তারিখ লোড হচ্ছে...

জটিল রোগ থেকে মুক্তি দেয় সুস্বাদু ফল জামরুল

স্টাফ রিপোর্টার:

জামরুল হালকা মিষ্টি স্বাদযুক্ত একটি রসালো গ্রীষ্মকালীন ফল। জামরুল স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এতে খনিজ পদার্থ রয়েছে কমলার তিন গুণ এবং আম, আনারস ও তরমুজের সমান। লিচু ও কুলের সমান এর ক্যালসিয়ামের পরিমাণ এবং আঙুরের দ্বিগুণ। আয়রনের পরিমাণ কমলা, আঙুর, পেঁপে ও কাঁঠালের চেয়েও বেশি।

জামরুলের বৈজ্ঞানিক নাম Syzygium samarangense। ইংরেজি নাম জাভা আপেল। জামরুলের আঞ্চলিক নাম অনেক। যেমন—ঢাকাইয়া ভাষায় এই ফলকে বলা হয় আমরোজ। এ ছাড়া গোলাপজাম, সাদাজাম, মণ্ডল, কোনো কোনো অঞ্চলে লকট নামেও পরিচিত। জামরুল বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। তবে সাদা, হালকা সবুজ ও লাল-গোলাপি রঙেরই বেশি দেখা যায়। দেখতে ঘণ্টাকৃতির বলে এটি Bell Fruit নামেও পরিচিত।

জামরুল বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, সামোয়া, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড প্রভৃতি দেশে জন্মে। ক্রান্তীয় অঞ্চলে জামরুলের ব্যাপক চাষ হয়।

ফসফরাসের পরিমাণ আপেল, আঙুর, আম ও কমলার চেয়ে বেশি। জামরুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পানি, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ডায়াটারি ফাইবার, স্টার্চ, সুগার, চর্বি, কোলেস্টেরল, ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘বি১’, ‘বি৩’, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, সালফার।

জামরুল ডায়াবেটিস, ক্যানসার নিয়ন্ত্রণসহ একাধিক পুষ্টিগুণের ভাণ্ডার। সে কারণে নিয়মিত জামরুল খাওয়ার পক্ষেই সওয়াল করছেন বিশেষজ্ঞরা। পুষ্টিবিজ্ঞানীদের কথায়, জামরুলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে খনিজ এবং ভিটামিন। সেই সঙ্গে এই ফলে মজুত আছে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের খনি। এসব উপাদান একত্রিত হয়েই কিন্তু জামরুলকে এক অনন্য ফলে পরিণত করেছে। তাই আর দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব জামরুলের একাধিক চোখ ধাঁধানো উপকার সম্পর্কে জেনে নিন।

তৃষ্ণা নিবারণ করে

তৃষ্ণা নিবারণের জন্য এটি একটি দুর্দান্ত ফল। সানস্ট্রোক থেকে এই ফল রক্ষা করে। ডিহাইড্রেশনের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলো দূর করে। গ্রীষ্মের তাপ থেকে শরীরকে ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে।

দূরে থাকে ক্যানসার

ক্যানসার নামটা শুনলেই বুকের ভেতরটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে। তাই যেনতেন প্রকারে এই অসুখের করাল গ্রাস থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। এ কাজে আপনার সহযোদ্ধা হতে পারে জামরুল। এই ফলে রয়েছে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ-এর খনি। এই দুই উপাদান ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি আটকে দেয়। তাই নিয়মিত এই ফল খেতে ভুলবেন না।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে​

জামরুলে শক্তিশালী অ্যান্টিহাইপারগ্লাইসেমিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। জাম্বোসাইন একটি বায়োঅ্যাকটিভ স্ফটিক অ্যালকালয়েড। যা শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। বিশেষ করে, ডায়াবেটিক রোগীদের মাঝে।

পেটের সমস্যা নিপাত যাবে​

বাঙালি আর পেটের সমস্যা যেন সমার্থক! গ্যাস, অ্যাসিডিটি, পেট ফেঁপে যাওয়ার মতো সমস্যায় আমরা নিত্যদিন ভুগতে থাকি। এই সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার পরই টপাটপ গিলে নিই অ্যান্টাসিড।

তবে এই ধরনের ওষুধ খেলে তৎক্ষণাৎ সমস্যা কমে যায় ঠিকই, কিন্তু সমস্যার মূলে কুঠারাঘাত করা যায় না। ফলে সময় সুযোগ পেলেই ফের পেটের সমস্যা চাগার দেয়। তাই এই পেটের সমস্যাকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে চাইলে প্রতিদিন একটা করে জামরুল খান। কারণ এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা পেটের স্বাস্থ্য ফেরাতে সাহায্য করবে।

​ব্লাডার ইনফেকশনের খেল খতম​

অনেকেই নিয়মিত ব্লাডার ইনফেকশনের ফাঁদে পড়েন। বিশেষত, মহিলারাই এই সমস্যায় বেশি ভুক্তভোগী। তবে জানলে অবাক হয়ে যাবেন, নিয়মিত জামরুল খেলেই কিন্তু এই অসুখের প্রকোপ কমবে। তাই যারা বছরে একাধিকবার এই ধরনের সমস্যায় ভোগেন, তাদের ডায়েটে অবশ্যই জামরুল থাকা চাই।

হাড় হবে শক্তিশালী​

হাড়ের ক্ষয়জনিত সমস্যার সমাধান করতে চাইলে প্রতিদিন একটি বা দুটি জামরুল খেতেই হবে। এই ফলে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম, যা দেহে এই খনিজের ঘাটতি মিটিয়ে দেয়। ফলে হাড় হয় শক্তিশালী। তাই অস্টিওপোরোসিসের সমস্যায় ভুক্তভোগীরা নিয়মিত জামরুল খান।

টিউমারের চিকিৎসা

জামরুল অ্যাপোপটোসিস প্ররোচিত করার ক্ষমতা রাখে। এই ফলে থাকা পানিতে পলিস্যাকারাইড রয়েছে। যা টিউমারের ভলিউম কমাতে উল্লেখযোগ্য ভাবে কাজ করে।

শরীরের ওজন কমায়

জামরুলে থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার খাদ্য সংবহনতন্ত্রের সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। পাকস্থলীর হজমশক্তি বাড়ায় এবং শর্করা, চর্বি ও প্রোটিন জাতীয় খাবার সহজে হজম হয়। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।

যেসব কারণে কাটা তরমুজ ফ্রিজে রেখে খাওয়া উচিত নয়

স্টাফ রিপোর্টার:

বাজার থেকে বড় একটি তরমুজ কিনে আনার পর পুরোটা একেবারে খাওয়া হয়। সেক্ষেত্রে কিছুটা খেয়ে বাকিটা ফ্রিজে রেখে দেন অনেকে। তাছাড়া ফ্রিজের ঠান্ডা তরমুজ অনেকের প্রিয় খাবারের তালিকায় রয়েছে। কিন্তু এই অভ্যাসটি কি ভালো? না কি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর?

কাটা তরমুজ ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। এর নানা ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। চলুন বিস্তারিত জেনে নিই-

ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি
কাটা তরমুজ ফ্রিজে রাখলে তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর আশঙ্কা থাকে, যা খাদ্য বিষক্রিয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। ফ্রিজের ঠান্ডা পরিবেশে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ধীর হলেও, কাটা ফলের উন্মুক্ত পৃষ্ঠে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে।

পুষ্টিগুণের হ্রাস

ফ্রিজে তরমুজ রাখলে কমে যায় এর পুষ্টিগুণ। গবেষণায় দেখা গেছে, ঘরের তাপমাত্রায় রাখা তরমুজে অ্যান্টি অক্সিডেন্টের মাত্রা বেশি থাকে। ফ্রিজে রাখলে এই উপকারী উপাদানের পরিমাণ হ্রাস পায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।

ফ্রিজে রাখলে তরমুজের স্বাদ, রং এবং গুণগত মান পরিবর্তিত হতে পারে। ফ্রিজের ঠান্ডা পরিবেশে তরমুজের প্রাকৃতিক মিষ্টতা এবং রসালো ভাব কমে যেতে পারে। ফলে তরমুজ খেলে আসল স্বাদ পাওয়া যায় না।

তরমুজ সংরক্ষণের সঠিক পদ্ধতি

গোটা তরমুজ সংরক্ষণ

তরমুজ গোটা অবস্থায় ঘরের তাপমাত্রায় রাখা উচিত নয়। এটি ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা ভালো। এতে তরমুজের পুষ্টিগুণ ও স্বাদ বজায় থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তরমুজ কাটার ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে খাওয়া ভালো।

কাটা তরমুজ সংরক্ষণ

কাটা তরমুজ দ্রুত খাওয়া উচিত। এরপরও যদি সংরক্ষণ করতেই হয়, তবে পরিষ্কার পাত্রে ঢেকে ফ্রিজে রাখুন এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা খেয়ে ফেলুন। তবে কাটা তরমুজ ফ্রিজে না রাখাই শ্রেয়।

তরমুজ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এতে প্রায় ৯০% পানি থাকে, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সহায়তা করে। চোখের জন্যও উপকারী এই ফল। দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। তরমুজের সঠিক পুষ্টি পেতে দীর্ঘক্ষণ ফ্রিজে রেখে না খাওয়াই ভালো।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম