তারিখ লোড হচ্ছে...

আদম (আ.)-কে ফেরেশতা-জিন জাতির সেজদার অর্থ ও কারণ কী ছিল?

দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ ডেস্ক:

ফেরেশতা ও জিন জাতির ওপর মানব জাতির পিতা হজরত আদম আলাইহিস সালামের ইলমি ও জ্ঞানগত শ্রেষ্ঠত্ব সাব্যস্ত হওয়ার পর মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা আমলি দিক দিয়েও তার শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার জন্য ফেরেশতা ও জিন জাতির মাধ্যমে বিশেষ ধরনের সম্মাণ দেখিয়েছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে আদম আলাইহিস সালাম উভয় দিক থেকেই কামিলে মুকাম্মিল বা জ্ঞান-গুণ-আমলে পরিপূর্ণ ছিলেন।

হজরত আদম আলাইহিস সালামকে আমলি সম্মানে সাব্যস্ত করতে রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তাআলা বলেন, وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ أَبَىٰ وَاسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ অর্থ: ‘এবং যখন আমি হজরত আদম (আ.)-কে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলিস ব্যতীত সবাই সিজদা করলো। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অšতর্ভূক্ত হয়ে গেল’। (সূরা: বাকারা, আয়াত: ৩৪) উক্ত আয়াতে জ্ঞান দ্বারা সম্মানিত হওয়ার পর তিনি আমলিভাবে দ্বিতীয় সম্মান লাভ করলেন। এখানে সেজদা অর্থ হচ্ছে নম্রতা ও বিনয় প্রকাশ করা। সেজদার চূড়ান্ত পর্যায় হলো মাটিতে কপাল ঠেকিয়ে দেওয়া। (কুরতবি) ইসলামি শরিয়তে আল্লাহ ব্যতিত অন্য কাউকে সেজদা করা বৈধ নয়। তবে আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতারা হজরত আদমকে যে সেজদা করেছিলেন, সে সেজদা ছিল তার সম্মান ও ফজিলত প্রকাশ করা, ইবাদাতের ভিত্তিতে নয়। কিন্তু এখন এ সম্মান প্রদর্শনের জন্য কাউকে সেজদা করা যাবে না।

হজরত আদমকে সেজদা করতে ইবলিস অস্বীকার করে এবং আল্লাহর দরবার থেকে বিতাড়িত হয়। ইবলিস কোরআনের বর্ণনানুযায়ী জিন (জাতিভুক্ত বড় আবেদ) ছিলেন। আল্লাহ তার সম্মানার্থে ফেরেশতাদের মধ্যে শামিল করে রেখেছিলেন। এ জন্য আল্লাহর ব্যাপক নির্দেশে তার পক্ষেও সিজদা করা অত্যাবশ্যক ছিল। কিন্তু সে হিংসা ও অহংকারবশত সিজদা করতে অস্বীকার করলো। বলাবাহুল্য যে, মানবতার ইতিহাসে হিংসা ও অহংকার সর্বপ্রথম ইবলিসের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়েছে। যার ফলে আল্লাহর ইলম ও তকদির নির্ধারণে সে অবিশ্বাসীদের অনÍর্ভূক্ত হয়েছে।
ফেরেশতা ও জিন জাতিকে হজরত আদম (আ.)-কে সেজদা দেওয়ার এ নির্দেশনা ছিল আনুগত্য, সম্মান, মর্যাদা, ইবাদাত-বন্দেগি নিয়ম-কানুন প্রদর্শনে আল্লাহর কুদরত।

ইয়া আল্লাহ! উম্মাতে মুহাম্মাদিকে পবিত্র কোরআনুল কারিমের জ্ঞান অর্জন করে দুনিয়ার জীবনে আমল করে আখিরাতে সফলতা অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সবা:স:জু-৫০/২৪

 

ঐতিহ্য এবং সুফিবাদের পীঠস্থান খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহের ইতিহাস

সবুজ বাংলাদেশ ডেক্স॥

ইতিহাস, ঐতিহ্য, সুফিবাদ, এবং রহস্যময়তার পীঠস্থান হলো ভারতের রাজস্থানের খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহ। ধর্ম, সম্প্রদায় এবং ভৌগলিক সীমানার চৌকাঠ পেরিয়ে বিশ্বের দরবারে এটি এমন এক স্থান অর্জন করেছে, যা পরিদর্শন করার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন।

শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মাবলম্বীই নন, হিন্দুরা দর্শনার্থীও আজমিরের এই দরগাহে উপস্থিত হন। এখানে নারীরাও প্রবেশ করতে পারেন। বহু হিন্দু নারীই এই দরগাহে আসেন মানত করতে।

এই মুহূর্তে খবরের শিরোনামে রয়েছে আজমিরের দরগাহ, তবে অন্য কারণে। শিব মন্দিরের উপরে এই দরগাহ বানানো হয়েছিল বলে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন হিন্দু সেনা নামে এক সংগঠনের সভাপতি ভিষ্ণু গুপ্তা। তার দাবির স্বপক্ষে অবসরপ্রাপ্ত বিচারক হরবিলাস সারদারের বইয়ের তথ্য-সহ তিনটে কারণ উল্লেখ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন মি. গুপ্তা এবং সেখানে হিন্দুদের পুজো করার অনুমতির জন্যও আবেদন জানিয়েছেন।

ভিষ্ণু গুপ্তার দাবি, মন্দিরের অস্তিত্বের ঐতিহাসিক প্রমাণ রয়েছে। অন্যদিকে, আজমির দরগাহের প্রধান উত্তরাধিকারী এবং খওয়াজা মইনুদ্দিন চিশতির বংশধর সৈয়দ নাসিরুদ্দিন চিশতি ওই দাবিকে ‘সস্তা প্রচার পাওয়ার জন্য স্টান্ট’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের সম্ভলস্থিত শাহী জামা মসজিদকে ঘিরেও একই দাবি তোলা হয়েছিল। নিম্ন আদালতের নির্দেশে সেখানে জরিপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জরিপ চলছিল। জরিপের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানিয়ে হঠাৎ মসজিদ সংলগ্ন অঞ্চলে তিনদিক থেকে পাথর ও ইটবৃষ্টি শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা বেড়ে যায় এবং তাদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে। এই ঘটনায় চারজন মুসলিম ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। বিক্ষোভকারী, পুলিশ ও স্থানীয় কর্মকর্তা মিলিয়ে দু’পক্ষের একাধিক ব্যক্তি জখমও হয়েছেন।

এই আবহে, আগামী ২০শে ডিসেম্বর আজমিরের খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগাহ সংক্রান্ত মামলার শুনানি রয়েছে। অন্যদিকে, জানুরারি মাসের আট তারিখ খাজা মইনুদ্দিন চিশতির উরস। সেই উপলক্ষ্যে প্রতিবছর দুই সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠানে শামিল হন কয়েক লক্ষ মানুষ। বেশ আগে থেকেই উৎসবের জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই দরগাহকে ঘিরে যে দাবি ও পাল্টা দাবির ঝড় উঠেছে তাকে কেন্দ্র করে আজমিরের পরিস্থিতি অন্যবারের তুলনায় বেশ আলাদা।

সবা:স:জু-১৭২/২৪

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম