তারিখ লোড হচ্ছে...

এতিমের বাড়ি জবরদখল : হোটেল কর্মচারী থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক ভূমিদস্যু মুজিবুল

মোঃ সোহাগ :

মৃত শাহ আলম মিয়া পালিতপুত্র হয়ে বেড়ে ওঠেন রাজধানী ঢাকার কল্যাণপুর এলাকায় কাশেম মাতবরের পরিবারে। এলাকার পুরোনো বাসিন্দাদের সবার জানা ঘটনা, কাশেম মাতবরের সংসারে পরপর দুটি সন্তানের জন্মের পরই মারা যাওয়ার কারণে তারা শাহ আলম মিয়াকে পালিতপুত্র হিসেবে গ্ৰহন করে। শাহ আলম মিয়াকে দত্তক নেয়ার পরবর্তী সময়ে অবশ্য কাশেম মাতবরের সংসারে একটি ছেলে সন্তান ও তিনটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। তারা হলেন- মোঃ আলী আমজাদ খোকন (৪৫); মোসাঃ রেহেনা বেগম (৪৭); মোসাঃ শাহানা বেগম (৪২) এবং মোসাঃ জোছনা বেগম (৪০)।

সংসারের বড় সন্তান হিসেবে শাহ আলম মিয়া সবসময়ই ছিলেন অত্যন্ত দায়িত্বশীল ও নিষ্ঠাবান। সে যথারীতি সময় মতো কাশেম মাতবরের সংসারের হাল ধরেছেন যেভাবে তা একজন অত্যন্ত ভালো মানের মানুষের পক্ষেই সম্ভব হয়। সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার স্বপ্নে শাহ আলম তার একজীবনে ইরাকে প্রবাসীশ্রমিক‌ও ছিলেন প্রায় বছর পাঁচেক।

প্রবাসজীবন শেষে দেশে ফিরে শাহ আলম তার নিজ-নামে ২৪/৩, শহীদ মিনার রোড, কল্যাণপুর -এই হোল্ডিং নাম্বারের ৯(নয়) শতাংশের একটি প্লট ক্রয় করেন, পরবর্তীতে যেখানে সে ১১টি রুম-সম্বলিত একটি টিনসেট বাড়িও করেন। এরপর একপর্যায়ে পরিবারের সম্মতিক্রমেই শাহ আলম বিয়ে করেন মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী দেওয়ান পরিবারের মোসাঃ হাজেরা বেগম শিল্পী নামের একটি মেয়েকে।

বিয়ের ২(দুই) বছর পরে তাদের ঘর আলোকিত করে জন্ম নেয় একটি ছেলে কিন্তু নিয়তির নিষ্ঠুরতায় মাত্র ৩৫(পয়ত্রিশ) বছর বয়সে হঠাৎ হার্ড এ্যাটাকে মারা যান শাহ আলম মিয়া। তার মৃত্যুর সময়ে একমাত্র পুত্র মোঃ স্বজলের বয়স ছিলো মাত্র ৪ বছর।

এদিকে শাহ আলম মিয়ার মৃত্যুর এক বছর অতিক্রম হতে না হতেই তার রেখে যাওয়া কল্যাণপুরের বাড়িটার উপরে লোভী শকুনীচক্ষু পরে যায়। জানা যায়, প্রতিবেশী খাজা মুজিবুল হক, বিভিন্ন সময়ে নানা কৌশলে শাহ আলম মিয়ার বিধবা স্ত্রীর নিকট বাড়িটা খরিদ করার আশা নিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রস্তাব পাঠানো শুরু করে।

এহেন প্রস্তাবে বিধবা হাজেরা বেগম বাড়ি বিক্রি করতে কোনো ভাবেই রাজি না হলে খাজা মজিবুল হক বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা শুরু করে। সে বাড়ির লোভে তৈরি করা শুরু করে একের পর এক ভয়ংকর পরিকল্পনা। কখনও ভয়ভীতি প্রদর্শন, কখনও টাকার প্রলোভন, কখনওবা হুমকি, কোনো ভাবেই থামায় না প্রতিবেশী মুজিবুল হক তার শয়তানী।

একদা সে এলাকার সাবেক কমিশনার দেলোয়ারের মাধ্যমেও বাড়ি ক্রয়ের প্রস্তাব পাঠায় হাজেরা বেগম শিল্পীর কাছে।

মৃত শাহ আলম মিয়ার অসহায় বিধবা স্ত্রী শিল্পীই এসব তথ্য নিশ্চিত করেন এবং তিনি আরও জানান, সকল প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হলে মুজিবুল শুরু করে কুটনীতির নোংরা চাল। সে উক্ত এলাকার এক ভূমিদস্যু ইনসান চৌধুরীর সাথে সলাপরামর্শ করে মৃত শাহ আলম মিয়ার পিতা অর্থাৎ হাজেরা বেগম শিল্পীর শশুর কাশেম মাতবরকে বুদ্ধি দেয় কোর্টে মামলা করার। তাদের পরামর্শ মতে, দত্তক নেয়া মৃত শাহ আলম মিয়ার রেখে যাওয়া একমাত্র পুত্র মোঃ স্বজলের লিগ্যাল গার্ডিয়ান হতে চান কাশেম নিজেই। কেননা আদালতের রায় পেয়ে যদি কাশেম মাতবর শিশু স্বজলের লিগ্যাল গার্ডিয়ান হতে পারে তাহলে তো শাহ আলম মিয়ার রেখে যাওয়া একমাত্র বাড়িটিও থাকবে তার‌ই দায়িত্বে নিঃসন্দেহে, -এটাই ছিলো তাদের মতলব।

এমন একটা কু-পরামর্শে উপনিত হয়ে মুজিবুল কাশেম মাতবরকে দিয়ে কোর্টে মামলা করায়। ওদিকে মামলা চলাকালীন সময়েই কাশেম মাতবরকে টাকার প্রলোভোন দেখিয়ে শেয়ালের চেয়েও অধিক চতুর ভূমিদস্যু খাজা মুজিবুল হক সবার অগোচরে তার বোন নাহার বেগমের নামে বাড়িটা ক্রয় করার প্রস্তাব‌ও দেয় কাশেম মাতবরকে।

মুজিবুলের এমন প্রস্তাবটি পেয়ে কাশেম মাতবরের কু-বুদ্ধি আরোও বেগবান হয়। সে তার পালিত পুত্র মৃত শাহ আলমের বাড়িটির উত্তরাধিকারী শিশু মোঃ স্বজল ও শিশুটির মা হাজেরা বেগম শিল্পীকে কিছু না বলে কয়ে গোপানে, অবৈধভাবে বাড়িটি মাত্র ১২,০০০০/-(বার লক্ষ) টাকা দাম নির্ধারন করে খাজা মুজিবুলের কাছ থেকে মাত্র ২০০০০০/- (দুই লক্ষ) টাকা নিয়ে মুজিবুলের বোন মোসাঃ নাহার বেগমের নামে একটি বায়না দলিল করে দেয়। যা সম্পুর্ন অনধীকার চর্চা ও প্রতারণা তো বটেই।

এদিকে আদালতে কাশেম মাতবরের দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা হয় শিশু স্বজলের গর্ভধারীনি মা হাজেরা বেগম শিল্পীর পক্ষে। ফলে একই সাথে আইন মোতাবেক মৃত শাহ আলম মিয়ার রেখে যাওয়া সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিক‌ও হয়ে যায় হাজেরা বেগম শিল্পী ও তার পুত্র মোঃ স্বজল।

মামলায় হেরে গিয়ে‌ও খাজা মুজিবুল হক খান্ত হয় না, সে বাড়িটির জন্য এরপর একটি জালদলিল তৈরি করে, আর সেই জাল দলিলের উপর ভিত্তি করে আবার আরেকটি মামলা দায়ের করে আদালতে। পাশাপাশি চলে পেশীশক্তির প্রয়োগ এবং অবশেষে বাড়িটি দখল করে নেয় তারা।‌ আর দখলের পর থেকে আজ অবধি মুজিবুল ওই বাড়িতে বহলতবিয়্যতে আছেন।

এছাড়াও খোঁজ খবর নিয়ে আরও জানা যায়, এলাকার দাপুটে ভূমিদস্যু খাজা মুজিবুল হয় ও ইনসান চৌধুরী উল্লেখ্য এলাকায় একই প্রকৃয়ায়‌ আরও কয়েকটি বাড়ি দখল করে এখন তারা হাজার কোটি টাকার মালিক।

এ বিষয়ে হাজেরা বেগম শিল্পী বিভিন্ন দফতরে দফতরে দরখাস্ত দিয়েও কোন প্রতিকার না পেয়ে অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়-এ ধন্না দিলে তার প্রতি মানবিক মায়ার জন্ম হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। অতঃপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দফতর থেকে এবিষয়ে ব্যবস্থা নিতে একটি আদেশ পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন পদক্ষেপ নিয়ে বাড়িটি পুনরুদ্ধার করে সঠিক মালিক তথা হাজেরা বেগম ও তার সন্তানের কাছে হস্তান্তর করে কিন্তু অবৈধ কালো টাকার কাছে আবারও হার মেনে যায় সত্য! আবারও ঘর ছাড়া হয় বিধবা হাজেরা বেগম ও তার শিশু পুত্র।

হাজেরা বেগম জানান, তৎকালীন কমিশনার দেলোয়ার ও প্রশাসনের দুর্নীতিবাজ মহলে মোটা অংকের টাকা খরচ করে আবারও রাতারাতি বাড়িটি জবরদখল করে নেয় খাজা মুজিবুল হক, যার পেছনের প্রধান মদদ দাতা ইনসান চৌধুরী।

অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, একজন সরকার দলীয় বড় মাপের নেতার অদৃশ্যে থেকে শেলটার দেওয়ার কারণেই খাজা মুজিবুল হক এসব জঘন্য কর্মকান্ড চালিয়ে মেতে সক্ষম হয়েছে।

শুধু তাই নয় কালো টাকার প্রভাব খাটিয়ে কোর্ট থেকে একটি একতরফা রায়‌ও নিয়ে আসে খাজা মুজিবুল হক, যেখানে উল্লেখ করা রয়েছে যে মৃত শাহ আলমের বাড়ির দলিলটি ভূয়া এবং বিবাদী হাজেরা বেগম শিল্পী অনুপস্থিত থাকার কারনে এহেন একতরফা রায় প্রদান করা হয়েছে।

এবিষয়ে পারিবারিক জজ আদালতে আপিল করেছেন মৃত শাহ আলম মিয়ার স্ত্রী হাজেরা বেগম শিল্পী, যা এখনও চলমান আছে।

অপরদিকে ২০১১ইং সাল পর্যন্ত যদিও ২৪/৩ শহীদ মিনার রোড, কল্যানপুর -এই হোল্ডিং নাম্বারের খাজনা পরিশোধ করেছেন হাজেরা বেগম শিল্পীই কিন্তু ২০১২ইং-এর খাজনা পরিশোধ করতে গেলে মীরপুর ভূমি অফিস হাজেরা বেগম শিল্পীকে জানায় যে তার নামের উপরে ২৪/৩ হোল্ডিং নম্বরের জমিটি বাবদ আর কোনো খাজনা নেয়া হবে না। ভূমি অফিস তাকে আরও জানায়, জমির মালিকানা নাকি পরিবর্তিত হয়ে খাজা মুজিবুল হকের বোন নাহার বেগমের নামে হয়ে গেছে। এমনকি গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিলেও ভৌতিক ভাবে রাতারাতি শাহ আলমের নামের জায়গায় নাহার বেগমের নাম হয়ে যায়। তিতাস গ্যাস, ডেসকো এবং ওয়াসার অফিসে খোঁজ নিয়ে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

অপরদিকে অনুসন্ধানে খাজা মুজিবুল হককে মদদ দেয়ার কারণ‌ও উদঘাটিত হয়েছে। জানা গেছে, জবরদখল ও জালিয়াতিতে ইনসান চৌধুরীর ভূমিকার মূলকারণ, ২৪/৩ নাম্বার হোল্ডিং নম্বরের পাশের প্লটটি ইনসান চৌধুরীর। তাছাড়া খাজা মুজিবুল হককে জবরদেখলে সহোযোগিতা করার বিনিময়ে ইনসান চৌধুরী প্রায় ২ কাঠা জমিও গুন্ডামীর খেরাজ বাবদ খাজা মুজিবুল হকের কাছ থেকে পেয়েছে। যেখানে বর্তমানে চলছে বহুতলা ভবন নির্মানের কাজ, যার ৬ষ্ঠ তালার ছাদ‌ও ঢালাই-করা হয়ে গেছে।

‘কার যায়গায় কে বাড়ি নির্মান করছে এটা বোঝা বড় দায় কিন্তু বলার কোন উপায় নাই’, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক বাসিন্দা আফসোস করে এম‌ন‌ই মন্তব্য করেন।

অনুসন্ধানী দল কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে যাওয়া‌ ইনসাফ চৌধুরীর পুত্র ইয়েনহুয়া চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি স্বীকার করেন যে ২৪/৩ হোল্ডিং নাম্বারের বাড়িটি প্রকৃত পক্ষে শাহ আলম মিয়ারই। এমনকি তাদের প্লটটিতেও শাহ আলমের প্রায় ২কাঠা জমিও যে যোগ হয়েছে -এবিষয়টিও তিনি স্বীকার করেন অকপটে।

২৪/৩ শহীদ মিনার রোড কল্যাণপুর, -হোল্ডিং নম্বরের তথ্য অনুসন্ধানে গিয়ে আমাদের অনুসন্ধানী দলের কাছে মিলেছে নৈতিকতার চরমতম বিপর্যয় এবং তাদের কাছে সৃষ্টি হয়েছে নীম্নলিখিত প্রশ্নসমুহঃ

১। কোন কাগজের বলে তিতাস, ডেসকো এবং ওয়াসা বাড়িটির বিল মালিকানা পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে?
২। এক তরফা রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল চলাকালীন মিরপুর ভূমি সাবরেজিস্টার অফিস কোন আইনের বলে জমিটির খাজনা খারিজ নাম পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছে?
৩। সামান্য হোটেলে চাকরি করা মুজিবুল কিভাবে রাতারাতি বনে গেলেন হাজার কোটি টাকার মালিক খাজা মুজিবুল হক?
৪। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে স্থানীয় প্রশাশন যে বাড়িটি অবৈধ দখল থেকে উদ্ধার করে বিধবা হাজেরা বেগম শিল্পী ও তার পুত্র মোঃ স্বজলের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে পরে আবারও কোন সেই অদৃশ্য ক্ষমতা (যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়েও শক্তিশালী) যার ছত্রছায়ায় পুনরায় রাতারাতি বাড়িটি খাজা মুজিবুল হকের অবৈধ দখলে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতার দেখিয়ে দিয়েছে?
৫। নাহার বেগমের নামে সকল প্রকার বিল এবং জমির খাজনা খারিজ থাকা সত্তেও কোন রহস্যে সেই বাড়ির সামনে লাগানো সাইনবোর্ডে লেখা, ‘এই জমির মালিক খাজা মুজিবুল হক’?
৬। যেহেতু বাড়িটির সামনের সাইনবোর্ডে মালিকের নামের জায়গায় লেখা খাজা মুজিবুল হকের নাম, তাহলে আবার কি করে তা ২( দুই লক্ষ) টাকা দিয়ে বায়না দলিল করা যায় নাহার বেগমের নামে?

তাহলে বাড়িটির প্রকৃত মালিক কে?

এসমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে এবং ভূমিদস্যু খাজা মুজিবুল হকের মুখোশ উন্মোচনবাদ আসল রূপ দেখতে, চোখ রাখুন আগামী পর্বের দিকে।

আশুলিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা ও সুদি মহাজন ফরহাদের খুঁটির জোর কোথায়?

স্টাফ রিপোর্টার:

সাভারের আশুলিয়ার সুদ ও জুয়ার নিয়ন্ত্রক ফরহাদ এক সময় মতিঝিল আরাম বাগ ক্লাবের ক্যাসিনো বোর্ড ম্যানেজারের দায়িত্বে ছিলেন আর এই সুযোগে ক্যাসিনো বোর্ডের ২২ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েও গিয়েছিলেন। এরপর টেংগুড়ি ইকরা বাজার এলাকায় শুরু করেন সুদ ও জুয়ার (ক্যাসিনো) ব্যাবসা। শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের যুবলীগের সাধারন সম্পাদক শফিক আহমেদ কে সাথে নিয়ে তৈরি করেন অপরাধের রাজত্ব। বর্তমানে ক্যাসিনো ফরহাদের সুদের টাকার দৌরাত্বে অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। সামান্য অর্থের বিনিময়ে ব্ল্যাংক চেক নিয়ে তাতে লাখ টাকার অঙ্ক বসিয়ে দেয়া হয়েছে লাখ লাখ টাকার মিথ্যা মামলা।

 

ভুক্ত ভোগী জিরানী ও টেংগুড়ী এলাকার ব্যবসায়ী দেলোয়ার, মাহফিজুর অপু, মাসুদ জানান, ব্যবসার জন্য কিছু টাকা সুদের উপর আনার পর আমরা কেউ কেউ ২ লাখে ৭ লাখ, কেউ আবার ১ লাখে ৪ লাখ টাকা, ২ লাখে ৬ লাখ দিয়েও রেহাই পাইনি। তারা আরও বলেন সুদ ও জুয়ার (ক্যাসিনো) ব্যাবসায়ী ফরহাদ হোসেন আমাদের চেক বইয়ের পাতাকে পুঁজি করে বিভিন্ন অংক বসিয়ে আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা সহ  অনেক পরিবারকে  নিঃস্ব করে ফেলেছে ।

 

জানাগেছে ফরহাদ ঢাকার মতিঝিলের আরামবাগ ক্লাবের সিরাজ মিয়ার পাটনার ছিলো । আওয়ামী যুবলীগ নেতা সম্রাট গ্রেফতারের দিন উক্ত ক্লাব থেকে প্রায় ২২ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় ফরহাদ হোসেন। বিভিন্ন জনের সাথে প্রতারনা করায় একাধিক প্রতারনা মামলা হয়েছে ফরহাদ হোসেনের নামে গ্রেফতারও হয়েছে একাধিকবার। কিন্তু আইনের মারপ্যাচে বারবার বের হয়ে এসে চালাচ্ছেন সুদ ও জুয়ার (ক্যাসিনো) ব্যাবসা এবং করছেন মানুষের সাথে প্রতারনা।

 

শিমুলিয়া ইউনিয়ন বাগের তল কাছৈর এলাকার মোতালেব জানান,সম্রাট গ্রেফতারের দিন বোর্ড ম্যান হিসাবে ঐ দিন ওর ডিউটি ছিলো। পরিস্থিতি খারাপ দেখে কৌশলে টাকা নিয়ে পালিয়ে চলে আসে। তার পর মাত্র ৫ দিনের মাথায় জিরানী ইকরা স্কুলের বিপরীতে স’মিলের উত্তরে আবুল হোসেনের ৫/৬ শতাংশ জমি কিনে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ফরহাদ হোসেন বর্তমানে জিরানি বাজার ইকরা বাজারের পিছনে এলাকায় আত্মগোপনে আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগীতায় বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে । ফরহাদ আশুলিয়ার বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জবরদস্তি মূলক চাঁদা আদায় করে, দোকানে ইয়াবা ফেলে, ঔষধের দোকানে মেয়াদ বিহীন ঔষধ ফেলে, বিভিন্ন দোকান থেকে জোড় পূর্বক টাকা আদায় করে আসছে। যুবলীগ নেতা শফিক ও ফরহাদ এখন এলাকা বাসীর গলার কাটা। একাধিক নাশকতা ও হত্যা মামলার আসামি হয়েও দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এছাড়াও, ফরহাদ হোসেন মিথ্যা মামলা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া, অবৈধ সুদ ব্যবসা চালানো এবং স্থানীয় যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে যোগসাজশে জমি দখলের মতো কাজে জড়িত রয়েছে । আশুলিয়া থানা পুলিশ জানিয়েছে ফরহাদ হোসেন এর আগে একটি প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার হয়। বর্তমানে এলাকায় এসে আবার ও প্রতারণা করা সহ অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ।

 

আশুলিয়ার বাসিন্দারা ফরহাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, ” এখন ফরহাদ হোসেন বিভিন্ন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে ব্যবসায়ীদেরকে হয়রানি করছে এবং টাকা আদায় করছে। যদি দ্রুত তাকে গ্রেফতার না করা হয়, তাহলে এলাকার শান্তি ভেঙে পড়বে” ।

 

এবিষয়ে ফরহাদ হোসেন এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তা সম্ভব হয়নি।

 

ফরহাদের মতো অপরাধীরা যখন রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রশ্রয় পেয়ে আইনের চোখে ফাঁকি দিতে পারে তখন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে। পুলিশ ও প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে এলাকাবাসীকে ন্যায় বিচার দেবে এমনই প্রত্যাশা স্থানীয়দের। এলার সকলের এখন একটাই প্রশ্ন সুদ ও জুয়ার (ক্যাসিনো) ব্যাবসায়ী ফরহাদ হোসেনের খুঁটির জোর কোথায়?

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম