তারিখ লোড হচ্ছে...

আনোয়ারায় ৮ বছর ধরেই চলছে অবৈধ ইটভাটা, হুমকিতে ফসলি জমি

 

আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা,

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বটতলী ইউনিয়নের পরীরবিল এলাকায় মোহছেন আউলিয়া ব্রিকস (এমবিএম) নামের এই ইটভাটা আইনের তোয়াক্কা না করে ও পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া ফসলি জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটা। প্রশাসন অভিযান চালিয়ে গত বছর জরিমানা করে। চার মাসের সময় দিলেও ওই ভাটায় এ বছরও ইট তৈরি হচ্ছে।৮ বছর ধরেই অনুমোদন ছাড়াই আবাদি জমি ও লোকালয়ের পাশে তৈরি করছে ইট।এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে পরিবেশ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বটতলী ইউনিয়নের পশ্চিম পাশে পরীরবিল এলাকায় তিন ফসলি জমিতে এমবিএম নামের এই ইটভাটায় ফসলি জমির মাটি আর কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। ইটভাটার চারদিকে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি।

জানা যায়, প্রশাসনের অনুমতি না পেলেও প্রতিষ্ঠানটি ইট তৈরির কাজ করছে।ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ তে বলা আছে, ‘আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার ও ফসলি জমির এক কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। ‘ কিন্তু কাগজের নিয়মনীতির সঙ্গে বাস্তবের চিত্রের মিল পাওয়া যায়নি।

কৃষি জমিতে ইটভাটা স্থাপন করায় চাষাবাদে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা। ইটভাটার পাশে কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি রয়েছে। আইন নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইটভাটা চালিয়ে যাওয়ায় প্রশাসন ও আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা হ্রাস পেতে পারে বলে অনেকের ধারণা। তবে ভাটায় কর্মরত শ্রমিকরা জানান, মালিক সবম্যানেজ করেই চালাচ্ছেন ইটভাটা।

বটতলী গ্রামের চাষি জমির উদ্দিন বলেন, ‘যেখানে বছরে তিনবার ধান চাষ হতো, সেখানে ইটভাটা হয়েছে। ভাটার ধুঁয়া পুরো গ্রাম ছড়িয়ে পড়ে। এতে আমরা বিভিন্ন ভাবে ক্ষতির আশঙ্কা করছি।’

সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ১৯ জানুয়ারি সকালে হাইকোর্টের এক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে র‍্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বুলডোজারসহ রণপ্রস্তুতি নিয়ে অবৈধ ইটভাটাটি গুঁড়িয়ে দিতে এসে কর্তৃপক্ষের অনুরোধে তিন লক্ষ টাকা জরিমানা করে তিন মাসের মধ্যে কাগজপত্র ঠিক করার সময় বেঁধে দেন জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুরাইয়া ইয়াছমিনের নেতৃত্বে পরিবেশ অধিদপ্তর। কিন্তু চলতি বছর আবারও এখানে ইট তৈরি হচ্ছে। জরিমানা গুনলেও ইট উৎপাদন থেমে নেই ওই ইটভাটায়।

ইটভাটার মালিক সামশুল আলম বলেন, আমার কাগজপত্র ঠিক না থাকলেও সবঠিক করে নেব। এর চেয়ে বেশি কিছু বলবনা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, ইটভাটাটিকে কয়েকবার জরিমানা করা হয়েছে। পরে তারা আবার চালু করে। বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের সাথে কথা বলে আইনগত ব্যবস্থা।

লাশঘরে রাখা নারীর লাশের সাথে যৌনাচার-পাহারাদার আটক!

রায়হান হোসাইন, চট্টগ্রামঃ-১

২ বছরের এক কিশোরী ও ৩২ বছরের এক নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল মাসে। ওই সময় তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। নিয়ম অনুযায়ী জরুরি বিভাগ থেকে পাশের লাশ ঘর হয়ে চমেকের মর্গে যায় মৃতদেহগুলো। লাশগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে জোর জবরদস্তি কিংবা ধর্ষণের আলামত না মিললেও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য সিআইডির ল্যাবরেটরিতে চিকিৎসকের পাঠানো দুই মরদেহে ‘হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াব (এইচভিএস) ’ পাওয়া গেল একই পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি।

দুই মাসের ব্যবধানে দুটি অপমৃত্যুর ঘটনায় দুই নারীর দেহে একই পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতির ঘটনায় বিষ্মিত হয় সিআইডি। সিনিয়র কর্মকর্তাদের নির্দেশে এ ঘটনার অনুসন্ধানে নামেন সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের এসআই কৃঞ্চ কমল ভৌমিক। তিনি দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ি সংলগ্ন লাশ ঘরের অস্থায়ীভিত্তিতে নিয়োজিত দারোয়ান সেলিমকে (৪৮) শনাক্ত করেন। পরে সোমবার সকালে সেলিমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নারীর মরদেহের সাথে বিকৃত যৌনাচার করার কথা স্বীকার করে এ লাশ পাহারাদার। এ ঘটনায় সেলিমের বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় সিআইডির এসআই কৃঞ্চ কমল ভৌমিক একটি মামলা দায়ের করেন।

গ্রেপ্তার সেলিম (৪৮) কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার সাতেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা বর্তমানে চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট ঘাসিয়াপাড়ার ভাড়া বাসায় থাকেন। তার বিরুদ্ধে এর আগেও পাঁচলাইশ থানায় নারী নির্যাতন মামলা ছিল।

পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, ‘গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি পাঁচলাইশ থানা এলাকা থেকে ৩২ বছর বয়সী এক নারী ও ২৫ এপ্রিল চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরীর মরদেহ নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগে। দুটাই আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা। দুজনকেই হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। তারপর এসব মরদেহ রাতে চমেক পুলিশ ফাঁড়ির পাশে অবস্থিত লাশ ঘরে রাখা হয়। পরের দিন সেখান থেকে প্রর্বত্তক মোড়স্থ মর্গে নিয়ে ময়না তদন্ত করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘লাশগুলোর সুরতহাল প্রতিবেদনে কোনো আঘাতের চিহ্ন কিংবা জোর জবরদস্তি কিংবা ধর্ষণের আলামত না মিললেও ময়না তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য সিআইডির ল্যাবরেটরিতে চিকিৎসকের পাঠানো দুই মরদেহে ‘হাই ভ্যাজাইনাল সোয়াব (এইচভিএস) ’পাওয়া গেল একই পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নেমে মর্গের ডোম এবং লাশ ঘরের পাহারার দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজনকে চট্টগ্রাম সিআইডি কার্যালয়ে নিয়ে চা পানের আড়ালে মুখের লালা থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করেন। তাদের মধ্যে লাশ ঘরের পাহারাদার সেলিমের সাথে ওই দুই নারী ও কিশোরীর লাশে পাওয়া শুক্রাণুর মিল পাওয়া যায়। এরপরই সোমবার আমরা লাশ ঘরের পাহাদার সেলিমকে গ্রেপ্তার করি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এই বিকৃত যৌনাচারের কথা স্বীকারও করেছেন। এরপরও বিস্তারিত জানতে আমরা তাকে রিমান্ডে নিয়ে আরও জিজ্ঞাসাবা করব।’

পাঁচলাইশ থানার ওসি (তদন্ত) সাদিকুর রহমান বলেন, ‘নারীর মরদেহের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করার অভিযোগে চমেকের লাশ ঘরের পাহারাদার সেলিমকে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে। তার বিরুদ্ধে পাঁচলাইশ থানায় একটি মামলা দায়েরের পর আসামিকে সিআইডি নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। মামলাটি তারাই তদন্ত করবে।’

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম