তারিখ লোড হচ্ছে...

মুগদার মদিনাবাগ পানির পাম্প এলাকায় সোহেল গংদের মাদক ব্যাবসা চলছেই

মোঃ আব্দুল আজিজঃ
ভাই লাগবে, কয়টা লাগবে। ভালো মাল আছে, একদাম ১৫০ টাকা।’ রাজধানীর মুগদা থানা এলাকার মদিনাবাগ পানির পাম্প এলাকায় প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই এমন কথা শোনা যায়। যারা এ কথার সঙ্গে পরিচিত নন তাদের কাছে বিষয়টি খটকা লাগবে। কিন্তু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলেই যে কেউ বুঝতে পারবেন যে, তারা মাদকের কাস্টমার খুঁজছে।


অন্যদিকে দেখা যায়, কেউ মোটরসাইকেলে, কেউ রিকশায় এসে মাদক সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। আবার দেখা যায়, কেউ নরমাল পোশাকে এসে কিনে নেয় এই মাদক। মাঝেমধ্যে দেখা মেলে পুলিশের, কিন্তু পুলিশ একদিকে টহল দেয় অন্যদিকে নির্ভয়ে ইয়াবা-গাঁজা বিক্রি চলে। এটা নিত্যদিনের চিত্র।
দেড় শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু এই এলাকায় মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত। মাঝেমধ্যে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও থানা পুলিশ অভিযান চালায়। আটকও করা হয় জড়িতদের। ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজাও দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরেও এখানে কমছে না মাদক ব্যবসা। সেখানে ডিউটিরত পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারি থাকলেও কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না এই মাদক ব্যবসা। তাদের গ্রেফতার করা হলেও কয়েকদিন পর কারাগার থেকে জামিনে বের হয়ে সংশ্লিষ্টরা আবার শুরু করে এই ব্যবসা। এখানে ছিন্নমূল মানুষেরাও এই মাদক ব্যবসা করে।
সরেজমিন দেখা যায় সড়কের দুই পাশেই একশ্রেণির ছিন্নমূল মানুষ মাদক বিক্রি করছে। গাঁজা-ইয়াবা ছাড়াও ফেনসিডিল ও হেরোইন এখানে খুব সহজেই মেলে। তবে গাঁজা ও ইয়াবার ব্যবসা রমরমা। দেখা যায়, এলোমেলো চুল, ছোট বাচ্চা কোলে নিয়ে পাশে এসে বলছে ভাই লাগবে, ভালো মাল আছে। ১৫০ টাকা পুটুলি। লাগলে নিতে পারেন। একটু সামনে গেলেই এক নেশাগ্রস্ত লোক বলছে ‘ভাই কয়টা’।


আর এই মুগদা এলাকার মাদক ব্যাবসা নিয়ন্ত্রন করে ( ১) সোহেল,পিতা মৃত,,মোঃ ফারুক,, (২) সালমা,পিতা মৃত -মোঃ ফারুক,, (৩) হাসিনা বেগম,,(৪), শিল্পী বেগম,, স্বামী – মো সোহেল ( ৫)বিউটি বেগম,,স্বামী – মো খোকন,,(৬) বানু বেগম,,স্বামী – মোঃ সোহেল,, এরা সকলেই মুগদা মদীনাবাগ পানির পাম্পের সামনে ওপেন মাদকের হাট,, গাঁজা ও ফেনসিডিল বিক্রি করে,, মেন হোতা হলো,,সোহেল ও হাসিনা গং।


তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তার নাম সোহেল। তিনি বলেন, এই মাদক বিক্রির টাকা দিয়ে থানা পুলিশসহ স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিকে নিয়মিত দিতে হয়। এ তালিকায় আছেন মুগদা থানার সোর্স নামধারী কিছু ব্যক্তিও। এলাকা যাদের নিয়ন্ত্রণে, তারা প্রভাবশালী। আমরা ব্যবসা বন্ধ করে দিলে অন্য লোকজন দিয়ে এ ব্যবসা চালানো হবে। প্রভাবশালী কারা, জানতে চাইলে তিনি তাদের নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক তালিকায় দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে ডিএমপির মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে ৩৯৯ জন। এ রকম প্রতিদিন রাজধানীর ডিএমপির ৫০টি থানায় গড়ে ৪০-৫০ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ মাদকও। তবুও কমছে না মাদক ব্যবসা। বেড়েই চলছে এর কারবার। তাদের গ্রেফতার করা হলেও কারাগার থেকে অনায়াসে বেরিয়ে এসে আবার শুরু করে এই অবাধ মাদক ব্যবসা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) বলেন, মাদক ব্যবসায়ীরা একের পর এক কৌশল পাল্টায়। এসব নিত্যনতুন কৌশলে পাচার হওয়া মাদক ধরতে হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। ইদানীং বাকপ্রতিবন্ধীদের (বোবা) মাধ্যমেও মাদক ব্যবসা করা হয়। এতে তাদের আটক করা হলেও তারা মূল মাদক ব্যবসায়ীর নাম-পরিচয় কিছুই জানাতে পারে না, দিতে পারে না স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও। অন্যদিকে একশ্রেণির হিজড়া আনা-নেওয়া করে মাদক। তা ছাড়া যানবাহনে বিভিন্ন ধরনের স্টিকার লাগিয়ে দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকেও আনা হয় মাদক। এগুলোই বিক্রি করা হয় ঢাকাসহ এর আশপাশের এলাকায়। তিনি আরও বলেন, রাজধানীতে সবচেয়ে বড় মাদকের বাজার মুগদা থানা এলাকা। প্রতিদিন অর্ধকোটি টাকার মাদকের লেনদেন হয় ওই এলাকায়। ডিএনসি প্রায় সময়ই অভিযান চালায়। মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারও করা হয়। কিন্তু কমছে না মাদক ব্যবসা। কারণ এর পেছনে রয়েছে একশ্রেণির মানুষের চাঁদাবাজি।

অন্যদিকে মাদকের চোরাকারবার নিয়ন্ত্রণে আনতে কেবল ঢাকাতেই প্রায় সাড়ে তিন হাজার মাদক ব্যবসায়ীর একটি তালিকা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর। এই তালিকায় যারা আছে, তাদের কঠোর নজরদারির মধ্যে রেখে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক।
ডিসি মতিঝিল এ বিষয়ে বলেন এলাকায় আমাদের পুলিশ টিম সবসময় কাজ করছে। কিছু ছিন্নমূল মানুষ অবাধে মাদক ব্যবসা করে। তাদের সার্বক্ষণিকভাবে নজরে রাখা হয়। প্রতিদিন ওই স্থানে অভিযান চলে। গ্রেফতারও করা হয়। কিছু অসাধু চক্র এর পেছনে রয়েছে। তাদের আইনের আওতায় নিযে আসলে মাদক ব্যবসা কমে যাবে।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বলেন, বাংলাদেশে মাদকের ঝুঁকি সবসময়ই ছিল। তিনি জানান, তারা তৎপর রয়েছেন। বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে মাদক ব্যবসা করে একশ্রেণির মানুষ। তবে পুলিশ সবসময় এই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে আসছে। প্রতিদিন ৪০-৫০ জনকে মাদক বিক্রি ও সেবনের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে থাকে ডিএমপি।

সিদ্ধিরগঞ্জে সরকারি রাস্তা দখল করে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে বাপ বেটার চাদাবাজি

স্টাফ রিপোর্টারঃ

রাজধানী ঢাকার অদূরেই অবস্থান নারায়ণগঞ্জ জেলার। যে জেলা থেকে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান যোগাযোগ সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক।আর এই মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ের পাশের অংশে রিক্সা লেন দখল করে দোকান বসিয়ে প্রতিদিন পুলিশের নাম ভাঙিয়ে নাসিক এক নম্বর ওয়াডের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন ও তার পুত্র সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াস ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের নিয়ে তোলা হচ্ছে চাঁদা ।

প্রতিদিন দোকানগুলো থেকে পুলিশের নাম করে উত্তোলিত টাকা মাসে ১৭ থেকে ১৮ লাখ টাকা হওয়ায় অজ্ঞাত কারণে স্থায়ী ভাবে রিক্সা লেন এই চাঁদাবাজদের কবল থেকে মুক্ত হচ্ছে না।

সওজ এবং পুলিশ কখনো উচ্ছেদ করলেও পরক্ষণেই আবার ঐ জায়গা দখল করে নেয় কাউন্সিলর আনোয়ার ও তার ছেলে ইলিয়াস ও তার সহযোগীরা।

পুলিশ উচ্ছেদ করার পর পরক্ষণেই ঐ রিক্সা লেন ইলিয়াস বাহিনী দখল করায় একে পুলিশের সাথে ইলিয়াস বাহিনীর টম এন্ড জেরীর নাটকের সাথে অবহিত করেছেন শিমরাইলের একাধিক মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফুটপাতের অবৈধ দোকানের মালিকদের পুলিশ তথা প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করে কাউন্সিলর আনোয়ারের ছেলে ইলিয়াস ও তার লোকজন।

তারা আরও জানান, দীর্ঘদিন এই সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াস নামের এক চাঁদাবাজ তার নিয়োজিত চাঁদাবাজ জামাল, মাসুদ দিয়ে পুলিশের নামে চাঁদা তুলছেন। চাঁদাবাজরা এসব দোকানপাট থেকে দৈনিক ২০০ থেকে ৫০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। দোকান প্রতি ১ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অগ্রিম নেয় সংঘবদ্ধ এ চাঁদাবাজ চক্র।

রিক্সা লেনের ফুটপাথ থেকে চাঁদা উত্তোলনের ব্যাপারে চাঁদাবাজ ‘ ইলিয়াস হোসেন ও তার ম্যানেজার মাসুদ জানান, তার উত্তোলিত চাঁদার পরিমাণ অর্ধলক্ষ টাকা থেকে কিছু বেশী। এ চাঁদার একটি অংশ পুলিশ, প্রশাসনের একাধিক ব্যক্তি ও স্থানীয় কয়েক জনসাংবাদিককে দিয়ে সন্তষ্ট করেন বলে জানান

এতে তার কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি। বাকী টাকা এক মার্কেটের মালিক ও তার সহযোগীদের মধ্যে বিলি করে তার অল্প কিছু টাকা লাভ থাকে বলে মন্তব্য তার।

এদিকে গত আগস্ট মাসে শিমরাইল মোড়ের ফুটপাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৩ শতাধিক দোকান উচ্ছেদ করে। তবে পুলিশ স্থান ত্যাগ করার কিছুক্ষণ পরই চাঁদাবাজ বাহিনী রিক্সা লেনের ঐ জায়গা তার দখলে নিয়ে নেয়। সে থেকে অদ্যবধি পূর্বের ন্যয় ইলিয়াস বাহিনী চালিয়ে যাচ্ছে তার চাঁদাবাজী।

এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মসিউর রহমান বলেন, পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদার করা হয় জানতাম না। যারা পুলিশের নাম ভাঙিয়ে চাঁদা আদার করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য যে, গত ২০ ডিসেম্বর ২০২১ গত আগস্ট মাস ২০২২ ও সিদ্ধরগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় সওজের কর্মকর্তারা শিমরাইল মোড়ে গড়ে ওঠা এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করে।

উচ্ছেদের সময় সওজের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, দখলকারীরা এসব দোকান গড়ে তুলে পরিবহন ও পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করছিল। সরকারি রাস্তা দখল করে অবৈধ ভাবে গড়েতোলা এসব দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবৈধ দোকান উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।
কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরের দিন আবারো সরকারি রাস্তা (রিক্সা লেন) দখল করে দোকান বসানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিবারই সওজ ও পুলিশের উচ্ছেদের কিছুক্ষণ পর পুনরায় কাউন্সিলর আনোয়ারের ছেলে ইলিয়াসের হকার বাহিনী ফুটপাত দখল করে ব্যবসা শুরু করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সওজের নির্বাহী কর্মকর্তা শাহানা ফেরদৌস জানান ফুটপাত দখল করে সাধারণ মানুষের চলাচলে অসুবিধা হোক এটা আমরা কখনো বরদাস্ত করবো না ফুটপাত জনগণের জন্য দখল করে দোকান বসতে দেওয়া হবে না অতি শীঘ্রই এই ফুটপাত উচ্ছেদ করবো

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম