মধ্য ধরান্দীর সেই বেতন বিহীন প্রধান শিক্ষক শ্রীঘরে

পটুয়াখালী সংবাদদাতা:

হত্যা চেষ্টা মামলার প্রধান দুই আসামিকে জামিন নামঞ্জুর করে শ্রীঘরে পাঠিয়েছে পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আমলি আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম এর বেঞ্চে এ শুনানি হয়। শুনানিটি পরিচালনা করেন পটুয়াখালী জজকোর্টের সিনিয়ার এডভোকেট আবুল বাসার।
জানা যায় মোঃ শহিদুল ইসলাম মধ্য ধরান্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বেতন বিহীন প্রধান শিক্ষক। এবং কালু ধরান্দী ডিগ্রি কলেজের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। এ দুজন সহ আরো সাতজন রেজাউল করিম ফারুক কে গত ২৫/৮/২০২১ তারিখ কুপিয়ে এবং দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতলে ভর্তি করা হয়। পরের দিন ভিকটিম এর বড় ভাই মোঃ শাহ আলম মিয়া বাদী হয়ে কোর্টে মামলা দায়ের করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পরে অত্র মামলার প্রধান আসামি মোঃ শহিদুল ইসলাম এবং কালু কোর্টে হাজির হতে আসে। ভিকটিমের অবস্থা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে
পাঠানোর ব্যবস্থা করে।
এ ব্যাপারে বাদী মোঃ শাহ আলম মিয়া অভিযোগ করে বলেন “আসামিরা খুবই উদ্ধত পরায়ন এবং ডাকাত প্রকৃতির। শহিদুল এবং কালুর জামিন না মঞ্জুর করার কারণে অন্যান্য আসামিরা যারা ইতোমধ্যেই যাবিনে রয়েছে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে যাচ্ছে। অনেকটা পাগলা কুকুরের মত আচরণ করে যাচ্ছে। খুনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। নষ্ট প্রকৃতির এবং চরিত্রহীন মহিলাদের দিয়ে নারী নির্যাতনের মামলার ভয় দেখাচ্ছে”এ ব্যাপারে আসামিদের কাছে জানতে চাইলে তারা কোন ধরনের বক্তব্য দেননি।

দখলদারিত্বে বন্ধ পানি নিস্কাশন, আমতলী পৌর শহর পানিবন্দি

দখলদারিত্বে বন্ধ পানি নিস্কাশন, আমতলী পৌর শহর পানিবন্দি

মো: আল আমিন (বাবু), আমতলী (বরগুনা) সংবাদদাতাঃ আমতলী পৌর শহরের পানি নিস্কাশনের কালভার্ট ও ড্রেনেজ  দখল করে বসতবাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালীরা। ফলে শহরে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে বসত বাড়ির জমানো পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, মশা ও মাছির জন্ম হয়ে পরিবেশ চরম আকারে দুষিত হচ্ছে। দ্রুত পৌর শহরের অর্ধলাখ মানুষকে রক্ষায় কালভার্ট ও ড্রেনেজ দখল করে স্থাপনা উচ্ছেদের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

জানাগেছে, ১৯৯৮ সালে আমতলী পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠা থেকে পৌর শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিল নাজুক। ২০০০ সালে পৌর শহরের পানি নিস্কাশনের জন্য বাঁধঘাট চৌরাস্তায় কালভার্ট, পৌরসভার লেকে কালভার্ট ও মিঠা বাজার এলাকার ড্রেনেজ নির্মাণ করা হয়। এগুলো দিয়ে মুল পৌর শহরের পানি নিস্কাশন হয়। ওই কালভার্ট ও ড্রেনেজ দখল করে প্রভাবশালীরা শতাধিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ী নির্মাণ করেছেন। ওই স্থাপনার নির্মাণ করায় কালভার্ট ও ড্রেনেজে ময়লা আবর্জনা জমে ভরাট হয়ে গেছে। এতে শহরের পানি নামছে না। ফলে পুরো বর্ষার মৌসুমে পৌর শহরের অধিকাংশ এলাকা পানি বন্দি হয়ে থাকে।

তীব্র জলাবদ্ধতায় বাসাবাড়িতে মশা ও মাছির জন্ম হয় এবং পানি নষ্ট হয়ে পরিবেশ চরম আকার ধারন করে। মানুষের পচা দুর্গন্ধে বসবাস করতে হয়। দ্রæত কালভার্ট ও ড্রেনেজ দখল করে স্থাপনা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা ও স্থাপনা উচ্ছেদের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। গত ২৫ বছরেও রাজনৈতিক প্রভাবে দখল মুক্ত হয়নি কালভার্ট ও ড্রেনেজ। অপর দিকে গত ২৭ বছর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ অপরিকল্পিত যতগুলো ড্রেনেজ নির্মাণ করেছেন তা দিয়েও পানি নিস্কাশন হচ্ছে না। তাতে ময়লা আবর্জনায় ভরে ড্রেনেজ আটকে গেছে।

রবিবার আমতলী পৌর শহরের চৌরাস্তা কালভার্ট ঘুরে দেখাগেছে, কালভার্ট দখল করে মামুন, জামাল প্যাদা, মনির প্যাদা ও হাসান মৃধাসহ শতাধিক ব্যক্তি স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। ওই স্থাপনার খুটিতে কালভার্টের মুখ আটকে আছে। ওই খুটির সঙ্গে ময়লা আবর্জনা জমে কালভার্টের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কালভার্ট দিয়ে পানি নিস্কাশন হচ্ছে না।

দখলদারিত্বে বন্ধ পানি নিস্কাশন, আমতলী পৌর শহর পানিবন্দি

অপর দিকে মিঠাবাজার ড্রেনেজের মুখ সচল থাকলেও পিছনের অংশ আটকে ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া পাকাভবন নির্মাণ করেছেন। পৌরসভার লেকে কালভার্ট উচু হওয়ায় তা দিয়ে তেমন পানি নামছে না। পানি নিস্কাশন না হওয়ায় সবুজবাগ, কলেজ রোড, মিঠাবাজার, ওয়াবদা, ফেরিঘাট সড়ক, মাছ বাজার এলাকা ও খোন্তাকাটা চরম জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।  ওই পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।

মিঠাবাজার এলাকার বাসিন্দা জসিম, সেলিম, সিদ্দিক ও ময়না বলেন, ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া ড্রেনেজ দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করেছে। এতে ড্রেনেজ দিয়ে পানি না নামায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা দীলিপ মাঝি, লালু মাঝি ও গোপাল মাঝি বলেন, পানি নিস্কাশন না হওয়ায় ১৫ পরিবার পানির মধ্যে বসবাস করছি। তারা আরো বলেন, পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, মশা  ও মাছি জন্ম হয়ে পরিবেশ চরম আকার ধারন করছে।

একই এলাকার বাসিন্দা শাহ আলম, এসকান্দার, আশরাফ, জসিম মৃধা ও অসিম মৃধা বলেন, অর্ধ শতাধিক পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় আছি। কালভার্ট দিয়ে পানি নিস্কাশন না হওয়ায় চরম জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পানি পঁচা গন্ধে এলাকায় বসবাস করা খুবই কষ্ট। তারা আরো বলেন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

খোন্তাকাটা এলাকার বাসিন্দা ইদ্রিস আলী, সোহেল মল্লিক, ইউসুফ আলী ও রেজাউল করিম বলেন,  ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় ৪০ টি পরিবার পানি বন্দি অবস্থায় আর্ছি। বাসা-বাড়ী থেকে নামতে পারিনা। তারপর পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরছে।

ঘরে বসবাস করা কঠিন। দ্রুত পানি নিস্কাশনের দাবী জানান তারা।
ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া বলেন, ড্রেনেজের ওপর পাকা ভবন নির্মাণ করেনি। তবে ড্রেনেজের ওপর খুটি দিয়ে রান্নাঘর নির্মাণ করেছি।

আমতলী পৌরসভার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রশিদ বলেন, লোক পাঠিয়ে কালভার্ট ও ডেনেজের মুখের ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার করে পানি নিস্কাশন ব্যবস্থা সচল করে দেয়া হবে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পৌর প্রশাসক মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, দ্রুত কালভার্ট ও ড্রেনেজগুলো দখল মুক্ত করে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম