তারিখ লোড হচ্ছে...

প্রয়াত আওয়ামীলীগ নেতা ‍আব্দুর রাজ্জাকের বাসার কাজের ছেলে আজ শত শত কোটি টাকার মালিক

মো: হুমায়ূন কবির:
আব্দুর রশিদ গোলন্দাজ। শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর গ্রামের পবন আলী গোলন্দাজের ছেলে।পবন আলী ছিলো কাঠুরিয়া, ডামুড্যার কনেশ্বর বাজারে লকরি বিক্রি করতো। রিশিদ অভাব অনটনের কারনে পড়ালেখা বাদ দিয়ে ঢাকায় চলে আসে। সে ঢাকায় সেগুন বাগিচায় একটি বাসায় দাড়োয়ানের চাকরি নেয় বেশ কিছুদিন চাকরী করার পর চুরির অপরাধে তার চাকরি চলে যায় এর পর এক স্খানীয় নেতার সাথে আওয়ামীলীগের প্রয়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাকের অফিসে য়ায়। সেখানেই বেশ কিছু দিন আসা যাওয়ার পর আব্দুল রাজ্জাক তাকে বাসায় লোক হিসেবে নিয়োগ দেন। ছিলেন প্রয়াত পানিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ির কেয়ারটেকার। এরপর প্রয়াত মন্ত্রীর ছেলে নাহিম রাজ্জাকের এপিএস হিসাবে কাজ করতেন। পরে তিনি ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যন নির্বাচিত হন। এরপর চলতি বছর ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে শুরু করেন টেন্ডার বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য ও মনোনয়ন বাণিজ্য। এভাবেই কোটিপতি বনে গেছেন। ব্যবহার করেন বিলাসবহুল গাড়ি। নামে-বেনামে রয়েছে তার অঢেল সম্পদ। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি এলাকা থেকে পলাতক রয়েছেন। জানা যায়, আব্দুর রশিদ গোলন্দাজের বাবা ছিলেন একজন কৃষক। ডামুড্যা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী নিজেকে এসএসসি পাশ দাবি করলেও এলাকার লোকজন বলছেন আব্দুর রশিদ অষ্টম শ্রেণি পাশ। তিনি ১৯৯৫ সালে প্রয়াত পানিসম্পদমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের বাড়ির কেয়ারটেকার হিসাবে কাজ শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আশার পর শরীয়তপুর-৩ আসনের সংসদ-সদস্য আব্দুর রাজ্জাক পানিসম্পদমন্ত্রী হন। তিনি আব্দুর রশিদকে ব্যক্তিগত এপিএস হিসাবে নিয়োগ করেন। সেই থেকে আর আব্দুর রশিদ গোলন্দাজকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। পেয়ে যান আলাদিনের চেরাগ। ২০১১ সালে আব্দুর রাজ্জাক মারা যাওয়ায় ২০১২ সালে ছেলে নাহিম রাজ্জাক ওই আসনে উপনির্বাচনে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি বাবার নিয়োগ করা আব্দুর রশিদ গোলন্দাজকে ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) হিসাবে রেখে দেন। নাহিম রাজ্জাকের এপিএস হওয়ার পর থেকে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাব খাটিয়ে শুরু করেন টেন্ডার বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, মনোনয়ন বাণিজ্য এবং কোণঠাসা করতে শুরু করেন আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদেরও। ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি ডামুড্যা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে এমপি নাহিম রাজ্জাকের প্রভাবে দলীয়ভাবে মনোনয়ন নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। স্থানীয়দের অভিযোগ, তার ইশারায় মনোনয়ন দেওয়া হতো বিভিন্ন ইউনিয়ন চেয়ারম্যান প্রার্থীদের। এভাবে কামিয়েছেন শতকোটি টাকা। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা চেয়ারম্যান হওয়ার আগে থেকেই নাহিম রাজ্জাকের বদলৌতে বেপরোয়া জীবনযাপন শুরু করেন তিনি। ৪ আগস্ট পর্যন্ত ডামুড্যায় প্রচণ্ড দাপটের সঙ্গে চলতেন আব্দুর রশিদ গোলান্দাজ। সুলতান হোসেন নামে কনেশ্বর ইউনিয়নের এক মুরব্বি জানান, রশিদ গোলান্দাজের বাড়িতে কোনো রকম একটি দোচালা টিনের ঘর ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেই বাড়িতে এখন দোতলা আলিশান বিল্ডিং রয়েছে। এ ব্যাপারে রশিদ গোলন্দাজের মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি। গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায় তাকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে দেখা গেছে। রশিদের নামে যাত্রাবাড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে। শরীয়তপুর ৩ গোসাইরহাট, ডামুড্যা ও ভেদরগঞ্জের জনগণ রশিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছে। রশিদ এলাকায় না থাকায় ইউনো অফিস, এ্যাসিল্যান্ড অফিস, পিআইও অফিস সহ বসাই স্বস্তির নিঃশ্বাস নিচ্ছে।

মাদারিপুরের ধুরাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দূর্নীতির ফিরিস্তি দুদকে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

মাদারীপুর সদর খানার ধুরাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাওলাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তুলে তা তদন্তের আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি।

আবেদনকারীর অভিযোগ, চেয়ারম্যান হাবিব সাবেক সরকারি চাকরিজীবি। তিনি ট্রেজারী শাখায় কর্মরত ছিলেন। এই পদে চাকরি করার সময়ে জমি অধিগ্রহণসহ নানা খাতে দূর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। সরকারী চাকরিতে থাকাবস্থায় মাদারীপুর সদর থানার বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কার্যকরী সদস্য এবং ধুরাইল ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ গ্রহণ করেন। এই বিষয় জানাজানি হলে জেলা প্রশাসনের চাপে বাধ্যতামূলক অবসরে যান হাবিব।

চাকরি থেকে গ্রামে ফিরে গিয়ে রাজনৈতিক পদ ও টাকার জোর খাটিয়ে গুন্ডা বাহিনী গড়ে তোলেন। যাদের ব্যবহার করে এলাকায় মাদক ব্যবসা, আড়িয়াল খালে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন, এলাকায় অসহায় মানুষের জমি দখল, বিদেশে চাকরির নামে টাকা আত্মসাৎ, বাংলাদেশ থেকে লিবিয়ায় মানব পাচারের অভিযোগ করেছেন।

এছাড়াও চেয়ারম্যান হাবিবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে দেন। হাবিব ও তার সহযোগিদের মাদারীপুর সদর থানায় একাধিক মামলা হইয়াছে। সহযোগী আলমগীর খান ও জাহিদ খান একাধিক মামলায় জেল খাটিয়াছেন। কোন কিছুই তিনি পরোয়া করেন না।

আবেদনে চেয়ারম্যান হাবিব ও তার স্ত্রী আক্তার শিপুর রাজধানীর খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাট ও গাড়ি থাকার তথ্য দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ও মাদারিপুরের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ঠিকানা তুলে ধরা হয়। এছাড়াও এই জন প্রতিনিধির ভাই সাইদুল হাওলাদার ও তার স্ত্রীর সম্পদের বিবরণও তুলে ধরেন আবেদনকারী।

এ দিকে দুদকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে ধুরাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন,এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। একটি পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আসছে।

মাদক, জমি দখল ও বালু তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো সব মিথ্যা অভিযোগ। বরং আমি নিজেই এই সকল অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার। রাত জেগে আমি বালু খেকোদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করি। আমি নিজে মাদক কারবারিদের ধরে পুলিশে দেই। এই সকল কাজ বন্ধ করতে একটি পক্ষ আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। আসল সত্যটা জানতে হলে আমার এলাকায় আসুন। দেখে যান, আমার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ কতটা সত্য। আপনারা সব দেখতে পারবেন।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম