জয়ের বিলাসবহুল ২ বাড়ির সন্ধান পেয়েছে দুদক

জয়ের বিলাসবহুল ২ বাড়ির সন্ধান পেয়েছে দুদক

ডেস্ক রিপোর্টঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের নামে দুটি বাড়ির সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্য প্রায় ৫৩ কোটি টাকা। দুদকের একটি অনুসন্ধান টিম নিশ্চিত করেছে, বাড়ি দুটি কেনা হয়েছিল ২০১৪ সালের ৫ মে এবং ২০২৪ সালের ৬ জুলাই। এর মধ্যে গ্রেট ফলস এলাকার পার্কার হাউস ড্রাইভে অবস্থিত বাড়িটি ২০২৪ সালে একক মালিকানায় কেনা হয় ৩৮ লাখ ৭৯ হাজার ডলারে (প্রায় ৪৫ কোটি টাকা)।

অন্যটি কিনেছেন ২০১৪ সালে, সাবেক স্ত্রী ক্রিস্টিনা ওয়াজেদের সঙ্গে যৌথ মালিকানায়, যার দাম ছিল প্রায় ১০ লাখ ডলার (সেসময় ৭ কোটির বেশি টাকা)। তবে এগুলোর কোনোটিই জয় তার আয়কর নথিতে উল্লেখ করেননি। দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাড়ি দুটি শনাক্ত করার পর সুনির্দিষ্ট তথ্যসহ প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেওয়া হয়। কমিশনের অনুমোদনের পর আদালতে উপস্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। ২৪ জুলাই শুনানি হতে পারে। তিনি বলেন, আদালত আদেশ দিলে সংশ্লিষ্ট আইনি সহায়তার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে যোগাযোগ করা হবে, যাতে সেখানকার কর্তৃপক্ষ ওই সম্পদ জব্দ করতে পারে।

দুদকের সূত্র মতে, সজীব ওয়াজেদের নামে যুক্তরাষ্ট্রে আরও ১৩টি বাড়ি এবং একটি শপিং মলের মালিকানার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ এখন তদন্তাধীন। এর আগে, ৩০ এপ্রিল ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত শেখ হাসিনার পরিবারের পাঁচ সদস্যের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন। ওই সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে গুলশানের বারিধারায় সায়মা ওয়াজেদের চার কোটি ৯৮ লাখ টাকার বাড়ি, খুলনার দিঘলিয়ায় শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ ও সায়মার নামে থাকা জমি এবং গোপালগঞ্জে শেখ রেহানার নামে থাকা ২০ লাখ টাকার সম্পত্তি।

এছাড়া, পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পে ছয়টি প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ, শেখ রেহানা, সায়মা ওয়াজেদ, টিউলিপ সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব এবং আজমিনা সিদ্দিকসহ পরিবারের সাত সদস্য ও সরকারের ১৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক আটটি অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দুদক। এই মামলাগুলোতে অভিযোগ আনা হয়েছে ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ গ্রহণ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাতের, যা এখন আদালতে বিচারাধীন। এছাড়া, শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা) বিদেশে পাচারের অভিযোগে আরও একটি অনুসন্ধান চলছে বলে নিশ্চিত করেছে দুদক।

বিআইডব্লিউটিএ’র অতি:পরিচালক আরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নৌ-মন্ত্রণালয় নিরব কেন?

স্টাফ রিপোর্টার:
নিজেরাই দূর্নীতি করবে আর তা ঠাকার জন্য সাংবাদিককে দোষারোপ করবে এটা যেন আমাদের সমাজের টেডিশন হয়ে দাড়িয়েছে।

ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে। তবে অভিযোগ বা তদন্তের তোয়াক্কা না করে বহাল তবিয়তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা এ কে এম আরিফ উদ্দিন।

জানা গেছে,পাবনায় বাড়ি হওয়ায় রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তির নামও ব্যবহার করে যাচ্ছেন তিনি। আবার কখনো ব্যবহার করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বিশেষ আত্মীয়ের পরিচয়ও। দুদক এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আরিফ উদ্দিন বিআইডব্লিউটিএ’র বন্দর ও পরিবহন বিভাগে অতিরিক্ত পরিচালক এবং ল্যান্ড অ্যান্ড এস্টেট এর পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। গুরুত্বপূর্ণ এলাকার বাসিন্দা এবং দুই দায়িত্ব নিয়োজিত থাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র অধিকাংশ প্রকল্পে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন তিনি। প্রভাব খটিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ৩০১ নম্বর বহুতল একটি বাড়ি তিনি ২২ কোটি টাকায় কিনেছেন। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সি ব্লকের ২/এ নম্বর সড়কের ৪৭/৫৫ নম্বর হোল্ডিংয়ের যে অ্যপার্টমেন্টে তিনি বসবাস করছেন, সেটিও কিনতে খরচ করেছেন ৬ কোটি টাকা। আর অ্যপার্টমেন্টের সাজসজ্জায় খরচ করেছেন আরো ৪ কোটি টাকা। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য কোটি টাকায় কিনেছেন গাড়ি। স্ত্রীর জন্যও আছে পৃথক গাড়ি। স্কলরশিপ ছাড়াই তার ছেলে পড়াশোনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রে। মেয়েকে পড়াচ্ছেন লন্ডনে। লন্ডনের বিগবর্ণ সিটিতে মেয়ের জন্য কিনেছেন একটি বাড়ি। যুক্তরাষ্ট্রেও ছেলের নামে বাড়ি কিনেছেন বলে বিআউডব্লিউটিএ’র কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, পাবনার সুজানগর মৌজার বনখোলা, ঘেতুপাড়া, রামপুর, হাটখালী ও খেতুপাড়ায় অন্তত: ২০০ বিঘা জমি কিনেছেন স্ত্রী শামীমা, সন্তান, ভাগ্নেসহ পরিবারের সদস্যদের নামে। অতিরিক্ত পরিচালক আরিফের বিরুদ্ধে রয়েছে নামে-বেনামে একাধিক ব্যবসায় অর্থলগ্নির অভিযোগ। বেনামে লাইসেন্স করে বিআইডব্লিউটিএ’র বড় বড় কয়েকটি ঠিকাদারী কাজও বাগিয়ে নিয়েছেন বলে সূত্র জানায়।

অভিযোগে আরো জানা গেছে, পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংকে আরিফের রয়েছে কয়েক কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট। বরাদ্দ না থাকলেও বিআইডব্লিউটিএ’র একটি গাড়ি সার্বক্ষণিক ব্যবহার করছেন ব্যক্তিগত কাজে। স্ত্রী শামীমাকে কিনে দিয়েছেন অন্তত শতভরি স্বর্ণালংকার। ব্যক্তিগত আয়কর সার্টিফিকেটে এসব সম্পদের তথ্য তিনি গোপন করেছেন। এর বাইরে বন্দর ও পরিবহন বিভাগের আওতাধীন ঘাট ইজারা নিয়েও আরিফের বিরুদ্ধে রয়েছে ভয়াবহ অভিযোগ। পছন্দের ইজারাদারকে দিয়ে মামলা করিয়ে ইজারা স্থগিত করে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আরিফ। ফোরশোর নবায়নেও ইচ্ছামতো উৎকোচ আদায় করেন তিনি। বিআইডব্লিউটিএ’তে যা ওপেন সিক্রেট ঘটনা।

এ কে এম আরিফ উদ্দিনের এসব অভিযোগ বিষয়ে দুদকের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন রেকর্ডপত্র তলব করে একটি চিঠিও দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক প্রশাসনকে। দুদক জানায়, বিআইডব্লিউটিএ’র আওতায় নারায়ণগঞ্জ পোর্ট থেকে ১ জানুয়ারি ২০১৯-৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের হিসাবের বিবরণী, আরিফ উদ্দিনের ব্যক্তিগত নথি, চাকরির মেয়াদে উত্তোলিত বেতন-ভাতার বিবরণ, দাপ্তরিক দায়দায়িত্ব সম্পর্কীত অফিস আদেশ, তার স্ত্রী শামীমা, দুই সন্তান, ভাগ্নের নামে ব্যবসা এবং শেয়ার পরিচালনার আবেদন এবং অনুমোদন সংক্রান্ত সব ধরনের কাগজপত্র তলব করেছে দুদক। এবিষয়ে জানতে চাইলে ২ জন সাংবাদিকদের নাম নিয়ে তাদের দোষ দিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঠাকার চেষ্টা করলেন কিন্তু মন্তব্য দিলেন না।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম