তারিখ লোড হচ্ছে...

ওজন কমায় পেয়ারা

স্টাফ রিপোর্টার:

বারোমাসী ফল পেয়ারা বাংলাদেশের অতি পরিচিত ও সহজলভ্য ফল। পেয়ারা বা এক রকমের সবুজ রঙের বেরি জাতীয় ফল। পেয়ারা ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এর জুড়ি নেই। ভিটামিন সিতে ভরপুর এটি। দেশি ফলগুলোর মধ্যে পেয়ারা যেমন পুষ্টিগুণে ভরা তেমনি খেতে বেশ সুস্বাদু। কাঁচা পেয়ারা খেলে কফ কম হয়। পেয়ারায় রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন সি সমেত বিভিন্ন গুণাগুণ। এই ফলের জাদু গুণে একাধিক রোগভোগের সমস্যা থেকে মেলে মুক্তির রাস্তা।

তবে অন্যান্য বর্ণের পেয়ারাও দেখতে পাওয়া যায়। লাল পেয়ারাকে রেড আপেলও বলা হয়। পেয়ারার বৈজ্ঞানিক নাম পিসিডিয়ান গোয়াজাভা। পেয়ারার প্রায় ১০০টিরও বেশি প্রজাতি আছে।

মেক্সিকো, মধ্য আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া প্রভৃতি স্থানে পেয়ারা বেশি জন্মে। অনুমান করা হয় ১৭শ শতাব্দীতে পেয়ারা আসে। এটি একটি পুষ্টিকর ফল। এটি ভিটামিন সি, ক্যারোটিনয়েডস, ফোলেট, পটাশিয়াম, আঁশ এবং ক্যালসিয়াম প্রভৃতিতে সমৃদ্ধ। একশ’ গ্রাম পেয়ারায় দুইশ’ মি.গ্রা. ভিটামনি সি আছে অর্থাৎ পেয়ারায় কমলার চেয়ে ৪গুণ বেশি ভিটামিন সি আছে। পেয়ারার খোসায় কমলায় চেয়ে পাঁচগুণ বেশি ভিটামিন সি থাকে। এই ফলে লৌহ উপাদানও পর্যাপ্ত পরিমাণে বিদ্যমান। পুষ্টিমানের বিবেচনায় কমলার মান যেখানে ১৮৬ পয়েন্ট সেক্ষেত্রে পেয়ারার পুষ্টি মূল্যমান ৪২১ পয়েন্ট। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে এন্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল আছে যা ক্যান্সার প্রতিরোধক।

প্রতি ১০০ গ্রাম পেয়ারাতে রয়েছে- খাদ্যশক্তি ৬৮ কিলোক্যালরি, আমিষ ২.৫৫ গ্রাম, শর্করা ১৪.৩ গ্রাম, ফাইবার ৫.৪ গ্রাম, কোলেস্টেরল ০ মিলিগ্রাম, চর্বি ০.৯৫ গ্রাম, ভিটামিন এ ৬২৪ আইইউ, ভিটামিন সি ২২৮ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪১৭ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৮ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ২২ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ১১ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.২৬ মিলিগ্রাম, জিংক ০.২৩ মিলিগ্রাম, লাইকোপেন ৫২০৪ মাইক্রোগ্রাম।

গ্রামে প্রায় বাড়িতেই এই ফলের একাধিক গাছ দেখা যায়। শহরেও যারা ছাদবাগান করেন, সেখানে স্থান পায় অন্তত একটি পেয়ারার গাছ। বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রচুর পরিমাণে পেয়ারা হয়। পেয়ারা ফল হিসেবে, ভর্তা করে, এমনকি জেলী বানিয়ে খাওয়া যায় মজাদার এই ফলটি। অনেকে পেয়রা সহজলভ্য বলে অবহেলা করে থাকেন, খেতে চান না। কিন্তু এর মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান ও গুণাবলী গুলো জানলে পেয়ারাকে আর কখনোই উপেক্ষা করবেন না।

প্রতিদিন মাত্র ১টি পেয়ারা আপনার নানা ধরণের শারীরিক সমস্যা খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে। পেয়ারাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ। এছাড়া ভিটামিন বি২, ই, কে, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, কপার, আয়রন, ফসফরাস এবং পটাসিয়াম রয়েছে। এর উচ্চমাত্রার ভিটামিন-এ ও সি ত্বক, চুল ও চোখের পুষ্টি জোগায়, ঠান্ডাজনিত অসুখ দূর করে।

পেয়ারায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এবং এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। এটি কোষকে রক্ষা করে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। পেয়ারাতে লাইকোপিন, ভিটামিন সি, কোয়ারসেটিন এর মত অনেকগুলো উপাদান রয়েছে যা শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আর এই এন্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সার হওয়ার ঝুকি কমায় এবং শরীরের ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি রোধ করে। বিশেষ করে এটি প্রোসটেট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এছাড়া পেয়ারায় অবস্থিত ভিটামিন সি বিভিন্ন ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে পারে৷

পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম রয়েছে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ভাবে লাইকোপিন সমৃদ্ধ গোলাপি পেয়ারা খেলে কার্ডিওভাস্কুলার রোগের ঝুঁকি কমায়। তাছাড়া পেয়ারা ট্রাইগ্লিসারাইড এবং LDL নামক একটি খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় যার ফলে হার্টের অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

পেয়ারা হার্টের জন্য খুব ভাল। পেয়ারায় থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং ভিটামিন ফ্রি র‌্যাডিক্যালস থেকে হার্টকে ক্ষতি হওয়া থেকে বাঁচায়। এতে মেলে কলার সমান পটাশিয়াম। যা হার্টের জন্য খুব ভাল। পেয়ারার পাতা ব্যাড কোলেস্টেরল কমিয়ে গুড কোলেস্ট্রেরল বাড়ায়।

ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য পেয়ারা দারুণ উপকারী। পেয়ারার ফাইবার দেহে চিনি শোষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। পেয়ারার রসে থাকা উপাদান ডায়াবেটিস মেলাইটাসের চিকিৎসায় খুবই কার্যকর। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পেয়ারা পাতাও বেশ কার্যকর। পেয়ারাতে প্রচুর ফাইবার এবং কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকার কারণে এটি খেলে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে আর তাই ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুকি কিছুটা কম থাকে।

পেয়ারার বীজ খাওয়া ডায়াবিটিস রোগীদের জন্য উপকারী। এতে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যতালিকাগত প্রোটিন পাওয়া যায়, যা চিনি এবং চিনির যৌগ ভেঙে দিতে সাহায্য করে। এটি মিষ্টি খাবার সহজে হজম করে। পেয়ারার বীজ শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা কমায়, যার ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।

পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি এবং শক্তিশালী এন্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং শরীরকে বিভিন্ন রোগের সাথে যুদ্ধ করার শক্তি প্রদান করে। তাছাড়া যে কোন ইনফেকশন থেকে পেয়ারা শরীরকে সুস্থ রাখে।

পেয়ারাতে ভিটামিন এ আছে আর ভিটামিন এ চোখের জন্য উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এ কর্নিয়াকে সুস্থ রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে। তাছাড়া এটি খেলে চোখের ছানি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটা কমে যায়। কাঁচা পেয়ারা ভিটামিন এ এর ভাল উৎস।

পেয়ারা খেলে শরীরের অতিরিক্ত ওজন খুব সহজেই ঝড়ানো যেতে পারে৷ যাদের ওজন অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে তারা পেয়ারা খেতে পারেন৷ পেয়ারা ত্বককে ক্ষতিকর আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ত্বক, চুল ও দাঁতের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

পেয়ারা গর্ভবতী মায়েদের জন্যও অত্যন্ত উপকারী। পেয়ারায় বিদ্যমান ফলিক অ্যাসিড গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্র গঠনে ভূমিকা রাখে এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ প্রতিহত করে।

এছাড়া পেয়ারা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ও লাইকোপিন রয়েছে। এর ফলে রক্ত পরিষ্কার হয় ও ত্বক অনেক বেশি উজ্জ্বল হয়। পেয়ারা চুলের স্বাস্থ্য রক্ষা করে ও চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। পেয়ারা নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। ভিটামিন সি থাকার কারণে সাধারণ সর্দি-কাশি দূর করতেও সাহায্য করে পেয়ারা।

পেয়ারার বীজ খেলে হজম প্রক্রিয়া শক্তিশালী হয়। আসলে এর বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজমশক্তির উন্নতি ঘটায়। পেয়ারার বীজ খেলে মলত্যাগ সহজ হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। এর পাশাপাশি পেয়ারার বীজ সরাসরি গিলে খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

পেয়ারার বীজ খেলে তা ওজন কমাতে সহায়তা করে। এতে কোলেস্ট্রলের মাত্রা একেবারে থাকে না। পেয়ারার বীজে ফাইবারের মাত্রা অধিক পরিমাণে থাকে। পেয়ারার বীজ খেলে শরীরে কার্বোহাইড্রেট কমে এবং তা ওজন কমাতে সহায়তা করে। এতে থাকা ভিটামিন ও খনিজ আমাদের পেট অনেকক্ষণ ভরিয়ে রাখে। যার কারণে দীর্ঘ সময পর্যন্ত আমাদের ক্ষিদে পায় না। তাই ওজন কমাতে হলে ডায়েটে পেয়ারা ও তার বীজ অবশ্যই রাখুন।

সরেজমিন সেই কুখ্যাত স্বর্ণকমল, বরফকল ও ইলিশ ঘাট

ডেস্ক রিপোর্টঃ

কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার এরশাদ শিকদারের কথা মনে আছে? আপনি নতুন প্রজন্মের হলে শুনেছেন তার কথা? খুলনার সেই ভয়াবহ ইলিশ ঘাট কিংবা সাত নম্বর ঘাটের কথা শুনেছেন? চলুন, আজ নতুন কিছু দেখি সরেজমিনে। সঙ্গে তাকে নিয়ে যত কিংবদন্তি আছে, তারও সত্য-মিথ্যা খুঁজে দেখি।

আমি তো মরেই যাব, চলে যাব, রেখে যাবো সবি/ আছসনি কেউ সঙ্গের সাথী, সঙ্গে নি কেউ যাবি/ আমি মরে যাব…’ এটি এই সিরিয়াল কিলারের প্রিয় গান। নিজে গাইতেন খুলনার রহস্যঘেরা তার স্বর্ণকমলের জলসায়। রাজধানীর তিনতলা বাড়িতেও প্রতি মাসে জলসা বসত, সেখানেও গাইতেন গানটি।

মানুষ হত্যার পর পবিত্র হওয়ার জন্য দুধগোসল করতেন এরশাদ শিকদার। তার নামে একটি গরু কোরবানি দিলে তিনি বেঁচে যেতেন ফাঁসির মঞ্চ থেকে, এমন বিশ্বাস জন্মেছিল মৃত্যুর আগে।

একদা শহরের সবচেয়ে সুন্দর এবং ভীতিকর রাজপ্রাসাদ স্বর্ণকমল তার ছোট বউ শোভার জন্য নির্মাণ করেন বাইরের কারিগর এনে। বিয়ের পর এখানেই তোলেন তাকে। এখনো রহস্য হিসেবে থেকে গেলেও এখন শ্রীহীন স্বর্ণকমল। পরিবারের সদস্যদের মালিকানা ভাগাভাগিতে এর একটি অংশ ভাঙা হয়েছে। সেখানে গড়ে উঠবে হাইরাইজ ভবন।

এরশাদ শিকদারের বরফকল নামটি বিভীষিকার প্রতীক স্থানীয় মানুষের কাছে। তাকে নিয়ে যত হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা পাওয়া গেছে, তাতে আমরা এভাবে বলতে পারি- সন্ধ্যা নেমে এলে ভৈরব নদের তীরে শত শত স্থাপনা আর জলযানে জ্বলে ওঠে হাজারো বাতি। আলোঝলমলে এই পরিবেশের আড়ালে তার বরফকলের চারপাশ তখন নিস্তব্ধ। ভেতরে পৈশাচিক আনন্দে উন্মত্ত এরশাদ শিকদার। শান্ত নদীর জল ছুয়ে সিমেন্টের বস্তায় বাঁধা মানুষের নিষ্প্রাণ দেহ ডুবে যায় ভৈরবে, সেই বরফ কল থেকে।

এই নদীতে কত মানুষকে ডুবিয়েছেন পিশাচ এরশাদ শিকদার, তার ইয়ত্তা নেই। সেসব খুনের বর্ণনা ভয়ংকর। খুনের পর দুধগোসল দিয়ে বসতেন গানের জলসায়। নিজে গাইতেন তার সেই গান- ‘আমি তো মরেই যাব, চলে যাবো, রেখে যাবো সবি’। খুনের মামলায় আদালতে ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর কারাগারের কনডেম সেলের ভেতরেও গুনগুন করে ওই গানের কলি ভাজতেন ভয়ংকর এরশাদ শিকদার।

বিশ্বাস হয়, এই মানুষটি ফাঁসির মঞ্চ বানান তার বরফকলে? সেখানে যার ডাক পড়ত, তার আর ফেরা হতো না কখনো। তার সঙ্গে দ্বিমত করায় এমনকি এই ফাঁসির মঞ্চ থেকে বাদ যাননি তার আপন ভাগ্নেও। বলছিলেন স্থানীয় এক ব্যক্তি।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, সাতটি হত্যা মামলায় এই এরশাদ শিকদারের ফাঁসির রায় হয় আদালতে। নিজের মৃত্যু হয় ফাঁসিমঞ্চে, একমাত্র মেয়ে আত্মহত্যা করেন ফাঁস দিয়ে। এরশাদ শিকদার আর তার স্বর্ণকমল নিয়ে খুলনা অঞ্চল ও সারা দেশে নানা ধরনের মিথ ও কিংবদন্তি প্রচলিত।এ নিয়ে আমরা সরেজমিনে কথা বলি নানাজনের সঙ্গে। কী বলছেন তারা?

তার স্বর্ণকমলে গুপ্তপথ আছে। দেখে এসেছেন তারা। গুপ্তপথে এখান থেকে ওখানে যাওয়া যায়। কেউ বলেন, ছোটবেলায় শুনেছেন স্বর্ণকমলে অনেক সোনাদানা জমা করেন এরশাদ শিকদার। তবে গ্রেপ্তারের পর সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এসব কিছু পায়নি।

একজন বলেন, এরশাদ শিকদারের নৃশংসতা আর স্বর্ণকমলের রহস্য শুনতে শুনতে তারা বড় হয়েছেন। এখনো মানুষ সে কথা শুনলে ভয় পায়। যাকেই অপছন্দ করেছে, তাকেই মেরে নদীতে ফেলেছে বস্তায় বেঁধে।

আর হত্যার পর গাড়িসহ নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া লাশ উদ্ধারের খবর তো একসময় পত্রিকা জুড়ে সয়লাব ছিল। সেটি ছিল যুবলীগ কর্মী খালিদের। তাকে মেরে বস্তায় ভরে নদীতে ফেলার সময় তার গাড়িটিও ফেলা হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বললেন আরেকজন।

তবে এরশাদ শিকদার গরিব মানুষদের কিছু করতেন না। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আর সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি-দখলবাজিতে বাধা পেলে কাউকে ছাড়তেন না। তাকে ভয় পেত না এমন কেউ ছিল না শহরে। বলেন এক যুবক।

যত কিংবদন্তিই থাকুক, একজন যুবক বলেন, তিনি স্বর্ণকমলের ভেতরে ঢুকেছেন। কিন্তু ব্যবহারের কিছু আসবাব ছাড়া আর কিছু দেখেননি সেখানে। বাড়িতে এরশাদের কেউ থাকে না। ভাড়াটে আছেন কেউ কেউ, তবে না থাকার মতো।

মামলার রাজসাক্ষী এরশাদের সহযোগী নূরে আলমের জবানবন্দি থেকে জানা যায়, অন্তত ৬০ জনকে খুন করেন এরশাদ শিকদার। সেই বরফকলে মৃত্যু হতো বেশির ভাগ হতভাগ্যের। মানুষের কাছে এখনো নৃশংসতার প্রতীক এরশাদ শিকদার।

নূরে আলমই বলেছিলেন, এরশাদের কাছে ৭০টির বেশি অস্ত্র ছিল। তবে তার স্বর্ণকমল থেকে একটি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছিল তখন। স্থানীয়দের ধারণা পুলিশের কাছে ধরা পড়ার আগেই অস্ত্র সরিয়ে ফেলেন এরশাদ।

তার গানের কথাগুলোই যেন ধরা দেয় নিজের জীবনে। ঐশ্বর্যের প্রদর্শনী স্বর্ণকমলে থাকে না কেউ। দুই ছেলের বাস শহরের দুই প্রান্তে। ছোট বউ শোভার অবস্থান ঢাকায়। আদালতে তার ফাঁসির রায়ের পর পরিবারের কাছে আফসোস করেছিলেন, শত কোটি টাকার সম্পদ রেখে গেছেন, কিন্তু তার নামে একটা গরু কোরবানি দিতে পারেনি পরিবার। এরশাদ শিকদারের বিশ্বাস ছিল তার নামে গরু কোরবানি হলে বেঁচে যেতেন তিনি।

১৯৯৯ সালের নভেম্বরে যখন গ্রেফতার হন এরশাদ শিকদার, তার বিরুদ্ধে তখন ৪৩টি মামলা বিচারাধীন। বিচারিক আদালতে সাতটি হত্যা মামলায় তার ফাঁসির রায় হয়। ২০০৪ সালের ১০ মে মধ্যরাতে খুলনা জেলা কারাগারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কার্যকর করা হয় ভয়ংকর খুনি এরশাদ শিকদারের মৃত্যুদণ্ড।

জন্মস্থান ঝালকাঠির নলছিটি থেকে খুলনায় এসে এরশাদ শিকদার কিছু দিন রেলস্টেশনের কুলির সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। সেখানে রেললাইনের পাত চুরির দলে যোগ দেন তিনি। পরে নিজেই একটি দল গঠন করেন, যাকে সবাই চিনত ‘রাঙ্গা চোরা’ নামে। এরপর গঠন করেন ‘রামদা বাহিনী’। এই বাহিনী নিয়ে ৪ ও ৫ নম্বর ঘাট এলাকা দখল করেন এরশাদ। মালিককে তাড়িয়ে দিয়ে দখল করেন সেই বরফকলও।

জাতীয় পার্টি দিয়ে রাজনীতি শুরু এই ভয়ংকর খুনির। বিএনপি হয়ে আওয়ামী লীগেও তার নাম ওঠে। ১৯৯৯ সালে গ্রেফতার হওয়ার সময় তিনি খুলনা সিটি করপোরেশনের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার। তার হাতের মুঠোয় তখন জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও বোঝাপড়া ছিল তার। যাকে পথের কাঁটা মনে করেছেন, তাকেই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছেন দেশের শতাব্দীর কুখ্যাত খুনি এরশাদ শিকদার ।

সবা:স:জু- ৫৬৫/২৪

language Change
সংবাদ শিরোনাম
সাংবাদিকরা জীবন বাজি রেখে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করেন” — গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব ছেলেবন্ধুদের পরিবারের ভেতরের গল্প বললেন সোহিনী ডিসি নিয়োগ আওয়ামী আনুগত্যের প্রাধান্য কৃষক দলের নেতা খন্দকার নাসিরের গ্রেপ্তার চাইলেন মহিলা দল নেত্রী মুন্নী শেরপুরের নকলায় কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার-১ মানিকছড়িতে ধানের শীষ মার্কায় ভোট চেয়ে ওয়াদুদ ভূইয়া'র পথসভা সীমান্ত হতে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় নেশাজাতীয় ট্যাবলেট জব্দ জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি সিন্ডিকেটে আটকে আছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কোটি টাকার মেশিন কেরানীগঞ্জে ঠিকাদার রফিকের অবৈধ গ্যাস সংযোগে টাকার মেশিনের সন্ধান