তারিখ লোড হচ্ছে...

চাঁদমারীতে মসজিদ নিয়ে ডিসির ভূমিকায় এলাকায় ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সরকারী নির্দেশ উপেক্ষা করে ফতুল্লার পশ্চিম চাঁনমারী এলাকার পতিত সরকারি জমিতে নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসকের বিতর্কিত ভুমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

তাদের ভাষ্য জনাব আব্দুল জব্বার এম এল এস এস জেলা প্রশাসক নারায়ণগঞ্জ ২০০৫ সালের ২০ আগষ্ট হতে, ইসদাইর মৌজায় ৭২ নং দাগের ৭.৭৫ শতাংশ পরিত্যক্ত জমির উপর জরাজীর্ণ টিনের ঘর বরাদ্দ নিয়ে, পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসিতেছে, এবং নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করে আসিতেছে, জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ, অবৈধভাবে তাহাকে অত্র লীজ সম্পত্তি হতে উচ্ছেদের চেষ্টা চালাইয়া যাইতেছে। এতে করে এলাকাবাসীর মধ্যে বিশাল খোভ দেখা দিয়েছে। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হকের নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসক হিসেবে জয়েনিং ডেট ছিল ২৪ সালের ২৭ জুলাই।

এলাকাবাসী আরো অভিযোগ করে বলেন, জেলা প্রশাসকের নিজস্ব ২টি মসজিদ সহ মোট ছয়টি মসজিদ রয়েছে। এতো মসজিত থাকার পর সরকার যেখানে এই মসজিদটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে সেখানে এমন নির্দেশের তোয়াক্কা না করে জেলা প্রশাসক সেখানে পুনারায় এলাকার ভিতর মানুষের চলাচলের ব্যাঘাত ঘটে এবং মসজিদ বানানোর অনুপযুক্ত জায়গায়, নামাজ আদায়ের কোনো অনুমতি দিলেন তা রহস্যজনক।

এখানেই শেষ নয়, ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, এ বিষয়ে তারা জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি নাসিম ওসমানের পক্ষ নিয়ে ভুক্তভোগিদের ধমক দিয়ে বলেন, ‘এতো জেনেসাইড’ জেনোসাইড করেন কেন? ভিন্ন মতাবলম্বী কি থাকবে না নাকী? তার এমন মন্তব্যে পর এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।

এ নিয়ে ইতোমধ্যে জন প্রশাসন মন্ত্রনালয় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এলাকা বাসীর পক্ষে নাহিদ ইসলাম নামক ব্যক্তির করা অভিযোগে বলা হয়, ‘আমাদের এলাকাটি চানমাড়ি টেক্সি স্ট্যান্ডের পার্শ্বে অবস্থিত। এখানে চানমাড়ি টেক্সি স্ট্যান্ডে পূর্বেই মহাসড়কের জায়গা দখল করে জোর পূর্বক নির্মিত “নাসিম উসমান মসজিদটিকে বর্তমান সরকার ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশ দিলে ফকির গার্মেন্টস সড়কের শুরুতে খতিয়ান ১৪৫, সি,এস, এস,এ-৭২, আর,এস-১৩৬ নং দাগের ৩৩ শতাংশ খাস ভূমিতে আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসক জুলাই আগস্ট-জেনোসাইডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী নাসিম উসমানের দলীয় লোকজনের সাথে বৈঠক করে এবং প্রকাশ্যে নিরীহ লোকজনকে “এতো জেনেসাইড” জেনোসাইড করেন কেন? ভিন্ন মতাবলম্বী কি থাকবে না নাকী? এ ধরনের মন্তব্য করার পর হইতে এলাকার মধ্যে বিশাল বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এলাকার ৩/৪টি গ্রুপ তৈরী হয়ে মারমুখি অবস্থানে সকাল বিকাল মিছিল স্লোগান সহ বর্তমান জেলা প্রশাসকের বিগত সরকার দলীয় লোকজনের প্রতি অতিরিক্ত আনুগত্য জনমনে অশান্তির সৃষ্টি করেছে’।

‘এখানে উল্লেখ্য যে, এই এলাকার জেলা প্রশাসকের নিজস্ব ২টি মসজিদ সহ মোট ছয়টি মসজিদ রয়েছে। চানমাড়ী ট্যাক্সী ষ্ট্যান্ডেই উক্ত নাসিম উসমান মসজিদ লাগোয়া একটি মডেল মসজিদ নির্মিত হতে যাচ্ছে’।

‘শুধুমাত্র বিগত সরকারের লোকজনের প্রভাব বিস্তারের জন্য নাম পরিবর্তন পূর্বক নতুন নামে মসজিদ নির্মান করে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাই উদ্দেশ্য’। ‘ফকির পার্মেন্টস সড়কটি রাজউক প্লানে ৬ মিটার ১৮ ফুট প্রস্থে থাকলেও বিগত সরকার দলীয় লোকজন অবৈধভাবে জায়গা দখল করে দোকান নির্মানের কারনে প্রন্থে দশ ফুট অবশিষ্ট রয়েছে’।

‘জায়গাটি মানুষের বাসা বাড়ির মাঝখানে উঠানের মত, যেখানে অগনিত মহিলা ও শিশু যাতায়াত করে। যা পুরুষদের জন্য মসজিদ হওয়ার উপযুক্ত নয়’।

‘বিগত সরকারের দলীয় খাস লোক রহমত উল্লাহ্ বোখারী ও সেলিম উসমানের একান্ত বন্ধু মনির এর নেতৃত্বে তাদের লোকজন কে টুপি পাঞ্জাবী পরিয়ে এলাকার লোকজন বানিয়ে সংকীর্ন প্লেসে উক্ত “নাসিম উসমান মসজিদের পুনঃ স্থাপন চেয়ে সকাল বিকাল স্লোগান, মিটিং মিছিল করে। এলাকার উক্ত মসজিদ নির্মানে বাধাদান কারী নিরীহ লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ নির্যাতন, নিপীড়ন চালাচ্ছে। যাহার ভিডিও ফুটেজ বিদ্যমান আছে’।

‘একজন জেলা প্রশাসক বরাদ্দ ব্যতীত কিভাবে একজন লীজ গ্রহিতা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় আগামী শুক্রবার নিজে উপস্থিত থেকে উক্ত প্লেসে জুম্মার নামাজ আদায় করে ভিত্তি প্রস্থড় স্থাপনের মৌখিক নির্দেশ দিতে পারে, যা কখোনই আইন সংগত নয়’।

‘এই ফকির গার্মেন্টস সড়কে গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরী চলমান আছে। যেখানে এমনেতেই সংকীর্ণ রাস্তার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে তার উপর রাস্তাটি মসজিদ নির্মানের কারণে আরও সংকীর্ণ হয়ে গেলে ফ্যাক্টরীর উৎপাদন সহ মহিলা শিশুদের চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে যাবে’।

‘এমতাবস্থায় জনাবের নিকট বিনীত অনুরোধ আমরা এলাকার নিরীহ লোকজন কোনভাবেই এই বর্তমান জেলা প্রশাসক সহ এই বিগত সরকারের দলীয় দুস্কৃতিকারীদের সাথে পেরে উঠছিনা। যেখানে এলাকায় আরও ছয়টি মসজিদ রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিদ্যমান, তাই এই ধরনের খাস ভূমি বরাদ্দ ব্যতিত এবং জনৈক ব্যক্তির নামে লীজ থাকাবস্থায় জেলা প্রশাসক নিজে স্ব-শরীরে আগামী শুক্রবার জুম্মার নামাজে উপস্থিত থেকে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মৌখিক নির্দেশ দিয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিবেশ ভারসাম্যহীন না করার জন্য আসু পদক্ষেপ নিতে জনাবের একান্ত মর্জি হয়’।

সিদ্ধিরগঞ্জে প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালের ভুল চিকিৎসায় গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ

আল-আমীন মল্লিক শ্যামল:

নারায়ণগঞ্জে ভুল চিকিৎসায় এক নারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতুবরণকারী ওই নারীর নাম ফারজানা আক্তার (৪০)।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোর ৬ টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটে। মৃত ফারজানা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক হোসেন আলম মেম্বারের মেয়ে।

মৃত ফারজানার স্বামী রুহুল আমীন দৈনিক সবুজ বাংলাদেশকে জানান, শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার সময় ফারজানার হঠাৎ বুকে ব্যাথা উঠলে দ্রুত তাকে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ডের প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নেয়ার পর প্রথমে কর্তব্যরত ডাক্তার কার্ডিওলজি কনসালটেন্ট মো: আসিফ মাহমুদ তাকে প্রথমে ইসিজি করান। এসময় ফারজানার অবস্থা স্বাভাবিক ছিলো বলে দাবী করেন তার স্বামী রুহুল আমীন। চিকিৎসার একপর্যায়ে ডাক্তার আসিফ তাকে বিভিন্ন ধরণের আটটি ইনজেকশন পুষ করেন। এর কিছুক্ষণ পরই ফারজানার অবস্থার অবনতি হতে থাকে বলে জানান তার স্বামী। একপর্যায়ে ডাক্তার আসিফ ফারজানার অবস্থা ভালো না জানিয়ে দ্রুত তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। তখন আমরা ফারজানার কাছে গিয়ে দেখি আমার স্ত্রী মারা গেছে।

এদিকে এই মৃত্যুকে হত্যা দাবি করে ওই গৃহবধুর ভাসুরের ছেলে অনু খাঁন বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কি কি ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল? কিন্তু তারা কোনো উত্তর দেয়নি। এরা এর পূর্বেও এমন অনেকের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে ডা: আসিফ মাহমুদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফারাজানার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিলো। গতরাত আনুমানিক তিনটার দিকে তার হ্যার্ট অ্যাটাক হয় এবং তার হার্ট ফেইলিউর হয়। কিন্তু তার পরিবার আমাদের কাছে তাকে নিয়ে আসে ভোর পৌনে ছয়টায়। আমাদের কাছে যখন তাকে নিয়ে আসে তখন তার অবস্থা বেশি ভালো ছিলো না। এছাড়াও তিনি গত দুই তিন দিন যাবৎ ঠান্ডা জনিত রোগে ভুগছিলেন। তার ফুসফুসে অতিরিক্ত পানি জমা ছিলো। এছাড়া তার থাইরয়েডের সমস্যা ছিলো। যেহেতু হার্ট ফেইলিউর ছিলো তাই তার ফুসফুস থেকে পানি সরতে পারছিলো না। আমরা পানি বের করার জন্য ল্যাসিক ইনজেকশন দেই। এর পরেও রোগীর অবস্থার কোন উন্নতি হচ্ছিলো না। চিকিৎসার কোন ত্রুটি ছিলো না বলে দাবী করেন ডা. আসিফ মাহমুদ। ফারজানার অবস্থা আগে থেকেই আশংকাজনক ছিলো বলেও জানান এই চিকিৎসক। যার কারণে আর তাকে বাচাঁনো সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি।
এদিকে ফারজানার মৃত্যুর খবর তার আত্মীয়দের মাঝে ছড়িয়ে পড়লে সকলেই গিয়ে জড়ো হয় হাসপাতালে। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে বেশ বাকবিতন্ডা হয় তাদের সাথে। একসময় উত্তেজিত হয়ে পড়ে সকলে। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

এবিষয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়া সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারীর মৃত্যুর খবরে আমরা সাইনবোর্ডে প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে যাই। সেখানে গিয়ে আমরা উভয় পক্ষের সাথে কথা বলেছি। ওই নারীর মৃত্যুর বিষয়ে যদি তার পরিবারের লোকজন লিখিত কোন অভিযোগ দেয় তাহলে আমরা আইনগত ব্যাবস্থা নিবো। তবে মৃত ফারজানার পরিবার থেকে এখনো আমাদের কাছে কোন লিখিত অভিযোগ দেয়া হয় নাই।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা: এ এফ এম মুশিউর রহমান দৈনিক সবুজ বাংলাদেশকে বলেন, ভুল চিকিৎসায় মৃত্যু হলে থানায় অভিযোগ দিতে হবে এবং আমাদের বরাবর একটি লিখিত চিঠি পাঠালে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিবো।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম