তারিখ লোড হচ্ছে...

করমুক্ত আয়সীমার সর্বশেষ সিদ্ধান্ত

স্টাফ রিপোর্টার॥

করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকাই থাকছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তির বার্ষিক আয় যদি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার বেশি হয়, তাহলে তাকে আয়কর দিতে হবে। অন্যথায় নয়।

রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে আয়কর তথ্য-সেবা মাস- ২০০৪ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, কর সংস্কৃতির বিকাশ, কর সচেতনতা বৃদ্ধি এবং করদাতাদের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের লক্ষ্যে নভেম্বর মাসব্যাপী আয়কর তথ্য ও সেবা প্রদানের ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আয়কর তথ্যসেবা মাসের সার্বিক কাজে ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিলের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সব তফসিলি ব্যাংক, মোবাইল ফোন অপারেটর এবং বেশ কিছু বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
দেশের অন্য সকল করদাতাদেরকে অনলাইনে ই-রিটার্ন ও আয়কর দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

সবা:স:সু-১২/২৪

বেসিক ব্যাংকে টেন্ডার সিন্ডিকেটে গোপালগঞ্জের ভূত সক্রিয়, মানছে না হাইকোর্টের নির্দেশনা!

স্টাফ রিপোর্টার :

লুটপাট, ঋণ কেলেঙ্কারি আর দখলদারিত্বের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের করুণ অবস্থা। এজন্য মূলত দায়ী করা হয় বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাইকে। আওয়ামী সরকারের আমলে বেসিক ব্যাংকে শক্ত সিন্ডিকেট গড়ে তুলে গোপালগঞ্জের সিন্ডিকেট। তারাই নিয়ন্ত্রণ করতো ঋণ জালিয়াতি, টেন্ডার বাণিজ্য থেকে শুরু করে নিয়োগ বাণিজ্যসহ সবকিছুই। গেলো ১৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় মো: আনিসুর রহমানকে, তারও বাড়ি গোপালগঞ্জের। স্বৈরাচার সরকার পতনের পর কৌশল পরিবর্তন করে সক্রিয় হয়ে আছে এই সিন্ডিকেট।
বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চুর স্ত্রীর আত্মীয় হওয়ার সুবাধে গুলশান শাখার ব্যবস্থাপক মাহবুব আলম খান লুটপাটের রাজত্ব জুড়ে বসেছে পুরো শাখায়। টেন্ডার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ পুরোটাই তার হাতে, তারই সহযোগি হিসেবে রয়েছেন বংশাল শাখার সাবেক ম্যানেজার আনেয়ার হোসেন।
বহুল আলোচিত আবদুল হাই বাচ্চুর আত্মীয় হয়েও বহাল তবিয়তে থাকা মাহবুব আলম খানের নানা অপকর্ম নিয়ে ইতোমধ্যে আলোচনায় সরব পুরো বেসিক ব্যাংক।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক টেন্ডার কেলেংকারী নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রেটি এন্ড কাস্টমার সার্ভিসেস ডিপার্টমেন্টে। অভিযোগ নিয়ে মাঠে কাজ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্ত টীম। বেসিক ব্যাংক কর্তৃক দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম প্রসঙ্গে অভিযোগে জানা যায়, গত ২৯শে জুন ২০২৪ইং তারিখে পত্রিকায় প্রকাশিত বেসিক ব্যাংক গুলশান শাখার নিকট দায়বদ্ধ মেসার্স ইউকে বাংলা ট্রেডিং লিমিটেড এর নিলাম বিজ্ঞপ্তিমূলে নিলাম প্রক্রিয়ায় ছয়টি দরপত্র জমা পড়ে। যার মধ্যেই ৩টিই বেসিক ব্যাংকের বংশাল শাখা থেকে পে-অর্ডার করা হয়। এর নেপথ্যের কারিগর বংশাল শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন।

গত ২৫শে জুন ২০২৪ইং তারিখে গুলশান শাখায় দরপত্র বাক্স খোলা হলে জালিয়াতি করে ১০০টাকার ব্যবধানে এগিয়ে রাখে গোপালগঞ্জের সিন্ডিকেটকে। সে সময় উপস্থিত দরপত্রদাতাদের কোন পে-অর্ডার দেখানো হয় নি। পুরো প্রক্রিয়া অত্যন্ত কৌশলে সম্পন্ন করেন গুলশান শাখার ম্যানেজার মাহবুব আলম খান। পরবর্তীতে দরপত্রে প্রদানকৃত কোন দর গৃহীত না হওয়ায় অন্যান্য দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারীদের নিজ নিজ পে-অর্ডার তুলে নেওয়ার জন্য বলা হয়। সে ব্যাংক ম্যানেজার মাহবুব আলম খান বলেন, নিলামে অংশগ্রহণকারী সর্বোচ্চ দরদাতার উদ্ধৃত দর গ্রহণযোগ্য বলে প্রতীয়মান না হওয়ায় পুরো নিলাম প্রক্রিয়া ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় কর্তৃক বাতিল করা হয় এবং পুনরায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সম্পত্তি বিক্রয়ের নির্দেশনা প্রদান করেছে। এ সংক্রান্ত বেসিক ব্যাংকের রিকভারি ডিভিশনের উপ-মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফিদা হাসান স্বাক্ষরিত চিঠি যার স্মারক নং : ৫৩.০৯.০০০০. ৮২৬.৬৮. ৭৬.২০২৪.৪৪৪২ মূলে এই নির্দেশনা প্রাপ্ত হন বলে তিনি জানান।
দরপত্রে অংশগ্রহণকারীরা পে-অর্ডার ফেরত নেওয়ার আবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, ব্যাংক কর্তৃক কোন দরপত্র দর গৃহীত না হওয়ায় এই পে-অর্ডার ফেরত নেওয়া হচ্ছে। পে-অর্ডার ফেরত আনার পর লিখিতভাবে পুনরায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ ও বিস্তারিত অবগত করার জন্য অনুরোধ করা হলেও তা না করে উল্টো বাতিলকৃত দরপত্রের জালিয়াতির মাধ্যমে প্রথম হওয়া সিন্ডিকেট ব্যাক্তি নিয়ম বর্র্হিভূতভাবে ফ্ল্যাট রেজিষ্ট্রেশন করে দেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে বলে জানা যায়।
মোটা অংকের লেনদেনের মাধ্যমে পুরো সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করছে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম মোফাজ্জেল। আর ব্যাংকের বাহির থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে ঢাকা প্রেসক্লাবের কথিত সভাপতি পরিচয়দানকারী আনাম আহমেদ। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম আশীর্বাদপুষ্ট পল্লবী থানার সাবেক ওসি অপূর্ব হাসানের ভাগিনা হিসেবে দাপিয়ে বেড়াতো এই আনাম আহমেদ। মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগে পল্লবী থানার সাবেক ওসি অপূর্ব হাসানের নামে মামলা হওয়ার পর কিছুদিন গা ঢাকা দিয়েছিলো আনাম আহমেদ। বর্তমানে নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে পুরো সিন্ডিকেট।
এদিকে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বেসিক ব্যাংকের গুলশান শাখার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা লংঘনের অভিযোগ আনেন ইউকে বাংলা ট্রেডিং লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ তাজ উদ্দিন। তিনি অবহিতকরণ নোটিশে উল্লেখ করেন যে, গত ১০ মার্চ ২০২৪ইং তারিখে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন নং ১৫৭৩৫/২০২৩ দখিল করলে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম কর্তৃক গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ বাংকের দায়েরকৃত জারী মামলা নং- ২৭৯/২০১৮; ২০৩/২০২১ ও অর্থঋণ মামলা ২৬৩/২১৭ এর সমস্ত কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ প্রদান করেন।
আদালতের স্থগিতাদেশ বলবৎ থাকা অবস্থায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্যপ্রণেদিতভাবে ব্যাংকের কিছু অতি উৎসাহী কর্মকর্তার যোগসাজশে নিজেদেও পছন্দের সিন্ডিকেটের কাছে ফ্ল্যাট বিক্রির লক্ষ্যে পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে, যা মহামান্য সুপ্রিম কোটের নির্দেশনার সুষ্পষ্ট লংঘন এবং আদালত অবমাননার অগ্রহণযোগ্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন আহমেদ তাজ উদ্দিন।
এ বিষয়ে গুলশান শাখার ম্যানেজার মাহবুব আলম খানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক এই দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করি। টেন্ডার বাতিল ও পুনরায় প্রক্রিয়াকরণ সম্পর্কে আমি জানি না।
বেসিক ব্যাংকের টেন্ডার সিন্ডিকেটের অপতৎরতা ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগীরা।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম