বিমানবন্দরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ব্যবসা বন্ধের অভিযোগ, হামলা ভাংচুর লুটপাট

নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর বিমান বন্দর এলাকায় একজন প্রতিষ্ঠিত সিএন্ডএফ ব্যবসায়ীকে ব্যাবসা করতে না দেওয়ার হুমকি দিয়েছে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা। তার এই হুমকির পেছনে অপর একজন ব্যবসায়ীর ইন্দনের অভিযোগ করেছেন ঢাকা কাস্টমস এজেন্ট রুবেল মিয়া। অভিযোগে তিনি বলেন, তার অফিস কক্ষ ভাংচুর, সাতটি কম্পিউটার দুটি এসি খুলে নিয়ে বাকী মালামাল পুড়িয়ে দেয় তার প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপের ব্যবসায়ী। বিমানবন্দর থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আসলামের নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। তবে হামলায় অংশগ্রহণকারীরা সবাই স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মী ও সিনথিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর কর্মচারী।
অভিযোগে জানাগেছে, বিএনপি নেতা আসলামের ছোট ভাই বিমানবন্দর যুবলীগ নেতা কাউছার ও সিনথিয়া ট্রেড এর কর্মচারী অপর যুবলীগ নেতা কাইয়ুম এর নেতৃত্বে সিএন্ডএফ এজেন্ট রুবেলের মালামাল লুটকরে নিয়ে যায় এবং তার স্টাফদের মারধরও করে। রুবেলকে বিমানবন্দরে ব্যবসা করতে দেওয়া যাবে না বলে একাধিক মাধ্যমে তদবিরও করছেন বিএনপি নেতা আসলাম। নিজের ব্যবসা পরিচলায় হুমকিতে আছেন জানিয়ে এজেন্ট রুবেন মিয়া বলেন, আমাকে বিমানবন্দরে ব্যবসা করতে দিবে না বলে ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে। আমার আপন চাচা সিনথিয়া ট্রেড এর মালিক শাহজাহান ইতিপুর্বে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে আমার বিরুদ্ধে ২০ টির বেশী মামলা দেয়, হয়রানিমুলক এসব মামলায় আমি জেলও খাটি। এছাড়া অনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমাকে মেরে ফেলার জন্য বিভিন্ন বাহিনী দিয়ে উঠিয়ে নিয়ে যায়। আল্লাহ অশেষ কৃপায় আমি এখনো বেচে আছি। বিমানবন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে আমার চাচা সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির যুক্ত। এখন তিনি এবং স্থানীয় এক বিএনপি নেতাকে দিয়ে আমার ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। আমাকে এয়ারপোর্টে ব্যবসা করতে দিবে না বলে নানা হুমকি দিচ্ছে। এখন আমি নিরাপত্তা হীনতায় আছি। এ বিষয়ে থানা লিখিত অভিযোগ করেছি আমি।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা আসলামের বক্তব্য চাইলে ফোনে কোন কথা না বলে সামনে এসে কথা বলতে বলেন। পরে তিনি ফোন কেটে দেন।
বিমান বন্দর এলাকায় খোজ নিয়ে জানাগেছে, রুবেলের চাচা শাহজাহান ঢাকা কাস্টমস এর একজন প্রভাবশালী এজেন্ট। অনেকেই তাকে মাফিয়া বলেই চিনে। নিজের ব্যবসা ধরে রাখতে হেন কোন অপকর্ম নাই যা করে না। কাস্টমস এর কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে হাত করে পর্ণ্য খালাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয় শাহজাহান। যা ঢাকা কাস্টমস এ সবাই অবগত। এসব বিষয়ে সংবাদ করতে গিয়ে বিমান বন্দর এলাকায় অনেক সাংবাদিকও নাজেহাল হয়েছেন। এ বিষয়ে শাহজাহানের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কারো ব্যবসা বন্ধ করি নাই।

প্রধান শিক্ষকের রুমে তালা নিয়োগের বৈধতা ও তহবিল তসরুপ প্রশ্নে অস্থির সিদ্ধেশ^রী গার্লস স্কুল

 

বিশেষ প্রতিবেদক :

গত ৩ দিনের মতো আজও অস্থির রয়েছে রাজধানীর অন্যতম সেরা বালিকা বিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত সিদ্ধেশ^রী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। ছাত্র জনতার গণঅভ’ত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর পরই আত্ম গোপনে চলে যায় স্কুলের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম ময়না। অজ্ঞাত অবস্থানে থেকে তিনি নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন প্রধান শিক্ষকের কাছে।
ঘটনা প্রচারিত হলে চেয়ারম্যানের দোসর হিসেবে পরিচিত বাংলামাধ্যমের সহকারি শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন ও ইংরেজি ভার্ষনের সহকারি শিক্ষক শ্যামা আক্তারের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠে ছাত্রীরা। ছাত্রীদের প্রথম দিনের আন্দোলনেই স্কুল থেকে পালিয়ে যান দেলোয়ার হোসেন। কিন্তু পদ আঁকড়ে থাকতে মরিয়া হয়ে ওঠেন শ্যামা আক্তার। দীর্ঘ সময় ধরে চেয়ারম্যানের দোসর হিসেবে কাজ করলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতি মেনে না নিয়ে কিছু ছাত্রী ও কিছু পোষ্য অভিভাবকদের নিয়ে স্কুল দখলে নেয়ার চেষ্টা করে সে। সে ঘটনায় বাধাঁ দিতে গিয়ে ইংরেজি মাধ্যমের কয়েকজন উৎশৃঙ্খল অভিভাবক ও শিক্ষকদের হাতে মারাত্বক জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় স্কুলের ৬ জন বাংলা মিডিয়ামের আন্দোলনকারি ছাত্রী। ছাত্রীদের এ হেন নিগৃহিত হওয়ার ঘটনায় সামনে আসে স্কুলের বাংলা বিভাগের প্রভাতি শাখার কয়েকজন শিক্ষিকা। তারা ছাত্রীদের রক্ষায় এগিয়ে যাওয়ার কারণে শ্যামা আক্তার ও তার ক্যাডার বাহিনীর চক্ষুশূলে পরিনত হয়।
এ দিকে ঘটনার আকষ্মিকতায় ও চাপ সামলাতে না পেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাহাবুদ্দিন মোল্ল্যা। তিনি ভর্তি হন হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে। আজ বিভাগীয় কমিশনারের অফিসে দেখা করার সময় নির্ধারিত থাকার কারণে হাসপাতাল ছেড়ে স্কুলে আসেন প্রধান শিক্ষক। প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসছেন এমন সংবাদে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নতুন দুটি তালা মেরে দেয়া হয়।
কেন প্রধান শিক্ষকের অফিসে তালা মারা হলো এমন প্রশ্নে জবাবে আজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাহাবুদ্দিন মোল্ল্যা গণমাধ্যম কর্মিদের সাথে খোলামেলা কথা বলেন। তিনি জানান, আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। আমার হার্টে রিং পরানোর দিন আজ। কিন্তু বিভাগীয় কমিশনার অফিসে যেতে হবে তাই স্কুলে আসছি। এসে জানলাম আমার রুমে তালা দেয়া হয়েছে। কেন দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক জানান, আমার অফিসে অনেক ডকুমেন্টস রয়েছে। সেই সব ডকুমেন্টস যাতে আমি নিতে না পারি সে কারণে এটা করা হয়েছে। কারা করেছে এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে অনেকের নিয়োগের বৈধতা নেই। আবার সকল নিয়ম ভেঙ্গে অযাচিত সুবিধা নিয়েছে অনেকে। তারা এখন আমাকে কোন ভাবেই চায় না। তিনি বলেন, গত ১৫ বছর এখানে আমি অনেকটাই গৃহবন্দির মতো ছিলোম। স্কুলের কোথায় কি হয়েছে সব করেছে চেয়ারম্যান আর দুই সহকারি প্রধান শিক্ষক।
ইংরেজি মাধ্যমের সহকারি প্রধান শিক্ষকের নিয়োগের বৈধতা নেই। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ । এখানে অনেক ক্ষেত্রেই নিয়ম মানা হয়নি। ইচ্ছেমতো যকে ইচ্ছে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সুবিধা দেয়া হয়েছে। আমি কিছুই করতে পারিনি।এখন সে সব তথ্য যাতে সামনে না আসে সে জন্য তারা আমার রুমে তালা দিয়েছে।
এ দিকে আওয়ামীলীগ ক্ষমতা হারানোর পর অনেকটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বেশ কয়েকজন আওয়ামী পরিবারের সদস্য পরিচয়ে স্কুলে চাকুরি নেয়া শিক্ষক । এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতা আমির হোসেন আমুর ভাতিজা বউ হিসেবে পরিচিত মির লাইজু। আজ এই লাইজু স্কুলের একজন সাধারণ শিক্ষিকা জান্নাতুল উম্মির উপর চড়াও হন। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে জান্নাতুল উম্মি গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুলে এসেছেন জেনে আমরা সবাই তার সাথে দেখা করতে যায়, সে জায়গায় আমরা দাঁড়িয়েছিলাম। লাইজু এসে আমাকে জিজ্ঞেস করে তুমি মিটিং কর!আমি বল্লাম নাতো। আমিতো কোন কিছুতে নেই। সে তখন উত্তেজিত হয়ে বলে চোপ! আর সাথে সাথে সে আমাকে চড় থাপড় মারতে শুরু করলো। সেই সাথে সে হুমকী ধামকী দিতে থাকে। ভবিষ্যতে দেখে নেয়ারও হুমকী দেয় সে। সে বলে সব তার জানা আছে। তিনি যোগ করেন স্কুলের সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে সব জানতে পারবেন।
সহকারি প্রধান শিক্ষক শ্যামা আক্তারকে তার নিয়োগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব প্রশ্ন কেন আসছে। যা জানার প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে জানেন। এ বিষয়ে আমি কোন কথা বলবো না। এ দিকে মির লাইজুর মুঠোফোনে বার বার চেষ্টা করেও তার ফোন বন্ধ পাওযা যায়।
এ দিকে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমরা অবশ্যই ঘটনার ন্যায় বিচার করবো। তিনি ছাত্রী শিক্ষক ও অভিভাবকদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানান এবং গণমাধ্যম কর্মিদের কাছে সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, প্রতিটি ঘটনারই ন্যায় বিচার হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের