তারিখ লোড হচ্ছে...

সরকারি চাকরিজীবীদের গ্রেফতারে পূর্বানুমতি কেন রুল জারি

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
অভিযোগপত্র দাখিলের আগে সরকারি কর্মচারীদের গ্রেফতারে সরকারের পূর্ব অনুমতি নেওয়ার বিধান কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনসহ চারজনের পদায়ন ও বদলির বৈধতা নিয়ে করা এক রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এই রুল জারি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আজিজুর রহমান দুলু ও আইনজীবী ইশরাত হাসান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। একইসঙ্গে আরও কয়েকটি বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

ফৌজদারি মামলার আসামি হওয়ার পরও কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে পদায়ন করা থেকে বিরত থাকতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং সিনিয়র সহকারী কমিশনার নাজিম উদ্দিনকে পদায়ন করা থেকে বিরত থাকতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। এ ছাড়া এনডিসি এস এম রাহাতুল ইসলামকে বরিশালে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বদলি দেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গত ২৩ আগস্ট ফৌজদারি মামলার আসামি কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীনসহ চারজনের পদায়ন ও বদলির বৈধতা নিয়ে করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

নির্যাতনের শিকার কুড়িগ্রামের সাংবাদিক মো. আরিফুল ইসলাম রিগান এ রিট দায়ের করেন। রিটে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিব ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।

রিটকারীর আইনজীবীরা বলেন, ওই চার সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা চলমান রয়েছে। সে মামলায় তারা এখনও জামিন নেননি। ফলে আইনের দৃষ্টিতে তারা এখনো পলাতক। অথচ তারা ফৌজদারি মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও তাদেরকে বরখাস্ত না করে একজনকে পোস্টিং দেওয়া হয়েছে এবং অন্য তিনজনকে পোস্টিংয়ের চেষ্টা চলছে। যা আইনবহির্ভূত। তাই একজনের পোস্টিংয়ের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং মামলার তিন আসামিকে যেন পোস্টিং দেওয়া না হয় সেজন্য হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।

কুড়িগ্রামের সাবেক ডিসি সুলতানা পারভীনের নামে জেলা প্রশাসনের একটি পুকুরের নামকরণ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০২০ সালের ১৩ মার্চ মধ্যরাতে (১৪ মার্চ) অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নামে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান জেলা প্রশাসনের কয়েকজন কর্মকর্তা। এরপর তাকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জেলা প্রশাসনে নিয়ে বিবস্ত্র করে পাশবিক নির্যাতন করে মাদক মামলায় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

এ ঘটনা তাদের প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়। পরে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা শুরু করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

যার ধারাবাহিকতায় সুলতানা পারভীনকে দুই বছরের জন্য বেতন বৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) স্থগিত, এনডিসি রাহাতুল ইসলামের তিনটি ইনক্রিমেন্ট কর্তন, আরডিসি নাজিম উদ্দিনকে নিম্নধাপে নামিয়ে দেওয়া এবং রিন্টু বিকাশ চাকমাকে চাকরিচ্যুত করার সিদ্ধান্ত নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

 

চট্টগ্রামে সাইবার মামলা খেলেন পিএইচপির এমডি ইকবালসহ আমাদের সময় সম্পাদকঃ চট্টগ্রাম প্রতিদিনের প্রকাশক  আয়ান শর্মার বিরুদ্ধে মনগড়া সংবাদ

 

স্টাফ রিপোর্টারঃ

এবার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামি হলেন পিএইচপি ফ্যামিলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) ও দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার শেয়ারহোল্ডার মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরীসহ চারজন। দৈনিক চট্টগ্রাম প্রতিদিন পত্রিকার প্রকাশক ও উপদেষ্টা সম্পাদক আয়ান শর্মার বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ ছাপানোয় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবির মামলাটি গ্রহণ করে নগর পুলিশের বিশেষ শাখা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।

মামলায় আসামিরা হলেন দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ার, প্রতিবেদক মেহেদী হাসান, পিএইচপি গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) ও দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার শেয়ার হোল্ডার মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী এবং চট্টগ্রাম ব্যুরোর স্টাফ রিপোর্টার মো. মহি উদ্দিন।

আগামী ২৭ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আদালত নির্দেশও দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন বাদিপক্ষের আইনজীবী কফিল উদ্দিন চৌধুরী।

ইকবাল বাংলাদেশে রুয়ান্ডার অনারারি কনসাল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বাবা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ২০২০ সালে একুশে পদক পান সমাজসেবায় ‘অবদানের’ স্বীকৃতি হিসেবে।

এর আগে আয়ান শর্মাকে ফোন করে নিজের সংবাদ মাধ্যমে নিউজ করে ‘কচুকাটা’ করার হুমকি দেন পিএইচপি ফ্যামিলির এমডি ও দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার শেয়ারহোল্ডার ইকবাল হোসেন চৌধুরী।

মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে পাহাড়ের টিলা কেটে বাঁধ দিয়ে পাহাড়ি প্রাকৃতিক ছড়া বন্ধ করে দেওয়ায় চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান পিএইচপি ফ্যামিলির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান পিএইচপি ফ্লোট গ্লাসের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। এই মামলার খবর প্রকাশ করার পর পিএইচপির এমডি ইকবাল হোসেন চট্টগ্রাম প্রতিদিনের উপদেষ্টা সম্পাদক ও প্রকাশক আয়ান শর্মাকে টানা দুইদিন ফোন করে অশালীন ভাষায় হুমকি দেন। এই সময় তিনি সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ছাড়াও বহুবার রাষ্ট্রীয় একটি গোয়েন্দা সংস্থার নাম ব্যবহার করে সরাসরি তুলে নেওয়ার হুমকিও দেন। এছাড়া তিনি একই ধরনের হুমকি দিয়ে অন্তত ৭৯টি ক্ষুদেবার্তা পাঠান মোবাইলে।

এই ঘটনায় চট্টগ্রাম ১ম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিআর-৫৩৭/২২ (কোতোয়ালী) মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। মামলাটি দায়েরের আগে ও পরে আয়ান শর্মাকে হুমকি দেন পিএইচপি গ্রুপের এমডি মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী। এই মামলায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি সশরীরে আদালতে উপস্থিত হয়ে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন ইকবাল। সংক্ষিপ্ত শুনানি শেষে আদালত ১০০০ টাকার বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে আয়ান শর্মাকে ফোনে ইকবাল বলেন, ‘তোমার সাথে আমার পাঙ্গা লেগে গেল কিন্তু, মনে রেখো। কচুকাটা করবো, কচুকাটা। মিডিয়া দিয়ে কচুকাটা করবো তোমারে। আমি হাত তুলি না কারো ওপরে। মিডিয়া দিয়ে কচুকাটা করবো তোমারে। আমি যখন চারটা মামলা দিবো, আগের মামলা তো আছেই, এর পেছনে দৌড়াইতে পারবা? তোমারে আমি ন্যাংটা তিনটা নিউজ পেপারে আর টিভি চ্যানেলের মধ্যে করতেছি কালকে। তারপর তুমি মামলা লাগাও আমার পেছনে, এ পর্যায়ে কোর্টে গিয়ে দৌড়াইয়ো, টাকা খরচ কইরো, ঠিক আছে?’

চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে ইকবাল বলেন, ‘তাইলে কালকে থেকে কিন্তু কোর্টে অনেক কিন্তু দৌড়াইতে হবে কিন্তু। চারটা মামলা হবে কিন্তু। শোন, তুমি যেই…ধর তুমি মনে হয় আমার কানেকশন জানো না, মহসীন স্যারের কানেকশন আর আমার কানেকশনের মধ্যে অনেক বেশকমের হিসাব আছে। আমি চাই যে রেকর্ডিং কর এই কথাগুলা, কারণ তুমি আমারে প্যারাইন্না ফুরাইন্না করে পারবা না, কেন পারবা না জানো? তুমি এই দেশেই থাকতে পারবা না। তুমি যদি এত বড় হয়ে থাক সাংবাদিক, আমি মাফ চাইব।’

ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়ে ইকবাল বলেন, ‘কোর্টে হাজিরা তোমার দিতে হবে, রেডি হয়ে যেয়ো, ঠিক আছে? এরপরে তো তুমি কোথা থেকে ডাক পাবা এটা তুমি বুঝেই নিবা। তুমি ঢাকায় ডাক পাবা, চিটাগাংয়ে না। ইউ ক্যান নট ম্যানেজ এনিবডি ইন চিটাগং, তুমি ঢাকা থেকে ডাক পাবা। তোমারটা তুমি দেইখো। আমি কোন কানেকশনে চলি তুমি জানো? আমি তোরে কোর্টে কয়বার রান করাবো, আমার বাজেট আমি ঠিক করছি। তুমি যেখানে গিয়ে কেইস করার কর, আমি যশোর যাব দরকার হলে, হেলিকপ্টার নিয়ে যাবো। আর তুই যাবি বাসে। মাফ চাইতে পারবি নাকি মাফ চাইবি না? আমি কি দৌড়াবো তোরে? তুমি এভাবে নিউজ কেমনে আমার ছবি দিয়ে করলা? তুমি ক্ষমা চাবা নাকি কালকে তোমারে ধরে নিয়ে যাবো আমি?’

এছাড়া আয়ান শর্মার পরিবারকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়ানোর হুমকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন ইকবাল।

সনাতন ধর্মালম্বী হওয়ায় মামলা প্রত্যাহার না করলে সপরিবারে দেশত্যাগে বাধ্য করবে বলেও হুমকি দেন আসামি ইকবাল।

সামাজিকভাবে ও পেশাগতভাবে মান-সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্য আয়ান শর্মার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা, বানোয়াট ও অপমান জনক সংবাদ প্রচার করেছেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দৈনিক আমাদের সময়’র পত্রিকায় ‘কয়লা আয়ান শর্মার ময়লা যায়নি’ শিরোনামে মিথ্যা তথ্য দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। যা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

এসব সংবাদ পত্রিকাটির চট্টগ্রাম ব্যুরোর স্টাফ রিপোর্টার মো. মহি উদ্দিন তার নিজের ফেসবুকে প্রচার করেন।

বাদিপক্ষের আইনজীবী কফিল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম প্রতিদিনের উপদেষ্টা সম্পাদক ও প্রকাশক আয়ান শর্মাকে পেশাগত, সামাজিক, পারিবারিক সুনাম ক্ষুণ্ন করতেই আসামিরা মিথ্যা, বানোয়াট এবং আক্রমণাত্মক সংবাদ প্রচার করেছে।’

বাদিপক্ষের আরেক আইনজীবী মোকাররম হোসাইন বলেন, ‘আসামিরা তাদের নিজস্ব পত্রিকা ও অনলাইন ভার্সনে মনগড়া কথা লিখে তা প্রকাশ এবং প্রচার করেছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে বিভিন্ন হুমকি এবং দেশত্যাগের বাধ্য করারও হুমকি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আদালত মামলাটি গ্রহণ করে প্রতিবেদনের জন্য কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে নির্দেশ দিয়েছেন।’

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম