তারিখ লোড হচ্ছে...

প্রকাশ্যে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর গলাকেটে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার:

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে বাসায় ঝগড়ার পর বৈশাখী মেলায় ঘুরতে নিয়ে নাগরদোলায় তুলে প্রকাশ্যে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর গলা কেটে হত্যা করেছে পাষণ্ড এক স্বামী।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিন উদ্দিনের মাজারের ওরসের মেলায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় ঘাতক স্বামী সাকিব হোসেনকে (২৫) আটক করেছে পুলিশ। কলহের জেরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

লাকী বেগম বেগমগঞ্জ উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের কালাপুল এলাকার বেদেপল্লির মনছুর আলীর মেয়ে। আটক সাকিব হোসেন নোয়াখালী সদর উপজেলার এওজবালিয়া বেদেপল্লির মঙ্গল মিয়ার ছেলে।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, এক বছর আগে পারিবারিকভাবে সাকিবের সঙ্গে লাকীর বিয়ে হয়। লাকী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

গত ১৫ দিন আগে সে শ্বশুরবাড়ি থেকে স্বামীসহ বাবার বাড়িতে আসে। রোববার তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শাকিব তার স্ত্রীকে মারধর করে জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে। পরে নিজের ব্যবহৃত একটি মুঠোফোনে ভেঙে ফেলে এবং নিজের মাথা নিজেই ফাটিয়ে ফেলে।

সোমবার সন্ধ্যার দিকে লাকীর স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা একলাশপুর ইউনিয়নের মহিন উদ্দিন হাফেজের ওরসের মেলায় ঘুরতে যায়। সেখানে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে নাগরদোলায় ওঠে।

নিহতের মা শেফালী বেগম বলেন, নাগরদোলায় থাকা প্রত্যক্ষদর্শী এক নারী আমাকে বলেছে, নাগরদোলায় থাকা অবস্থায় একপর্যায়ে সাকিব লাকীর গলায় ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রীকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। আমি আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, রক্তাক্ত অবস্থায় ভুক্তভোগীকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায় সাকিব। সেখানে চিকিৎসক লাকীকে মৃত ঘোষণা করেন। অভিযুক্ত সাকিব হোসেনকে আটক করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।

স্ত্রীর অপরাধে স্বামী ও শিশুকে থানায় আটকে রাখার অভিযোগ ওসির বিরুদ্ধে

রায়হান চৌধুরী, মুরাদনগর থেকে:

স্ত্রীর অপরাধে নিরপরাধ স্বামী ও তার ৪ মাসের শিশু তোহাকে থানার হাজতে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ওসি আজিজুল বারী ইবনে জলিলের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর, ২০২৩) দিবাগত রাতে কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে স্থানীয়দের মাঝে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা সদরের উত্তর পাড়া গ্রামের আব্দুল মোতালেব’,র স্ত্রী সুমি আক্তার (২৬) তার ভাই দেলোয়ার হোসেনের এনজিওর ঋণের টাকার জিম্মাদার হয়। পরে সেই ঋণের কিস্তির টাকা দিতে না পারায় জিম্মাদার সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয় সেই এনজিও কোম্পানি। এরই ধারাবাহিকতায় সুমি আক্তারের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আসে মুরাদনগর থানায়। শুক্রবার বিকেলে মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী সুমি আক্তারকে বাড়িতে না পেয়ে তার অসুস্থ স্বামীকে থানায় নিয়ে এসে ৪ ঘন্টা হাজতে আটকে রাখে। বিষয়টি জানতে পেরে সুমি আক্তার কোলের শিশু তোহাকে নিয়ে থানায় হাজির হলে ছেড়ে দেয়া হয় তার স্বামীকে।

স্বামী আব্দুল মোতালেব অভিযোগ করে বলেন, যদি কোন ধরনের অপরাধ করে থাকে সেটি আমার স্ত্রী করেছে। তার অপরাধে তো আর আমাকে অসুস্থ অবস্থায় ৪ ঘন্টা থানার হাজতে আটকে রাখতে পারেনা! আমার শিশু কন্যা তোহা কি অপরাধ করেছে? যে তাকেও সারা রাত থানার হাজতের ভিতরে আটকে রাখতে হলো! পুলিশ চাইলে কি আমার স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে থানার ভীকটিমদের রুমে রাখতে পারতো না? আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এদিকে আইনজীবী ব্লাস্ট (কুমিল্লা শাখা) প্রবীণ আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ নুরু বলেন, একজনের অপরাধে অন্যজনকে সাজা দিতে পারে না, শিশুদের জন্য আলাদা সেল থাকে, যদি পুলিশ হাজতে শিশুটিকে রাখে তাহলে এটা ঠিক হয়নি।

মুরাদনগর থানার এসআই আলমগীর বলেন, ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য সুমি আক্তারের বাড়ীতে গেলে সে পালিয়ে যায়। এসময় তার স্বামীকে দেখে নেশাগ্রস্ত মনে হওয়ায় ওসি সাহেবকে জানালে তিনি তাকে থানায় নিয়ে আসতে বলেন। পরে তার স্ত্রী থানায় আসলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তাকে হাজতে রাখা হয়নি, একটি রুমে রাখা হয়েছিলো।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল বারী ইবনে জলিল বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি সুমি আক্তার ও তার শিশু সন্তানকে থানার হাজতের ভিতরে রাখার বিষয়টি মিথ্যা। কারণ আমার থানায় কোন নারী সেল নেই। তাকে থানার নারী ও শিশু ডেস্কে রাখা হয়েছে। অপরদিকে স্বামীকে তুলে এনে চার ঘন্টা আটকে রাখার বিষয়টিও মিথ্যা। এ ধরনের কোন ঘটনাই মুরাদনগর থানায় ঘটেনি।

মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিযুষ চন্দ্র দাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি আমাদের তদন্ত করে দেখতে হবে, যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম