১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ১০:৪৯ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোর্টার:
রাজধানীর মিরপুর বিআরটিএ অফিসে দালালদের পাশাপাশি অপকর্মে জরিত নিরপত্তার দ্বায়িত্বে থাকা আনসার কমান্ডার হাসেম।
তার সদস্য বাহিনীরা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।সপ্তাহে দাললদের জন প্রতি ৫০০ টাকা করে নেয়।আরো জানা যায়, দালালদের নিয়ন্ত্রন করে দালালদের কাছ থেকে মাসে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা হাতিয়ে নেন পিসি হাসেম। এবং নিজস্ব আনসার সদস্যদের দিয়ে বিভিন্ন ধরনে গাড়ীর কাগজ – পত্র ঠিক করার মাধ্যমে সদস্যদের কাজ থেকে প্রতিদিন ১০ /১২ হাজার করে নিয়ে থাকেন বলে তাদের অভিযোগ। নাম না প্রকাশে শর্তে একজন দালাল বলেন, আমরা ৮০থেকে ৯০ জন মিলে এখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাজ করি। এই কাজের বিনিময়ে আনসার কমান্ডারকে মাসে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা দিতে হয়। এই টাকা গুলো আনসারের এপিসি শহিদুল এর কাছে দিতে হয়। এপিসি মো:শহিদুল আমাদেরকে বলেন আমি পরে কমান্ডার মো: হাশেম স্যারের কাছে টাকা গুলো পৌছিয়ে দেই । টাকা না দিলে আমাদেরকে ভেতরে ঢুকতে বা কাজ করতে দেয় না। টাকা দিলে আবার কাজ করতে দেয়। তিনি আরও বলেন, আমাদের কাজের পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও এইসব কাজে জড়িত। ৩০ জন আনসার সদস্য এখানে রয়েছে। এমনকি আনসার সদস্যরা প্রতিদিন কাজ করে। তারা হলেন, অন্তর, জাকিরুল,মো: আনিছ, জয়,আরিফ,তৌহিদ,রিপন, মো: মামিন, ইব্রাহীম,আমিনুল, সহ আরো অনেক সদস্যরা বিআরটিএ’র কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে একে পর এক কাজ করে যাচ্ছে। তাদের জন্য আমরা বেশী একটা কাজ করতে পারি না। তার পরও আনসার কমান্ডারকে সপ্তাহ হিসেবে বা মাস হিসেবে টাকা দিতে হচ্ছে। কাজ হক বা না হক টাকা পরিশোধ করতেই হবে।বিআরটিএ অফিসে সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়, বাধ্য হয়ে নিতে হয় দালাল বা আনসার সদস্যদের সহযোগিতা।বর্তমানে সাবেক অনসার সদস্য ৪০ থেকে ৫০ জন প্রতিদিন কাজ করে যাচ্ছে। এবং প্রতি সপ্তাহে জন প্রতি কমান্ডার কে দিচ্ছে ১০০০ হাজার টাকা করে। বুধবার সকালে মিরপুর বিআরটিএ অফিসের বাইরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার সময় কথা হয় অনেকের সঙ্গে। এ সময় ভুক্তভুগী মেহেদী হাসান, নয়ন, মাসুদ, ও জামান একই অভিযোগ করেন।ভুক্তভুগীদের অভিযোগ, একদিকে আসতে হয় অনেক দূর থেকে, রাস্তায় থাকে যানজট শুক্রবার ও শনিবার বন্ধ হওয়ায় কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ডিজিটাল নম্বর প্লেট লাগাতে হচ্ছে মোটরসাইকেলে। বিআরটিএ অফিসে পর্যাপ্ত লোকবল থাকার পরেও দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তির শিকার হতে হয়।একদিকে থাকে পেটের চিন্তা অন্যদিকে ডিজিটাল নম্বর লাগাতে হবে, অন্যথায় ট্রাফিক পুলিশ বিভিন্নভাবে হয়রানি করবে এবং মামলা দেবে। এক সপ্তাহ যদি এভাবেই সময় যায় তাহলে পেটের চিন্তা করব না ডিজিটাল নম্বর প্লেট লাগাব? এমন অনেক ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ডিজিটাল নম্বর প্লেট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এবং ট্যাক্সটোকের নিতে পড়তে হয় বিভিন্ন ভোগান্তিতে। দালাল ধরলে এ সব আগেই সুন্দর মতো এবং সঠিক সময়ে পাওয়া যায়। নিয়ম অনুযায়ী এ সব সেবা নিতে গেলে সময় ও কর্ম দুইটোই নষ্ট হচ্ছে। বিআরটিএ অফিসে গেলে দালালের খপ্পরে পড়তে হয় এবং নানা ধরনের জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। পেশাদার ট্রাক চালক জাবেদুল ইসলাম বলেন, বিআরটিএ-এর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দালাল এবং আনসারদের মধ্যে যোগসাজশের কারণে সেবাগ্রহীতাদের এ সব ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।ভোক্তভুগীরা বলছেন, দালাল ছাড়া লাইসেন্স পাওয়ার চেষ্টা করাটাও যেন এক ধরনের পাপ। বিআরটি এর সেবা পেতে ভোগান্তিতে পড়ে নিতে হয় দালালের সহযোগিতা। দালাল আর টাকা ছাড়া এখানে কোনো কাজ হয় না।মোহাম্মদপুর থেকে বিআরটিএ অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্স ডেলিভারি নিতে এসেছেন মোহাম্মাদ আব্দুল্লাহ। তিনি প্রায় তিন ৪ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স হাতে পান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অনেকেই টাকা দিয়ে আগেই নিয়েছেন।তিনি বলেন, আর কত কষ্ট দেবে বিআরটিএ। আমাদের সেবামুখী মানুষদের। রাস্তার গাড়ির কাগজ পত্র ঠিক না থাকলে পুলিশ হয়রানি করে। আর বিআরটিএ কাগজ সঠিক সময়ে না দিয়ে আরেক ভোগান্তিতে ফেলে।এদিকে দালাল, টাউট ও প্রতারক হতে সাবধান’। এমন সতর্কবার্তা সম্বলিত সাইনবোর্ড চোখে পড়বে রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ সড়ক পবিরবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) গেট দিয়ে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই। শুধু প্রবেশ ফটকেই নয়, এমন সতর্কবার্তা লেখা আরও অনেকগুলো সাইনবোর্ড সাঁটানো আছে মিরপুর বিআরটিএ এর বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে দেয়ালে। কিন্তু এই সতর্কবার্তাকে ছাপিয়ে, বলা যায় বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দালালদের দৌরাত্ম্যই পুরো বিআরটিএ ঝুরেই।
চলবে।
Leave a Reply