তারিখ লোড হচ্ছে...

এই সরকার মৌলবাদীদের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে-জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের সভায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার:

জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মুজিব পরিবার আর জিয়া পরিবারের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। মুজিব পরিবার সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। আর জিয়ার পরিবার সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। জাতীয় প্রেস ক্লাবকে সাংবাদিকদের সেকেন্ড হোম মনে করা হয়। আর এটি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার অবদান।

 আজ একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী প্রেস ক্লাবকে কলুষিত করতে চায়। সবাইকে তা রুখে দিতে হবে। আওয়ামী লীগও এমনটি করেছিল। আমরা চাই এই অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার করুক, এর পরই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হবে। এর ব্যত্যয় হলে জনগণ মেনে নেবে না। এই সরকার মৌলবাদীদের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের আজ কোথাও চাকরি হচ্ছে না। এমনটা চলতে দেওয়া যাবে না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।

৭ নভেম্বর চেতনায় ১৯৭৬ সালে জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম গঠিত হয়েছিল। তার ধারাবাহিকতায় আজ ৭ নভেম্বর পালনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি বিশিষ্ট ছড়াকার আবু সালেহ।

প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক জসিমউদ্দিন।

প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক মাহমুদ শফিক, সাপ্তাহিক রোববারের সম্পাদক সৈয়দ তোসারফ আলী, দৈনিক নওরোজ সম্পাদক সামছুল হক দুররানী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনয়নের সাবেক সহকারী মহাসচিব কাজিম রেজা, চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) সভাপতি কামরুল হাসান দর্পণ।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল গাফফার মাহমুদ, কামার ফরিদ, নির্মল চক্রবর্তী, কাজী মিজানুর রহমান, জাকির হোসেন, মিজানুর রহমান সুমন, গোলাম কিবরিয়া, রমজানুল হক রুবেল, জেসমিন জুঁই, আবদুল হালিম, জাকির হোসেন মাঝি, মীর হোসেন মিরন, শেখ আনোয়ার প্রমুখ।

ফোরামের সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মুজিবুর রহমান সরকারের কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

ফোরামের মহাসচিব জাহাঙ্গীর আলম প্রধান সভাটি সঞ্চালনা করেন।

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

স্টাফ রিপোর্টার:

আজ বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তদানীন্তন রেসকোর্স ময়দান) বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন।

এদিন লাখ লাখ মুক্তিকামী মানুষের উপস্থিতিতে এই মহান নেতা বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরও দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব, ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একাত্তরের ৭ মার্চ দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণ পরবর্তীতে স্বাধীনতার সংগ্রামের বীজমন্ত্র হয়ে পড়ে। একইভাবে এ ভাষণ শুধু রাজনৈতিক দলিলই নয়, জাতির সাংস্কৃতিক পরিচয় বিধানের একটি সম্ভাবনাও তৈরি করে। মূলত বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণের আহ্বানেই মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে বাঙালি।
পরে ২৫ মার্চের কালরাতে পাকবাহিনীর নৃশংস গণহত্যার পর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিকবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো।

একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর এই উদ্দীপ্ত ঘোষণায় বাঙালি জাতি পেয়ে যায় স্বাধীনতার দিক-নির্দেশনা। এরপরই দেশের মুক্তিকামী মানুষ ঘরে ঘরে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে। বঙ্গবন্ধুর এই বজ্রনিনাদে আসন্ন মহামুক্তির আনন্দে বাঙালি জাতি উজ্জীবিত হয়ে ওঠে। যুগ যুগ ধরে শোষিত-বঞ্চিত বাঙালি ইস্পাতকঠিন দৃঢ়তা নিয়ে এগিয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত মুক্তির লক্ষ্যে।

১৯৪৭ সালে ধর্মীয় চিন্তা, সাম্প্রদায়িকতার মানসিকতা ও দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিসত্ত্বা, জাতীয়তাবোধ ও জাতিরাষ্ট্র গঠনের যে ভিত রচিত হয় তারই চূড়ান্ত পর্যায়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের পর ছাত্র-কৃষক-শ্রমিকসহ সর্বস্তরের বাঙালি স্বাধীনতা অর্জনের জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় ছিনিয়ে আনে বাঙালি জাতি। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।

ঐতিহাসিক ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে গর্জে ওঠে উত্তাল জনসমুদ্র। লাখ লাখ মানুষের গগনবিদারী স্লোগানের উদ্দামতায় বসন্তের মাতাল হাওয়ায় সেদিন পত্ পত্ করে ওড়ে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত লাল-সবুজের পতাকা। লক্ষ শপথের বজ্রমুষ্টি উত্থিত হয় আকাশে। সেদিন বঙ্গবন্ধু মঞ্চে আরোহণ করেন বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে। ফাগুনের সূর্য তখনো মাথার ওপর। মঞ্চে আসার পর তিনি জনতার উদ্দেশে হাত নাড়েন। তিনি দরাজ গলায় তাঁর ভাষণ শুরু করেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আজ দুঃখ-ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি…।’ এরপর জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে বাংলা ও বাঙালির স্বাধীনতার মহাকাব্যের কবি ঘোষণা করেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম…, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণ। এই স্বল্প সময়ে তিনি ইতিহাসের পুরো ক্যানভাসই তুলে ধরেন। তিনি তাঁর ভাষণে সামরিক আইন প্রত্যাহার, জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, গোলাগুলি ও হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়া এবং বিভিন্ন স্থানের হত্যাকাণ্ডের তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠনের দাবি জানান।

বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘ভাইয়েরা আমার, আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, মানুষের অধিকার চাই। প্রধানমন্ত্রিত্বের লোভ দেখিয়ে আমাকে নিতে পারেনি। ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে দিতে পারেনি। আপনারা রক্ত দিয়ে আমাকে ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন। সেদিন এই রেসকোর্সে আমি বলেছিলাম, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করব। আজও আমি রক্ত দিয়েই রক্তের ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত।
দিবসটি যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক এবং সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আজ ভোর ৬টা ৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন। এ ছাড়া এদিন বিকেল ৪টায় ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবনে (তেজগাঁও) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম