তারিখ লোড হচ্ছে...

যুবলীগ নেতা মনসুরের বাড়িতে আগুন

আজিজুর রহমান বাবু। শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি:

চরভাগার ঐতিহ্যবাহী দেওয়ান পরিবারের সদস্য সখিপুর থানা যুবলীগের বিশিষ্ট নেতা মনসুর দেওয়ানের নিজ বাড়িতে ৪ঠা নভেম্বর অজ্ঞাত পরিচয় নামধারী কতিপয় দূর্বৃত্তরা গভীর রাতে আনুমানিক ১:৩০ ঘটিকার সময় অগ্নিসংযোগ করে বসতবাড়ি সহ মূল্যবান সম্পদ বিনষ্ট করে।

স্হানীয় সূত্রে জানা যায় — অগ্নিসংযোগের পর ফায়ার সার্ভিসকে সংবাদ দেওয়া হলেও ঘটনাস্হলে আসতে বিলম্ব হওয়ায় আগুন চারিদিকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে প্রতিবেশীদের তত্পরতায় নেভানো হলেও বসতবাড়িতে রক্ষিত মূল্যবান কাগজপত্র, বিভিন্ন সরঞ্জামাদি রক্ষা করা সম্ভব হয়ে উঠেনি। পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

বিষয়টি এলাকার জন্য উদ্বেগজনক বটে। এলাকার স্হানীয় মুরুব্বীদের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন ” এমন দূর্ঘটনা এলাকার জন্য লজ্জাজনক বটে। নেতিবাচক মানসিকতা পরিহার করে সকল রাজনৈতিক কর্মীরা সহাবস্থান করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।

সন্তান কতৃক নির্যাতিত মায়ের আহাজারি

আাজিজুর রহমান বাবু, জেলা সংবাদদাতা শরীয়তপুর:

পৃথিবীর যেসব বাবা মায়েরা শুধু মাত্র সন্তানের সুখের জন্য নিজেদের স্বপ্নকে পুড়িয়ে পথচলা মসৃন করেন। জমি জিরাত বিক্রি করে কলিজার সন্তানদের শিক্ষিত করে তোলেন। শিশুকাল থেকে যৌবন পর্যন্ত খাইয়িয়ে পড়িয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেন। সেই সুবোধ সন্তানেরা বড় হয়ে বাবার পরিশ্রম ত্যাগ – মায়ের পরম মমতাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য আর অবমাননা করে কী নিজেকে বড্ড যোগ্য সন্তান মনে করেন ?… এটাই বাস্তবে দৃশ্যমান রয়েছে আমাদের সমাজ সংসারে।

এমনি একটি স্পর্শকাতর বেদনাদায়ক ঘটনার অবতারণা ঘটেছে শরীয়তপুর জেলার সখিপুর থানার চরভাগার বকাউল কান্দি গ্রামে।

ঘটনার বিবরণে প্রকাশ – গৌরাঙ্গ বাজারে বারেক খলিফার বেশ জনপরিচিতি ছিলো। সেই সুবাদে এলাকার আশে পাশে বেশ সুনামের সাথেই দর্জি ব্যবসা পরিচালনা করেন। সময়ের বিবর্তনে ব্যবসার মূলধনের সংকট এবং ছেলের সিংগাপুর প্রেরণের উদ্দেশ্য ১২ লক্ষ টাকা যোগাড় করে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। একসময় পাওনাদার আর কিস্তির টাকা পরিশোধের দুঃচিন্তায় বারেক খলিফা হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু বরণ করেন। মৃত্যুর আগে তার ডায়েরিতে লিখে যান ” বার লক্ষ টাকা ” তাঁর ছোট ছেলে নুরুজ্জামান বাবু পরিশোধ করবে। পরবর্তী সেই টাকা পরিশোধ না করায় নিরুপায় হয়েই তাঁর স্ত্রী হাজেরা বেগম (৭৫) দায়ভার বহন করতে বাধ্য হন।

প্রসংগক্রমে বলতে হয় প্রয়াত বারেক খলিফার চার মেয়ে দুই ছেলে। সর্বকনিষ্ঠ সন্তান নুরুজ্জামান বাবু (২৮) ছোটকাল থেকেই নুরুজ্জামান বাবু ছিলেন ডানপিটে দূরন্ত প্রকৃতির।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায় – চার বোনের খাদিজা ও রিপার মমতায় আশ্রিত নুরুজ্জামান বাবু । ছোট ভাইয়ের ভবিষ্যৎ উন্নত করার লক্ষ্যে প্রয়াত বাবা বারেক খলিফাকে বলে কয়ে তাঁরা রাজি করান। তাঁদের ঐ মহতী চেষ্টায়ই পরবর্তী সংসার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়। জীবদ্দশায় বারেক খলিফা ১২ ( এগার) লক্ষ দেনা করে ছোট ছেলেকে সিংগাপুর প্রেরণ করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে তাকে দুঃসহ যন্ত্রণা পোহাতে হয়। যার ফলস্রুতিতে আজকের এই পরিস্থিতি দাঁড়িয়েছে।

আসমান সমান দেনা নিয়ে হাজেরা বেগম (৭৫) দিশেহারা হয়ে পড়েন। এমন বিপদকালিন সময়ে মেজো মেয়ের জামাই মনির হোসেন মোল্লা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। শুধু তাই নয় সাংসারিক খরচ, চিকিৎসা হাটবাজার সহ নানাবিধ সমস্যা মেজো জামাই মনির হোসেন মোল্লার সানুগ্রহে যাপিত জীবন পরিচালনা করতে গিয়ে সাড়ে চার লক্ষ টাকা দেনা হয়ে যান। অর্থাৎ সাড়ে ১৬ লক্ষ টাকার ঋণের বোঝা নিয়ে হাজেরা বেগম দিশেহারা।

সময়ের পরিক্রমায় ঋণগ্রস্ত হাজরা বেগম দেনা পরিশোধের জন্য নিজের জমি অন্যের কাছে বিক্রি করলে বাস্তহারা হবেন কিন্তু মেজো জামাইয়ের নিকট বিক্রি করলে কমপক্ষে বাড়িতে বসবাস করতে পারবেন এই অভিপ্রায়ে হাজেরা বেগম নিজের ২৪ শতাংশ জমি ও চৌচালা ঘর সহ মেজো জামাইয়ের কাছে বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করেন । পারিবারিক ভাবে অসন্তোষ দেখা দিলে মনির হোসেন মোল্লা শাশুড়ী থেকে কেনা ২৪ শতাংশ জমি হাজেরা বেগমের মেজো কন্যা সুমাইয়াকে পুনরায় কাওলা করে দেন। বিধায় ছোট ছেলে নুরুজ্জামান বাবুর কাছে বিষয়টি আপত্তিকর হয়ে উঠে এবং সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরি হয়।

স্বামী বারেক খলিফার রেখে যাওয়া সম্পত্তি এবং চৌচালা ঘরই ছিলো তার শেষ সম্বল। ছেলে এবং মেজো জামাইয়ের দেনা পরিশোধ করতে গিয়ে আজ তিনি সর্বহারা। বর্তমানে মেয়ের মালিকাধীন জমিতেই বসবাস করছেন হাজেরা বেগম (৭৫)। এসবের উপর বাগড়া বাধে ছোট ছেলে নুরুজ্জামান বাবু (২৮)। সিংগাপুর থেকে ফেরত আসার পর এই পৈত্রিক বাড়িটি কব্জা করতে ধীর মস্তিস্কে বিভিন্ন অজুহাত তৈরি করে নিজের জন্মধাত্রী মাকে ভিন্ন কৌশলে বিতাড়িত করার চক্রান্ত অব্যাহত রাখে।

ঘটনার একপর্যায়ে মায়ের সাথে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ শারীরিক ভাবে হেনস্তা করে এমন কী ঘৃন্য কৌশল আঁটতে থাকে। বিভিন্ন সময় ঘরের সামনে বড়ই কাটা দিয়ে পথরুদ্ধ করে। এমন কী নুরুজ্জামান বাবুর সহধর্মীনি এলাকার মনসুর বেপারীর কন্যা শাহনাজ (২৩) কে দিয়ে আপন শ্বাশুড়িকে বাড়ি থেকে বের করার জন্য ষড়যন্ত্র ও মারমুখী আচরণ চলমান রাখে। পরিবারের বর্তমান পরিস্থিতি খুবই নাজুক। যে কোন সময় হাজেরা বেগমের প্রাণনাশের মত বিয়োগান্তক পরিণতি ঘটতে পারে।

এইরুপ জটিল পরিস্থিতি দেখে হাজেরা বেগমের মেয়ে খাদিজা আক্তার (৩২) মায়ের সার্বিক নিরাপত্তা এবং প্রাণ রক্ষার্থে মায়ের সাথেই বসবাস শুরু করেন। আপন সন্তানের এহেন মারমুখী আচরণে অতিষ্ঠ হাজেরা বেগম প্রতিনিয়ত মৃত্যুভয়ে আতংকিত।

ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে স্হানীয় মুরুব্বিদের জানালেও কেউ সত্য ঘটনাটি উপস্থাপন করেননি। হাজেরা বেগম নিরুপায় হয়ে নিরাপত্তাজনিত কারণে স্হানীয় সখিপুর থানায় সাধারণ ডায়রী করেন। জিডি নং ২৮৩ – ৭/৯/২৩ ইং। তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই আতিয়ার সরেজমিনে জিডির আলোকে তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হয়। পরবর্তীতে ৩২৩/৫০৬ পেনাল্টি কোডের ধারায় শরীয়তপুর বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়। এই পর্যন্ত উক্ত মামলার কোন সুরাহা হয় নাই।

বিধবা হাজেরা বেগম একজন অসহায় অবলা নারী হওয়ায় রাষ্ট্র প্রণীত আইন অনুযায়ী জানমাল হেফাজতের লক্ষ্যে সকল নিরাপত্তা পাওয়ার আইনগত অধিকার হাজেরা বেগমের (৭৫) রয়েছে । বাস্তবে, সমাজ ব্যবস্থার উল্টোরথে চলা মায়া মমতা সর্বদাই আজ উপেক্ষিত। অনিয়মই এখন যেনো নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জনমনের প্রত্যাশা – নির্যাতিত অসহায় মায়ের প্রতি দেশের প্রচলিত আইনে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যবস্হা গ্রহণ করা হউক এবং কুলাঙ্গার পুত্র কনিষ্ঠ সন্তান নুরুজ্জামান বাবুকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হউক।

language Change
সংবাদ শিরোনাম
সাংবাদিকরা জীবন বাজি রেখে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করেন” — গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব ছেলেবন্ধুদের পরিবারের ভেতরের গল্প বললেন সোহিনী ডিসি নিয়োগ আওয়ামী আনুগত্যের প্রাধান্য কৃষক দলের নেতা খন্দকার নাসিরের গ্রেপ্তার চাইলেন মহিলা দল নেত্রী মুন্নী শেরপুরের নকলায় কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় গ্রেপ্তার-১ মানিকছড়িতে ধানের শীষ মার্কায় ভোট চেয়ে ওয়াদুদ ভূইয়া'র পথসভা সীমান্ত হতে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় নেশাজাতীয় ট্যাবলেট জব্দ জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি সিন্ডিকেটে আটকে আছে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কোটি টাকার মেশিন কেরানীগঞ্জে ঠিকাদার রফিকের অবৈধ গ্যাস সংযোগে টাকার মেশিনের সন্ধান