তারিখ লোড হচ্ছে...

বরখাস্ত হলেন সাংবাদিক হেনস্তা করা রাজউকের ইমারত পরিদর্শক সোলাইমান

স্টাফ রিপোর্টারঃ

নোটিশ ব্যবহার করে ভবন মালিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করা, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ উপার্জন, ঘুষ গ্রহন করে অনৈতিক ও আইন বিরোধী কাজের মত একাধিক অপরাধের তথ্যমূলক সংবাদ প্রকাশে ক্ষুব্ধ হয়ে রাজউকের জোন ৩/২ এর ইমারত পরিদর্শক মোঃ সোলাইমান হোসাইন ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে সাপ্তাহিক রিপোর্টিং পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার মাহতাবুর রহমান, রিপোর্টার মহিবুল্লাহ, দৈনিক আমার সময় পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মো. শাহ আলম, দৈনিক নতুন দিন পত্রিকার রিপোর্টার মো. হান্নান এর উপর হাতুড়ি নিয়ে হামলা করে। হামলার পরে ইমারত পরিদর্শক মোঃ সোলাইমান হোসাইন এর বিরুদ্ধে বনানী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণ ও হেনস্তার প্রতিবাদে বৈষম্যহীন সাংবাদিক ইউনিটি (এনজেইউ) ও কর্মজীবী সাংবাদিক সমাজের উদ্যোগে ০৩-০২-২০২৫ তারিখ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তিতে বিচারের দাবিতে তৎকালীন রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন সাংবাদিক নেতারা।

রাজউক কর্তপক্ষ এই সকল বিষয় আমলে নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করে এবং ইমারত পরিদর্শক সোলাইমান হোসেনের সকল অপকর্মের সত্যতা পেয়ে ০৯ এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫.৩৯.০০০০.০০৯.৩১,১১৪.১৫.৫৬৪ নং স্মারকের অফিস আদেশে ইমারত পরিদর্শক সোলাইমান হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রশাসন শাখায় ন্যস্ত করে।

অফিস আদেশে বলা হয়েছে জনাব মোঃ সোলাইমান হোসাইন, ইমরাত পরিদর্শক, পরিচালক (জোন-৩/২) এর দপ্তর, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা এর বিরুদ্ধে কর্ম এলাকা যথাযথভাবে তদারকি না করা, রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত নকশার ব্যত্যয় ঘটিয়ে নির্মাণাধীন ভবন তদারকিঅন্তে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অথরাইজড অফিসার, প্রকৌশলী শেগুফতা শারমীন আশরাফ এর নিকট হতে অভিযোগ পাওয়া যায়। উল্লেখ্য যে, অভিযোগসমূহের বিষয়ে তার নিয়ন্ত্রণকারী কর্তকর্তা কর্তৃক কারণ দর্শানো হলে তার প্রদত্ত জবাব সন্তোষজন বিবেচিত হয়নি। তার এহেন কর্মকান্ডে কর্তৃপক্ষের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হয়েছে এবং অফিস শৃংখলা ভঙ্গ হয়েছে। তার এহেন কার্যকলাপ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকুরি বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ৩৭(ক) অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও ৩৭ (খ) অনুযায়ী অসদাচরণের শামিল, যা তদন্ত শেষে প্রমাণ সাপেক্ষে পুরদন্ড আরোপযোগ্য অপরাধ। বর্ণিতাবস্থায়, জনাব মোঃ সোলাইমান হোসাইন, ইমরাত পরিদর্শক, পরিচালক (জোন-৩/২) এর দপ্তর, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ঢাকা কে উক্ত কর্মকান্ডের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ৪৩(১) মোতাবেক দায়িত্ব পালনে অবহেলা ও অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করতঃ প্রশাসন শাখায় ন্যস্ত করা হলো।

সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ জারি

স্টাফ রিপোর্টার:

আওয়ামী সরকার আমলের বহুল আলোচিত ও সমালোচিত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারি করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।

গত ১০ এপ্রিল এই রেড নোটিশ জারি করা হয়। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ থেকে পালানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ আরও ১১ জনের বিষয়টি ইন্টারপোলের আইনি পর্যালোচনাধীন।

বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) ছাড়াও পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, আদালতের নির্দেশনায় প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) অথবা তদন্ত সংস্থার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) শাখা ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন করে থাকে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি পদ মর্যাদার এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার একটি আদালত সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। এরপর গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করতে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করা হয়। বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি বা অপরাধের অভিযোগের কারণে দ্রুত পদক্ষেপ হিসেবে গত ১০ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল।

বেনজীরের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, বেনজীর স্বপরিবারে পলাতক। কোন দেশে আছেন তা এখনো আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে রেড নোটিশ যেহেতু জারি হয়েছে, আশা করি খুব শিগগিরই তার অবস্থান ও গ্রেপ্তার করে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশটি এখনো ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি। তার অবস্থান শনাক্ত করার পর সেটি ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। তবে রেড নোটিশ জারির বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশকে ই-মেইলের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে ইন্টারপোলের পক্ষ থেকে। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে তিন দফায় ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। চিঠিপত্র আদান-প্রদান ছাড়াও একটি ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও রেড নোটিশ জারির বিষয়টি পর্যালোচনা করছে ইন্টারপোল।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে পৃথক তিন ধাপে আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)।

যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন পর্যালোচনা করছে ইন্টারপোল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ।

এখানে উল্লেখ্য যে, ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুদক। অনুসন্ধান চলাকালে গত বছরের ৪ মে সপরিবারে দেশ ছাড়েন তিনি। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপির দায়িত্ব পালন করা বেনজীর ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‌্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম, খুন, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগের তদন্ত চলছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম