তারিখ লোড হচ্ছে...

রাজশাহীতে জামাতের রোকন সহ আটক তিন

মোঃমাসুদ আলী পুলক রাজশাহী ব্যুরোঃ-

রাজশাহী মহানগরীতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংঘটনের প্ররোচনা ও ষড়যন্ত্র করাকালে জামায়াতের রাসিক ১৬নং ওয়ার্ড ইউনিটের জামায়াতের রোকন ও শিবির কর্মীসহ ৩ জনকে আটক করেছে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ। এসময় আসামীদের কাছ থেকে জুম মিটিং এর সরঞ্জামাদি, বিপুল পরিমান জিহাদী বই, ব্যানার, ক্যাশ রেজিস্টার, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার হয়।

আটককৃতরা হলো রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার কয়েরদাড়া বিলপাড়া গ্রামের মৃত লালু শেখের ছেলে জামায়াতের রাসিক ১৬নং ওয়ার্ড ইউনিটের রোকন মোঃ রবিউল শেখ (৪০), দরগাপাড়ার মৃত আঃ রশিদের ছেলে মোঃ পারভেজ (২২) ও মতিহার থানার নতুন বুথপাড়া গ্রামের মোঃ সিরাজের ছেলে মোঃ হাবিব (২৭)।

রাজশাহী মহানগর এলাকাকে অপরাধ মুক্ত ও সকল প্রকার নাশকতা মূলক কর্মকান্ড এবং সরকার বিরোধী অপপ্রচার নির্মূল করার লক্ষ্যে রাজশাহী মহানগর পুলিশের সম্মানিত পুলিশ কমিশনার  মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের নির্দেশে অভিযান অব্যাহত রেখেছে আরএমপি।

এরই ধারাবাহিকতায় আজ ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১ ( ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১ দিবাগত) রাত্রী ৪.১৫ টায় বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ  নিবারন চন্দ্র বর্মন পিপিএিম, এসআই মোঃ শাহিন আকতার, এসআই ইফতেখার মোহাম্মদ আল আমিন ও তার টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বোয়ালিয়া মডেল থানার কয়েরদাড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম সংঘটনের প্ররোচনা, ষড়যন্ত্র ও জুম মিটিং করাকালে আসামী ১। মোঃ রবিউল ইসলাম (৪০), ২। মোঃ হাবিব (২৭), ৩। মোঃ পারভেজ (২২)দের আটক করে। এসময় ১০/১২ জন পালিয়ে যায়। আসামীদের কাছ থেকে ট্যাব, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের কার্যক্রমের বিভিন্ন রেকর্ডপত্র, জিহাদি বই, ব্যানার, ক্যাশ রেজিস্টার ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র সহ অন্যান্য মালামাল উদ্ধার হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।

আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায়

নিজস্ব রিপোর্ট:

এক পাখিপ্রেমী দম্পতি পাখির ছবি তুলতে বেরিয়েছিলেন রাজশাহীর পদ্মার চরে । দেখা মিলেছেন কুমিরের। তাও আবার মিঠাপানির কুমির। প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর জোট আইইউসিএন বাংলাদেশে বিলুপ্ত ঘোষণা করেছেন এই কুমিরকে । গত বৃহস্পতিবার বিকেলের  দিকে এই ঘটনা ঘটে । পাখির বদলে কুমিরের ছবি নিয়ে বাড়ি ফেরেন ইমরুল কায়েস-উম্মে খাদিজা ইভা দম্পতি।

গরু চরাতে গিয়ে সেদিন দুপুরে রাজশাহীর ষাটবিঘা চরের রাজু আহাম্মেদ প্রথম কুমিরটি দেখতে পান। রাজু জানান, কুমিরটি চরে উঠে এসেছিল। পানি থেকে তিন-চার হাত দূরে। তিনি তখন মুঠোফোনে গান শুনছিলেন। গান বন্ধ করে ছবি তুলতে গেলেই কুমিরটি পানিতে নেমে যায়। অনেকক্ষণ পর নিশ্বাস নেওয়ার জন্য একবার শুধু মুখ বের করেছিল। রাজুর সঙ্গে বন বিভাগের কর্মী সোহেল রানার পরিচয় রয়েছে। তিনি তাঁকে ফোন করে এই খবর দেন। এরপর রাজশাহী বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির ফোন করেন ইমরুল কায়েসকে।

ইমরুল ও খাদিজা দম্পতির বাড়ি নগরের কাজীহাটা এলাকায়। সেখান থেকে অতি কাছেই পদ্মা নদী। নগরের শ্রীরামপুর আই বাঁধ থেকে অপর পাশে পদ্মা নদীতে যে চর পড়ে, সেখানে কাশবনের মধ্যে লাল মুনিয়া দেখা যায়। মুনিয়ার ছবি তোলার জন্য তাঁরা সেদিন সকাল সকাল নৌকা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।

খাদিজার ভাষায়, রোদের মধ্যে চরে হাঁটতে হাঁটতে খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েন। ঘাটের দোকানে এসে চানাচুর, বিস্কুট ও কোমল পানীয় খেতে খেতেই ঘুমে তাঁর চোখ বন্ধ হয়ে আসছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে কায়েসের মুঠোফোনে বন বিভাগের ফোনটা আসে। তারপর ঘুম ছুটে গেল। পাখি বাদ দিয়ে কুমিরের ছবির নেশায় নেমে পড়েন।

উম্মে খাদিজা বলেন, মাথার ওপরে তখন কড়া রোদ। অনেক ক্লান্ত। তবু ভাবছিলেন, এতটা পথ এসে কুমির না দেখে ফিরে যাবেন, তা হয় না। প্রায় হতাশ হয়ে তিনি কায়েসকে বলেন, কুমির মনে হয় এতক্ষণে চলে গেছে। তারপরও থেমে থাকতে পারলেন না। এদিকে তাঁরা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন তার সামনের খাঁড়িতে কোমরসমান পানি। তাঁরা স্যান্ডেল খুলে ক্যামেরা মাথার ওপর ধরে খাঁড়ি পার হবেন, ভয়ে ছিলেন কোনোভাবে যাতে পা পিছলে না যায়।

খাদিজা বলেন, খাঁড়ি থেকে ওঠার পর বুঝতে পারছিলেন না আসলে কোন দিকে যাবেন। শেষমেশ না বুঝেই হাঁটা ধরেন, যেদিক দুচোখ যায়। হাঁটতে হাঁটতে একসময় একেবারে ভারতের সীমান্তে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী রাজু আহাম্মেদের বাড়ি খুঁজে পান।

এবার রাজুকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে লাগলেন। যেখানে রাজু কুমির দেখেছিলেন সেই খাঁড়ির কাছে এসে দেখেন কুমির নেই। খাদিজা বলেন, তখন মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল। ধপাস করে একটা গাছের নিচে বসে পড়েন।

কিছুক্ষণ বসে থাকার পর কায়েস ড্রোন ওড়ালেন। প্রথমে ড্রোনটা তাঁদের ডান দিকে পাঠালেন। কৌতূহলী হয়ে তিনি কায়েসকে জিজ্ঞেস করলেন, কুমির পাওয়া গেল কি না। কায়েস মাথা নাড়া দিয়ে বোঝালেন কুমির নেই। শুনে তিনি হতাশ হয়ে মাথা নিচু করে বসে থাকলেন। একটু পর কায়েস হুট করে উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলেন, ‘পাগলি, কুমির!’ তিনি খুশিতে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালেন। ড্রোন চালু রাখা অবস্থায় দুজনে কুমিরের দিকে হাঁটা ধরেন।

উম্মে খাদিজার ভাষায়, ‘কিছু দূর হাঁটতে হাঁটতে অবশেষে জীবনে প্রথম সামনাসামনি প্রকৃতিতে কুমিরের দেখা পেলাম। কায়েস ড্রোন দিয়ে কিছু ভিডিও নিল। আমি ক্যামেরায় কিছু ছবি তুললাম ও ভিডিও করলাম।’

ইমরুল কায়েস-উম্মে খাদিজা দুজনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। পেশায় তাঁরা আলোকচিত্রী।

এই কুমিরের বিষয়ে আইইউসিএনের মুখ্য গবেষক এ বি এম সারোয়ার আলম (সীমান্ত দীপু) বলেন, ২০১৫ সালে মিঠাপানির কুমিরকে বাংলাদেশে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। তারপরও পাবনায় একটা দেখা গেছে। অন্য জায়গায় আরও দুটি পাওয়া যায়। এ দুটোকে সুন্দরবনের করমজল সেন্টারে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, এগুলো বাংলাদেশের প্রকৃতিতে বেড়ে ওঠা কুমির না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এরা বয়স্ক। ভারতের চাম্বুল নদ থেকে আসতে পারে।

আইইউসিএনের এই গবেষক বলেন, বাংলাদেশে তিন প্রজাতির কুমির রয়েছে। এর মধ্যে লোনাপানির কুমির, যা দেখা যায় সুন্দরবনে; মিঠাপানির কুমির, যা ইতিমধ্যে বিলুপ্ত আর রয়েছে ঘড়িয়াল, যা পদ্মা–যমুনায় দেখা যায়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম