তারিখ লোড হচ্ছে...

রংপুরে সাংবাদিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন

আলাউদ্দিন কবির, রংপুর প্রতিনিধিঃ

সাংবাদিকদের ন্যায্য বেতন, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা এবং মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রংপুরে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টায় রংপুর প্রেসক্লাব চত্বরে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র (BFUJ) আহ্বানে রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরপিইউজে) এই কর্মসূচির আয়োজন করে।

রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সরকার মাজহারুল মান্নান এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সালেকুজ্জামান সালেক।

গত ২১০ দিন ধরে সারাদেশের সাংবাদিকরা আন্দোলন চালিয়ে এলেও সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় বক্তারা তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন। তারা বলেন, দেশে পণ্যমূল্য ও জীবনযাত্রার ব্যয় যে হারে বেড়েছে, সেই তুলনায় সংবাদকর্মীদের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা একেবারেই নগণ্য।

গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখতে এবং জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করতে পেশাদার সাংবাদিকতা অপরিহার্য। কিন্তু সাংবাদিকদের কর্মপরিবেশ নিরাপদ না হলে, ন্যায্য বেতন না থাকলে এবং স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ না থাকলে গণমাধ্যম তার মৌলিক ভূমিকা পালন করতে পারবে না।

সাংবাদিকদের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার এই আন্দোলন একইসাথে নাগরিকের তথ্য জানার অধিকার সুরক্ষারও আন্দোলন। সাংবাদিকদের ন্যায্য প্রাপ্য নিশ্চিতকরণ দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত ও জবাবদিহিমূলক সমাজ গঠনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।

সাংবাদিক নেতারা মোট ২১ দফা দাবি তুলে ধরেন। সাংবাদিকদের ন্যূনতম মূল বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড সহ অতীতে সাংবাদিক হত্যা ও নিপীড়নের ঘটনার দ্রুত বিচার সম্পন্ন করা। নবম ওয়েজ বোর্ডের পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং দ্রুত দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন করা।

চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহাল এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে মনগড়া কেস দিয়ে সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ করে সকল নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত করা। মানববন্ধন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রংপুর মহানগরী ও জেলার আট উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

আলফাডাঙ্গায় সাংবাদিকে প্রাণনাশের হুমকি দিলেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় দৈনিক ঢাকা টাইমস-এর সিনিয়র রিপোর্টার মো. মুজাহিদুল ইসলামকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান হাসিব। এ ঘটনায় সাংবাদিক মুজাহিদ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর ২০২৫) আলফাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

সাংবাদিক মুজাহিদুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের পদধারী নেতাদের দিয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি করা সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করেন। এছাড়াও বর্তমান ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য নুরুল হাসান মিয়ার আপন ছোট ভাই, গণঅভ্যুত্থানের পরে আবির্ভাব হওয়া হাসিবুল হাসান হাসিবকে হঠাৎ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে বসানো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার রাত আটটার দিকে হাসিবুল হাসান হাসিব ফেসবুক মেসেঞ্জারে কল দিয়ে এবং একাধিক অডিও বার্তা পাঠিয়ে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেন।

জিডিতে মুজাহিদুল উল্লেখ করেন, হাসিব অত্যন্ত অশ্রাব্য ও হুমকিসূচক ভাষায় বলেন, “তুই লেখার কে? আমি আসতেছি তোর হাড্ডি খুলে ঝুলোবানি। প্রত্যেক জয়েন্ট জয়েন্টে আলাদা করে দিবানি। আমি তোকে হুমকি দিচ্ছি না, আমি আইসে তোকে হাড্ডি ভাঙ্গবানি। তুই আমাকে চিনিস? খানকির পোলা ফোন রাখ। তোমার বড় বড় বাপরা আমাকে চিনে। তোমার যে বাজান আছে তাদের কাছে আমার নাম শুনবা। তোমার বাজানরে আমাকে চিনবে। তুমি আমাকে চিনো না। তোমার মত বাড়ার বাল আমার চেনা লাগবে। শালার ভাই শালা। এই শালার ঘরে শালা তুই কি সাংবাদিক? আমি একটা দলের পোস্টধারী লোক। তুই আমার সম্পর্কে হুট করে লিখিস কিভাবে? তুই লেখার কে? তোকে লেখার স্পর্ধা দিছে কে ? নুরুল হাসান পালাবে কেন এই বাস্টার্ড? তোর বাড়ি কোথায়? বাড়ার বাল তুই বাংলাদেশের যে প্রান্তে থাকিস সেই প্রান্ত থেকে তোকে ধরে এনে ঝুলাবো। তোরে মেরে পাছার মধ্যে আইক্কাওয়ালা বাঁশ ঢুকিয়ে আলফাডাঙ্গা চৌরাস্তায় ঝুলিয়ে রাখবো। তোর কোন বাপ আছে দেখি কিভাবে ঠেকায়।”

তিনি আরও জানান, এই ঘটনার পর থেকে তিনি ও তার পরিবার মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন যেকোনো মুহূর্তে হাসিবুল হাসান হাসিব বা তার সমর্থকরা তার জীবননাশ করতে পারেন। একজন পেশাজীবী সাংবাদিক হিসেবে এটি তার পেশাগত স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।

ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকে এটিকে সাংবাদিক নিরাপত্তার ওপর সরাসরি হুমকি হিসেবে দেখছেন।

আলফাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহ জালাল আলম জিডিটি গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি যাচাই করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম