তারিখ লোড হচ্ছে...

যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে চারদিকে খানাখন্দে ভরা চলাচলে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
খানাখন্দে ভরা এবড়োখেবড়ো সড়ক। ভাঙাচোরা রাস্তার বিভিন্ন স্থানে জমে আছে ময়লা পানি। বৃষ্টি হলে পানি জমে সড়ক হয়ে ওঠে জলাশয়। এ চিত্র রাজধানীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভার গেট কুতুবখালী ও মৃধাবাড়ি, কাজলা সড়ক, পোস্তখোলা সড়ক পর্যন্ত। বেহাল এ সড়কে যানবাহন চলাচলে প্রতিদিনই ঘটছে নানা দুর্ঘটনা। হেঁটে চলাও দায়। কার্পেটিং, পিচ ও পাথর উঠে বড় বড় খানাখন্দ দেখা দিয়েছে। যানবাহন চলে হেলেদুলে। ফলে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, মাওয়া সড়ক, সিলেটসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।

সরেজমিন দেখা যায়, যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে চারদিকে এমনকি কুতুবখালী ও যাত্রাবাড়ী-ডেমরা সড়কের মৃধাবাড়ি পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার ও মেরামতের অভাবে বেহাল অবস্থা। এ বর্ষায় সড়কের গর্তে জমে থাকা পানি আর কাঁদায় ভরপুর। এতে যানবাহনের পাশাপাশি সড়ক দিয়ে চলাচলকারী মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। যাত্রাবাড়ী মাছের আড়তের সামনে সড়কের ওপর বসে মাছ বাজার। এতে পানি পড়ে সড়ক নোংরা ও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি যানজট লেগেই তাকে।

যাত্রাবাড়ী পার্কের সামনে সড়কের ওপর ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। যাত্রাবাড়ী মোড় থেকে মৃধাবাড়ি পর্যন্ত সড়কে রয়েছে অসংখ্য গর্ত। বৃষ্টি হলে হয় থকথকে কাদা, রৌদ্র থাকলে ধুলাবালি। এতে সড়ক দিয়ে সিলেট, নরসিংদী, মাধবদী, রূপগঞ্জ, ডেমরা, কোনাপাড়া, স্টাফ কোয়ার্টার, সারুলিয়া, কাঁচপুর নারায়নগঞ্জ এলাকার বাস, মালবাহী ট্রাক, পিকআপ, সিএনজি, লেগুনা, রিকশাসহ শত শত যানবাহনের যাত্রী ও পথচারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বৃহত্তর ডেমরার বাসিন্দাদের চলচলের প্রধান সড়ক এটি।

ঢাকা-চট্টগ্রাম ও যাত্রাবাড়ী ডেমরা সড়কের একাধিক বাস ও ট্রাকচালক যুগান্তরকে বলেন, সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত রয়েছে। চরম ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চালাতে হয়। বাস ও ট্রাক কাত-চিৎ হয়ে যায়। যাত্রাবাড়ী থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার হয়ে সুলতানা কামাল ব্রিজ পর্যন্ত সড়কের অধিকাংশ অংশ প্রশস্ত করা হয়নি। ফলে সরু সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬২ ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী মোস্তাক আহমেদ বলেন, এ এলাকার বাসিন্দাদের চলাচলের প্রধান সড়ক এটি। এটির যাত্রাবাড়ী মোড় অংশে বেহাল দশা। রাজধানী ঢাকা থেকে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে যানবাহনে কাজলা আসা যায়, কাজলা থেকে যাওয়া যায় না। এতে বাসিন্দারা ফ্লাইওভারের পুরো সুফল ভোগ করতে পারছে না। এতে এ এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগ রয়েই গেছে। কাজলা থেকে ফ্লাইওভার দিয়ে যানবাহনে রাজধানীতে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৪৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কালাম অনু বলেন, যাত্রাবাড়ী পার্কসংলগ্ন মোড় থেকে বিবিরবাগিচা ১ নম্বর গেট পর্যন্ত সড়ক খানাখন্দে ভরা। রৌদ্র হলে সড়কে ধুলাবালি আর বৃষ্টি হলে হাঁটু সমান কাদা হয়। এতে সড়ক দিয়ে যানবাহনসহ পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।

মাতুয়াইল হাজী আবদুল লতিফ ভুইয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি মো. আবদুল রাকিব ভূইয়া যুগান্তরকে বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা অংশটি ব্যস্ততম। এ সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল ৫-এর নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, দ্রুত সময়ে সড়কটি সংস্কার করা হবে।

মহান স্বাধীনতা দিবস আজ

স্টাফ রিপোর্টার:

আজ ২৬ মার্চ। ৫৫তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ প্রত্যুষে ঢাকাসহ সারা দেশে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহিদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টার নেতৃত্বে উপস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। বিদেশি কূটনীতিক, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের জনগণ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন শহরের প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকা ও অন্যান্য পতাকায় সজ্জিত করা হবে। এদিন সরকারি ছুটি। মহানগর, জেলা ও উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান করা হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেশের শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ দোয়া ও উপাসনার আয়োজন করা হবে। দেশের সব হাসপাতাল, জেলখানা, শিশু পরিবার, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে প্রতিষ্ঠান ও শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, ‘রাষ্ট্র ও সমাজের সব ক্ষেত্রে সাম্য, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে তরুণ প্রজন্ম আমাদের স্বাধীনতার অপূর্ণ স্বপ্নগুলো পূরণে আবারও বুকের তাজা রক্ত দিয়ে গেছে। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী, সুন্দর ও উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা আমাদের পবিত্র কর্তব্য।’ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে তিনি দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও উষ্ণ অভিনন্দন জানান।

বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, জনমুখী ও টেকসই উন্নয়ন এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সব বাংলাদেশিকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।’ প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আসুন, স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবসের এ মাহেন্দ্রক্ষণে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দেশের উন্নয়ন, শান্তি এবং সমৃদ্ধির পথে কাজ করার শপথ গ্রহণ করি।’ ‘গত ১৬ বছর দেশের মানুষ এই স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি’— উল্লেখ করে বাণীতে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, স্বৈরাচারী শাসক জগদ্দল পাথরের মতো জনগণের ঘাড়ে চেপে বসে তাদের স্বাধীনতা ও মৌলিক সব অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার সফল গণঅভ্যুত্থান দেশের মানুষকে স্বৈরাচারীর রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করেছে। তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জন ছিল আমাদের আত্মমর্যাদা, অস্তিত্ব রক্ষা এবং অধিকার আদায়ের দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের চূড়ান্ত ধাপ। যে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়ায়, তার আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়েছিল আজকের এই দিন। আমি সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করি মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহিদদের, যাদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।’

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম