উম্মে রাহনুমা ,জবি প্রতিনিধি:
পৌষ মাসের শেষ দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পৌষসংক্রান্তি পালন করে। অন্যদিকে পুরান ঢাকার স্থানীয়রা পালন করে আসছেন সাকরাইন উৎসব। সংক্রান্তি শব্দটি অপভ্রংশ হয়ে সাকরাইন রূপ নিয়েছে। সাকরাইনের অন্যতম প্রধান অংশ ঘুড়ি উৎসব।
প্রতি বছর ১৪ জানুয়ারি পালন করা হয় পুরান ঢাকার সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎসব সাকরাইন। আর এই সাকরাইনকে কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার শাঁখারিবাজার, লক্ষ্মীবাজার, নয়াবাজার, তাঁতীবাজার, গেণ্ডারিয়া ও সূত্রাপুর এলাকায় ঘুড়ি, নাটাই ও মাঞ্জা দেওয়া সুতা বেচাকেনার ধুম পড়েছে।
শাঁখারি বাজারের দোকানগুলোতে আকার ও মান ভেদে নানা ধরনের ঘুড়ি দেখা যায়। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ভোয়াদার, চক্ষুদার, দাবাদার, রুমালদার, চিলদার, রকেট, স্টার, টেক্কা, শিংদ্বার, রংধনু, গুরুদার, পান, লাভসহ রয়েছে অসংখ্য ঘুড়ি। আকারভেদে একেকটা ঘুড়ির দাম ১০ টাকা থেকে শুরু করে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
আবার নাটাইয়ের পসরাযুক্ত ঘুড়ির দাম ১০০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা এবং সুতার দাম হাঁকানো হচ্ছে মান ভেদে ৮০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত।
পুরান ঢাকার বাসিন্দা রাকিব দশম শ্রেণির ছাত্র। গতকাল সন্ধ্যায় গেণ্ডারিয়ার দিকে তাকে অনেকগুলো ঘুড়ি হাতে নিয়ে যেতে দেখা যায়। রাকিব বলেন,পড়াশোনার চাপে ঘুড়ি কেনার জন্য আগে আসতে পারিনি। সাকরাইনের মূল আনন্দ হলো ঘুড়ি ওড়ানো।
রবিবার পুরান ঢাকার প্রায় প্রত্যেকটি ছাদেই দেখা যাবে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা। একজন অন্যজনের ঘুড়ি কাটবে, তার ঘুড়ি আবার অন্যজন কাটবে। দেখা মিলবে নানা রকম রঙিন ঘুড়ি, সুতা ও নানা রকমের নাটাই।
সাকরাইন উৎসব ঘিরে সন্ধ্যার পর পুরান ঢাকার অলি-গলিতে এবং অনেক ভবনের ছাদে দেখা মিলবে ডিজে পার্টি। উচ্চশব্দে গানের তালে তালে নাচবে তরুণ-তরুণীরা। এটিকে সাকরাইনের অপসংস্কৃতি বলে অনেকে।
এ বিষয়ে কলতাবাজারের বাসিন্দা আকবর বলেন, ইদানীং ছেলেরা সাকরাইন উপলক্ষে ভবনের ছাদে ডিজে পার্টির আয়োজন করে। উচ্চস্বরে সাউন্ড করা অসুস্থ রোগী যারা আছেন তাদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। তবে একটা জিনিস মনে রাখা দরকার বাংলাদেশ থেকে এই সংস্কৃতি হারিয়ে যেতে থাকলেও সাকরাইন উপলক্ষে কিছুটা ধরে রেখেছেন পুরান ঢাকার বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে ধূপখোলার বাসিন্দা রাজিয়া সুলতানা বলেন, সাকরাইনের সময় প্রত্যেকটি ছাদেই দেখা যায় ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা। একজন অন্যজনের ঘুড়ি কাটে, তাছাড়া রাতে ছাদে গান-বাজনা চলে, আর ঘরে ঘরে ভালোমন্দ রান্না করা হয়। আসলে ছোট থেকে দেখে আসছি বলে এখন আর এই রান্নাবান্নার কাজটা বাদ দিতে পারি না। পরিবারের সবাইকে মিলে এইদিনে অনেক মজা করি।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ || বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ || মোবাইল : ০১৫১১৯৬৩২৯৪,০১৬১১৯৬৩২৯৪ || ই- মেইল: dailysobujbangladesh@gmail.com || ওয়েব : www.dailysobujbangladesh.com
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ. All rights reserved.