তারিখ লোড হচ্ছে...

যেসব কারণে মানুষ আপনাকে গুরুত্ব দেয় না

স্টাফ রিপোর্টার:

আপনার কি কখনও মনে হয়েছে যে আপনাকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হচ্ছে না, আপনি নিজের সম্পর্কে যতই সোচ্চার হোন না কেন? এটি একটি সাধারণ অভিজ্ঞতা যা যে কারও সঙ্গেই ঘটতে পারে, কর্মক্ষেত্রে, সামাজিক সমাবেশে, এমনকি পরিবারের মধ্যেও।

বরখাস্ত বা অবমূল্যায়ন করার অনুভূতি হতাশাজনক হতে পারে এবং এমনকী আপনার রুচি নিয়েও প্রশ্ন তুলতে পারে। এর মূল কারণগুলো বুঝলে তা আপনাকে এই পরিস্থিতির প্রতিকার খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। কেন মানুষ আপনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না? সম্ভব্য কারণগুলো জেনে নিন-

অসঙ্গতভাবে যোগাযোগ করা

যখন আপনার যোগাযোগে ধারাবাহিকতার অভাব থাকে, তখন অন্যদের পক্ষে আপনাকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া কঠিন হতে পারে। আপনি যদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঘন ঘন আপনার অবস্থান পরিবর্তন করেন বা নিজের বিরোধিতা করেন, তাহলে মানুষ আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। আপনার নিজেকে প্রকাশের ধরনে স্পষ্টতা এবং ধারাবাহিকতা থাকলে তা অন্যদেরকে আপনার অবস্থান বুঝতে সাহায্য করে, আপনার নির্ভরযোগ্যতার ওপর আস্থা তৈরি করে।

দক্ষতা বা সঠিক জ্ঞানের অভাব

কিছু পরিস্থিতিতে, মানুষ হয়তো আপনাকে গুরুত্ব সহকারে নাও নিতে পারে কারণ তারা আপনার দক্ষতা বা প্রাসঙ্গিক জ্ঞানের অভাব রয়েছে বলে মনে করে। যদি ধারাবাহিকভাবে এমন বিষয় নিয়ে কথা বলতে থাকেন যে বিষয়ে ভালোভাবে পারদর্শী নন, তাহলে অন্যরা আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ করতে পারে। যে বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন সে বিষয়ে জ্ঞান থাকলে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ আপনাকে সম্মান করবে। মানুষ তাদের সম্মান করবে যারা জ্ঞানী এবং স্পষ্ট, সুপরিচিত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

শরীরের ভাষাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে

শরীরের ভাষা কখনো কখনো শব্দের চেয়ে জোরে কথা বলে। যদি আপনার শরীরের ভাষা বন্ধ থাকে, তাহলে এটি এমন ধারণা তৈরি করতে পারে যে আপনি অনিরাপদ বা কথোপকথনে সম্পূর্ণরূপে মনোযোগী নন। আপনার শরীরের ভাষা যদি কথার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয় তবে মানুষ আপনাকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়ার সম্ভাবনা কম।

নিজেকে অতিরিক্ত ব্যাখ্যা করা

অন্যের সামনে নিজেকে প্রমাণ করার জন্য আমরা নানাভাবে চেষ্টা করি। কারও কাছে গুরুত্ব পাওয়ার জন্য নিজেকে আরও বেশি ব্যাখ্যা করেন অনেকেই। কিন্তু এই কাজটি তাকে আরও বেশি গুরুত্বহীন করে তোলে। আপনার অবস্থান সম্পর্কে বোঝানোর পরিবর্তে, আপনার চিন্তাভাবনার স্পষ্টতা এবং কার্যকরভাবে যোগাযোগ করার ক্ষমতা প্রয়োগ করুন।

অতিরিক্ত ক্ষমাপ্রার্থী হওয়া

অতিরিক্ত ক্ষমা চাওয়া, বিশেষ করে যে জিনিসগুলোর জন্য ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন হয় না, তা আপনাকে দুর্বল হিসেবে প্রকাশ করতে পারে। উপযুক্ত সময়ে ভদ্র এবং ক্ষমাপ্রার্থী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ, অতিরিক্ত ক্ষমা চাওয়া এই বার্তা দেয় যে আপনার কাজ বা কথায় আপনার বিশ্বাসের অভাব রয়েছে। ক্রমাগত ‘দুঃখিত’ বলার ফলে মানুষ আপনার প্রতি শ্রদ্ধা হারিয়ে ফেলতে পারে এবং ভাবতে পারে যে আপনি নিজের সম্পর্কে নিশ্চিত নন।

ফ্যাটি লিভার রোগীদের জন্য যেসব পানীয় বিষের সমান

অনলাইন ডেস্ক: লিভার মানুষের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি বিপাকের কাজ করে। এছাড়া হজমেও সাহায্য করে। ফ্যাটি লিভার মানে হলো যকৃতে চর্বি জমে যাওয়া এবং যকৃত একটু বড় হয়ে যাওয়া।

শরীরে উৎপন্ন বিষাক্ত কিছু পদার্থকে পরিবর্তন ঘটিয়ে কম ক্ষতিকারক পদার্থে পরিণত করে বিভিন্ন উপায়ে শরীরের বাইরে নির্গমনের কাজ করে লিভার। লিভার কখনোই বিশুদ্ধ পদার্থগুলো নিজের মধ্যে জমা করে রাখে না। লিভারে চর্বি জমলে সেখানে প্রদাহের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তখনই সিরোসিস অব লিভারের ঝুঁকি বাড়ে।

মানুষের লিভারে সাধারণত ৩-৪ পাউন্ড চর্বি থাকে। লিভার সেলের চারপাশেও কিছু চর্বি থাকে। এ চর্বির পরিমাণ কোনোভাবে বেশি হলে অর্থাৎ ১০ শতাংশের বেশি হলে সেটিকে ফ্যাটি লিভার বলা হয়।

সময়মতো চিকিৎসা না নিলে রোগ জটিল হয়ে লিভার সিরোসিসের মতো জটিলতা হতে পারে। লিভারের মধ্যে সাধারণত ৫ শতাংশ চর্বি শোষণ হতে পারে। যদি ৫ শতাংশের ওপরে চর্বি জমা হয়ে থাকে, তখনই আমরা একে ফ্যাটি লিভার বলে থাকি।

ফ্যাটি লিভার দুই প্রকার, অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার এবং নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। প্রথমটি অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে এবং দ্বিতীয়টি অ্যালকোহল ছাড়া অন্য অনেক কারণে হয়ে থাকে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ফ্যাটি লিভারের অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেট বেশি গ্রহণ, ডায়াবেটিস এবং শারীরিক কার্যকলাপের অভাব ইত্যাদি।

ফ্যাটি লিভার স্বাভাবিক থাকলে অর্থাৎ লিভার অ্যানজাইমগুলো যদি না বেরিয়ে থাকে, লিভারে কোনো প্রদাহ না থাকলে তাকে স্বাভাবিক ফ্যাটি লিভার বলা হয়। তবে ফ্যাটি লিভার থেকে লিভারে প্রদাহ হলে তাকে বলে স্ট্যাটো হেপাটাইটিস। অর্থাৎ ফ্যাটি লিভারের কারণে তার প্রদাহ হয়েছে।

এ ছাড়া থাইরয়েড হরমোনে কোনো সমস্যা থাকলে ফ্যাটি লিভার হতে পারে। ডায়াবেটিস ওজন আধিক্য, চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

ফ্যাটি লিভারের রোগ প্রথমদিকে তেমন গুরুতর লক্ষণ প্রকাশ না করলেও পরবর্তী সময়ে এর থেকে লিভার সিরোসিস এমনকি লিভার ক্যানসার পর্যন্ত হতে পারে। তাই ফ্যাটি লিভার নিয়ে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। ফ্যাটি লিভারের সমস্যায় ভুগলে কিছু খাবার ও পানীয় আছে যা এড়িয়ে যেতে হবে। জেনে নিন কী কী-

মদ্যপান

নিয়মিত মদ্যপান শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও টিস্যুতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের অন্যতম কারণ মদ্যপান। এর থেকে সিরোসিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি। ফ্যাটি লিভারের রোগীদের উচিত মদ্যপান থেকে বিরত থাকা।

কোমল পানীয়

কোমল পানীয় ছোট-বড় সবার জন্য ক্ষতিকর। কোমল পানীয়ে ইথিলিন গ্লারাইকোল নামে যে রাসায়নিক উপাদান ব্যবহার করা হয়, এটি প্রায় আর্সেনিকের মতোই বিষ। কোমল পানীয়তে ধরনের পানীয়ে সোডা মেশানো থাকে। পাশাপাশি থাকে হাই ফ্রুকটোজ কর্ন সিরাপ। এগুলো শরীরের জন্য খুবই খারাপ। তাই এই পানীয় নিয়মিত খেলে শরীরে জটিলতা তৈরি হতে পারে।

ফ্রুট জুস

বাজারজাতকৃত জুস ও ফ্রুট ড্রিংকসে মেশানো হচ্ছে ভেজাল। ভেজালমিশ্রিত, নিম্নমানের এবং মাত্রাতিরিক্ত এসিটিক এসিড থাকায় এগুলো জনস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ নয়। বিশেষজ্ঞের মতে, প্যাকেটজাত বিভিন্ন ধরনের ফ্রুট জুস বা ফলের রসে কৃত্রিম মিষ্টি মেশানো থাকে। তাই এই পানীয় ফ্যাটি লিভারের রোগীদের পান করা উচিত নয়। কোমল পানীয়ে থাকা উপাদানসমূহ লিভারে চর্বি জমতে আরও সাহায্য করে।

স্পোর্টস ড্রিংকস

চাঙা থাকতে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের স্পোর্টস বা এনার্জি ড্রিংকস পান করেন। এই পানীয়তেও বিভিন্ন পদার্থ মেশানো। যা লিভারেরও ক্ষতি করে। তাই এ ধরনের কোনও ড্রিংকস পান করার আগে আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কফি

কফি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর কফি খেলে সতেজ হয় এবং শরীরে শক্তি আসে। তবে এর মধ্যে থাকা ক্যাফেইন মানুষকে জাগিয়ে রাখতে সাহায্য করে। তবে এই পানীয় বেশি পরিমাণে খেলেই শরীরের ক্ষতি হবে। তাই আপনি দিনে ৩-৪ কাপের বেশি কফি পান করবেন না।

ফ্যাটি লিভার রোধে করণীয়

ভিটামিন, মিনারেলস, আয়ুর্বেদিক ভেষজ ইত্যাদিও লিভারের দ্বারা প্রক্রিয়াজাত হয়। অপরিমিত মাত্রায় এসব গ্রহণ করলে লিভারের স্বাভাবিক কাজ বেড়ে যায়, লিভারের ওপর বেশি চাপ পড়ে।

অনেক সময় পরিপূরক খাদ্যের প্রয়োজন হয়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এসব পরিপূরক খাবার খেলে লিভারের ক্ষতি হয়। প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ভেষজ দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করলেও একই ঘটনা ঘটতে পারে।

ওজন কমাতে ব্যবহার করা প্রাকৃতিক ভেষজ লিভারের ক্ষতিও করে। এমনকি অতিরিক্ত গ্রিন টিও লিভারের ক্ষতি করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, দানাশস্য, দুগ্ধজাতীয় খাবার, বিভিন্ন ফল, পর্যাপ্ত ফাইবারযুক্ত বা আঁশজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করা উচিত।

অসময়ের ফল ও শাকসবজি না খাওয়াই ভালো। রোগের চিকিৎসার জন্য মেডিসিনে অনেক ওষুধ পাওয়া যায়, তবে আপনি আপনার জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন এবং ঘরোয়া প্রতিকারের মাধ্যমেও উপশম পেতে পারেন। যেমন আপেল সিডার ভিনেগার, লেবু, হলুদ, গ্রিন টি, পেঁপে, আমলকি, রসুন, ভিটামিন ই, ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ, বাদাম, চিয়া বীজ ফ্যাটি লিভার রোগীদের জন্য উপকারি।

সপ্তাহে পাঁচ দিন প্রতিদিন ৩০ মিনিট করে হাঁটতে হবে, কোমল পানীয়ের বদলে তাজা ফলের রস ও পানি পান করতে হবে।

language Change
সংবাদ শিরোনাম