তারিখ লোড হচ্ছে...

মেহেরপুরে কারারক্ষী নিজেই মাদক পৌঁছে দেন বন্দীদের নিকট

 

স্টাফ রিপোর্টারঃ
মেহেরপুর জেলা কারাগারের কারারক্ষী আকাশ, গত দেড় বছরের অধিক সময় ধরে তিনি মেহেরপুর জেলা কারাগারে কারারক্ষী হিসেবে চাকুরীরত আছেন। আকাশ যশোর এলাকার বাসিন্দা হলেও সদর উপজেলার বুড়িপোতা এলাকায় ফেলা নামের এক চিহ্নিত মাদক কারবারীর মেয়ের সাথে বিয়ে করেছেন। বিয়ের সুবাদে তিনি বুড়িপোতায় অবস্থান করেন এবং সেখান থেকেই নিয়মিত কারাগারে ডিউটি করেন। আকাশের বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক বহন ও কারা অভ্যন্তরে মাদক বিক্রির অভিযোগ। এছাড়াও বন্দীদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে মাদকদ্রব্য গাঁজা ও ঘুমের ওষুধ বন্দীদের কাছে সরবরাহ করেন তিনি।
কারগারের প্রধান ফটকে বড় অক্ষরে লেখা আছে রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ। কিন্তু আকাশের মত কারারক্ষীদের মাদক সরবরাহের কারণে মাদক সেবনের নিরাপদ স্থান হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে কারাগার। কারারক্ষী আকাশের মাদক সরবরাহের বিষয়ে অনুসন্ধানে এর সত্যতা পাওয়া যায়। অনুসন্ধানে উঠে আসে আকাশসহ আরও দুই কারারক্ষীর নাম। ওই দুইজন কারারক্ষীর বিষয়ে অনুসন্ধান চলমান থাকায় এই পর্বে তাদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আকাশ বন্দীদের দেওয়া মোবাইল নম্বরে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করে গাঁজা ও ঘুমের ওষুধ ভিতরে নিয়ে সেই বন্দীর কাছে পৌছে দেয়। এই মাদক পৌছে দিতে বন্দীদের পরিবারের কাছ থেকে নেন টাকা। আকাশ সপ্তাহে প্রায় দিনই ডিউটি যাওয়ার আগে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি ফার্মেসী থেকে ঘুমের ওষুধ নিয়ে যান।
অনুসন্ধানে আকাশের গাঁজা ও ফার্মেসী থেকে ঘুমের ওষুধ ক্রয়ের একটি ভিডিও ক্লিপ হাতে আসে। ভিডিওতে দেখা যায় গত ২৫ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি ফার্মেসী থেকে তাকে ঘুমের ওষুধ কিনছেন। এছাড়াও ২৯ জুলাই ইয়ামাহা মোটরসাইকেল চড়ে আকাশ পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসে। তার কাছে এক যুবক এগিয়ে যায়। পরে ওই যুবক ও আকাশ ফার্মেসীর সামনে একত্রিত হয়। এসময় একপাতা ওষুধ ও কাগজের একটি পোটলা আকাশের কাছে দিয়ে দেয়। আকাশ সেগুলো তার প্যান্টের ডান পকেটে ঢুকিয়ে রাখে। পরে অন্য এক যুবকের সাথে কথা বলে চলে যায়। ওই ওষুধ ও কাগজের পোটলার বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একপাতা (ডিসোপেন—টু) ঘুমের ওষুধ ও কাগজে মুড়িয়ে গাঁজা আকাশের মাধ্যমে এক বন্দীর কাছে পাঠানো হয়।
এছাড়াও গত বছরের ১৮ অক্টোবর মেহেরপুরে ৯৫০ পিস ইয়াবাসহ চট্টগামের দু’জনকে আটক করে পুলিশ। সেসময় স্থানীয় একটি পত্রিকায় বুড়িপোতা সীমান্ত থেকে নিয়মিত ফেন্সিডিল এনে কারা অভ্যন্তরে ব্যবসা করার নাম উঠে আসে আকাশের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বন্দী বলেন, জেলে ঘুমের ওষুধ মাদকসেবীদের কাছে অমূল্য সম্পদ। আমি যখন কারাগারে ছিলাম তখন আকাশের বড়ি (ঘুমের ওষুধ) বিক্রি করতাম। আকাশ ডিউটির সময় ঘুমের ওষুধ ও গাঁজা কারা অভ্যন্তরে নিয়ে আমার কাছে পৌছে দিতো, আবার কারাগারের পিছনের প্রাচীর দিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে মাদক ফেলে রেখে আমাকে সিগন্যাল দিতো আমি সেগুলো সংগ্রহ করে অন্যান্য বন্দীদের কাছে বিক্রি করতাম। তিনি আরও বলেন, জেলে সরাসরি টাকার লেনদেন হয় না তাই বেনসন ও গোল্ডলীফ সিগারেটের বিনিময়ে এসব মাদক বিক্রি হয়ে থাকে। দুটি ডিসোপেন—টু’র (ঘুমের ওষুধ) ফার্মেসীতে মূল্য ২৪—২৬ টাকা হলেও কারা অভ্যন্তরে তা ছোট এক প্যাকেট বেনসন সিগারেটের বিনিময়ে বিক্রি হয়। যার মূল্য ২১০ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কারারক্ষী জানান, আকাশের শশুর ও শাশুড়িও চিহ্নিত মাদক কারবারি। জেলখানায় যত মাল (মাদক) ঢোকে সব আকাশের হাত দিয়ে সাপ্লায় হয়। মেহেরপুর জেলে তো বড় পার্টি নাই। যখন কোন বড় পার্টি ঢোকে তখন যে যা ইচ্ছা করে সেটাই তাকে দেওয়া হয়। তবে ঘুমের ওধুষ ও গাঁজা সরবারহ আকাশের নিত্যদিনের কাজ।
মুক্তি পাওয়া কয়েকজন বন্দীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেনসন বা গোল্ডলীফ সিগারেটের বিনিময়ে ঘুমের ওষুধ ও গাঁজা পাওয়া যায় কারাগারে। বতর্মানে একপাতা ডিসু (ডিসোপেন—টু ঘুমের ওষুধ) দুই প্যাকেট সিগারেট দিয়ে মিলছে না। দুই প্যাকেট সিগারেটের সাথে ছোট এক প্যাকেট ডারবি বা রয়েল সিগারেট দিতে হচ্ছে। কারাগারে গাড়ি আছে তারা সরাসরি এসব মাদক নিয়ে যায়। গাড়ি কি এমন প্রশ্নে একজন বলেন, যে কারারক্ষী মাদক সরবরাহ করে তাকে কারাগারের ভাষায় গাড়ি বলা হয়। আপনি এসব মাদক কিনেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি প্রতিনিয়ত ওষুধ ও গাঁজা নিয়ে সেবন করতেন বলে জানান।
এবিষয়ে আকাশ বলেন, আপনাদের কাছে তথ্য থাকলে যদি কিছু করতে ইচ্ছা হয় তাহলে করতে পারেন। আই ডোন্ট কেয়ার। আমার কোন সমস্যা নেই।
এবিষয়ে জেল সুপার দেব দুলাল কর্মকারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
একজন কারারক্ষীর ওপেনলী মাদক নিয়ে কারাগারে প্রবেশ করে তা বন্দীদের নিকট পৌছিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র মেহেরপুর জেলা জুরে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

শার্শায় মিটার ‘রিডিং’ না দেখেই অফিসে বসে করা হচ্ছে বিদ্যুৎ বিল,গ্রাহকদের মাঝে ক্ষোভ

 

আতিকুজ্জামান (শার্শা)যশোর::
মিটার রিডিং না দেখেই বিদ্যুৎ বিল করা ও সময় মত বিল এর কাগজ গ্রাহকের বাড়িতে না পৌছে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যশোরের বাগআঁচড়া অঞ্চলের পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকরা।

যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি -১ এর আওতায় বাগআঁচড়া সাব জোনাল অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারিদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে সাধারণ গ্রাহকরা।

প্রতি মাসে বাড়ি বাড়ি যেয়ে মিটার রিডিং না নেওয়া ও সময়মত বিদ্যুৎ বিল বাড়িতে পৌঁছে না দেওয়া টা তাদের নিয়মে পরিনত হয়েছে।গ্রাহকরা বলছেন,কয়েক মাস ধরে চলছে এ অবস্থা।অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না।

বাগআঁচড়ার জামতলা এলাকার আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের শেষ তারিখ প্রতিমাসের ২৬ তারিখ।অথচ ২৪মে শুক্রবার পর্যন্ত এলাকার কেউই মে মাসের বিলটি হাতে পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকরা।

একজন বিদ্যুৎ গ্রাহক লেছি ইয়াসমিন বলেন,মিটার রিডাররা প্রতিমাসে না এসে মাঝে মাঝে আসে।সব সময় তারা অনুমান নির্ভর বিল করে থাকে।এতে প্রকৃত বিল আমরা দিতে পারি না।বিশেষ বিশেষ সময় মিটার দেখে রিডিং নিয়ে আমাদের উপর বাড়তি বিলের বোঝা চাপিয়ে দেয়।

অনুমান নির্ভর বিদ্যুৎ বিল হলেও, এত টাকার বিল তো হওয়ার কথা নয়। আর তারা অনুমান নির্ভর বিল দেবেই বা কেন?

বিদ্যুৎ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা ও মিটার রিডারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর মিটার রিডাররা বাসায় বাসায় গিয়ে মিটারের বর্তমান রিডিং নিয়ে আসেন। সেই রিডিং থেকে আগের মাসের প্রাপ্ত রিডিং বাদ দিলেই এই মাসের ব্যবহৃত বিদ্যুতের হিসাব পাওয়া যায়। সেগুলো বিভিন্ন স্ল্যাব অনুযায়ী হিসাব করে বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিল করা হয়।

মিটার রিডিং না দেখেই বিদ্যুৎ বিল করার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গ্রাহকরা।

সামটা গ্রামের সেলিম রেজা বলেন,এদের পলিসিটা হলো এরা দু-চার মাস প্রকৃত বিলের চাইতে ইউনিট কম লেখে।বিশেষ করে জুন ও ডিসেম্বর মাসে প্রকৃত ইউনিট দিয়ে বিল করে তাতে এদের লাভ হচ্ছে বেশি ইউনিটে রেট বেশি পাওয়া যায়। আমরা জনগন আমাদের কিছু করার থাকে না। এ যেন শরতবাবুর শুভঙ্করের ফাঁকি।

জামতলা জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান বলেন, গত মাসের(এপ্রিল) জামতলা জামে মসজিদের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ওরা দেয়নি।আজ ২৪মে।মে মাসের বিল দেওয়ার শেষ তারিখ ২৬মে অথচ মে মাসের বিলের কাগজও পায়নি।দায় তাদের,অথচ জরিমানা দিতে হবে আমাদের।
একই কথা বলেন সোহেল রানা,তিনি বলেন,আমিও গত মাসের বিলের কাগজ পায়নি।মোবাইল ফোনে ম্যাসেজ দেখে বিল দিলাম। এখনও এমাসের ও বিলের কাগজ পায়নি।

বাগআঁচড়ার গোলাম রব্বানী রিপন বলেন,ওরা আমার মিটারের রিডিং না দেখে বিল করেছে ১২হাজার ৭৩৮ টাকা।এব্যাপারে অফিসে যোগাযোগ করলে তারা বলছে, ‘তোমার বাড়ি এসি চলে তাই অতিরিক্ত বিল এসেছে।’ অথচ আমার বাড়ি কোন এসি নেই।বুঝিয়েও কোন লাভ হয়নি কারন ওদের রিডিং বই এ লেখা আছে আমার বাসায় এসি চলে।

টেংরা গ্রামের শামীম আহমেদ বলেন,গত মাসে এক দিন আগে বিলের কাগজ পাইছি।বিদ্যুৎ অফিসের লোকেদের গ্রামে কিছু খাসচামচা (ইলেকট্রিশিয়ান)আছে যাদের কাছে বিদ্যুৎ বিলের কপি দিয়ে যায়।এরাই মুলত গ্রাহকদের কাছে পৌছে দেয়।একারনেই সময় মত গ্রাহকরা বিল হাতে পায় না।

বাগআঁচড়া সাব জোনাল অফিসের এজিএম গাজী সোহরাব হোসেনের কাছে জানাতে চাইলে তিনি বলেন,বিদ্যুৎ বিল রিডিং যারা করেন তারা বাড়ি বাড়ি গিয়েই তো বিল রিডিং করে।তারা কেন অফিসে বসে বিল রিডিং করবে।এটা কোন সমস্যা না দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।আমাদের নতুন বিল রিডার এসেছে অনেক সময় বাড়ি খুজে পাইনা এজন্য হয়তো দেরি হয়ে গেছে। তবে সব কিছু দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম