এ এম এম আহসানঃ---
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে বাড়ি ভাড়ার লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি সাধারণ ভাড়াটিয়াদের জীবনে চেপে বসেছে এক নিষ্ঠুর বাস্তবতা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোনো লিখিত চুক্তি বা পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাড়িওয়ালারা বছরে একাধিকবার ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছেন। এতে করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের পরিবারগুলো পড়ছে দারুণ বিপাকে।
একজন সরকারি চাকরিজীবী জানিয়েছেন, “একই বাড়িতে আছি তিন বছর। শুরুতে ভাড়া ছিল ১০ হাজার টাকা। এখন গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজারে। বেতনে তেমন কোনো পরিবর্তন না আসায় সংসারের খরচ চালানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।”
শুধু ভাড়াই নয়, অভিযোগ আছে, বহু বাড়িওয়ালা অবৈধভাবে গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করছেন। এসব অনিয়মের বোঝা এসে পড়ছে ভাড়াটিয়াদের কাঁধে—অতিরিক্ত বিল, অনিরাপদ সংযোগ, এবং কোনোরকম সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই বসবাস করতে হচ্ছে বহু পরিবারকে।
অথচ ১৯৯১ সালের বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, কোনো বাড়ির ভাড়া নির্ধারণ এবং পরিবর্তন করতে হলে মালিক ও ভাড়াটিয়ার মধ্যে লিখিত চুক্তি থাকতে হবে। বাস্তবে এই আইনের প্রয়োগ নেই বললেই চলে। বরং হঠাৎ করে ভাড়া বাড়িয়ে ভাড়াটিয়াকে বের করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় অনেক ক্ষেত্রে।
ঢাকা-ভিত্তিক একটি গবেষণা সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, গড়ে একজন কর্মজীবী নাগরিক তার আয়ের ৫০-৬০ শতাংশ ব্যয় করে কেবল ভাড়ার পেছনে। বাকি অর্থে সন্তানদের পড়াশোনা, চিকিৎসা, খাবার এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা মেটানো হয়ে পড়ে দুঃসাধ্য।
নগর উন্নয়ন বিশ্লেষকরা বলছেন, ভাড়াটিয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে কার্যকর ভাড়ানিয়ন্ত্রণ আইন প্রয়োগের পাশাপাশি মালিক-ভাড়াটিয়া সম্পর্কের স্বচ্ছতা, চুক্তিভিত্তিক বাসাভাড়া, এবং স্থানীয় প্রশাসনের সক্রিয় হস্তক্ষেপ অপরিহার্য।
এই অনিয়ন্ত্রিত ভাড়াবৃদ্ধি বন্ধ না হলে, শহুরে নাগরিক জীবনে স্বস্তি ফিরবে না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: কে এম মাসুদুর রহমান, সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন (মসজিদ গলি),ঢাকা - ১০০০।
✆ ০১৫১১৯৬৩২৯৪, ০১৬১১৯৬৩২৯৪ 📧dailysobujbangladesh@gmail.com.
কপিরাইট © ২০২৫ দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত