তারিখ লোড হচ্ছে...

ফের চাঙ্গা ক্যাসিনো জুয়া নিয়ন্ত্রণে কাউন্সিলর শামীম ?

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে রাজধানীর ক্লাবপাড়ার সব জুয়ার আস্তানা তছনছ হলেও বছর ঘুরতেই ফের চাঙ্গা হয়ে উঠেছে এ চক্র। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরুর পর এ চক্রের মাফিয়ারা অনেকেই থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ভারতে গা ঢাকা দিলেও চক্রটির একাধিক সদস্য রাজধানীতে চালিয়ে আসছে জুয়ার আসর ।

জুয়ার বোর্ড পরিচালনকারী একাধিক ব্যক্তি ও বিপুলসংখ্যক জুয়ারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ক্লাবপাড়ায় জুয়া বন্ধ থাকলেও রাজধানীতে এ খেলা মোটেই থেমে নেই। ক্লাবগুলো বন্ধ থাকলেও ক্যাসিনো খালেদ মাহমুদের সহযোগী সোহেল স্পোটিং ক্লাবের জুয়ার আসর গুলো বন্ধ হলে

কৌশল অবলম্বন করে খেলাঘর সমাজ কল্যান সমিতি ভবনের ২য় তলায় চালিয়ে আসছে জমজমাট জুয়ার আসর। জুয়া নিয়ন্ত্রণ করা জন্য ডিএনসিসি কাউন্সিলর সহ একাধিক ব্যাক্তি নিয়ে গড়ে তুলেছেন নতুন সিন্ডিকেট ।

সিটিজি লাইভের অপরাধ অনুসন্ধানে জানা যায়, ক্যাসিনো সোহেল জেল থেকে বের হয়ে এসে কিছুদিন গাঢাকা দেন বর্তমানে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে কিছু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে হাত করে আবারো ফিরে আসে ক্যাসিনো জুয়া ব্যবসায়।

প্রথমে ক্যাসিনো সোহেল রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে জুয়ার বোর্ড বসিয়ে সুবিধা করতে না পারলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় ডিএনসিসি ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম হাসান, ক্যাসিনো সোহেল, টিটু, বিল্লাল ও রাজ্জাক সহ একাধিক ব্যাক্তি নিয়ে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট বর্তমানে তেজগাঁও থানাধীন তেজকুনি পাড়ার এই সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য কাউন্সিলর শামীম নিয়ন্ত্রণাধীন খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি কার্যালয়ের ২য় তলায় বেশ কয়েকটি রুমে রাতভর চালিয়ে আসছে ক্যাসিনো, জুয়া এবং মাদক সেবন। এই সমিতির সভাপতি কাউন্সিলর শামীম তাই নির্বিঘ্নে চালিয়ে আসছে জুয়ার আসরটি ।
এই জুয়ার আসরে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকার লেনদেন হয়। কাটাকাটি, তিনকার্ড, ফ্লাস, গেমবোর্ড, গেম, হাইডু ও হাজারি খেলা চলছে এখানে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও থানা পুলিশ নিয়মিত মোটা অংকের অর্থ নিয়ে থাকে। বর্তমানে খেলাঘর সমিতি কার্যালয় জুয়ারীদের কাছে নিরাপদ আস্তানা হিসেবে মনে করেন জুয়ারীরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তেজকুনি পাড়া এলাকার একাধিক স্থানীয়দের অভিযোগ খেলাঘর সমাজ কল্যান সমিতি খেলাধুলা ও সামাজিক মূলক কর্মকাণ্ড করে থাকতো কাউন্সিলর শামীম হাসান  সভাপতি হ‌ওয়ার পর থেকেই মাদক আর জুয়ার আখড়ায় পরিণত হয়েছে আর এই জুয়া ও মাদকের টাকার ভাগিদার রয়েছেন অনেকেই। প্রশাসন থেকে শুরু করে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা টাকার ভাগ পেয়ে থাকেন আর সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন ডিএনসিসি ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামীম হাসান ।

একাধিক সূত্র জানায়,

মতিঝিল ক্লাব পাড়ায় ক্যাসিনো জুয়া পরিচালনা করে একাধিক ফ্ল্যাট ও গাড়ির মালিক হয়েছেন ক্যাসিনো সোহেল। রয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিজ নামে বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছেন। প্রতিটি ফ্ল্যাটের মূল্য তিন থেকে চার কোটি টাকা করে। এ ছাড়া ক্যাসিনো জুয়ার টাকায় তিনি একটি হাউজিং কোম্পানি খুলে সেখানে বিনিয়োগ করেছেন প্রায় ১০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে এখন শত কোটি টাকার মালিক ক্যাসিনো সোহেল।

এবিষয়ে আইন সহায়তা কেন্দ্রের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিষ্টার শাহীন আলম জানতে চাইলে তিনি সিটিজি লাইভ”কে বলেন,আইনের দৃষ্টিতে জুয়া খেলা শুধু একটিমাত্র শাস্তি মূলক অপরাধ হলেও এটিকে ঘিরে আরও অনেক অপরাধের জন্ম হচ্ছে। চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি থেকে শুরু করে পারিবারিক সহিংসতা এবং সামাজিক অস্থিরতা তৈরির নেপথ্যে জুয়া অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।

এছাড়াও তিনি আরো বলেন

সম্প্রতি সময়ে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ বেঞ্চ বলেন ,অপরাধ ধনী ও দরিদ্রের ক্ষেত্রে সমান। সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে- কারও সঙ্গে বৈষম্য করা যাবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিষয়টি মনে রাখতে হবে। আদালত আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধনের মাধ্যমে শাস্তির মেয়াদ বাড়ানো উচিত। আদালত প্রত্যাশা করেন, সরকার এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবে।মহানগর এলাকায় জুয়া খেলার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ দেন স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, সহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের টাকার বিনিময়ে জুয়া খেলা বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এখন যদি কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এই আদেশ পালন না করে তার নিজ স্বার্থ হাসিল করার জন্য জুয়ার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে থাকে তাহলে তার স্বার্থের জন্য দেশের সর্বোচ্চ বিচার বিভাগকে অপমান করেছেন ।

এ ব্যাপারে তেজগাঁও থানার ওসির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে অবশ্যই জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অন্যদিকে এবিষয়ে জানতে খেলাঘর মাঠের সভাপতি স্থানীয় কাউন্সিলর শামীম হাসান এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

জনস্বাস্থ্যের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহমুদ কবীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে ভয়ংকর অভিযোগ!

স্টাফ রিপোর্টারঃ

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে ভান্ডার সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহমুদ কবীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতিসহ স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ পাওয়াগেছে। তার নামে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ে সচিব বরাবরে রেজাউল করীম নামে এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নব্বইয়ের দশকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ছাত্রদলের সাংগঠনিক মাহমুদ কবীর চৌধুরী। বিএনপি-জামাতপন্থী কর্মকর্তাকে শতকোটি টাকার প্রকল্প পরিচালক বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী। যা নিয়ে দেখে দিয়েছে নানা প্রতিক্রিয়া। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে প্রকল্প পরিচালক হতে যাচ্ছে মাহমুদ কবীর চৌধুরী। অধিদপ্তরে কর্মরত বিএনপি-জামাতপন্থী অন্যান্য নেতাদের সাথে নিয়ে বিএনপি জামাতপন্থী সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে গোপনে ঐক্যবন্ধ করে অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রণ করছেন মাহমুদ।

উল্লেখ্য, যে ভবন নির্মাণের পর থেকে ঢাকাস্থ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ভবনটির রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল ঢাকা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর উপর। দীর্ঘ দিনের নিয়ম উপেক্ষা করে সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান ভবনে এবং অধিদপ্তরে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে সংগঠিত করার জন্য ভান্ডার সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী এক সময়ের চুয়েট ছাত্রদলের নেতা মাহমুদ কবীর চৌধুরীর হাতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ভবন রক্ষণাবেক্ষণ, নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব তুলে দেন। সেই থেকে ভবনের নিরাপত্তা সাবেক ছাত্রদল নেতাদের হাতে চলে যায়।

সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে উদযাপিত সকল অনুষ্ঠান যেমন- ১৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ৭ মার্চ সহ অধিকাংশ জাতীয় অনুষ্ঠান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরেই অনুষ্ঠিত হয়, এবং সকল অনুষ্ঠানের সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন। ভবনের নিরাপত্তা গার্ড, পরিচ্ছন্ন কর্মী এবং ভবনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তার নিয়ন্ত্রণে থাকার সুবাদে তিনি সুকৌশলে ভবনে অনেক নাশকতা মূলক কার্য পরিচালনা করে আসছেন। তার নেতৃত্বে অধিদপ্তরে এবং ‘চুয়েটে’ সংগঠিত অসংখ্য নাশকতা মূলক ঘটনার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখ করা হল।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) লেখা পড়ার সময় চুয়েটের ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট এক আতঙ্কের নাম ছিল মাহমুদ কবীর চৌধুরী। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত চুয়েট ক্যাম্পাসে অবস্থান কালে তৎকালীন চুয়েট ছাত্রলীগের অসংখ্য নেতাকর্মী তার চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছে। পায়ে গুলি করা, রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা, সিগারেটের আগুন দিয়ে শরীরে ছেকা দেয়া, শীতের রাতে পুকুরের পানিতে ‘চুবানো’ নির্যাতনের এহেন কোন ধরন নাই যা তিনি ছাত্রলীগ নেতাদের উপর ব্যবহার করেনি।

মাহমুদ কবীর চৌধুরী চুয়েটের ‘তারেক-হুদা’ হলের ছাত্র ছিলেন। হল এবং ক্যাম্পাসের সকল ছাত্ররা তার ভয়ে সব সময় আতংকগ্রস্থ থাকত। ঐ হলের ছাত্রলীগ কর্মী তারেককে মাঘ মাসের শীতের এক রাত্রিতে সে এবং তার বাহিনী রুম থেকে ধরে নিয়ে পুকুরের ঠান্ডা পানিতে ‘চুবায়’। তারপর পানি থেকে তুলে এনে সিগারেটের আগুন দিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে ‘ছ্যাকা’ দেয়। চুয়েটের দক্ষিণ ছাত্রাবাসের ছাত্রলীগ কর্মী শাহীন। মাহমুদ কবীর চৌধুরীর নির্দেশে এক রাতে তার বাহিনী শাহীনকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে একটি ঝোঁপের পাশে ফেলে রাখে। চুয়েটের ছাত্র থাকাবস্থায় ছাত্রলীগ/বাম সংগঠনের এমন অসংখ্য নেতাকর্মী চুয়েট ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদ কবীর চৌধুরীর নিষ্ঠুর নির্যাতনের স্বীকার হয়েছে।
তার অত্যাচার নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং বিভিন্ন বাম সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাহমুদ কবীর চৌধুরী এবং তার ‘টর্চার বাহিনীর’ বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন শুরু করলে ১৯৯৪ সালের নভেম্বর মাসে সে চুয়েট ক্যাম্পাস থেকে অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় এবং অনেক দিন জেল খেটে জামিনে মুক্তি লাভ করে। এমন একজন বিএনপি পন্থী কর্মকর্তা কিভাবে আওয়ামীলীগের শাসনামলে কাদের ছত্রছায়ায় থেকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল ভবন নিয়ন্ত্রণ করছেন এবং ভবনে বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকান্ড সংগঠিত করে চাকুরী করে যাচ্ছেন তা সংশ্লিষ্ট সকলেরই প্রশ্ন।

সূত্র আরো জানায়, শহীদ শেখ রাসেল দিবস উদযাপনের লক্ষ্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ২০২১ সালে ভবনের সামনে শেখ রাসেল চত্ত্বর প্রতিষ্ঠা করা হয়। পোর্চের নীচে রাসেল চত্ত্বরের মূল বেদীতে শেখ রাসেলের লাইটিং যুক্ত ১টি ছবি এবং তার দুই পাশে শেখ রাসেলের আরও দুইটি বড় ছবি স্থাপন করা হয়। মূল বেদীর দুই পাশে ভবনের বাগান পরিবেষ্টিত (কিছু অংশবাদ দিয়ে) করে বাগানের পূর্ব এবং পশ্চিত পার্শ্বে প্রায় দেড়শত ফুট জায়গাজুড়ে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ছবি দিয়ে রাসেল চত্ত্বর সুসজ্জিত ছিল। ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে স্থাপিত সমুজিত রাসেল চত্ত্বরটি ২০২২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় এক বছরের অধিককাল অক্ষত অবস্থায় ছিল। ‘১০ ডিসেম্বর ২০২২ খ্রিঃ তারিখ টার্গেট করে বিএনপি ও তাদের সহযোগীরা যখন সরকার উৎক্ষাতের হুংকার দেয়া শুরু করে তখন থেকেই ভবনে বিএনপি পন্থীদের আনাগোনা বেড়ে যায়।

জনশ্রুতি আছে, ঐ সময়ে ভবনে আগত বিএনপি নেতারা তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলীকে ভবনের সামনে থেকে রাসেল চত্ত্বরসহ ভবনের অভ্যন্তরে বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয় নেতাদের ছবি অপসারনের জন্য অনুরোধ করেন। তারই এক পর্যায়ে তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী ভবন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা সাবেক ছাত্রদল নেতা মাহমুদ কবীর চৌধুরীর মাধ্যমে মূল বেদীতে শেখ রাসেলের একটি ছবি রেখে শেখ রাসেলের অন্য দুইটি ছবিসহ বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত সকল ছবি ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম সপ্তাহের কোন এক রাতের আধারে ভবন থেকে অপসারন করে ফেলে। ভবনের নিরাপত্তা ও রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে থাকা মাহমুদ কবীর চৌধুরী কোন অবস্থাতেই এর দায়ভার এড়াতে পারে না।

বিষয়টির প্রতিবাদে ২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর তৎকালীন সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমানের সাথে ভবনের আওমীলীগপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চরম বাক বিতন্ডা হয়। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক দোষীদের সনাক্ত করে শাস্তি প্রদানের জন্য প্রধান প্রকৌশলীকে অনুরোধ করা হলে তিনি ঐদিনই তৎকালীন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী) মো. সরোয়ার হোসেনকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত টীম গঠন করে। যেহেতু ভবন পরিচালনা, রক্ষনাবেক্ষন ও সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব মাহমুদ কবীর চৌধুরীর উপর ন্যাস্ত, তাই তার নির্দেশনা ছাড়া এই ধরণের নাশকতামূলক কাজ কোন কর্মচারী করতে পারে না। ভবনের নীচে ফাঁকা গোল চত্ত্বরে ‘বঙ্গবন্ধু কর্ণার’ স্থাপন করা হয়েছে। উক্ত বঙ্গবন্ধু কর্ণারে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের যে ‘থ্রী-ডি’ ভিডিও স্থাপন করা হয়েছে সেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অনেক গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ দিয়ে বিকৃতভাবে ভাষণটি রেকর্ডিং হয়েছে। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন উক্তি বিকৃতভাবে ভবনের দেয়ালে বা পোষ্টারে/ব্যনারে লেখা হয়। এ বিষয়ে আওয়ামীপন্থী কর্মকর্তা কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বার বার সাবেক প্রধান প্রকৌশলীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও তিনি এসব ভূল সংশোধন করেননি।

একনাগাড়ে দীর্ঘ ১৪ বছরের অধিককাল যাবত দল ক্ষমতায় থাকলেও অধিদপ্তরের আওয়ামীপন্থী প্রকৌশলীরা কোনঠাসা অবস্থায় পড়ে আছেন। পক্ষান্তরে বড় বড় প্রকল্প এবং গুরুত্বপূর্ণ সকল পদ বিএনপিপন্থী প্রকৌশলীদের দখলে। অধিদপ্তরের বিএনপি-জামাতপন্থী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যখন মাহমুদ কবির চৌধুরী ও অন্যান্যদের নেতৃত্বে সংগঠিত হচ্ছে তখন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী কর্তৃক এ ধরনের একজন বিএনপিপন্থী প্রকৌশলীকে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করায় সবারমনে উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিপন্থী একজন প্রকৌশলীর হাতে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এত বড় প্রকল্পের দায়িত্ব তুলে দেয়া বৃহত্তর কোন নাশকতামূলক পরিকল্পনার অংশ কিনা তা গভীরভাবে খতিয়ে দেখার উচিত। তিনি ছাত্র জীবনে ছাত্রদলের রাজনীতি এবং সন্ত্রাসী কার্যকলাপের সাথে জড়িত ছিলেন। তাকে এতো বড় প্রকল্পের দায়িত্ব না দিলেই ভালো হবে। এটা শুধু আমার কথা পুরো ভবন জুড়েই একই কথা।’
এই বিষয়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভান্ডার সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাহমুদ কবীর চৌধুরীর বলেন, ‘আমি ঢাকার বাহিরে ব্যস্ত আছি। এ বিষয়ে পরে কথা হবে’।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম