তারিখ লোড হচ্ছে...

ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া

ডেস্ক রিপোর্ট:

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ঢাকা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী বাচ্চু মিয়া শুধু একজন সরকারি কর্মকর্তা নন, বরং এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র “রাজা” হিসেবেই পরিচিত। সরকারি নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে তিনি নিজের খেয়াল মতো পরিচালনা করেন অফিসের কার্যক্রম। তার বিরুদ্ধে রয়েছে ভয়ঙ্কর সব অভিযোগ—চাঁদাবাজি, আত্মীয়কে দিয়ে কাজ ভাগিয়ে নেয়া, প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ, সময়মতো অফিসে না আসা, কাজ শেষ না করেও বিল পরিশোধ করানোসহ নানা অনিয়ম।

  • উপদেষ্টার নাম ব্যবহার করে চাঁদা আদায়

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার নাম ভাঙিয়ে ঠিকাদারদের নিকট থেকে ৪০ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে নির্বাহী প্রকৌশলী বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে।
এই ঘটনায় দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ অনুসন্ধানে নামে এবং একাধিক ভুক্তভোগী ঠিকাদারের সাথে গোপনে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করে।

এক ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “এখানে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। নির্বাহী প্রকৌশলী যখন যা বলেন, তখন তাই দিতে হয়। উপদেষ্টার নাম বলেও তিনি মোটা অঙ্কের টাকা নেন।”

আরেক ঠিকাদার বিপ্লব মিয়া বলেন, “এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে কোনো লাভ হয় না। সাংবাদিকদের টাকায় চুপ করিয়ে দেন তিনি।”

  • প্রকল্পে অস্বচ্ছতা ও বিল জালিয়াতি

দৈনিক সবুজ বাংলাদেশের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ঢাকার মিরপুরে গাবতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয়তলা ভবন নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ না হওয়া সত্ত্বেও বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়া নবাবগঞ্জের বান্দুরায় ইছামতী নদীর উপর ২৭০ মিটার দীর্ঘ একটি ব্রিজ নির্মাণে ৯টির মধ্যে ৮টি স্প্যানের কাজ শেষ হলেও ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন দেখিয়ে ৫০ কোটি ৮৪ লাখ টাকার বিল পরিশোধের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

  • পরিবারকেও বানানো হয়েছে ঠিকাদার

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একটি ট্রেড লাইসেন্সে একটি সংস্থায় একটি তালিকাভুক্তির লাইসেন্স ইস্যু করা সম্ভব। কিন্তু বাচ্চু মিয়া তার ভাই শহিদুল ইসলাম সুমনের নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স ব্যবহার করে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান—‘মোহনা এন্টারপ্রাইজ’ ও ‘মাহমুদ এন্টারপ্রাইজ’ এলজিইডিতে তালিকাভুক্ত করেন।

এই প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি, ‘মাহমুদ এন্টারপ্রাইজ’-এর নামে অফিস রক্ষণাবেক্ষণের কাজ পাইয়ে দিয়ে প্রায় ৪৮.৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে, যেখানে কাজ সম্পূর্ণই না করা হয়েছিল।

  • তদন্তে নেমেছে দুদক, সত্যতা মিলেছে

এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তদন্ত শুরু করে এবং অভিযানের প্রাথমিক পর্যায়ে অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে বলে জানা গেছে। ফলে বাচ্চু মিয়ার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে সংস্থাটি।

  • সাংবাদিকের উপর হামলা ও তথ্য সংগ্রহে বাধা

বাচ্চু মিয়ার এসব অনিয়মের অনুসন্ধানে এসএ টিভির প্রতিবেদক হাসান আল সাকিব তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে বাধার মুখে পড়েন। এলজিইডি কার্যালয়ের মূল ফটকে দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসার সদস্যরা বাচ্চু মিয়ার নির্দেশে তার উপর হামলা চালায় এবং জোরপূর্বক ক্যামেরা থেকে ভিডিও ডিলিট করিয়ে দেন। পরে এই ঘটনায় অভিযুক্ত আনসার সদস্য সাকলাইন ও তৌহিদুলকে প্রত্যাহার করা হয়।

  • ভুয়া পরিচয়ে পোস্টিং, অতীতেও অনিয়মের ইতিহাস

২০২২ সালে বাচ্চু মিয়া তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের কণ্ঠ নকল করে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলীকে ফোন করে নেত্রকোণায় নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে নিজের পোস্টিং করিয়ে নেন। দেড় মাস পর বিষয়টি ফাঁস হলে তাকে ওই পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।

  • বাচ্চু মিয়ার প্রতিক্রিয়া

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাহী প্রকৌশলী বাচ্চু মিয়া বলেন, “আমি একটি দলের আদর্শে বিশ্বাস করি, সেই কারণে এলজিইডির কিছু ফ্যাসিস্ট কর্মকর্তা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।”

 

ডেমরা থানার এস আই নাজমুলের বিরুদ্ধে সুকৌশলে চাঁদাবাজির অভিযোগ

রাজু আহাম্মেদঃ

রাজধানীর ডেমরা থানার এস আই নাজমুলের বিরুদ্ধে মটরসাইকেলকে জিম্মি করে সুকৌশলে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, গত ১২/১১/২০২৩ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ১:২০ ঘটিকার সময় কবি নজরুল ইসলাম কলেজে অধ্যায়নরত শিহাব মটরসাইকেল যোগে ডেমরা থানাধীন স্টাফ কোয়ার্টার যাওয়ার পথে বামৈল নামক স্থানে মটরসাইকেলের তেল ফুরিয়ে যাওয়ায় তেলের খোজে গাড়ি ঠেলতে থাকেন। একই স্থানে ডেমরা থানার এস আই নাজমুল ডিউটিরত অবস্থায় ছিলেন বলে জানা যায়। ভুক্তভোগী শিহাবকে দূর থেকে গাড়ি ঠেলে নিয়ে যেতে দেখে এস আই নাজমুলের ড্রাইভার বিল্লাল সহ এস আই নাজমুল থানার গাড়ী নিয়ে শিহাবের পথ আটকায়। অতঃপর গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চাইলে, শিহাবের সাথে কাগজপত্র নেই বলে জানায় তবে কাগজপত্র বাসায় ফোন দিয়ে আনাবে। কাগজপত্র নেই জেনে এস আই নাজমুল বিএনপির লোক বলে এবং বিভিন্ন মামলার হুমকি দিয়ে শিহাব এবং তার সাথে থাকা সামির ও মামুনকে থানার গাড়িতে তোলেন এবং বলেন, তোমরা এই গাড়ি জালাও পোড়াও করতে এসেছো। শিহাব গাড়ীর কাগজ আনার জন্য তার বড় ভাই হিমেল কে ঘটনা সম্পর্কে জানালে, শিহাবের বড় ভাই যাত্রাবাড়ী থেকে বামৈল মটরসাইকেলের লাইসেন্স সম্পর্কিত কাগজপত্রাদী নিয়ে যায়। কিন্তু গাড়ীর কাগজপত্র দেখার পরেও বিএনপির প্রিকেটিং এর মামলা দেওয়ার কথা বলেন এস আই নাজমুল। কোনো প্রকার দিশা না পেয়ে নিজের ভাইকে মামলা থেকে বাচানোর জন্য এস আই নাজমুলের সাথে কথা বললে এস আই নাজমুল পঞ্চাশ হাজার টাকা দাবী করেন । উক্ত টাকা না দিলে এত রাতে গাড়ী পোড়াতে এসেছে বলে প্রিকেটিং মামলা দিয়ে দিবে বলে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে। অতঃপর নিরুপায় হয়ে শিহাব ও তার ভাই হিমেল অনেক আকুতি মিনতি করার পর পনেরো হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ভুক্তভোগী শিহাবের বড় ভাই হিমেল তখনি যাত্রাবাড়ীতে তার নিজ বাসায় এসে পনেরো হাজার টাকা নিয়ে পূনরায় বামৈল চলে যান। এসময় এস আই নাজমুল সাদা পোশাকে থাকা একজনের সাথে পরামর্শ করে টাকা পনেরো হাজার সেই ব্যক্তির হাতে তুলে দিতে বলেন। এস আই নাজমুলের নির্দেশে ভুক্তভোগী শিহাবের বড় ভাই হিমেল ৩ টি এক হাজার টাকার নোট এবং ১২০ টি একশত টাকার নোট মিলিয়ে মোট পনেরো হাজার টাকা নাম না জানা সাদা পোশাকে থাকা ব্যক্তির হাতে তুলে দেন। টাকা বুঝে পাওয়ার পর শিহাবের বড় ভাই হিমেলের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে এবং এই বিষয় কারোর সাথে আলোচনা বা না জানানো শর্তে শিহাব, সামির ও মামুনকে ছেড়ে দেন। এছাড়াও পরবর্তীতে উক্ত বিষয় কাউকে জানালে বিএনপির প্রিকেটিং এর মামলা দিয়ে দিবে বলে হুমকি প্রদান করেন।

ঘটনার পরের দিন ভুক্তভোগী শিহাবের বড় ভাই স্থানীয় সাংবাদিকদের ঘটনা সম্পর্কে জানায়। উক্ত ঘটনার বিষয়ে সংবাদকর্মীরা এস আই নাজমুলের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে প্রথমে এস আই নাজমুল সম্পূর্ণ ঘটনা অস্বীকার করেন এবং পরবর্তীতে সংবাদকর্মীদের মুঠোফোনে কল দিয়ে চায়ের দাওয়াত দেন। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের স্বার্থে সংবাদকর্মীরা এস আই নাজমুলের সাথে সাক্ষাৎ করতে স্টাফ কোয়ার্টার যায়। স্টাফ কোয়ার্টারে সংবাদকর্মীদের সাথে এস আই নাজমুল সহ গাড়ীর ড্রাইভার বিল্লাল একটি রেস্টুরেন্টে বসে উক্ত ঘটনার বিষয়ে আলোচনা করেন। এক পর্যায়ে ঘটনার সম্পর্কে এস আই নাজমুল বলেন, টাকা পয়সা সম্পর্কে আমি জানি না, তবে ঘটনা স্থানে আওয়ামীলীগের দলীয় কিছু লোক উপস্থিত ছিলো। তারাই প্রতারনার মাধ্যমে টাকা টা নিয়ে গেছে। সাদা পোশাকে থাকা ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে এস আই নাজমুল বলেন, সাদা পোশাকে থাকা ব্যক্তি টি আওয়ামীলীগের নেতা । আর টাকা পয়সা নেওয়ার সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।
অন্যদিকে ভুক্তভোগী জানায়, সাদা পোশাকে থাকা ব্যক্তিটি এস আই নাজমুলের সোর্স হিসেবে কাজ করছিলো এবং টাকা নেওয়ার পূর্বে সাদা পোশাকে থাকা ব্যক্তি টি একাধিক বার এস আই নাজমুলের সাথে আলোচনা করেছে। এস আই নাজমুলের সাথে একাধিক বার আলোচনা করার পরেই পনেরো হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলে ।

এস আই নাজমুলের মত পুলিশের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সাধারন জনগন নিরাপত্তাহীনতায় থাকবে বলে আশংকা ব্যাক্ত করে, উক্ত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয় সচেতন মহল।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম