তারিখ লোড হচ্ছে...

মিরপুর বিআরটিএ কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ছত্রছায়ায় চলে দূর্নীতি

রাহিমা আক্তার মুক্তাঃ

রাজধানীর মিরপুর বিআরটিএ অফিসে দালালদের পাশাপাশি নিরাপত্তা দ্বায়ীক্তে নিয়োজিত আনসার কমান্ডার রুহুল আমিন ও সহকারী কমান্ডার (এপিসি) মিনারুল. সহ তার সদস্য বাহিনীরা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দালালদের নিয়ন্ত্রন করে দালালদের কাছ থেকে মাসে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন পিসি রুহুল আমিন। এবং নিজস্ব আনসার সদস্যদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনে গাড়ীর কাগজ – পত্র ঠিক করার মাধ্যমে সদস্যদের কাজ থেকে প্রতিদিন ১০ /১২ হাজার করে নিয়ে থাকেন বলে তাদের অভিযোগ। নাম না প্রকাশে শর্তে একজন দালাল বলেন, আমরা ৮০থেকে ৯০ জন মিলে এখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করি। এই কাজের বিনিময়ে আনসার কমান্ডারকে মাসে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা দিতে হয়। এই টাকা গুলো আনসারের এপিসি মিনারুল কাছে দিতে হয়। মিনারুল আমাদেরকে বলেন আমি পরে কমান্ডার রুহুল আমিন স্যারের কাছে টাকা গুলো পৌছিয়ে দেই । টাকা না দিলে আমাদেরকে ভেতরে ঢুকতে বা কাজ করতে দেয় না। টাকা দিলে আবার কাজ করতে দেয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের কাজের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও এইসব কাজে জড়িত। ৩০ জন আনসার সদস্য এখানে রয়েছে। এমনকি সাবেক আনসার সদস্যরা এখানে এসে কাজ করে। তারা হলেন, মো.রিপন হোসেন, নাজমুল, খিতিশ, প্রীতম, সবুজ শেখ, আহসান, আরমানসহ আরো অনেক সদস্যরা বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে একে পর এক কাজ করে যাচ্ছে। তাদের জন্য আমরা বেশী একটা কাজ করতে পারি না। তার পরও আনসার কমান্ডারকে সপ্তাহ হিসেবে বা মাস হিসেবে টাকা দিতে হচ্ছে। কাজ হক বা না হক টাকা পরিশোধ করতেই হবে। মোটরসাইকেলের ডিজিটাল প্লেট নম্বর লাগাতে হাজারীবাগের কামাল হোসেন বিআরটিএতে আসেন। কামাল হোসেন পেশায় একজন পাঠাও চালক। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা দাউদকান্দীতে সপ্তাহ ধরে তিনি ডিজিটাল প্লেট লাগাতে আসছেন কিন্তু তার সময়ের সঙ্গে মিল হচ্ছে না। যার কারণে তিনি বারবার আচ্ছেন আর ফেরত যাচ্ছেন। এই প্রতিবেদকের কাছে তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিআরটিএ অফিসে সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়, বাধ্য হয়ে নিতে হয় দালাল বা আনসার সদস্যদের সহযোগিতা। কামাল হোসেন নম্বর প্লেট নেওয়ার উদ্দেশে অনেক সময় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। নয়টা থেকে তিনটা পর্যন্ত সরকারি অফিস খোলা থাকায় হাজারীবাগ থেকে যেতে একটু দেরি হয় তার। যেতে না যেতেই মিরপুর বিআরটিএর সামনে দীর্ঘ লাইনে পড়তে হয়। দালাল না ধরেই তিনি নিয়ম অনুযায়ী নম্বর প্লেট লাগাতে চান যার কারণে তিনি পড়েন বিভিন্ন ভোগান্তিতে।লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর তিনটার আগেই ডিজিটাল প্লেট নম্বর দেওয়া বন্ধ করে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। কামালের অভিযোগ, অনেক সময় আনসার সদস্যরা লাইনের মানুষের কাছ থেকে টাকা খেয়ে অনেক মানুষের সিরিয়াল এগিয়ে দেয় এবং ডিজিটাল প্লেট নম্বর লাগিয়ে দেয়। পরে তারা বলে আজ অফিস শেষ এবং যারা লাগাবেন তারা চলে গেছেন। এর পর কামালের মতো অনেকেই এমন ভোগান্তির শিকার হয়ে তাদের মূলবান সময় নষ্ট করে। বুধবার সকালে মিরপুর বিআরটিএ অফিসের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় কথা হয় কামাল হোসেনসহ অনেকের সঙ্গে। এ সময় ভুক্তভুগী মেহেদী হাসান, নয়ন, মাসুদ, ও জামান একই অভিযোগ করেন।ভুক্তভুগীদের অভিযোগ, একদিকে আসতে হয় অনেক দূর থেকে, রাস্তায় থাকে যানজট শুক্রবার ও শনিবার বন্ধ হওয়ায় কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ডিজিটাল নম্বর প্লেট লাগাতে হচ্ছে মোটরসাইকেলে। বিআরটিএ অফিসে পর্যাপ্ত লোকবল থাকার পরেও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয়।এ সময় কামাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, পরপর বেশ কয়েকদিন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও সময় মতো ডিজিটাল নম্বর প্লেট লাগাতে পারিনি। একদিকে থাকে পেটের চিন্তা অন্যদিকে ডিজিটাল নম্বর লাগাতে হবে, অন্যথায় ট্রাফিক পুলিশ বিভিন্নভাবে হয়রানি করবে এবং মামলা দেবে। এক সপ্তাহ যদি এভাবেই সময় যায় তাহলে পেটের চিন্তা করব না ডিজিটাল নম্বর প্লেট লাগাব?শুধু কামাল নয়, এমন অনেক ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ডিজিটাল নম্বর প্লেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এবং ট্যাক্সটোকের নিতে পড়তে হয় বিভিন্ন ভোগান্তিতে। দালাল ধরলে এ সব আগেই সুন্দর মতো এবং সঠিক সময়ে পাওয়া যায়। নিয়ম অনুযায়ী এ সব সেবা নিতে গেলে সময় ও কর্ম দুইটোই নষ্ট হচ্ছে। বিআরটিএ অফিসে গেলে দালালের খপ্পরে পড়তে হয় এবং নানা ধরনের জটিলতায় পড়তে হচ্ছে অনেকের।কথা হয় পেশাদার বাস ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী মো. আজগর আলীর সঙ্গে। আজগরের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ি জেলার সদর থানায়। নিজের ড্রাইভিং লাইসেন্সে নবায়ন করতে ২০২০ সালে আবেদন করেন। অনেক কষ্ট করে তিনি ২০২২ সালের ১০ মে লাইসেন্স হাতে পান। তার লাইসেন্সে এ নাম ভুল হয়েছে যা ঠিক করতে এই টেবিল ওই টেবিল করে সময় নষ্ট করতে হচ্ছে তাকে। নিয়ম অনুযায়ী তিনি কোনো সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।পেশাদার ট্রাক চালক জাবেদুল ইসলাম বলেন, বিআরটিএ-এর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালাল এবং আনসারদের মধ্যে যোগসাজশের কারণে সেবাগ্রহীতাদের এ সব ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।ভোক্তভুগীরা বলছেন, দালাল ছাড়া লাইসেন্স পাওয়ার চেষ্টা করাটাও যেন এক ধরনের পাপ। বিআরটি এর সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়ে নিতে হয় দালালের সহযোগিতা। দালাল আর টাকা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয় না।মোহাম্মদপুর থেকে বিআরটিএ অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্স ডেলিভারি নিতে এসেছেন মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ। তিনি প্রায় তিন ৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স হাতে পান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অনেকেই টাকা দিয়ে আগেই নিয়েছেন।তিনি বলেন, আর কত কষ্ট দেবে বিআরটিএ। আমাদের সেবামুখী মানুষদের। রাস্তার গাড়ির কাগজ পত্র ঠিক না থাকলে পুলিশ হয়রানি করে। আর বিআরটিএ কাগজ সঠিক সময়ে না দিয়ে আরেক ভোগান্তিতে ফেলে।এদিকে দালাল, টাউট ও প্রতারক হতে সাবধান’। এমন সতর্কবার্তা সম্বলিত সাইনবোর্ড চোখে পড়বে রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ সড়ক পবিরবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) গেট দিয়ে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই। শুধু প্রবেশ ফটকেই নয়, এমন সতর্কবার্তা লেখা আরও অনেকগুলো সাইনবোর্ড সাঁটানো আছে মিরপুর বিআরটিএ এর বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে দেয়ালে। কিন্তু এই সতর্কবার্তাকে ছাপিয়ে, বলা যায় বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দালালদের দৌরাত্ম্যই পুরো বিআরটিএ জুড়ে।অবশ্য দালালরা বলছে, বিআরটিএ-এর লোকজনের সহযোগিতায় তারা বিআরটিএ-তে দালালির কাজ করছেন। এজন্য তাদের খুশিও করতে হয়। দালালদের উপস্থিতি এতটাই বেশি যে, সেবা নিতে যাওয়া মানুষরা তাদের হাতেই জিম্মি। সেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে কাজ না করে পালিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে বলে অভিযোগ ভোগান্তি ও প্রতারণার শিকার লোকজনের। দেখা যায় দালালি করার অভিযোগে এক পাঁচ জনকে আটক করে রেখেছে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। বিআরটিএ অফিসের মধ্যে গারতখানায় তাদের আটক করে রাখা হয়। এসময় আটক এক দালাল (হাবিব) বলেন, বিআরটিএ-এর যারা আমাদের ধরেছেন আমরা তো তাদেরই ঘুষ দিয়েই দালালি করি। টাকা একটু কম দিলেই তারা আমাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযান চালান।এক প্রশ্নের জবাবে আটক হওয়া আরেক দালাল মিনহাজ বলেন, টাকা দিলেই একটু পরে ছেড়ে দেবে আমাদের। তিনি বলেন, তবে শুনেছি গতকাল ১০ দালাল ধরার পরে তাদের আদালতে পাঠিয়েছে। আজ আমাদের ছেড়ে দেবে বলে জানতে পেরেছি । তিনি বলেন, দয়া করে আমাদের ছবি তুলবেন না।এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর বিআরটিএ অফিসে কর্মরত সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সাধারণ মানুষের অভিযোগগুলো পুরোপুরি সঠিক না। ভেতরে আমাদের কোনো অসঙ্গতি নেই। নিয়ম অনুযায়ী সবাই ড্রাইভিং লাইসেন্স, নম্বর প্লেট বা অন্যন্য কাগজ পত্র ডেলিভারি হয়।তিনি আরও বলেন, আটক পাঁচ জন দালালের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারছি না। আনসার কমান্ডার ও ম্যাজিস্ট্রেট ভালো বলতে পারবেন। আপনাদের কাছে কোনো অভিযোগ থাকলে আমাদের হেড অফিসে বা এখানে বলতে পারেন।জানতে জাইলে মিরপুর বিআরটিএ অফিসে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার কমান্ডার রুহুল আমিন বলেন, বেশ কয়েকজন দালাল আটক রয়েছে যাচাই-বাচাই চলছে। বিস্তারিত আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট স্যার ভালো বলতে পারবেন।

উত্তরাতে ভন্ড দেওয়ানবাগির অনুসারি এ আর মজিদ

স্টাফ রিপোর্টার:
ঢাকার আরামবাগ এলাকায় ‘দেওয়ানবাগ দরবার শরীফ’ এর প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ মাহবুব-এ-খোদা মারা গেছেন, যিনি দেওয়ানবাগী পীর হিসাবে’ পরিচিত ছিলেন।

জকযেকমাস আগে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়ে বলে দেওয়ানবাগ শরীফের ফেসবুক পাতায় নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু এই ভন্ডের অনুসারির অভাব তারি একজন এ আর মজিদ সে নাকি আবার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কাজ কর্ম করে ভন্ডামির, অনিবন্ধিত অনলাইনের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে উত্তরা সহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়। আর তারি গুরু হলো ভন্ড দেওয়ানবাগী।

দেওয়ানবাগ দরবার শরীফের ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, তার পুরো নাম মাহবুব-এ খোদা। তবে ভক্তদের কাছে তিনি ‘দেওয়ানবাগী’ হিসাবে পরিচিত ছিলেন। তার বড় একটি ভক্ত শ্রেণী রয়েছে।

তার বেশ কিছু বক্তব্য বিভিন্ন সময় বিতর্কেরও জন্ম দিয়েছে।

আশুগঞ্জে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সেখানকার তালশহর কারিমিয়া আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ফাজিল পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন তিনি।

ফরিদপুরের চন্দ্রপাড়া দরবারের প্রতিষ্ঠাতা আবুল ফজল সুলতানা আহমেদ চন্দ্রপুরীর মেয়ে হামিদা বেগমকে বিয়ে করেন।

এর কিছুদিন পরে নিজেই নারায়ণগঞ্জে দেওয়ানবাগ নামের একটি স্থানে আস্তানা তৈরি করেন এবং নিজেকে সুফি সম্রাট হিসাবে পরিচয় দিতে শুরু করেন। সেখান থেকেই তার নামের সঙ্গে দেওয়ানবাগী শব্দটি যুক্ত হয়।

পরবর্তীতে মতিঝিলের ১৪৭ আরামবাগে স্থায়ী দরবার গড়ে কার্যক্রম শুরু করেন।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম