তারিখ লোড হচ্ছে...

মিয়ানমারে যুদ্ধবিরতির জন্য ব্যক্তিগত কূটনীতি দরকার

ডেস্ক রিপোর্ট:

মিয়ানমারে চলমান সংকট নিরসনে ব্যক্তিগত কূটনীতির ওপর জোর দিয়েছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস-হোর্তা। আসিয়ানের সদস্য পদ পাওয়ার পর তিনি বলেছেন, চলমান গৃহযুদ্ধ নিরসনে তিনি ব্যক্তিগতভাবে হস্তক্ষেপ করতে ইচ্ছুক। অবিলম্বে সেখানে শর্তহীন যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে দক্ষিণ–পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলন চলার সময় বার্তা সংস্থা এপিকে সাক্ষাৎকার দেন রামোস। মঙ্গলবার এটি প্রকাশ হয়েছে।

হোসে রামোস মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের অন্যতম সমালোচক। এ কারণে পূর্ব তিমুরকে আসিয়ানের সদস্য পদ পেতে বাধা দেওয়ার হুমকি দিয়েছিল জান্তা সরকার। এমন অবস্থার কারণে রামোসকে মিয়ানমারে শান্তির দূত হিসেবে প্রত্যাখ্যান করা হতে পারে। বিষয়টি স্বীকার করেই হোসে রামোস বলছেন,যদি আসিয়ানের সদস্যরা এই উদ্যোগে একমত হয়,তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে মিয়ানমারে গিয়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। হোসে রামোস-হোর্তা আরও বলেন,আমি মিয়ানমারে যাব সেনাবাহিনীর সঙ্গে কথা বলতে। কারণ তাদের ক্ষতি করার ক্ষমতা এবং ক্ষতি বন্ধ করার ক্ষমতা উভয়ই আছে। তাই তাদের সঙ্গে কথা বলতেই হবে।

আসিয়ানের সদস্য দেশগুলোর পাঁচটি ঐকমতের মধ্যে একটি হলো অবিলম্বে সংঘর্ষ বন্ধের আহ্বান। মিয়ানমার এতে অস্বীকৃতি জানানোয় আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে দেশটির অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট বলেন, আসিয়ানের শান্তি পরিকল্পনাটি খুবই ভালো একটি উদ্যোগ। তবে তা অতিমাত্রায় আদর্শনির্ভর হওয়ায় বাস্তবে অর্জন করা কঠিন। পূর্ব তিমুর দেশটি তিমুর লেস্তে নামেও পরিচিত। হোসে রামোস বলেন, তাঁর দেশ দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্রতম রাষ্ট্র হলেও জনগণ ও নেতৃত্ব কূটনৈতিক অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ। এই অভিজ্ঞতাই তাঁর সরকারকে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের সঙ্গে সম্পর্কে ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করেছে।

সংঘাতের ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টার জন্য ১৯৯৬ সালে শান্তিতে নোবেল পান রামোস। তিনি বলেন,আমার পরামর্শ হলো জনগণের কাছে পৌঁছান,তাদের ভয় পাবেন না। একটি সরকার জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত থাকলে শান্তির পরিবেশ সৃষ্টির পথে অনেক দূর এগিয়ে থাকে। ২০২১ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক অংসান সুচির সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর জনবিক্ষোভ ক্রমে গৃহযুদ্ধে পরিণত হয়েছে। এই সংঘাতে হাজারো মানুষ নিহত এবং কয়েক লাখ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। হোসে রামোস বলেন,প্রতিদিন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। তাই অবিলম্বে সব পক্ষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করে শর্তহীন যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো প্রয়োজন।

মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধি, অচল ভারতের রপ্তানি খাত

মার্কিন শুল্ক বৃদ্ধি, অচল ভারতের রপ্তানি খাত

ডেস্ক রিপোর্ট:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত শুল্ক বৃদ্ধির ফলে ভারতের রপ্তানি খাত গভীর সংকটে পড়েছে। ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি চালিয়ে যায়, তাহলে বর্তমানে বিদ্যমান ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করা হবে। এর লক্ষ্য রাশিয়ার সামরিক কার্যক্রমে অর্থ জোগান বন্ধ করা।

এখনকার হিসাবে, ভারত তার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অপরিশোধিত তেলের জোগান আসে রাশিয়া থেকে। ট্রাম্পের নির্দেশ অনুযায়ী, ২৭ আগস্টের মধ্যে বিকল্প সরবরাহ খুঁজে না পেলে শুল্কবৃদ্ধি কার্যকর হবে।

অর্থনীতিবিদ গারিমা কাপুর (এলারা সিকিউরিটিজ) বলেন, ৫০ শতাংশ শুল্কে ভারতের কোনো পণ্যই প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে না।

২০২৪ সালে ভারত যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৮৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছিল। শুল্ক বৃদ্ধির আঘাত পড়তে পারে রত্ন-গহনা, বস্ত্র এবং সামুদ্রিক খাদ্যের মতো কম লাভজনক ও শ্রমনির্ভর খাতে। গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের হিসাব, পোশাক খাতে মার্কিন বাজারে বিক্রি প্রায় ৬০ শতাংশ কমে যেতে পারে।

বড় রপ্তানিকারকরা ইতিমধ্যেই আগস্টের সময়সীমার আগে যতটা সম্ভব পণ্য পাঠানোর চেষ্টা করছেন। ক্রিয়েটিভ গ্রুপের চেয়ারম্যান বিজয় কুমার আগরওয়াল বলেন, যতটা সম্ভব শিপমেন্ট এগিয়ে দিচ্ছি, কিন্তু এটা সমস্যার সমাধান নয়। তার প্রতিষ্ঠানের ৮০ শতাংশ রপ্তানি নির্ভর করছে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। এই পথ বন্ধ হলে ১৫-১৬ হাজার কর্মীর জীবিকা হুমকির মুখে ফেলতে পারে।

গার্মেন্টস জায়ান্ট পার্ল গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিজ ও গোকুলদাস এক্সপোর্টস ইতিমধ্যে ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া ও কেনিয়ার মতো কম শুল্কযুক্ত দেশে উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

ভারতের রত্ন ও গহনা খাত বছরে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি করে এবং লাখ লাখ কর্মসংস্থান তৈরি করে। এখন সেই খাতও কার্যত স্থবির। ডি. নবীচন্দ্র এক্সপোর্টসের আজেশ মেহতা বলেন, নতুন অর্ডার স্থগিত। দেড় থেকে ২ লাখ কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

সামুদ্রিক খাদ্য রপ্তানিকারকরাও বড় আঘাতের মুখে। বেবি মেরিন গ্রুপের অংশীদার অ্যালেক্স নিনান জানান, আমরা এখন চীন, জাপান ও রাশিয়ার মতো বিকল্প বাজার খুঁজছি, কিন্তু নতুন বাজার তৈরি করা একদিনের কাজ নয়।

মুডিস সতর্ক করে বলেছে, শুল্ক ফারাক বাড়তে থাকলে ভারতের সাম্প্রতিক বিনিয়োগ আকর্ষণের সাফল্যও উল্টে যেতে পারে। বর্তমানে সমাধান নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক কূটনীতির ওপর যেখানে ব্যবসায়ীদের তেমন কোনো প্রভাব নেই।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম