উত্তর টোলারবাগ, মিরপুর এবং গোপালগঞ্জে রয়েছে ফ্লাট।গৃহিণী স্ত্রী রাশিদা খানম (মিন্নী)’ যে গাড়ি ব্যবহার করে তার (রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা -মেট্রো-গ-৩১-৪৩২৩) এবং তার নামে ২টি সিএনজি আছে । গোপালগঞ্জ সদর ও মিয়াপাড়ার একাধিক স্থানে স্ত্রীর নামে জমি ক্রয় করেছেন। গোপালগঞ্জ সদরে আবেদা মঞ্জিল নামে কয়েক কোটি টাকার আলিশান বাড়ি । সরকারি আইন অমান্য করে সরদার মাহাবুবুর রহমান ছেলের নামের সাথে মিল রেখে“মেসার্স মাহির এন্টারপ্রাইজ” নামে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছেন । তিনি ধানমন্ডি ৩ নম্বর রোডের ২৯/বি, যে ফ্লাটে থাকে তার মাসিক ভাড়া ৭০ হাজার টাকা। নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার ডুমুরিয়া গ্রামে ও তার আশ-পাশের এলাকায় ক্রয় করেছেন অনেক ফসলি জমি । তার ছেলে এস.এম মাহির অর্ক এবং জমজ দুই মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস অর্থি এবং জান্নাতুল মাওয়া অর্নি নামকরা কলেজ অধ্যয়ন করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআরটিএ সদর দপ্তরের হিসাব শাখা ও বিআরটিএ’র ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানের অনেকেই ‘দৈনিক সকালের সময়’কে বলেন,সরদার মাহবুব ঘুষ গ্রহণে ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেন। বিআরটিএ’র সাথে ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান সিএনএস লিমিটেডের চারটি সার্ভিস চুক্তি রয়েছে, যেগুলোর বিল প্রতি মাসে পরিশোধ করতে হয় । সেগুলো হলো এমভিট্যাক্স, বিআরটিএ-আইএস, আর্কাইভিং এবং মোটরভিকেল (ইনসফেক্সন এই বানানটা সঠিক কিনা )সেন্টার (ভিআইসি) চুক্তি। যার মধ্যে এমভিট্যাক্সের বিল সবচেয়ে বেশি। এমভিট্যাক্সে প্রতি মাসে ২ কোটি টাকার ও বেশি বিল প্রদান করেন সিএনএসকে। হিসাব রক্ষণ কর্মকতা থাকাকালীন সরদার মাহবুবুর রহমান এমভিট্যাক্সের বিল ছাড় বাবদ মাসিক ১% হারে ২ লাখ টাকার উপরে ঘুষ নিতেন। উপ-পরিচালক (অর্থ) হিসেবে পদোন্নতির সাথে তার ঘুষের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দ্বিগুণ হওয়ার কারণে এখন ২% হারে ঘুষ গ্রহণ করেন। সিএনএস লিমিটেড গত ডিসেম্বরে এমভিট্যাক্সের ৬ কোটি টাকার ও বেশি বিল সাবমিট করেছে, যে বিল ছাড় বাবদ ইতোমধ্যে সিএনএস তাকে ৬ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়েছে আর কমিশনের বাকী ৬ লাখ টাকা এখনও দেয়া হয় নাই। এছাড়া এমভিট্যাক্স চুক্তির বিল থেকে প্রতি মাসে সিএনএস লিমিটেড এই চুক্তির( ডেক্স) অফিসার অর্থাৎ যার মাধ্যমে কন্ট্রাক্ট ম্যানেজমেন্ট এবং বিল আপ হয়, বিআরটিএ সদর দপ্তরের সহকারী প্রোগ্রামার মোঃ শাহাজান কবিরকে ১% হার ঘুষ প্রদান করে। শাহাজান কবিরের ৬ লক্ষ টাকা ইতোমধ্যে সিএনএস লিমিটেডকে পরিশোধ করা হয়েছে। একইভাবে সরদার মাহাবুবকে প্রতি মাসে আর্কাইভিং-এর বিলের জন্য ১ লাখ টাকা, ভিআইসির জন্য ১ লাখ টাকা, বিআরটিএ-আইএস এর জন্য ৫০
হাজার টাকা ঘুষ দেন সিএনএস লি.। সিএনএস লিমিটেডের পক্ষে মাসিক ঘুষ দেয়ার কাজ করে সিএনএসের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা মতিউর রহমান। মোঃ মতিউর রহমান বিআরটিএ সদর দপ্তরে আইএস চুক্তির আওতায় টিম লিডার হিসেবে মাসিক ১ লাখ টাকা বেতনে চাকরি করে যার প্রধান কাজ সিএনএস লিমিটেডের এই ৪ টি চুক্তির বিল প্রতিমাসে ছাড়ানো। আবার মাদ্রাজ প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেডের (এমএসপিপিএল) সাথে বিআরটিএ’র ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে। প্রত্যেকটি বিল পরিশোধের সময় টাকার পরিমাণের উপর নির্ভর করে এমএসপিপিএল ১ থেকে ৪ লাখ টাকা ঘুষ দেন সরদার মাহাবুবকে। সর্বশেষ কয়েকটি বিল বাবদ এমএসপিএল যে ৮ কোটি টাকা বিল নিয়েছে যেখান থেকে সরদার মাহাবুবকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছে এমএসপিএল। দাবিকৃত অর্থ সরদার মাহাবুবকে দিতে দেরি হলে তিনিও বিভিন্ন অজুহাতে বিল প্রদান করতে বিলম্ব করেন। তবে ডিআরসি এবং নম্বর প্লেটের চুক্তি বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড (বিএমটিএফ) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠান হওয়ায় সেখান থেকে কোন ঘুষ নিতে পারে না সরদার মাহাবুব

এই কর্মকর্তার বিষয়ে আরও জানা যায়, বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের জন্য খোলাবাজার থেকে পন্য ক্রয় করা হলে ১৫% হারে তাকে ঘুষের টাকা প্রদান না করলে বিভিন্ন অজুহাতে সেই বিল আটকে দেয়। আরএফকিউ’এর মাধ্যমে ক্রয় করা হলে নুন্যতম বিশ হাজার টাকা তাকে দিতে হয়। ওপেন টেন্ডারের মাধ্যমে কোন পন্য ক্রয় হলে ক্রয় মূল্যের ৫-৬% হারে তাকে ঘুষ দিতে হয়। ঘুষের সব অর্থই তিনি এজি অফিসের কথা বলে নেন। এজি অফিস থেকে ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানসমুহের বিলের চেক নিজের কাছে এনে রাখে এবং তার দাবিকৃত অর্থ প্রদানের পর সেই চেক সংশ্লিষ্ঠ ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করে।

অন্যদিকে মাদ্রাজ প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেডের (এমএসপিপিএল) সাথে বিআরটিএ’র ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে। প্রত্যেকটি বিল পরিশোধের সময় টাকার পরিমাণের উপর নির্ভর করে এমএসপিপিএল ১-৪ লাখ টাকা ঘুষ দেয় সরদার মাহাবুবকে। সর্বশেষ কয়েকটি বিল বাবদ এমএসপিএল যে আট কোটি টাকা বিল নিয়েছে যেখান থেকে সরদার মাহাবুবকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছে এমএসপিএল। দাবিকৃত অর্থ সরদার মাহাবুবকে দিতে দেরি হলে তিনিও বিভিন্ন অজুহাতে বিল প্রদান করতে বিলম্ব করেন। তবে ডিআরসি এবং নম্বর প্লেটের চুক্তি বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি লিমিটেড (বিএমটিএফ) অর্থাৎ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এখান থেকে কোন ঘুষ নিতে পারে না সরদার মাহাবুব।

এছাড়া বিআরটিএ সদর দপ্তরে কোন কর্মচারী নিয়োগ পেলে, সরদার মাহাবুবকে ঘুষ না দিলে সহসা তাদের বেতন হয় না। বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের একাধিক ড্রাইভারের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের ওভারটাইমের টাকার একটা নির্দিষ্ট অংশ সরদার মাহাবুবকে না দিলে, নানা কারণ দেখিয়ে তাদের ওভারটাইমের টাকা দিতে বিলম্ব করে এমনকি কেটেও রাখে। বিআরটিএতে এগুলো ওপেন সিক্রেট। বিআরটিএ’র বিভিন্ন বিভাগীয়, মেট্রো এবং সার্কেল অফিসের খরচের বাজেট বরাদ্দ সদর কার্যালয়ের অর্থ শাখার মাধ্যমে হয়ে থাকে। যে সব অফিস থেকে তাকে অর্থ দেওয়া হয়, সেই সব অফিসকে সে বেশি বাজেট বরাদ্দ দেয়ার চেষ্টা করেন এবং অন্যান্য অফিসে অনেক কম। এই বিষয়ে ২০২৩ সালের প্রথম দিকে বিআরটিএ’র মাসিক সমন্বয় সভায় বিআরটিএ’র বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক প্রশ্ন উত্থাপন করলে বিআরটিএ’র তখনকার চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার সরদার মাহাবুবকে তিরস্কার করে। সাবেক চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার তাকে অর্থমন্ত্রী বলে ডাকতো।

অভিযোগ রয়েছে, বিআরটিএ’র লিফটের ভেন্ডর “কনসেপ্ট এলিভেটরস ও ইঞ্জিনিয়ারিং”-এর বিল আটকে রেখে তাদের দিয়ে সরদার মাহাবুব তার ঢাকা উদ্যানের বাড়ির লিফটের কাজ করিয়ে নেয়। একইভাবে বিআরটিএ’র এসির ভেন্ডর অলোকের ইঞ্জিনিয়ারিংস লিমিটেডের বিল আটকে রেখে, তাদের সার্ভিস ম্যান দিয়ে বাসার এসি সার্ভিসিং করায়। বাংলাদেশের সকল জেলায় বিআরটিএ’র নিজস্ব অফিস কাম ট্রেনিং সেন্টার এবং ভিআইসি স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান। এই কাজে এখন পর্যন্ত যে সকল জেলায় জমি অধিগ্রহন করা হয়েছে, সেসব জমি অধিগ্রহনের অর্থ ছাড় দিতেও তাদের কাছ থেকে ঘুষ দাবি করে এবং আদায় করে। সম্প্রতি বিআরটিএ ভবন এবং ডাটা সেন্টারের ইলেকট্রিক লাইন স্থাপন, বেইজমেন্ট-এ টাইলস স্থাপনসহ ভবনের সার্ভিসিং এর কাজ পিডব্লিউডি’র মাধ্যমে তিন কোটি টাকার উপরে কাজ করানো হয়েছে। কিন্তু সরদার মাহবুব পিডব্লিউডি’র মাধ্যমে কাজ করানোর ঘোর বিরোধী ছিলো। কারণ পিডব্লিউডি কাজ করলে এজি অফিসের কথা বলে সরদার মাহবুব কোন ঘুষ নিতে পারে না।

সরদার মাহাবুবুর রহমানের বাড়ি নড়াইল জেলায় হওয়া সত্ত্বেও শ্বশুরবাড়ী গোপালগঞ্জের মিয়াপাড়ায় হওয়ায় সকলের কাছে গোপালগঞ্জের পরিচয় দিতেন। কিন্তু ৫ আগষ্টে স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর জন্মস্থান নড়াইলের পরিচয় দিচ্ছেন । গোপালগঞ্জের সাবেক পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার আজিজুর রহমান তার আপন বড় ভায়রা এমনকি ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানের সাথেও সরদার মাহাবুবের সখ্যতা ছিল। হাবিবুর রহমানের সঙ্গে তোলা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যবহার করে ক্ষমতার জাহির এবং অপব্যবহার করতো। সরদার মাহবুবুর রহমানের নামে একাধিকবার দুদকে মামলা হলেও গোপালগঞ্জ বাড়ি এবং সাংবাদিক, পুলিশ ও দুদকের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে রক্ষা পান।

বিআরটিএ সদর দপ্তরের অর্থ শাখার উপ পরিচালক সরদার মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করে কিভাবে এত অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন,এসবের বিষয়ে মন্তব্য জানতে সদর দপ্তরের উপ -পরিচালক সরদার মাহবুর রহমানের অফিসে গেলে প্রথম দিন নামাজ পড়ার কথা বলে দেড় ঘন্টা পরেও তার কক্ষে আসে নাই। পরের দিন ‘দৈনিক সবুজ বাংলাদেশের ঐ প্রতিনিধি তার অফিসে যাওয়ার পর ওই কর্মকর্তা ব্যক্তিগত মুঠোফোনে (শিমুল খান গোপালগঞ্জ) সাংবাদিককে ফোন দিয়ে ‘দৈনিক সবুজ বাংলাদেশের ঐ প্রতিনিধিকে তার সাথে কথা বলতে বলেন এবং শিমুল খান নামে ঐ সাংবাদিক জানায় সরদার মাহবুবুর রহমান আমার ভাই হয়।

দূর্নীতির অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং-এর এমডি শোকজ, তদন্তে সিআইডি

ডেস্ক রিপোর্ট:

নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের আশীর্বাদপুষ্ট পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন কাজী আলমগীর। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন।

পরবর্তীতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এর সাবেক চেয়ারম্যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিএস-১ মোঃ নজরুল ইসলাম খান (এন আই খান) ১১ জানুয়ারি ২০২৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে, আস্থাভাজন কাজী আলমগীরকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেয়। নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। গড়ে তোলেন এক নিজস্ব সিন্ডিকেট। তাদের দিয়ে তথ্য গোপন করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বড় অংকের সুদ মওকুপ এবং নিয়ম বহির্ভূত আমানত নগদায়ন সহ যাবতীয় অনিয়মে যুক্ত হন। হাতিয়ে নেন বড় অংকের অর্থ।

এসব অভিযোগ লিখিত আকারে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানালে তারা একটি তদন্তের নির্দেশ দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখের অভ্যন্তরীন তদন্ত প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কর্মকর্তার অনিয়ম খুঁজে পায় তদন্ত সংস্থা। তদন্ত সংস্থাকে ম্যানেজ করেন প্রতিষ্ঠানের এমডি কাজী আলমগীর।

রহস্যজনক কারনে অভিযুক্তদের বরখাস্ত না করে উল্টো বেতন বৃদ্ধি সহ পদোন্নতি দেওয়া হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে মানব সম্পদ বিভাগের প্রধান জসিম উদ্দিন খান, সিএফও আবু বকর সিদ্দিক, কোম্পানী সচিব আসাদুজ্জামান, চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এডভোকেট শিহাবুর রহমান এবং লায়াব্যালিটি অপারেশন বিভাগের প্রধান সাহানা আক্তার সীমা। উক্ত কর্মকর্তাদের অনিয়ম স্বত্তেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি বরং হাইকোর্ট কর্তৃক নব নিযুক্ত পরিচালনা পর্ষদ অভিযুক্তদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করে অনিয়মকারীদের বহাল তবিয়্যতে রেখেছেন।

ইতোপূর্বে কোম্পানী সচিব আসাদুজ্জামানের সাথে যোগশাজসে ভুয়া মিনিটস বানিয়ে অনৈতিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেছেন। যা নতুন পর্ষদের নজরে আসে।
সম্প্রতি খেলাপি ঋণ গ্রাহক এভারবেস্ট টেক্সটাইল লিমিটেডের সুদ মওকুপ স্মারকে তথ্য গোপন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ব্যাতীত বড় অংকের সুদ মওকুপ করার অপচেষ্টা করেন এমডি।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আলমগীরের অনিয়ম সমূহ ফাইন্যান্স কোম্পানী আইন ২০২৩ এর ১৯ (১) গ, ঘ, ঙ, চ এর আওতায় শাস্তিযোগ্য এবং স্বীয় পদ হতে বরখাস্ত হওয়ার মত অপরাধ।

হাইকোর্ট কর্তৃক নব নিযুক্ত পর্ষদের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সমূহ বাস্তবায়ন না করা সহ বিবিধ অনিয়মে যুক্ত থাকায় ১৮ মে ২০২৫ তারিখে হাইকোর্ট কর্তৃক নিযুক্ত চেয়ারম্যান জনাব মোঃ মাহবুবুল হক কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন এবং তিন দিনের মধ্যে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। উক্ত কারন দর্শানোর নোটিশের অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংক এবং মহামান্য হাইকোর্টে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম খানের পরিচালনা পর্ষদের সময়কালীন যাবতীয় কার্যক্রম, বিভিন্ন রকম আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, বিধিবহির্ভূত কর্মকান্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশিত অভ্যন্তরীণ তদন্ত প্রতিবেদন, অনিয়মকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা, রেফটাইলস ফার্ম লিমিটেড এর নিলামের দলিল, এ এন্ড পি ব্যাটারি ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং এভারবেস্ট টেক্সটাইল লিমিটেড এর সুদ মওকুপ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি, আমানত নগদায়নের যাবতীয় তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে অনিয়ম তদন্তকারি সংস্থা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট-সিআইডি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম