৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৭:১৭ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
নিজস্ব প্রতিবেদক॥
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীন ৮৮৯ জন মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট ও ১৮০০ মেডিকেল টেকনিশয়ান নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ও লিখিত পরীক্ষার খাতা পরিবর্তনের মতো দুর্নীতি-জালিয়াতিতে জড়িত থাকার দায়ে অধিদফতরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. শেখ মোহাম্মদ হাসান ইমামকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। তবে তার পরিবর্তে নতুন যাকে পরিচালক (প্রশাসন) করা হয়েছে ডা. মো. শামিউল ইসলাম (ডা. সাদী), ইনি আরো বড় দুর্নীতিবাজ বলে পরিচিত স্বাস্থ্য সেক্টর ছাড়াও বিভিন্ন মহলে।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির দায়ে মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হয় গত ২০ সেপ্টেম্বর বিকেলে। এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি রিপোর্ট প্রদানের পর নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করা হলেও দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছিলো না। এ নিয়ে টিআইবিসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছিলো। দুর্নীতি প্রমাণ হওয়ায় স্বাস্থ্যের টেকনোলোজিস্ট ও টেকনিশিয়ান নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল: তবে দুর্নীতিবাজরা এখনো বহাল-তবিয়তে” শিরোনামে একটি তথ্যবহুল প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অবশেষে আজ বিকেলে নতুন এই বদলির আদেশ জারি করা হলো।
বস্তুত, এই দুর্নীতিতে জড়িত রয়েছে একটি বড় সিন্ডিকেট। ওই সিন্ডিকেটের প্রধান দুই ব্যক্তি হলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাবেক এপিএস ড. মোহাম্মদ আরিফুর রহমান সেখ এবং পরিচালক (প্রশাসন) ডা. শেখ মোহাম্মদ হাসান ইমাম। ডা. শামিউল ইসলাম সাদীও সিন্ডিকেটে জড়িত আছেন। এছাড়া কর্মচারীদের মধ্যে ফারুক হাসান, আহসান সাইয়েদ এরশাদ, দেলোয়ার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন জড়িত।
অথচ শীর্ষ দুর্নীতিবাজ বলে পরিচিত ডা. শামিউল ইসলাম সাদীকেই নতুন পরিচালক (প্রশাসন) হিসেবে পদায়ন করা হলো। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব (পার-২) এর স্বাক্ষরে এই পদায়ন করা হয়। একই প্রজ্ঞাপনে শেখ মোহাম্মদ হাসান ইমামকে করা হয় অধিদফতরের পরিচালক (এমবিডিসি)। ডা. সাদীর নতুন এই নিয়োগের আগে পরিচালক (এমবিডিসি) ও লাইন ডাইরেক্টর টিবি লেপ্রোসি এন্ড এএসপি পদে দায়িত্বপালন করছিলেন। এছাড়া প্রজ্ঞাপনে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক (ব্লাড ট্রান্সফিউশন) ডা. মো. মাজহারুল হককে করা হয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টর লাইন ডাইরেক্টর এবং হাসপাতাল সার্ভিসেস ম্যানেজমেন্টর লাইন ডাইরেক্টর ডা. মো. খুরশীদ আলমকে দেয়া হয় অধিদফতরের টিবি-লেপ্রোসি এন্ড এএসপির লাইন ডাইরেক্টর পদে।
জানা গেছে, পরিচালক (প্রশাসন) পদে ডা. সাদীর এ নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ডা. শামিউল ইসলাম সাদী ইতিপূর্বে মোহাম্মদ নাসিম স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকাকালে পরিচালক (হাসপাতাল) পদের দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময় বস্তায় ভরে টাকা নেয়ার ঘটনাসহ অনেক কেলেংকারির জন্ম দেন তিনি। বর্তমানে তিনি গোটা স্বাস্থ্য সেক্টরেই এপিএস আরিফের দুর্নীতির সহযোগীর ভূমিকায় রয়েছেন। কেউ কেউ তাকে এপিএস আরিফের দুর্নীতির উপদেষ্টাও বলে থাকেন। মনে করা হচ্ছে, এপিএস আরিফই ডা. শামিউল ইসলামকে নতুন পরিচালক (প্রশাসন) পদে পদায়নের ব্যবস্থা করেছেন।
Leave a Reply