তারিখ লোড হচ্ছে...

এ ফাউন্ডেশনকে আমরা জীবনের বিনিময়ে বাঁচিয়ে রাখব : সারজিস আলম

স্টাফ রিপোর্টার॥

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে নিহত ২০০ জনের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু করেছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। গতকাল শনিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোর হাতে চার ধাপে সহায়তার চেক তুলে দেওয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, শিক্ষার্থীদের হাতে এই আন্দোলন শুরু হলেও পরে এটি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রূপাšতরিত হয়েছিল।

ফলে ২৪-এর অভ্যুত্থানটি সংঘটিত হয়েছে। এই আন্দোলনে বিভিন্ন পর্যায়ে যারা সমন্বয় করেছেন, তাদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। বয়স ও অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে তাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু তাদের চেষ্টা বা আগ্রহের বিন্দুমাত্র কমতি নেই। আহত ও শহীদ পরিবারের পাশে যেভাবে দাড়ানো প্রয়োজন ছিল, তা সম্ভব হয়নি। সারজিস আলম, প্রয়োজনে এই ফাউন্ডেশনকে আমরা আমাদের জীবনের বিনিময়ে বাঁচিয়ে রাখব। যত দিন একজন আহত ভাইও বেঁচে থাকবেন, যত দিন শহীদ পরিবারের সদস্যরা থাকবেন। ঢাকার পর দেশের অন্য বিভাগেও ধাপে ধাপে গণ-অভ্যুত্থানের সব শহীদদের পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আহত ব্যক্তিদের দেওয়া হবে এক লাখ টাকা করে। তা বিকাশে দেওয়া হবে। শহীদ পরিবারের পাশে বাংলাদেশ শিরোনামে এই সহযোগিতা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন।

গতকাল নগর ভবনে প্রথম ধাপের আয়োজন শুরু হয় সকাল নয়টায়। তথ্য হালনাগাদ শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হয় মূল আয়োজন। অভ্যুত্থানে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটা  পর্যন্ত অনবড়তী সরকারের দুজন উপদেষ্টা দুই ধাপে ১০০ পরিবারের মধ্যে চেক বিতরণ করেছেন। প্রথম ধাপে ৫০টি শহীদ পরিবারের হাতে চেক হসতান্তর করেন সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। এ সময় তিনি বলেন, এই কাজ আমরা (মুক্তিযুদ্ধের পর) ’৭২, ’৭৩ সালে করতে পারিনি। সে জন্য বলব, আমরা অনেক দূর এগিয়ে এসেছি।

গতকাল শনিবার থেকে শহীদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু করা হয়েছে। সপ্তাহে পাবে ২০০ পরিবার। সহায়তা মাত্র শুরু হয়েছে, উল্লেখ করে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ধাপে ধাপে সহায়তা অব্যাহত থাকবে। সেটা আর্থিক সহযোগিতা হতে পারে, আবার দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসনও হতে পারে। অথবা শহীদ পরিবার থেকে অনÍত একজনকে চাকরির ব্যবস্থা করেও এই ব্যবস্থা হতে পারে। আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন বা দীর্ঘমেয়াদি সম্মানী ভাতার মতো নানা পরিকল্পনা রয়েছে।

দ্বিতীয় ধাপে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ৫০ শহীদ পরিবারের হাতে চেক তুলে দেন। তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও এরই মধ্যে নগরে ভবনে এসে উপস্থিত হয়েছে। তারা দুই ধাপে বাকি ১০০ পরিবারের মধ্যে চেক তুলে দেবেন। শাহবাগে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পাশে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কার্যালয় রয়েছে। শহীদ পরিবারের সদস্য বা আহত ব্যক্তিরা যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে সেখানে আসতে বা ফাউন্ডেশনের জরুরি হেল্পলাইন নম্বর ১৬০০০-তে যোগাযোগ করতে পারবেন। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০ জনের বেশি শহীদ এবং ২৪ হাজার আহত ব্যক্তির পরিচয় প্রাথমিকভাবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন। তালিকাটি বারবার যাচাই করা হচ্ছে।

 

সবা:স:সু-০৮/১১/২৪

ঢাকার নতুন জেলা প্রশাসক মমিনুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

ঢাকার জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম সম্প্রতি পদোন্নতি পেয়ে অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন। বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তারই স্থলাভিষিক্ত হলেন মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। তিনিই ঢাকার নতুন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।

গত ২৩ নভেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে দেশের ২৩ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক- ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে ঢাকা জেলার নতুন ডিসি করা হয়েছে মমিনুর রহমানকে। তিনি এতদিন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ছিলেন।

মোহাম্মদ মমিনুর রহমান ১৯৭৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মোহাম্মদ কামালুর রহমান গফরগাঁও খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং মাতা রওশন আরা একই বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ছিলেন।

মমিনুর রহমান ঢাকা বিশ্ববদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে ১৯৯৫ সালে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৯৬ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারের ২২তম ব্যাচে প্রথম স্থান অধিকার করেন।

তিনি ২০০৩ সালের ১০ ডিসেম্বর সহকারী কমিশনার (শিক্ষানবিশ) হিসেবে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, রাজশাহীতে ন্যস্ত হন। পরে তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, রাজশাহীতে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে প্রশাসন ক্যাডারের যাত্রা শুরু করেন।

২০০৭ সালের ২৭ মে মমিনুর রহমান মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করেন। একই বছরের ৯ অক্টোবর তিনি বিসিএস প্রশাসন একাডেমি, শাহবাগ, ঢাকায় সহকারী পরিচালক হিসেবে পদায়িত হন।

২০০৯ সালের ১৬ জানুয়ারি উচ্চ শিক্ষা অর্জনের জন্য বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে তিনি মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। দেশে ফিরে ২০১০ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের ৩ জুলাই পর্যন্ত উপপরিচালক হিসেবে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমিতে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১২ সালের ১৯ মার্চ থাইল্যান্ডে লিডারশিপ ইন দ্য সিভিল সার্ভিস কোর্স এবং ২০১৪ সালের ২৫ আগস্ট ভারতে অনুষ্ঠিত মিড ক্যারিয়ার ট্রেইনিং কোর ফিল্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কোর্সে অংশগ্রহণ করেন মমিনুর রহমান। ২০১৩ সালের ৪ আগস্ট থেকে ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর এবং ২০১৪ সালের ২৩ এপ্রিল থেকে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।

২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২১ এপ্রিল ২০১৭ পর্যন্ত গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন মমিনুর রহমান। পরে তিনি ২৩ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে উপসচিব হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে যোগদান করে ১০ মে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।

১১ মে ২০১৭ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

মমিনুর রহমান জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলায় পদায়িত হয়ে ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেন।

চট্টগ্রামে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ঈর্ষণীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করে এসেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এবং স্ত্রী মোসা. রাবেয়া নাহার চেরী তিন ছেলের জনক-জননী। বৃহস্পতিবার থেকে তার নতুন পথচলা শুরু হলো ঢাকার ডিসি হিসেবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম