বেগুনের বাজারে আগুন, স্বস্তি নেই লেবুতেও!

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:-

সিয়াম সাধনার মাস রমজান আসার আগে গেলো সপ্তাহে এ সবজিটির কেজিপ্রতি দাম ছিল ৪০ টাকা তবে এক সপ্তাহ ব্যবধানে বেগুনের দাম আগুন হয়েছে। কেজিপ্রতি ৬০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। শুধুই কি বেগুন? পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লেবুও। বেগুন কেজিপ্রতি হিসেবে দাম বাড়লেও লেবুর দাম হালিতে বেড়েছে এক লাফে ৮০ টাকা। অর্থ্যাৎ যেই লেবু এক সপ্তাহ আগেও এক হালি বিশ টাকায় বিক্রি হয়েছিল তা এখন কিনতে গুনতে হচ্ছে ১০০ টাকা। সুতারাং অনায়েসেই বলা যায়, বেগুনের পর এবার সেঞ্চুরি করলো লেবুও। বেগুন লেবুর সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের বাজার। ক্রেতারা বলছেন, রামজান আসলেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেটে এসব দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে তবে বাজার পর্যাপ্ত বাজার মনিটরিংকেও দুষছেন কেউ কেউ।

দেশের অন্যান্য জেলাগুলোতে যাইতাই, চট্টগ্রামে সবজির বাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম। সিম, আলু, বেগুন কিংবা খোদ লেবু! কোনটিই নেই নাগালের মধ্যে। আর তাইতো রীতিমতো হতাশ ভোক্তারা।

রমজান আসলে বিশ্বের যেকোন মুসলিম প্রধান দেশগুলোর ব্যবসায়ীরা পূন্যতা লাভের আশায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম সহনসীল পর্যায়ে নিয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে নিজেরা ভর্তুকি দিয়ে থাকে তবে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উল্টো। কার পকেট থেকে কিভাবে টাকা ঝাড়বে? এ প্রতিযোগিতায় যেন লাগামহীনভাবে নেমে থাকেন ব্যবসায়ীরা। আর তাইতো স্বস্তি নেই মাছ মাংস ছাড়িয়ে সবজির বাজারেও। লেবুর মত সবজিও হাল ছেড়ে হাটছে অস্বস্তির পথে।

বেগুন লেবুর বাড়তি দাম নিয়ে জানতে চাওয়া হয় বন্দরনগরী আগ্রাবাদের বেপারীপাড়া কাচা বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মুরাদ মিয়ার কাছে। মুরাদ বলেন, আমরাতো খুচরা ব্যবসায়ী। দিন এনে দিন খাই। আড়তদাররা আমাদের যে মূল্য বেধে দেয় তা থেকে বেশী বা কম বিক্রি করার সুযোগ নেই আমাদের। তবে প্রথম রমজানের তুলনায় আজ প্রতিটি সবজির দাম একটু কম আছে বলেও জানান তিনি।

সার্বক্ষনিক বাজার মনিটরিং করলে কাচা বাজারের সবজির দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে আসবে আর স্বস্তিও ফিরবে সবজির দামে আর এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।

লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের করাল থাবা থেকে  ৪০০ একর জমি রক্ষার দাবি

স্টাফ রিপোর্টারঃ

বান্দরবানের লামা উপজেলার ৫নং সরই ইউনিয়নে রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃক ত্রিপুরা ও ম্রোদের ৩টি পাহাড়ি গ্রামের ৪০০ একর ভোগ দখলীয় জুম ভূমি জবরদখলের চেষ্টা, সেখানে অবস্থিত অশোক বৌদ্ধ বিহারে হামলা, ভাঙচুর ও বুদ্ধমূর্তি লুট, জুম ভূমি পুড়িয়ে দেয়া এবং ভূমি রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন করে ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের আহবায়ক রংধজন ত্রিপুরা।

আহবায়ক রংধজন ত্রিপুরা বলেন, বান্দরবান জেলার লামা উপজেলাধীন সরই ইউনিয়নের ৩০৩ নং ডলছুড়ি মৌজায় ৪০০ একর জুম ভূমি তিন প্রামবাসী লাংকম পাড়া (ম্রো কারবারি), জয়চন্দ্র পাড়া (ত্রিপুরা) রেংইয়েন পাড়ার (ম্রো) ৩৯ পরিবার বংশ পরম্পরায় ভোগদখল করে আসছে।

কিন্তু বিগত ৯ এপ্রিল ২০২২ লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রকল্প পরিচালক মোঃ কামাল উদ্দিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ জহিরুল ইসলাম গং ২০০ জনের অধিক রোহিঙ্গাদের ভাড়া করে ভূমিজ সন্তান লাংকম পাড়া, জয়চন্দ্র পড়া ও রেংইয়েন পাড়াবাসীদের উক্ত জমি জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা চালায় এবং আমাদের লাগানো ফলদ চারা বাঁশ বাগানসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ কেটে সাফ করে দেয়। এরপর ২৬ শে এপ্রিল ভারা ওই জমির বাগানে আগুন দিয়ে প্রাকৃতির পরিবেশসহ লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করে।

ফলে আমরা তিন পাড়াবাসী একদিকে যেমন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকি, অন্যদিকে চরম খাদ্য সংকটে পড়ে যাই। এ খবর সে সময় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে সারাদেশে নিন্দার ঝড় উঠে এবং সচেতন নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার কর্মী ও সমাজকর্মীসহ সর্বস্তরের বিবেকবান মানুষ আমাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। তাদের বদান্যতায় আমাদের খাবার সংকট সাময়িকভাবে কেটে গেছে বটে কিন্তু আমাদের ৪০০ একর ঘুমভূমি বেদখলের প্রচেষ্টা এখনো বন্ধ হয়নি। এই জমি হাতছাড়া হয়ে গেলে আমাদের বাঁচার আর কোন উপায় থাকবে না।

তিনি বলেন, ২১ মে ৪০০ একর জমি সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসার লক্ষ্যে বান্দরবান জেলা প্রশাসন কর্তৃক স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মোঃ লুৎফর রহমানকে প্রধান করে গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির উদ্যোগে লামার ৫নং সরই ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর প্রতিনিধি ও গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাথোয়াইচিং মারমা এবং সরই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী উক্ত শুনানিতে অংশ গ্রহণ করেন। শুনানিতে ৩৯ পরিবারকে পরিবার প্রতি ৫ একর করে জমি প্রদানের প্রস্তাব দেয়া হলে উপস্থিত গ্রামবাসী তা প্রত্যাখ্যান করেন।

সর্বশেষ গত ১৬ই আগস্ট জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর সভাপতিত্বে অপর এক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এই শুনানিতেও পূর্বের ন্যায় পরিবার প্রতি ৫ একর করে জমি দেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়। ভূমি রক্ষা কমিটি পুনরায় এই অন্যায্য প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

রংধজন ত্রিপুরা আরো বলেন, আমাদের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমাদের পেছনে যাওয়ার আর কোন জায়গা নেই। আমাদের বাঁচার শেষ অবলম্বন ৪০০ একর জমি রক্ষার জন্য প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করা ছাড়া আমাদের আর কোন পথ খোলা নেই। কিন্তু ভূমি দস্যুদের এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা হলে আমাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে, মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে এবং আমাদের উপর হামলা করা হচ্ছে।

আমরা আমাদের জমি রক্ষার জন্য বার বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি। কিন্তু আমরা এখনও সুবিচার পাইনি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ৮ মার্চ ২০১৭ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বরাবরে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। এরপর ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বান্দরবান জেলা প্রশাসক বরাবরে এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি লামা অফিস ইনচার্জ বরাবরে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করা হয়, কিন্তু তাতেও কোন ফল হয়নি।

লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কেবল অন্যায়ভাবে পাহাড়িদের জমি বেদখল ও উচ্ছেদের অপরাধে জড়িত নয়, এই কোম্পানিটি প্রাকৃতিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র ধ্বংসের জন্যও দায়ি। আমাদের যে জুমভূমি পুড়িয়ে দেয় সেখানে সে সময় পুরো প্রাকৃতিক বন ধ্বংস হয়ে যায়, বহু জীবের প্রাণ সংহার হয় এবং ছড়া ও ঝর্ণার পানি বিষাক্ত হয়। এ কারণে বর্তমানে আমাদের এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি পাওয়া অত্যন্ত দুষ্কর হয়ে পড়েছে। এই সব জঘন্য অপরাধে যাদের বিচার হওয়া উচিত সরকার ও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে বরং তাদের পক্ষাবলম্বন করে চলেছে।

সংবাদ সম্মেলনে ৫ দফা দাবি তুলে ধরে সংগঠনটি। দাবি গুলো হলো

১) লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক ভূমি বেদখল বন্ধ করতে হবে এবং ম্রো ও ত্রিপুরাদের ভোগ দখলীয় ৪০০ একর জুম ভূমিসহ কোম্পানি কর্তৃক বেদখলকৃত সকল জমি ফেরত দিতে হবে।

২) উক্ত কোম্পানির কর্মকান্ডের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ম্রো ও ত্রিপুরাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৩) জুম ভূমি কেটে ও আগুনে পুড়িয়ে ও হামলার সাথে জড়িত কামাল উদ্দিন, মোয়াজ্জেম হোসেন, জহির উদ্দিন গং দের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দিতে হবে।

৪) কোম্পানি কর্তৃক ভূমি রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দসহ ১১ জনের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

৫) বান্দরবানে রাবার ও অন্যান্য বাগান সৃজন কিংবা পর্যটন উন্নয়নের উদ্দেশ্যে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে দেয়া সকল জমির লিজ বাতিল করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সদস্য সচিব লাংকম ম্রো, যুগ্ম আহবায়ক রেংয়েন ম্রো, ফদরাম ত্রিপুরা, সংলে ম্রো, মথি ত্রিপুরা, রিংরং ম্রো, রুইপাও ম্রো।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ৭ বছরেই শত কোটি টাকার মালিক শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ নতুন ইতিহাস গড়লেন দীপিকা পাড়ুকোন বাংলাদেশকে রাজস্ব ও আর্থিক খাত সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে ডেঙ্গুতে আরও ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬১৯ ৩০ কোটি বছর আগে মহাকাশ থেকে ছুটে এসেছিল একটি বিশাল পাথর কুমিল্লায় হত্যার পর নারীর লাশ বেডশিট দিয়ে মুড়িয়ে খাটের নিচে রেখে গেল দুর্বৃত্তরা দীর্ঘদিন পর গাজায় একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করলেন হাজারো ফিলিস্তিনি